১। মহানবী (সা.)-এর দেহ নূরের তৈরি বলে তাঁর শরীরের কোন ছায়া ছিল না। মানুষের ছায়া কত ময়লা-আবর্জনার ওপর পতিত হয়, কত পশু-পাখী অথবা মানুষের পায়ের তলায় পতিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর পবিত্র দেহের ছায়া এভাবে অপদস্থ হওয়া আল্লাহ তা’আলার অভিপ্রেত নয়। এজন্য আল্লাহ তাআলা তাঁর দেহ ছায়াহীন করে তৈরি করেছেন।
২। রাসূল (সা.) যখন পথ দিয়ে চলতেন, তখন এক খণ্ড মেঘ তাঁর মাথার ওপর ছায়া বিস্তার করে তাঁর সঙ্গে সঙ্গে ভেসে বেড়াত।
৩। হযরত হালিমা বর্ণনা করেন, ”শিশু মুহাম্মদ (সা.)-কে আমার গৃহে আনার সাথে সাথেই রহমত বরকত প্রকাশ হতে লাগল। এতো পরিমাণ দুধ নির্গত হলো যে, হযরত (সা.) এবং তাঁর দুধ ভাই একান্ত তৃপ্তির সাথেই দুধ পান করে ঘুমিয়ে পড়তেন।” আর উটনীর দিকে চেয়ে দেখতে পাই, সেগুলোর স্তন দুধে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে।
৪। হযরত হালিমা বর্ণনা করেছেন, তিনি কখনও শিশু মুহাম্মদ (সা.)-কে উলঙ্গ অবস্থায় রাখতে পারতেন না। সেরূপ করলেই তিনি চিৎকার করতেন, যতক্ষণ পর্যন্ত তার শরীরের উপর চাদর টেনে দেয়া না হতো ততক্ষণ তিনি ক্রন্দন থামাতেন না।
হালিমা বলেন, যেদিন হতে আমি জানতে পারলাম, শিশু মুহাম্মদ (সা.) উলঙ্গ থাকতে পছন্দ করেন না, সেদিন হতে আর কখনও তাঁকে উলঙ্গ রাখিনি। তাঁর দেহ আবৃত করে রাখার জন্য সর্বদা সজাগ দৃষ্টি রাখতাম।
৫। যে ভোর বেলায় মহানবী (সা.) জন্ম নেন, সেদিন বিশ্বের সবগুলো মূর্তি মাটির দিকে নত হয়ে পড়ে।
৬। বিশ্বনবীর মাতা মা আমিনা (রা.) বলেছেন, আল্লাহর কসম, আমার পুত্র জন্ম নিয়েই তাঁর হাত গুলোকে মাটিতে রেখে মাথা আকাশের দিকে তোলে এবং চারদিকে তাকায়। এরপর তার থেকে একটি নূর বা আলো ছড়িয়ে পড়ে ও সে আলোয় সব কিছু দৃশ্যমান হয়। সেই আলোয় সিরিয়ার (রোমানদের) প্রাসাদ গুলো দেখলাম এবং সেই আলোর মধ্যে একটি শব্দ শুনলাম, যাতে বলা হয়েছে, সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষকে জন্ম দিয়েছ, তাই তাঁর নাম রাখ ‘মুহাম্মাদ’।
৭। বিশ্ব নবীর অলৌকিক ঘটনা বইয়ের ৪৭ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে, হযরত হালিমা (রাঃ) এর স্তন পান করার সময় রাসুল (সা.) শুধু তাঁর একটিমাত্র স্তন থেকে দুধ পান করতেন এবং অন্যটি তাঁর দুধ ভাইয়ের জন্য রেখে দিতেন। এমনকি হযরত হালিমা রা: জোর করেও দ্বিতীয় স্তন থেকে দুধ পান করাতে পারতেন না। বিশ্বের ইতিহাসে এমন ইনসাফপূর্ণ আচরণের শিক্ষা আর কোথায়ও পাওয়া যাবে না। এটাও রাসুল (সা.) এর সর্বশ্রেষ্ঠ মো’জেযার অন্তর্ভুক্ত।
৮। মোট ৪ বার বিভিন্ন সময়ে বুক বিদারণ করা হয় অর্থাৎ নবীজির বুক কেটে নাড়ীভুঁড়ি বের করে ধৌত করিয়া আবার স্থাপন করা হয় ।
৯। বনের ভেতর একটি মা হরিণকে শিকারীগন গাছে বেধে রাখে। বাচ্চাদের জন্য হরিনটি কাদছিল। নবীজির খুব মায়া হল তাই বাঁধন খুলে দিয়ে নিজেকে বেধে হরিণকে ফিরে আসতে বলেন। বাচ্চা সহ মা হরিণটি তিন দিন পরে ফিরে আসল। নবীজির কান্না দেখে বনের সকল পশুপাখি তিন দিন খাবার খাওয়া ছেড়ে দিয়েছিল। হরিনের মুখ থেকে কৃতজ্ঞতা সহ মানুষের কথা বের হল।
১০। রাসুল না থাকলে আমরা জানতেই পারতাম না আমাদের স্রষ্টা কে! তিনি আমাদের সাথে অন্যান্য নবী রাসুলদের সাথেও পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। তিনি ইচ্ছা করলে অন্যান্য নবী রাসুলদের সাথে পরিচয় না করিয়ে দিয়েও মুসলিমদের রাসুল থাকতে পারতেন, কিন্তু তা করেননি।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:২০