somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

অপরাধী কে!

১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



শিখার বিয়ে হয়েছে মাত্র একমাস।
সে তার স্বামী সুমনকে কাছে আসতে দেয় না। তার ধারনা তার স্বামী তাকে মেরে ফেলবে। রাতে শিখা ভয়ে অন্য রুমে ঘুমায়। গত একমাস এভাবেই কেটেছে। সুমন শিখাক্বে বুঝাতে সব রকম চেষ্টা করেছে। এবং ব্যর্থ হয়েছে। কতদিন এরকম চলবে সুমন বুঝতে পারছে না। রাতে বাসায় ফেরার পথে স্ত্রীর জন্য ফুলের তোড়া নিয়ে আসে সুমন। নিজে পছন্দ করে শাড়ি নিয়ে আসে কিন্তু কিছুতেই শিখা স্বামীকে আপন ভাবতে পারে না। শিখা সারাদিন বাসায় শুয়ে বসে এডাল্ট সিনেমা দেখে। সুমন বলেছে, শিখা চলো তোমাকে ডাক্তার দেখাই। শিখা বলেছে, আমার তো কোনো সমস্যা নাই। ডাক্তারের কাছে যাব কেন? বিয়ের পর স্বামী স্ত্রী কত আদর সোহাগ করে, কিন্তু তুমি তো আমাকে কাছেই আসতে দাও না। ডাক্তার তোমার সমস্যা দূর করে দিবেন। শিখা বলেছে, ডাক্তার তুমি দেখাও। সমস্যা আছে তোমার।

একদি সুমন শিখার উপর জোর করে।
শিখা তার স্ত্রী। স্ত্রীর উপর তার সম্পূর্ন অধিকার আছে। দুজনের ঝগড়াঝাঁটি আর চিৎকার চ্যাঁচামেচিতে আশে পাশের বাড়িঘর থেকে লোকজন উঁকি দিতে শুরু করলো। স্বামী স্ত্রী ঝগড়া করছে এটা যেন অনেক আনন্দের বিষয়। আড়িপেতে শুনতে হবে, দেখতে হবে। শিখা একটা পিতলের ফুলদানী সুমনের মুখের উপর উড়িয়ে মারলো। ভাগ্যস সুমন যথাসময়ে লাফ দিতে পেরেছিলো। তা না হলে আজ সুমনের খবর ছিলো। সুমন রেগে গিয়ে শিখার গালে ধাম করে একটা থাপ্পড় দিলো। শিখা ছিটকে পড়লো এবং তার ঠোঁট অনেকখানি কেটে গেলো। গল গল করে রক্ত পড়তে লাগলো। সমুনের রাগ তবুও কমেনি। সে পিতলের ফুলদানী দিয়ে শিখার মাথায় ধাম করে একটা বাড়ি দিয়ে দিলো। শিখা মাথায় হাত দিয়ে মাতিতে পড়ে গেলো। বেশ জখম হয়েছে শিখার। শিখা বলল, এইবার তোর খবর আছে। এইবার তোকে কেউ বাঁচাতে পারবে না হারামী। আমি বুঝে গেছি তুই আমাকে মারতে চাস। গতকাল রাতে তুই ঘুমের মধ্যে আমার মুখে বালিশ চেপে ধরেছিলি।

শিখা সুমনের এই আচরনে প্রচন্ড রেগে গেছে।
সে হাসপাতালে না গিয়ে, সে গেলো থানায়। থানার পুলিশ শিখাকে হাসপাতালে পাঠালো এবং সুমনকে গ্রেফতার করলো। শিখা হাসপাতাল থেকে বাসায় এলো। তার খুব ভালো লাগছে। খালি বাসায় তাকে কেউ এখন বিরক্ত করতে পারবে না। আরাম করে থাকা যাবে। সুমন থানায় মরুক। তাতে তার কিচ্ছু যায় আসে না। শিখা চেষ্টা করবে সুমনের যেন কমপক্ষে সাত বছরের জেল হয়। সুমনের কারাগারে গেলেই শিখা তাকে তাকাল দিবে। এবং বাকিটা জীবনটা শিখা আনন্দ নিয়ে কাটাবে। যা খুশি তাই করবে। জীবনে আনন্দের দরকার আছে। ছোট্র একটা জীবন মানুষের। বিয়ের পর থেকেই শিখা একটা রাতেও আরাম করে ঘুমাতে পারে নি। মনে হতো ঘুমালেই বুঝি সুমন এসে গলা টিপে অথবা বালিশ চাপা দিয়ে মেরে ফেলবে। বিয়ের পর এরকম স্বপ্ন শিখা প্রতিরাতেই দেখেছে। স্বপ্নে যে তাকে মারতে আসে সে আর কেউ নয় সুমন। বিয়ে আগে এই স্বপ্ন গুলো দেখলে সে আর সুমনকে বিয়ে করতো না।

মামলা কোর্টে উঠেছে।
সুমনের বিরুদ্ধে অভিযোগ মারাত্মক। সে তার স্ত্রীকে হত্যা করতে চেয়েছিলো। স্ত্রী কোনো মতে বেঁচে গেছে। তবে মারাত্মক আহত হয়েছে। কপালে চারটা সেলাই পড়েছে। সুমনের উকিল মনে হয় সুমনকে বাঁচাতে পারবে না। এদিকে শিখার উকিল আদালতকে বলেছে, আমার মক্কেল আজ কবরে থাকতো। ভাগ্যজোড়ে বেঁচে গেছে গ্রামের এই সহজ সরল মেয়েটি। সুমন মস্তিস্ক বিকৃত মানুষ। সে শিখাকে শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার করতো প্রতিদিন। বালিশ চেপেও মারতে চেয়েছিলো। রাখে আল্লাহ মারে কে! শিখা বারবার বেঁচে গেছে। বুঝা যাচ্ছে, আদালত এবং পুলিশ শিখার পক্ষে। সুমনের উকিল আদালতকে বলেছে, সুমন অতি সাধারণ মানুষ। ভালো মানুষ। চাকরি করছে। সে অনেক ভালো মানুষ। তার কোনো খারাপ রেকর্ড নেই। শিখা সুমনকে পিতলের ফুলদানী উড়িয়ে মেরেছে। সুমনকে নিজেকে রক্ষা করতে গিয়ে শিখা সামান্য আহত হয়েছে। শিখা ভালো নারী নয়। তার অনেক ছেলে বন্ধু আছে। শিখা সারাদিন এডাল্ট মুভি দেখে। সুমন অফিসে চলে গেলেই শিখার ছেলে বন্ধুরা বাসায় আসে।

আদালত মামলা রায়েরর ঘোষনা করবে আগামী মাসে।
সুমন আছে কারাগারে। শিখা আছে বাসায়। সে আগের মতোই সারাদিন বাসায় শুয়ে বসে থাকে। এডাল্ট মুভি দেখে। তার শরীর জাগ্রত হলে সে তার ছেলে বন্ধুদের ফোন করে ডেকে আনে। ইচ্ছে মতো শরীরের আনন্দ উপভোগ করে। একদিন সুমনের উকিল শিখার সাথে দেখা করতে আসে বাসায়। শিখা তাকে বলেছে, আপনার সাথে আমার কোনো কথা নেই। আপনি আমার উকিল নন। উকিল বলে প্লীজ ম্যাডাম। আপনি আমার কথা শুনুন। আপনি বুঝতে চেষ্টা করুন। শিখা বলে, সুমন অতি মন্দ লোক। ভয়ঙ্কর। সে ভালো মানুষের রুপ ধরে থাকে। সে আমাকে স্বামী স্ত্রীর সহবাসের নামে শারীরিক অত্যচার করতে চায়। এটা কোনো সুস্থ মানুষের কাজ হতে পারে না। উকিল বলে, আপনার বিরুদ্ধে তো অভিযোগ কম না। শিখা বলে, আমার বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা বানোয়াট। সুমনের শাস্তিই হওয়া উচিত। সে দুষ্টলোক। অতি দুষ্টলোক। উকিল বলল, দুষ্টলোক তো ম্যাডাম আপনিও।

(দ্বিতীয় পর্ব আগামীকাল।)
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৪৭
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×