somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

আজকের ডায়েরী- ৭৫

২১ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমার শ্বশুর হাসপাতালে।
তার করোনা হয়েছে। তার অবস্থা বেশ খারাপ। অক্সিজেন ছাড়া তার চলছেই না। আমি তাকে দেখতে এখনও যাই নি। আমি গিয়েই বা কি করবো? উনি বারবার বলছেন, আমাকে গ্রামে দিয়ে আসো। ঘুমের মধ্যেও বলছেন, আমাকে গ্রামে দিয়ে আসো। হাসপাতালে আমি মারা যেতে চাই না। সেদিন আমার সাথে তার ভিডিও কলে কথা হলো। উনি কোনো কথাই বলতে পারছেন না। নিঃশ্বাস নিতে পারছেন না। শুধু কাঁদছিলেন। আমি বললাম, আপনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। অযথা চিন্তা করবেন না। এদিকে সুরভির বড় ভাইও করোনা পজেটিভ। তবে সে ভালো আছে। হাঁটা চলা করতে পারছে। খাওয়া দাওয়াও করতে পারছে। তিনি বাসায় আছেন।

এদিকে আমার আব্বার অবস্থা খুব খারাপ।
গত পরশু রাত তিনটায় আব্বা খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। আব্বা কাউকে চিনতে পারছে না। ডাক্তার বলেছেন, তার পুরো শরীর প্যারালাইস হয়ে যাবার সম্ভবনা আছে। আব্বা দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ। গত দুই বছর ধরে তাকে এক, দুই মাস পর পর হাসপাতালে ভরতি করতে হয়েছে। এখন আব্বার অবস্থা খুব বেশী খারাপ। আব্বার বয়স ৬০/৬৫ হবে। দুনিয়াতে আমি বিপদে আপদে একমাত্র আব্বার উপরই ভরসা করি। সে আমাকে প্রচন্ড সাপোর্ট করে। আব্বার সাথে দশ মিনিট কথা বললেই, অটোমেটিক আমার আত্মবিশ্বাস বেড়ে যেত। কোনো সমস্যাই সমস্যা মনে হয় না।

সুরভি'র শরীরটাও বিশেষ ভালো যাচ্ছে না।
প্রতি মাসে দুইবার করে ডাক্তারের কাছে যাচ্ছে। তিনবেলা অনেক গুলো করে ওষুধ খাচ্ছে। প্রতিমাসে নানান রকম টেস্ট করাতে হচ্ছে। পানির মতো টাকা খরচ হচ্ছে। এদিকে বুয়া ঠিক ভাবে আসে না। একদিন আসে তো তিনদিন আসে না। একটা সংসারে তো কাজ কম না। আমি আবার ঘরের কাজটাজ পারি না। এসব কাজ পারলে আমি সুরভিকে সহযোগিতা করতে পারতাম। মা আমাদের চার ভাইকে কোনোদিন ঘরের কাজ করায় নাই। কোনোদিন কাপড় ধুতে নাই। ঘর মুছতে দেয় নাই। রান্নাও করতে শেখায় নাই। মা কোনোদিন আমাদের বাজারও করতে দেয় নাই। যদিও এখন আমি বাজার করতে পারি।

আমার মানসিক অবস্থা ভালো নেই।
মনে হচ্ছে সামনে খুব খারাপ সময় আসছে। খুব খারাপ কিছু অপেক্ষা করছে। তবে আমি কাউকে কিচ্ছু বুঝতে দিচ্ছি না। আমি বই পড়ছি, মুভি দেখছি, গান শুনছি। বেশ স্বাভাবিক আছি। কারন আমাকে বিধ্বস্ত দেখলে সুরভি মন খারাপ করবে। ঘাবড়ে যাবে। আজ বুয়া আসে নি। তাই সুরভিকে নিয়ে আজ দুপুরে বাইরে খেলাম। ফেরার পথে দুজনে মিলে আইসক্রীম খেলাম বাচ্চাদের মতো। অকারনে রিকশা করে ঘুরলাম এক ঘন্টা। পকেটে টাকা ছিলো না। টাকা থাকলে সুরভিকে অবাক করে দিয়ে বেলীরোড থেকে একটা শাড়ি কিনে দিতাম। মেয়েরা শাড়ি পেলে খুব খুশি হয়।

ছাদে আমার তিনটা বড় গাছ আছে।
আম, পেয়ারা আর লেবু। এবছর একটা গাছেও ফল পাই নি। এর আগের বছর অনেক আম হয়েছিলো। পেয়ারাও অনেক হয়েছিলো। দারুন মিস্টি পেয়ারা। লেবু গাছে অনেক লেবু হয়েছিলো। কি সুন্দর গন্ধ! আমি গাছের বেশ যত্ন করি। সকালে বিকালে নিয়মিত পানি দেই, আগাছা পরিস্কার করি। সার দেই। খুব যত্ন করি। কিন্তু দুঃখের বিষয় তিনটা গাছই মরে গেছে। তিনটা গাছেরই সমস্ত পাতা পড়ে গেছে। পুরো ছাদ গাছের মরা পাতা দিয়ে ভরে গেছে। আমার খুব মন খারাপ হয়েছে। আজ বিকেলে এক ঘন্টা ছাদে গিয়ে বসে ছিলাম। সুরভি ছাদে চা নিয়ে এলো। বলল, মন খারাপ করো না।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৪৮
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×