somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

এই সমাজ- ১৮

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



এখন মানুষ লোক দেখানো কাজ করতে পছন্দ করে।
ধরুন, কেউ বড় রেস্টুরেন্টে গেলো- সাথে সাথে সে অনেক গুলো ছবি তুলবে। তারপর সেই ছবি গুলো ফেসবুকে দিবে। সেই সব ছবিতে নানান মানুষ নানান রকম মন্তব্য করবে। আবার ধরুন কেউ বইমেলায় গেলো, বই কিনুক আর না কিনুক ছবি মাস্ট। অনেক গুলো ছবি তুলবে। ছবি পোষ্ট দিবে। দিতেই হবে। তা না হলে পেটের ভাত হজম হয় না। কোনো লেখককে হাতের কাছে পেলে লেখকের সাথে ছবি তুলবে। ছবির সাথে ক্যাপশন দিনে প্রিয় লেখকের সাথে। অথচ সে হয়তো এই লেখকের কোনো বই'ই পড়ে নি। বর্তমান সমাজটা এখন লোক দেখানো সমাজ হয়ে গেছে। লোকজনকে দেখিয়ে খুব আরাম, খুব শান্তি।

ধরুন কেউ প্লেনে করে যশোর বা কক্সবাজার গেলো।
সে প্লেনে উঠার আগে বেশ কিছু ছবি তুলবে। সামনে সে হাসি মুখে পেছনে প্লেন। এবং সেই সব ছবি অবশ্যই ফেসবুকে দিবে। নামাজ কায্বা হবে কিন্তু তাদের ফেসবুকে ছবি দেওয়া মিস হবে না। অলিখিত একটা নিয়ম হয়েছে- কোথাও গেলে অবশ্যই ফেসবুকে ছবি দিতে হবে। হবেই। লোকজনদের দেখাতে হবে। জানাতে হবে। ইদানিং সুরভি এ কাজটা শুরু করেছে। এ পর্যন্ত সে তিনবার বইমেলায় গিয়েছে। তিন বারই বইমেলা থেকে ফিরে এসে ফেসবুকে ছবি দিয়েছে। আমি বললাম, সব ছবি ফেসবুকে দিতে হবে কেন? সুরভি বলল- আল্লাহ আমি নতুন শাড়ি পড়ে ছবি তুলেছি। বান্ধবীদের দেখাবো না!? আমি নিজেও এরকম করতে শুরু করেছি। এটা ঠিক না। ব্যাক্তিত্ব ধরে রাখতে হয়।

মানুষ খুব বেশি স্যোসাল মিডিয়া কেন্দ্রীক হয়ে গেছে।
খুব বেশি বাড়াবাড়ি হচ্ছে। আমি সিউর ফেসবুক না থাকলে এক মাসের বইমেলায় পাঁচ হাজার বই বের হতো না। তখন এক হাজার বই বের হতো কিনা সন্দেহ। ফেসবুক না থাকলে মানুষ এত এত ছবি তুলতো না। মানুষের ছেবলামি দেখতে চাইলে ফেসবুকে যেতে হবে। কারো চেয়ে কেউ কম না। ফেসবুক বড় মজা আর নির্লজ্জের দুনিয়া। এই দুনিয়ায় আমি চুপ করে বসে শুধু দেখি। আমার বড় লজ্জা করে, আমার বড় আনন্দও লাগে। আমার খুব রাগও হয়। তখন আমি মনে মনে অকথ্য ভাষায় গালি দেই। ফেসবুকের চেয়ে ব্লগ ভালো। শান্তি আছে, আনন্দ আছে।

আমাদের দেশের মানুষ গুলো বদ।
বিরাট বদ। ৯০ এর পর থেকে এদেশের মানুষ বদ হতে শুরু করে। এই ২০২০ এ এসে তারা তাদের বদগিরির সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে। বদ গুলো ঘরে বদ, বাইরে বদ, অফিসে বদ, আড্ডায় বদ, ব্লগ বা ফেসবুকেও বদ। আসলে বদ মানুষ আমৃত্যু বদই থাকে। পারলে মৃত্যুর আগেও তারা বদমাইশি করে যায়। বদলোক্জন ফুটপাতে বাইক উঠিয়ে দেয়, ট্রাফিক সিগনাল দিলেও মানে না, যেখানে সেখানে গাড়ি-বাইক পার্কিং করে রাখে, অফিসে কুটনামি করে, ফেসবুকে মহৎ সাজে- আসলে এক একটা অমানুষের বাচ্চা, ব্লগে জ্ঞানী সাজে- আসলে একটা আহাম্মক, বাসে মেয়েদের সাথে ঘষাঘষি করার সুযোগ খুঁজে।

এই সমাজ আর ভালো হবে না।
বরং দিনকে দিন আরো খারাপ হবে। এটা মেনে নিয়েই এই সমাজে বেঁচে থাকতে হবে। জীবন যাপন করতে হবে। এই সমাজ মিথ্যাবাদীর সমাজ। ভন্ডদের সমাজ। চারিদিকে দুষ্টলোকের জয়জয়কার। চারিদিকে মিথ্যা, চারিদিকে ভন্ড, ঠক প্রতারকগুলো ওৎ পেতে থাকে। এই সমাজের মানুষ বিষাক্ত, সাপের চেয়েও আরো বেশি বিষাক্ত। এরা ভালোর ভাব ধরে থাকে। আসলে সুযোগ পেলেই এরা আপনাকে বাঁশ দিবে। কাজেই এই সমাজের মানুষের কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করবেন না। কারো উপরে আস্থা ভরসা রাখবেন না। তাই নিজেকে যোগ্য করে তুলতে চেষ্টা করুন। যেন কারো কাছে আপনাকে যেতে না হয়।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৫৫
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×