
এই শহরে আপনি কিছুতেই সুস্থ থাকতে পারবেন না।
একটা অসভ্য শহর। একটা ভয়ঙ্কর দুষিত শহর। ডাক্তাররা বলেন, ধুলো ময়লায় যাবেন না। হ্যাঁ ঢাকা শহরের কিছু এলাকায় না যাওয়াই মঙ্গল। যেমন গুলিস্তান, সায়দাবাদ, গাবতলী, যাত্রাবাড়ি, মিরপুর-১০, গোড়ান। এই এলাকা গুলো খুবই নোংরা। আসলে পুরো ঢাকা শহরটাই নোংরা। লোকাল বাসে একেবারেই চলাফেরা করবেন না। টেম্পু'তে উঠবেন না। ফুটপাত থেকে কেনাকাটা করবেন না। ফুটপাতের কোনো খাবার খাবেন না। যতক্ষন রাস্তায় থাকবেন মাস্ক ব্যবহার করবেন। স্বপ্ন, আগোরা এখান থেকে বাজার সদাই করবেন। বাজারে যাবেন না। ঢাকা শহরের সব গুলো বাজারই খুব বেশি নোংরা।
রমনা পার্কে যাবেন, তবে ভোরবেলা।
দুপুরে বা বিকেলে কখনই না। প্রয়োজনীয় কেনাকাটা অনলাইন থেকেই করাই ভালো। হয়তো টাকা কিছুটা বেশি লাগবে, তা লাগুক। তবু দুষিত পরিবেশে যাওয়া উচিৎ হবে না। এই শহর শুধু নয়, এই শহরের সমস্ত মানুষ গুলোও দুষিত হয়ে গেছে। কাজেই সব মানুষের সাথে চলাফেরা করার দরকার নেই। কোথাও চলাফেরা করার সময় গাড়ির জানালা খোলা রাখবেন না। তাহলে ভিক্ষুক এসে গাড়ির ভেতর হাত ঢুকিয়ে দেবে। এমনকি বখাটেরা মুহুর্তের মধ্যে আপনার মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে চলে যাবে। ভিক্ষুক গুলো অনেক বেশি বদ হয়ে গেছে। রাস্তায় সিগনালে গাড়ি থামলেই ভিক্ষুক এসে গাড়ির উপর হামলে পড়ে। মনে হয় যেন গাড়ির কাচ ভেঙ্গে ফেলবে। কাচে মুখ লাগিয়ে ভিক্ষা চাইতেই থাকে। একজনকে ভিক্ষা দিলেও শান্তি নাই, আরো দশজন এসে হাজির হবে।
সবচেয়ে ভালো হয়- এই শহর ছেড়ে চলে যেতে পারলে।
অবশ্য গ্রামে গিয়েও শান্তি নেই। গ্রামে জটিলতা কুটিলতা আরো বেশি। তাই উচিৎ সুযোগ সুবিধা থাকলে উন্নত কোনো দেশে চলে যাওয়া। এই পোড়া দেশে, এই দুষিত দেশে না থাকাই ভালো। দেশের এলিট শ্রেনীরা বিদেশে বাড়ি গাড়ি করে ফেলেছে। তাদের এক পা উন্নত দেশে। তাদের ছেলেমেয়েরা উন্নত জীবনযাপন করেছে। সহজ সরল সত্য কথা হলো- আমাদের দেশটা জাহান্নাম। কোথাও শান্তি নাই। এই শহরের প্রতিটা মানুষ অমানুষে পরিনত হয়েছে। সামান্য ট্রেড লাইসেন্স করাতে গেলেও ঘুষ দিতে হয়। একজন সাংসারিক মানুষও যখন ঘর থেকে বাইরে বের হয়, সে-ও অমানুষে পরিনত হয়। অথচ সে একজন মমতাবান পিতা। মানবিক স্বামী। পৃথিবীর সমস্ত দরিদ্র দেশ গুলোর মানুষ, পরিবেশ এরকমই হয়ে থাকে। মসজিদ, কোরআন, হাদীস মানুষকে ভালো বানাতে পারছে না।
বিশেষ বিশেষ দিন গুলোতে ঘর থেকে একদম বের হবেন না।
যেমন পহেলা বৈশাখ, পহেলা ফালগুণ, হ্যাপি নিউ ইয়ার ইত্যাদি। ঢাকা শহরে কোথাও না কোথাও সারা বছরই মেলা লেগেই আছে। এই সমস্ত মেলা গুলোতে যাবেন না। হাজার হাজার মানুষ, ধুলো আর ধুলো। হোক সেটা বানিজ্য মেলা অথবা বইমেলা। ভিড়ের জায়াগা গুলো একদম এড়িয়ে যাবেন। রাস্তায় বের হলেই জ্যামে আটকে যাবেন। তাই খুব প্রয়োজন না হলে রাস্তায় বের না হওয়াই ভালো। সামান্য ফার্মেসী থেকে ওষুধও কিনতে যাবেন না। অনলাইন থেকে কিনুন। ভোগান্তি কম হবে তাহলে। অবশ্য অনলাইন থেকে কেনাকাটা করে শান্তি পাবেন না। তাঁরা আপনাকে ভোগাবে। আজ আমি কন্যার জন্য ৯শ' টাকা দিয়ে এক প্যাকেট দুধ অর্ডার করেছি। তাঁরা আমাকে দুটা নাপা সিরাপ দিয়ে গেছে। এই হলো আমাদের দেশের অনলাইন সার্ভিসের নমুনা।
সহজ সরল সত্য কথা হলো- এই দেশে কোথাও শান্তি নেই।
রাস্তাঘাট, মানুষজন সমস্ত কিছু দুষিত হয়ে গেছে। সামান্য ফুটপাত দিয়েও আপনি শান্তিতে হাঁটতে পারবেন না। ফুটপাতে নানান রকম দোকানপাট, তাদের কিছু বললে, তাঁরা বলে নিয়মিত টাকা দেই পুলিশকে এবং স্থানীয় নেতাকে। এরপর একপাল বদমাশ ফুটপাতে বাইক উঠিয়ে দেয়। বাজারে যাবেন, সেখানে কিছু কিনতে গেলেই তাঁরা আপনাকে ঠকাবে। মোটকথা এই দেশের কোথাও শান্তি নেই। ঘরে বাইরে, অফিস আদালতে শান্তি নেই,। রাজনীতিতে শান্তি নেই, প্রেম ভালোবাসায় শান্তি নেই, খাদ্যদ্রব্যে শান্তি নেই। রাজনীতিবিদদের ছত্রছায়ায় থাকা লোকজন টাকার পাহাড় গড়েছে। তাঁরা এখন এমপি হতে চায়। তাঁরা বলে মানুষের সেবা করতে চাই। আসল কথা হচ্ছে- সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকার জন্য আপনাকে এই দেশ থেকে পালাতে হবে। নইলে কপালে দুঃখ আছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ২:১০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


