এক মেয়ে একটা মাংসের ফ্যাক্টরিতে কাজ করে।
তার কাজ ছিল, মাংস গুলো সঠিক সাইজে কাটা। মাংস কাটা হতো মেশিনে। দীর্ঘদিন ধরে মেয়েটা এই কাজই করছে। প্রতিদিন সাত ঘন্টা ডিউটি। সপ্তাহে দুই দিন ছুটি। তবে ইচ্ছা করলে এই দুই দিনও কাজ করা যায়। তাতে বাড়তি কিছু টাকা পাওয়া যায়। তবে সপ্তাহে দুই দিন ছুটির দরকার আছে। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাজ করতে হয়। কোমর ব্যথা হয়ে যায়।
একদিন মেয়েটা বিরাট বিপদে পড়ে গেল!
মেয়েটা কাজ শেষ হবার কিছু সময় আগে সে মাংস রাখার স্টোরেজ রুমে ঢুকল। যেটা মূলত কোল্ড স্টরেজ। হুট করে বাইরে থেকে দরজাটি লক হয়ে যায়। সে অনেক চেষ্টা করলেও দরজাটা খোলা সম্ভব হলো না। অনেক চিৎকার করেও লাভ হয় নি, কারন ততক্ষণে অন্য সব কর্মী কাজ শেষ করে বেরিয়ে গেছে। মেয়েটা ঠান্ডায় জমে যাচ্ছে।
আস্তে আস্তে সে ঠান্ডায় জমে যেতে লাগল।
মৃত্যু আসন্ন। সে কাঁদছে। কিন্তু তার বাঁচার কোন সম্ভাবনাই নেই। সে মনে মনে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নিলো। হঠাৎ বেশ অপ্রত্যাশিতভাবে একজন সিকিউরিটি গার্ড এসে দরজা খুললেন এবং তাকে মুক্ত করলেন। মেয়েটি তখন তাকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনার তো এখানে আসার কথা নয়। এখানে আসলেন কেন? গার্ড বললেন, আপনার ব্যবহার, আপনার আন্তরিকতা আমাকে এখানে টেনে এনেছে।
সিকিউরিটি গার্ড মেয়েটাকে একটা কম্বল দিলো।
কফি মেশিন থেকে এক মগ কফি দিলো। এবং বলল, আমি দীর্ঘ সময় এখানে সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করছি। প্রায় ৩৫ বছর। কিন্তু আমি এমন মানুষ খুব কম দেখেছি যারা প্রতি সকালে আমাকে Hi বলেছে এবং সন্ধ্যায় বের হবার সময় bye বলে বেরিয়েছে। বেশির ভাগ মানুষ এমন আচরণ করতো যেন তারা আমায় দেখতেই পায় নি। কিন্তু আপনি ছিলেন সেই মানুষ যে প্রতিদিন আমাকে দেখে একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে সম্ভাষন করতেন। আজ সকালেও করেছেন। কিন্তু সন্ধ্যায় আমি আপনার কাছ থেকে bye শব্দটি শুনতে পাইনি। তার মানে, আপনি এখনো বের হন নি। আর তাই আমি আপনাকে খুঁজতে শুরু করি।
আমাদের জীবন খুব ছোট। এই ছোট জীবনে সংস্পর্শে আসা প্রতিটি মানুষের সাথে সদ্ভাব থাকা জরুরী।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৩:০৬