
চারপাশে খুব মিষ্টি গন্ধ!
অসংখ্য ফুলে ভরে আছে চারপাশ। এত ফুল আগে কখনো দেখিনি। সাদা, নীল, হলুদ, গোলাপি সব রকমের ফুল আছে। যেদিকেই চোখ যায় শুধু থোকা থোকা ফুল আর ফুল। আর কিছু নেই। এত সুন্দর গন্ধ যেন নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে।
আমি বললাম, এত ফুল কেন?
একটা মোটা কর্কশ কন্ঠ বলল, ফুল তোমার ভালো লাগে না?
লাগে। কিন্তু এত ফুল কেন?
ফুল দিয়ে তোমাকে স্বাগত জানানো হচ্ছে।
কোথায় নিয়ে যাবে আমাকে? ফুলের গন্ধে নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে।
কর্কশ কন্ঠ বলল, আসলে আমরা একটা ফুলের বাগানের ভিতর দিয়ে যাচ্ছি।
কোথায় নিয়ে যাচ্ছো আমাকে?
কর্কশ কন্ঠ বলল, এখন চুপ করুন। আর কোনো কথা নয়। আমার হাত ধরুন। তাড়াতাড়ি চলুন।
আমার তো জুতো নেই। খালি পা।
মসৃন পথে হাটতে জুতো লাগে না।
আমি জিজ্ঞেস করলাম না- আপনি কে?
শুধু হেটে চলেছি সুন্দরের পথে। বিচিত্র রঙের ফুল গুলো চোখে যন্ত্রণা ধরিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে তীব্র গন্ধ স্নায়ু অবশ করে দিচ্ছে। কিছু দেখতে পাচ্ছি না। লোকটা হাত ধরে নিয়ে যাচ্ছে। লোকটা আলখাল্লা পরা। মুখটা পরিস্কার দেখা যাচ্ছে না। শিশির ভেজা পথ। ঠান্ডা, ভেজা মাটি। গা শিরশির করছে, শীত করছে।
পথ কখন শেষ হবে? ক্ষুধাও পেয়েছে বেশ।
লোকটা বলল, চুপ থাকুন। শুধু এতটুকু শুনে রাখুন আপনি ভাগ্যবান।
আমি তো কিছু মনে করতে পারছি না।
মনে করার দরকার কি?
লোকটার কথা শুনে আমি হাসলাম।
লোকটা বলল, হাসুন। হাসলে মাটি উর্বর হবে। তখন আরো বেশি ফুল ফুটবে।
আমি বললাম, তুমি কেন হাসছো না?
আমার হাসতে নেই।
আমি বললাম, শরীর মাটির সাথে মিশে যাবে। শরীরটা আসলে কিছু নয়।
সঠিক কথা। যখন শরীর থাকবে না, তখন আপনি সব কিছুর মধ্যে মিশে যাবেন।
সেটা কেমন?
এই ফুল, মাটি, বাতাস, শিশিরের মধ্যে মিশে যাবেন। তখন কেউ ভালো না বাসলেও দুখ লাগবে না।
কিছুটা বিরক্ত হয়ে বললাম, আমি আর হাটতে পারছি না। এবার চলো ফিরে যাই।
কোথায় ফিরে যাবে?
তাই তো কোথায় যাবো? কিছুই তো মনে পড়ছে না। আমি ভাবনায় পড়ে গেলাম।
লোকটা বলল, তুমি যেখান থেকে এসেছিলে সেখানেই তোমাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
কোথায় বলতো?
যেখানে তুমি ছিলে। আকাশ বাতাস গাছপালা আর শিশিরের মধ্যে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


