আম্পান শেষ হলো।
কোলকাতার চেয়ে আমাদের কম ক্ষতি হয়েছে। তবুও ক্ষতি হয়েছে আমাদের বাঁধ, রাস্তাঘাট, গাছপালা ও অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি কৃষি, মৎস্য ও মানুষের ঘরবাড়ি ভেঙে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কো্লকাতায় ৭৫ জন মারা গেছে। আমাদেরও প্রায় ১৬ জন মানুষ মারা গেছেন। আমাদের যশোর এলাকায় বহু গাছ ভেঙ্গে পড়েছে। রাজশাহীর আমের বাগান গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খুব বেশি। বিনা দ্বিধায় বলা যায় কমপক্ষে আমাদের দশ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। বিশ্বের ইতিহাসে যতসব ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় উপকূলে আঘাত হেনেছে, তার বেশিরভাগই হয়েছে বঙ্গোপসাগরে। এদিকে করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে অনেক দেশেই লকডাউন চলছে। এর মধ্যেও প্রবাসীরা ৯ হাজার ১৮৮ কোটি টাকা পাঠিয়েছেন। টাকার অংক খুব কম বলা যাবে না।
সুরভি অসুস্থ।
পায়ে ব্যথা। ঠান্ডাও আছে। সে গত দুই দিন ধরে বিশ্রামে আছে। পুরো ঘর দুয়ার এলোমেলো হয়ে আছে। আজ আমি সকালে ঘুম থেকে উঠেই ঘর গুছাতে লেগে গেলাম। ঘর দুয়ার নোংরা আমার নিজের খুব অপছন্দ। একদম আম্পান তুফানের মতোন আমি ঘর গুছিয়ে ফেললাম। এর মধ্যে একবার বাইরে গিয়ে সুরভির জন্য ডাব, ওষুধ নিয়ে এলাম। গরুর মাংসও কিনতে গিয়েছিলাম। কিন্তু এত ভিড়। দাড়িয়ে থেকে আর সময় নষ্ট করলাম না। দুপুরে আমি নিজেই রান্না করলাম। গরুর মাংস। যদিও আগে কখনও আমি রান্না করি নাই। কিন্তু আমি জানি কিভাবে মাংস রান্না করতে হয়। ভাত রান্না করলাম। খুব সুন্দর ঝরঝরে ভাত হয়েছে। মাংসটাও ভালো হয়েছে। মাংস চুলা থেকে নামানোর আগে বুদ্ধি করে জিরার গুড়ো দিয়ে দিয়েছি। বেশ সুন্দর একটা ফ্লেবার এসেছে। সুরভি আমি দুজনের খেলাম। ভালোই তো হয়েছে।
আজ মার মেজাজ খুব খারাপ।
মা বুয়াকে চলতি মাসের বেতনের টাকা দিয়ে দিয়েছে। এরপর থেকে বুয়া আর আসে না। মা বুয়াকে ফোন দিয়েছে, বুয়া বলেছে স্যরি। আর আসবো না খালা। এই বুয়া শুধু সিড়ি মুছে। মাসে তিন হাজার টাকা। মা ঈদ উপলক্ষ্যে কোহিনূরকে (বুয়া) পচিশ শ' টাকা বেশি দিয়েছে। মোট সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা। আমি ভাবছিলাম মার কাছে গিয়ে একটু ঘ্যান ঘ্যান করি। হয়তো কিছু টাকা পাওয়া যেতে পারে। মার মুড খুব খারাপ। তাই মার সাথে আর কোনো আলাপে গেলাম না। দেখি, আগামীকাল আবার চেষ্টা নিবো। যাই হোক, সুরভিকে আম ভর্তা বানিয়ে খাওয়ালাম। কাচা আম। মরিচ, লবন আর সরিষার তেল দিয়ে। বেশ মজা হয়েছে নাকি! আম জাম ভর্তা আমি খাই না। এগুলো মেয়েদের খাবার।
আগামীকাল ইফতার পার্টি বাসায়।
স্পন্সর ছোট ভাই। শুধু ইফিতার পার্টি না। রাতের খাবারসহ। কাচ্চি অথবা তেহারি রান্না হবে। ভাবী রান্না করবেন। আমার বেশ কিছুদিন ধরে হালিম দিয়ে তন্দুর রুটি খেতে ইচ্ছা করছে। নান রুটি আমার ভালো লাগে না। নান রুটি অনেক মোটা হয়। সেই তুলনায় তন্দুর রুটি বেশি পাতলা। কিন্তু দোকানে হালিম পাওয়া যাচ্ছে কিন্তু তন্দুর রুটি পাওয়া যাচ্ছে না। অবশ্য সুরভিকে বললেই বানিয়ে দিবে কিন্তু আমার খেতে ইচ্ছা করছে রেস্টুরেন্টেরটা। পুরান ঢাকার হাজীর বিরানীও খেতে ইচ্ছা করছে। লকডাউন শেষ হোক ইচ্ছা মতো খাবো। যাই হোক, আজকের মতো বিদায় নেই। এখন এক কাপ চা বানাবো। নিজের চা নিজেই বানাবো। আমি চা-ও বানাতে পারি। হে হে… সবাই ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন।