somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

আমি ছাড়া, বাংলাদেশে কোনো ভালো মানুষ নেই

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২১ রাত ১২:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গতকাল রাতের কথা আগে বলে নিই।
শরীরটা ভালো লাগছিলো না। তাই রাত ১২ টায় বিছানায় যাই। অন্য সময় সাধারনত রাত দুইটার আগে বিছানায় যাই না। ছোট কন্যা ফারাজার একপাশে আমি ঘুমাই অন্য পাশে সুরভি ঘুমায়। ঘরে অল্প আলো। ফারাজা ডান পাশ ফিরে ঘুমাচ্ছে। দেখে মনে হয় যেন আকাশ থেকে একটা ফেরেশতা নেমে এসেছে আমার ঘরে। আমি ঘুমন্ত ফারাজার কপালে চুমু দেই। এটা আমার প্রতিদিনের রুটিন।
চুপ করে ফারাজার পাশে শুয়ে পড়লাম। কিন্তু কিছুতেই ঘুম আসছে না। কথা নেই, বার্তা নেই- হঠাত শরীর কাঁপিয়ে জ্বর এলো। নিজের কপালে নিজে হাত দিয়ে দেখি অনেক গরম। ঠান্ডাও লেগেছে। নাক দিয়ে সমানে পানি পড়ছে। সুরভিকে ডাক দিলাম না। বিছানা থেকে নেমে বিস্কুট খেলাম। তারপর একটা নাপা। নাপা খাওয়ার এক ঘন্টা পর জ্বর নাই হয়ে গেছে। হে হে---

সকালে ঘুম থেকে উঠলাম ৮ টায়।
কন্যা আমার আগে ঘুম থেকে উঠে বসে আছে। সুরভি ঘুমে। ফারাজাকে কোলে নিলাম। সকালে ঘুম থেকে উঠেই দুই গ্লাস পানি খাই। এটা আমার দীর্ঘদিনের অভ্যাস। কন্যাকেও পানি খেতে দিলাম। গোছল করলাম। তারপর আবার শুরু হলো জ্বর। আমি অনুভব করছি শরীরের তাপমাত্রা হুহু করে বাড়ছে। সাধারনত আমার কোনো অসুখ বিসুখ হয় না। দাঁতের সমস্যা ছাড়া আমার আর কোনো সমস্যা নেই। সকালে নাস্তা খেলাম সামান্য। আবার নাপা খেলাম একটা। গরম এক মগ চা খেলাম। মুহুর্তের মধ্যে জ্বর চলে গেলো। আজ আমার বাইরে কিছু কাজ ছিলো। তাই বাসা থেকে বের হলাম। বের হওয়ার আগে সুরভির সাথে সামান্য ঝগড়া করলাম। সুরভি এতটাই রাগ করেছে যে সারাদিনে আমাকে একবারও ফোন দেয় নি। এমন কি দুপুরে খেয়েছি কিনা সেটাও জানতে চায় নাই। দুপুরে আমি খেয়েছি। গরুর কালা ভূনা আর তন্দুল রুটি।

বিকেলের শুরুতে আবার জ্বর এলো।
পুরো শরীর কাঁপিয়ে জ্বর। তখন আমি মৎস ভবনের কাছে। আমি জানতাম জ্বর আবার আসবে। তাই পকেটে নাপা ট্যাবলেট রেখেছি। অবশেষে কি মনে করে যেন রমনা পার্কে চলে গেলাম। বহুদিন পর পার্কে এলাম! পার্কে হাঁটার পথ গুলো ভাঙ্গা ছিলো। সেগুলো মেরামত করা হয়েছে। এক বোতল পানি কিনে নাপা খেয়ে একটা বেঞ্চে বসে পড়লাম। উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েরা টিকটক করছে নানান ভঙ্গিমায়। আমি ভাবছি আর কিছুক্ষন পর সন্ধ্যা হবে অথচ সুরভি ফোন দিলো না! আগে কখনও এরকম হয়নি। পরী কি করছে? ফারাজা কি করছে? আমি কিছুই জানি না। বাধ্য হয়ে আমিই ফোন দিলাম। পরপর তিনবার। সুরভি ফোন ধরলো না। স্বামী জ্বরে যায় যায় অবস্থা আর স্ত্রী ফোন ধরবে না। এমন সময় এক ভিক্ষুক এলো। মেজাজ খারাপ। ভিক্ষুককে ধমক দিলাম। ভিক্ষুক আমার আচরনে বেশ হতবাক হলো। আমি বললাম, আমি ভিক্ষা দেই না। চা খেতে চাইলে খাওয়াতে পারি।

পার্কে বসেই এক বুড়োর কথা মনে পড়লো।
বুড়োর সারাতাই ঘুম আসে না। শুধু এপাশ আর ওপাশ করে। সারারাত ঘরে বাতি জ্বালিয়ে রাখে। বুড়ো ঘরেই ফযরের নামাজ পড়ে। তারপর হাঁটতে বের হয়। ডান দিকের বাড়িতে নতুন স্বামী স্ত্রী এসেছে। তাদের মধ্যে ভীষন মিল। স্বামী অফিসে গেলে স্ত্রী রান্না শেষ করেই পড়তে বসে। স্বামী বাসায় ফিরে সন্ধ্যায়। তারপর স্ত্রী নুডুলস রান্না করে দেয়। দুজন মিলে ব্যলকনিতে বসে খায়। তারপর স্বামী স্ত্রী দুজনেই ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে থাকে। আরেকজন স্ত্রীলোক আছেন। মহিলা সারাদিন কাজ করতেই থাকেন। ছাদে মূরগী পালেন। এই মহিলার একটা বিষয় আমার খুব ভালো লাগে। সে প্রতিদিন কাকদের দুপুরবেলায় খেতে দেয়। এসব চমৎকার দৃশ্য আমার আর দেখা হবে না ব্যলকনি থেকে। কারন আমার ব্যলকনির দেয়াল ঘেষেই বিশাল বিল্ডিং উঠে যাচ্ছে।

আমার গায়ে এখনও জ্বর।
জ্বর নিয়েই লিখছি। রাতের খাবার খেয়েছি অনেক আগেই। সুরভি স্যুপ বানিয়ে দিলো। গরম গরম এক বাটি খেলাম। গলার কাছে এখন আরাম লাগছে। নাক দিয়ে পানি পড়া বন্ধ হয়েছে। লেখাটা শেষ করেই একটা নাপা খেয়ে ঘুমিয়ে পড়বো। আজ আমার লেখার বিষয় ছিলো বাংলাদেশের মানুষ নিয়ে। বাংলাদেশে কোনো ভালো মানুষ নেই। প্রতিটা মানুষ বদ। বিরাট বদ। মসজিদের ইমাম সাহেবও বদ। কিছু ব্লগারও বদ। শিল্পপতিও বদ। সাহিত্যিক, সরকারী বেসরকারী চাকরীজীবি, মন্ত্রী, এমপি এবং তাদের ছত্রছায়ায় থাকা লোকজনও বদ। বিনা দ্বিধায় চোখ বন্ধ করে বলে দেওয়া যায় বাংলাদেশে কোনো ভালো মানুষ নেই। একজন মমতাবান পিতাও বাইরে বের হলে অমানুষ হয়ে যায়। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মানুষদের কথা জানি না। কিন্তু বাংলাদেশের কোনো মানুষ ভালো না।

আমি আসলেই একজন ভালো মানুষ।
অন্তত চারিপাশ দেখে শুনে আমার তাই মনে হয়। আমি কোনো দিন কারো ক্ষতি করি নি। চুরী করি নি। দূর্নীতি করি নি। অফিসে আমার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছি। পরিবারের দায়িত্ব পালন করছি। আমি কোনো দিন রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রসাব করি নাই। আমি কোনোদিন রাস্তায় ময়লা ফেলি নাই। যদি ময়লার গাড়ি না আসে। তাহলে ৫০ টাকা রিকশা ভাড়া খরচ করে ময়লার ডিপোতে গিয়ে ময়লা ফেলে আসি। আমি কোনো দিন রাস্তা ঘাটে মেয়েদের দিকে কুৎসিত ভাবে তাকিয়ে থাকি নাই। কোনো দিন কারো কাছ থেকে টাকা লোন নিই নাই। কোনোদিন কাউকে গালি দেই নাই। আমি সবাইকে সম্মান করে কথা বলি। দেশের সব মানুষকে আমি ভালোবাসতে চেষ্টা করি। বেশীর ভাগ মানুষ শুধু নিজের পরিবারের কথা ভাবে। কিন্তু আমি দেশের সব মানুষের কথা আমি ভাবি।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২১ রাত ১২:১৯
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×