আজ বৃহস্পতিবার। বাংলা জৈষ্ঠ্য মাস চলছে।
জৈষ্ঠ্য মাসের আজ ৫ তারিখ। আর আরবী মাসের ১৭ তারিখ। শাওয়াল মাস। শাওয়াল মাসটা কিন্তু গুরুত্বপূর্ন। কারন শাওয়াল মাসের মধ্যে সাক্ষী রোজা গুলো রাখতে হয়। ত্রিশটা রোজা করার পর, ছয়টা সাক্ষী রোজা রাখতে হয়। অবশ্য আমি রোজা রাখি না। আমার এক বন্ধু রোজা রাখে। এখন সে সাক্ষী রোজা রাখছে। বন্ধু কোরআন আর হাদীসের বাইরে কোনো বই পড়ে না। আমি তাকে অনুরোধ করেছিলাম- কিছু বই পড়তে। সে পড়ে না। বলে, অন্য বই আমাকে জান্নাত দিবে না। আমরা মুসলমানরা ইহকাল নিয়ে চিন্তা করি না। আমাদের চিন্তা পরকাল নিয়ে। আমি দেখছি, অনুভব করছি- আমার বন্ধুটি দিন দিন অধপতনের দিকে যাচ্ছে। সক্রেটিস, লেনিন, কার্ল মাক্স, আইনস্টাইন ইত্যাদি মানুষদের চিনতে চায়। জানতে চায় না। আজিব! বলে আমি শুধু নবিজিকে চিনতে চাই। উনিই আমাকে বেহেশতে নিবেন। আমার জন্য সুপারিশ করবেন।
আগামীকাল শুক্রবার।
বাজারে খুব ভিড় হবে। তাই আমি আজই বাজারে গেলাম। চিংড়ি মাছ কিনলাম দুই কেজি। ১২ শ' টাকা। মাঝারি সাইজ। চিংড়ি ফ্রাই খেতে কিন্তু দারুন লাগে। তাছাড়া চিংড়ি মাছ যে কোনো ভাজিতে দিলে স্বাদ বেড়ে যায়। হোক লাল শাক বা পুঁইশাক। এমন কি করলা ভাজিরে চিংড়ি মাছ দিলেও খেতে ভালো লাগে। কাঁচা আম নিলাম তিন কেজি। ৪০ টাকা করে কেজি। আম ডাল খেতে ভালো লাগে। ফার্ম এঁর মূরগী নিলাম ৫ কেজি। ১৭০ টাকা করে কেজি। চিকেন ফ্রাই খাই মাঝে মাঝে। রুই মাছ নিলাম একটা সাড়ে তিন কেজি। ছোট রুই মাছ খেয়ে আরাম পাওয়া যায় না। পোয়া মাছ নিলাম দেড় কেজি। মাঝে মাঝে পোয়া মাছটা খেতে ভালৈ লাগে। গরুর মাংস নিলাম দুই কেজি। এক কেজি কলিজা নিলাম। ছোট কন্যার জন্য আপেল নিলাম, মালটা নিলাম। নাসপাতি নিলাম।
সকালে গেলাম গ্যাস বিল দিতে।
টানা চল্লিশ মিনিট দাঁড়িয়ে ছিলাম। লাইন অনেক লম্বা। আধা ঘন্টা পর সিকিউরিটি গার্ড বলল, সার্ভার ডাউন আজ আর গ্যাস বিল নেওয়া হবে না। গতকাল আমি গ্যাস বিল দিতে এসেছিলাম। বলল, সার্ভার ডাউন। মানে কি? সার্ভার প্রতিদিন ডাউন থাকবে কেন? গতমাসেও বিল দিতে এসে তিন দিন ফিরে গেছি। তাদের এক কথা সার্ভার ডাউন। শেষে আমি রেগে মেগে গ্যাসের অফিসে গেলাম। তাঁরা আমার কথা আমলেই নিলো না। যাকেই বলি, সে আরেকজন কে দেখিয়ে দেয়। এভাবে ৫/৬ টা টেবিলে টেবিলে ঘুরলাম। ফলাফল শূন্য। তবে সিকিউরিটি গার্ড বলল, এক্সিম ব্যাংকে গ্যাস বিল নেয়। আপনি সেখানে জমা দিন। গেলাম মতিঝিলের এক্সিম ব্যাংকে। তাঁরা বিল নিলো। এক মিনিট সময়ও লাগলো না। অথচ সরকারী অফিসে এই বিল নিতে পাঁচ মিনিট সময় লাগতো।
আজ দুপুরে চায়নিজ খেয়েছি।
সুরভিকে বললাম, অনেকদিন চায়নিজ খাই না। আজ চায়নিজ রান্না কররো। সুরভি বলল এই গরমে? আমি বললাম- তাতে কি! রান্না করেছে সুরভি। ফ্রাইড রাইস, চিকেন ফ্রাই, চায়নিজ সবজি, চিংড়ি ফ্রাই। রান্না ভালো হয়েছে। সকালের নাস্তার পর এক কাপ চা না খেলে ভালো লাগে না। তেমনি চায়নিজ খাওয়ার পর ঠান্ডা কোক বা পেপসি না খেলে ভালো লাগে না। খাওয়ার পূর্নতা আসে না। দুপুরে খেয়ে দিলাম এক ঘুম। একদম সন্ধ্যায় ঘুম ভেঙ্গেছে। তবে ঘুমটা আনন্দময় হয়নি। এলোমেলো সব স্বপ্ন দেখেছি। দেখলাম- কিছু সাদা লুঙ্গি পরা লোকজন মারামারি করছে। তাঁরা সামনে যাকেই পাচ্ছে তার কল্লা ফেলে দিচ্ছে। ঘটনা চক্রে আমি তাদের সামনে পড়ে গেলাম। তাঁরা তরোয়াল উঁচু করেছে আমাকে মারবে। আমি দিলাম দৌড়। তারাও আমার পিছু ছুটলো। আমি দৌড়ের গতি বাড়িয়ে দিলাম। আমি জানি আমার সাথে দৌড়ে পারবে না।
গত কয়েকদিন ধরে ঢাকায় খুব গরম।
বৃষ্টিও হচ্ছে না। ছোট কন্যা ফারাজার খুব কষ্ট হয়। আমার ঘরে এসি নাই। এসি আমার পছন্দ না। কন্যা গরমে আরাম করে ঘুমাতে পারে না। এজন্য গত কয়েকদিন ধরে চার তলায় ঘুমাচ্ছি। চার তলায় এসি আছে। এসি ছাড়ি, ফ্যানও ছেড়ে রাখি। সুরভি বলে, ফ্যান বন্ধ করে দাও। আমি বলেছি, এসি কন্যা আর তোমার জন্য, ফ্যান আমার জন্য। ছোট ঘর মুহুর্তের মধ্যে পুরো ঘর ঠান্ডা হয়ে যায়। রাতে আমি খালি গায় ঘুমাই। এটা আমার ছোট বেলার অভ্যাস। শীত, বর্ষা গ্রীষ্ম সারা বছর আমি খালি গায় ঘুমাই। যাই হোক, ভোরের দিকে ঠান্ডায় আমি কাঁপছি। সুরভি আর ছোট কন্যা চাঁদর গায়ে দিয়ে আরাম করে ঘুমাচ্ছে। সুরভিকে ডেকে বললাম, এসি বন্ধ করো। আমি শীতে কাপছি! সুরভি বলল, রিমোট আমার কাছে না। খুঁজে দেখো কোথায়। এখন যদি একবার আমি বিছানা থেকে নামি তাহলে বাকি রাত আমার আর ঘুম হবে না।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মে, ২০২২ রাত ১:২৪