
আল্লাহর কসম আমি নাস্তিক নই।
ব্লগে বেশ কয়েকজনের ধারনা আমি নাস্তিক। কিন্তু আমি আমার মাথা অথবা কোরআন শরীফে হাত রেখে বলতে পারবো আমি নাস্তিক নই। হ্যাঁ আমি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি না। কোরআন তেলোয়াত করি না। বলা যায় ধর্মের নিয়ম কানুন কিছুই প্রায় মেনে চলি না। কিন্তু আমি নাস্তিক নই। ধর্ম আমি বুকে ধারন করি। আমার সবচেয়ে পছন্দের সূরা হচ্ছে- বাকারা। তারপর সূরা ফাতিহা। আমার ভীষন মন খারাপ হলে আমি সূরা বাকারা পড়ি। তখন আমার মন ভালো হয়ে যায়। নবীজির হাদীস গুলো থেকে আমি শক্তি পাই, সাহস পাই। ভরসা পাই। অনুপ্রেরনা পাই। যেমনঃ নবীজি (সাঃ) বলেছেন, যদি তুমি গোসত রান্না করতে চাও, তাহলে এক গ্লাস পানি বেশি দিয়ে দাও, যাতে তোমার গরীব প্রতিবেশীকে একটু দিতে পারো। আর যদি না দিতে চাও, তাহলে এমন সময় রান্না করবে, যখন প্রতিবেশীর বাচ্চা ঘুমিয়ে থাকে, গোসতের ঘ্রান পেয়ে বাবা-মাকে গোসত খাওয়ার কথা না বলে, গরীব বাবা মা, গোসত কিনে খাওয়াতে পারবে না, তখন মনে অনেক কষ্ট পাবে।
আমি দিন শুরু করি- আল্লাহকে স্মরণ করে।
বিছানা থেকে নামার আগে আমার প্রভুকে স্মরণ করি। তার কাছে ক্ষমা চাই। দয়া চাই। এমনকি রাতে ঘুমানোর আগে আমি আল্লাহকে স্মরণ করে ঘুমাই। তার দয়া কামনা করি। পাপের জন্য ক্ষমা চেয়ে ঘুমাই। কারন, আমি বেঁচে আছি আল্লাহর জন্য। আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। আল্লাহ চাইলে আমাকে করোনায় মেরে ফেলতে পারতেন। তিনি মহান তিনি আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। আমার কিছুই নেই, ব্যাংকে জমানো টাকা নেই। অথচ আমাকে একবেলা না খেয়ে থাকতে হয় না। আমি আমার রিজিক নিয়ে চিন্তা করি না। আমি শেষ নবীর উম্মত, আল্লাহর বান্দা। আল্লাহ আমাকে না খাইয়ে রাখবেন না। আমার সমস্ত কিছুর দায়িত্ব আল্লাহপাকের। আমার জন্য যা ভালো, আল্লাহ্ আমার জন্য তাই করেন। আল্লাহই আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। কাজেই আল্লাহ আমাকে অনেক দূর নিয়ে যাবেন। আল্লাহ্ তার বান্দাকে না খাইয়ে রাখেন না। একজন রাস্তার ভিক্ষুককেও আল্লাহ না খাইয়ে রাখেন না। কোনো না কোনো ভাবে খাবারের ব্যবস্থা ঠিকই করে দেন। এজন্য আল্লাহ্ পবিত্র কোরআনে বলেছেন, বলো আমার কোন কোন নিয়ামত অস্বীকার করবে?
আল্লাহকে না মেনে আমার উপায় নেই।
একবার ট্রেনে কাটা পড়ে যেতাম নিশ্চিত। একদিন রাতেরবেলা বাসায় ফিরছিলাম। রেললাইন হেঁটে পার হচ্ছিলাম। জায়গাটা অন্ধকার। হঠাত রেললাইনে উষ্ঠা খেয়ে পড়ে গেলাম। বেশ ব্যথা পেলাম। উঠে দাড়াবো সেই শক্তি নেই। এদিকে হঠাত দেখি ট্রেন আসছে। কিন্তু আমার শরীরে শক্তি নেই। উঠে দাঁড়াবার শক্তি নেই। আমি মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হলাম। চোখ বন্ধ করলাম। আল্লাহকে স্মরণ করলাম। ট্রেন চলে গেলো। কিন্তু আমি কাটা পড়লাম না। কিভাবে বেঁচে গেলাম আমি জানি না। আরেকবার সুন্দরবনে বাঘের কাছে পড়ে গেলাম। আমার দুই হাত দূরে বাঘ! দৌড়ে পালিয়ে বাঁচতে পারবো না। মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হলাম। চোখ বন্ধ করে আল্লাহকে স্মরণ করলাম। কিন্তু বাঘ আমাকে খেলো না। আমার দিকে একবার তাকিয়ে চলে গেলো। আরেকবার টাঙ্গাইলে যাওয়ার পথে আমাদের বাস খাদে পড়ে গেলো। মৃত্যু নিশ্চিত। আল্লাহকে স্মরণ করলাম। সেই বাস দূর্ঘনায় সাত জন মারা গেলো। বাকিরা সবাই আহত হয়ে হাসপাতালে ভরতি হলো। একমাত্র আমার কিচ্ছু হলো না। একটা আচড়ও গায়ে লাগেনি আমার। আল্লাহকে না মেনে, না বিশ্বাস করে উপায় আছে? অনুভব করতে চাইলে আল্লাহকে অনুভব করা যায়।
আমি যখন কোনো অন্যায় করি, আল্লাহ্ আমাকে সাথে সাথে শাস্তি দিয়ে দেন।
একদিন সকালে রেস্টুরেন্টে বসে নাস্তা করছি। হঠাত পায়ের বুড়ো আঙ্গুলে ব্যথা পেলাম। অথচ ব্যথা পাওয়ার কোনো কারন নেই। আমি দৌড়াচ্ছিলাম না, হাঁটছিলাম না। চুপ কর চেয়ারে বসে নাস্তা করছিলাম। অথচ বুড়ো আঙ্গুলের নখের ভিতর রক্ত জমে গেলো। আর কি সাঙ্ঘাতিক ব্যথা। একদিন গোছল করছিলাম। গায়ে সাবান মাখছি। গুণগুণ করে গান খাইছি। হঠাত আমার নখের মধ্যে কিছু সাবান ঢুকে গেলো। অতি সামান্য ঘটনা। কিন্তু টানা তিনদিন নখ ব্যথা করেছিলো। অথচ নখের কোথাও কোনো ক্ষত হয়নি। আমি বুঝে গেলাম, আমি কোনো অন্যায় করলে, কোনো বিষয়ে মিথ্যা বললে আল্লাহ আমাকে সাথে সাথে শাস্তি দিয়ে দেন। এরকম কিছু ঘটনার কারনে আমি নিজেকে বদলে নিয়েছি। এখন আমি মিথ্যা বলি না, মন্দ কাজ করি না। এজন্য আমার আর কোনোও সমস্যাও হয় না। আরো কিছু কিছু চমকপদ ঘটনা আছে। কাজেই আমার আল্লাহকে বিশ্বাস না করে উপায় নেই। কতিপয় ব্লগারদের কাছে আমার অনুরোধ আমাকে নাস্তিক ভাববেন না। আমি একজন ধার্মিক মানুষ। আমি মুসলমান। কোরআন আমার অন্তরে।
ধরুন আমি একটা গল্প লিখলাম।
গল্পে একটা চরিত্র আছে, সে নাস্তিক। সে সব সময় ধর্ম ও কোরআন হাদীস নিয়ে উলটা পালটা কথা বলে। আবার ধরুন, আমি আরেকটা গল্প লিখলাম। সে গল্পে এক চরিত্র খুব ধার্মিক, সে সারাক্ষণ ধর্মের গুণগান করে। তার মানে এই যে আমি নাস্তিক বা আমি আস্তিক। আমার লেখার চরিত্রদের দোষ, গুণ, কথা এসব আমার উপর চাপিয়ে দেওয়া অন্যায়। তবু কেউ কেউ বলবেন, আমি সকালে এক কথা বলি, বিকালে আরেক কথা বলি। তাছাড়া কতিপয় লোকজন আমাকে জোর করে নাস্তিক বানাতে পারলে যেন খুশি হয়। যেমন ব্লগার- সাড়ে চুয়াত্তর, নতুন, মহাজাগতিক চিন্তা। যাইহোক, আমি এই পোস্ট লিখেছি শুধু ঈশ্বরের গুণগান করার জন্য। আপনারা আমাকে যা ভাবার ভাবুন। আমার দুনিয়া সহজ সরল ও সুন্দর। ভালো কোনো পীর পেয়ে গেলে আমি তার মুরিদ হতে রাজী আছে। আল্লাহকে পেতে হলে আগে যেমন নবীজিকে পেতে হয়। তেমনি নবীকে পেতে হলে একজন ভালো পীরের মুরিদ হতে হয়। মুরশিদ ছাড়া সামনে এগোনো যায় না। আসুন, আমরা ধর্মকে আকড়ে ধরে জীবন গড়ে তুলি। ধর্মের বাইরে শান্তি নেই।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ২:০৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


