বাবাঃ তোকে যে গীতাটা পড়তে দিয়েছিলাম, সেটা পড়েছিস? বলি মাথায় কিছু ঢুকলো?
পুত্রঃ হ্যাঁ বাবা, খুব মন দিয়ে পড়েছি। এই বলে ছেলে বাবার মাথায় হঠাৎ পিস্তল ঠেকালো আর বললো- মৃত্যুর জন্য তৈরী হও।
বাবাঃ আরে আরে, করছিস কি? আমি তোর বাবা। তোর জন্মদাতা।
পুত্রঃ গীতায় বলেছে- না কেউ কারও বাবা, না কেউ কারো ছেলে। আমরা সবাই ঈশ্বরের সন্তান।
পিতাঃ শান্ত হ, গুলি ছুটে গেলে আমি মরে যাব যে...
পুত্রঃ বাবা, নশ্বর দেহ'ই মৃত্যুপ্রাপ্ত হয়। আত্মা কখনো মরে না। আত্মা অমর। গীতায় লেখা আছে।
পিতাঃ মারিস না আমায়। পিস্তলটা সরিয়ে রাখ। হঠাৎ গুলি বেড়িয়ে গেলে আমি যন্ত্রনায় ছটফট করতে করতে মরে যাব। আমি মরতে চাই না। প্লীজ। দয়া কর।
ছেলেঃ কেন বৃথাই চিন্তা করছো বাবা? গীতায় লেখা আছে, 'নৈনং ছিন্দন্তি শস্ত্রানি, নৈনং দহতি পাবক'। মানে হলো- আত্মাকে তলোয়ার দিয়ে কাটা যায়না, আগুনে পোড়ানো যায় না। সব জেনেও এত ভীত কেন বাবা?
পিতাঃ নিজের ছোট ছোট ভাইবোন গুলোর কথা, নিজের মায়ের কথা তো একবার ভাব। ওদের কি হবে?
পুত্রঃ এই দুনিয়ায় কেউ কারও নিজের নয়। পৃথিবীর সমস্ত সম্পর্ক স্বার্থের ওপর দাড়িয়ে আছে। একথাও গীতায় আছে।
পিতাঃ হে পুত্র, আমায় হত্যা করে তুমি কি পাবে? তোমার লাভ কি?
পুত্রঃ ধর্মযুদ্ধে নিহত হলে তোমার স্বর্গপ্রাপ্তি হবে। আর আমি তোমার ধনসম্পদ পাবো।
পিতাঃ বাবা, এরকম অন্যায় করিস না, দয়া কর...ভগবানের দোহাই লাগে।
ছেলেঃ বাবা তুমি কোনও চিন্তা করো না। আত্মা যেমন পুরোনো, জীর্ন শরীর ত্যাগ করে নতুন শরীর ধারণ করে, তুমিও তদ্রূপ নতুন শরীর ধারণ করার প্রস্তুতি নিতে তৈরী হও। বিদায় পিতাশ্রী...
নীতিকথাঃ এটা হলো কলির যুগ। কলি যুগের বাচ্চাদের আদিসত্য, আদিধর্ম বা আদি ধর্মগ্রন্থ যুগের শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। বরং ওদের ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইন্সট্রাগ্রা্ম আর টিকটক দিয়ে ব্যাস্ত রাখুন। নতুবা ওরা অনর্থ বাধিয়ে দেবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মে, ২০২০ রাত ১১:১৯