somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

নির্বাচন ২০২৪

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মন্ত্রী, এমপি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ভীষন ব্যস্ত।
ঢাকার চেয়ে গ্রামে নির্বাচনের আমেজ অনেক বেশি। নির্বাচন মানেই এক উৎসব পুরো দেশ জুড়ে। প্রতিটা প্রার্থী নির্বাচনী প্রচারণায় ভীষন ব্যস্ত। নায়িকা মাহিয়া, নায়ক ফেরদৌস, ক্রিকেটার শাকিব, মোর্তজা থেকে শুরু করে রইস উদ্দিন, মানিক বেপারি, মর্জিনা- সকলেই ব্যস্ত। কারন, তারা দেশকে ভালোবাসে। তারা নির্বাচিত হয়ে দেশের কল্যাণে কাজ করবেন। আমাদের এলাকায় যে লোক আওয়ামীলীগের প্রার্থী হয়েছেন তাকে আমি কোনোদিন দেখি নাই। কিন্তু তার পোষ্টার দিয়ে পুরো ঢাকা ৮ আসন ছেয়ে গেছে। পোস্টারে লেখা 'ঢাকা -৮ আসন হবে স্মার্ট'। উনি আমাদের আসনটি স্মার্ট করে দিবেন। খুব ভালো কথা। কিন্তু যারা গত পনের বছর ছিলো তারা আমাদের আসনটি স্মার্ট করলো না কেন? এখন কি তাদের শাস্তি হওয়া উচিত না? দেশের মানুষ জানে মন্ত্রী এমপি হবার আগে অনেক কথাই বলেন। যা কোনো দিন বাস্তবে রুপ নিবে না। তবু আমরা তাদের মিথ্যা কথা গুলি মন দিয়ে শুনি।

মূলত যারা মন্ত্রী, এমপি হবে -তাতে আপনার আমার কোনো লাভ নাই।
তারা কি করবেন? চুরী করবেন, দূর্নীতি করবেন, বিদেশে টাকা পাঠাবেন। লণ্ডন আমেরিকা অথবা কানাডায় ঘর বাড়ি করবেন। তাদের পরিবার উন্নত দেশে উন্নত জীবনযাপন করবে। আর দেশে দরিদ্র লোকের সংখ্যা বাড়বে। বেকারদের সংখ্যা বাড়বে। অভাবী মানুষদের সংখ্যা বাড়বে। আমাদের দেশে দরকার মাওলানা ভাসানীর মতোন মহান নেতা। সৎ এবং দক্ষ। লোভহীন একজন মানুষ। আমাদের দরকার শেখ মুজিবের মতো মানুষ। আমাদের দরকার তাজউদ্দীনের মতো মানুষ। পুলক, শাহজাহান সিরাজ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মাহবুবউল আলম হানিফ এনারা কি মাওলানা ভাসানির সমতুল্য? নিজের আখের গোছাতে, নিজের অপরতাধ লুকাতে এবং ক্ষমতার জন্য কতিপয় লোক এমপি, মন্ত্রী হতে চাচ্ছেন। শেখ হাসিনাও তাদের সুযোগ দিচ্ছেন। হয়ত শেখ হাসিনা মনে মনে ভাবছেন, সমস্যা কি? নাটাই তো আমার হাতে রয়েছেই। অর্থ্যাত দিন শেষে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশ এবং সমাজ।

সরকারি চাকরি পেতে হলে ঘুষ দিতে হয়।
ঘুষ দিয়ে চাকরি পাওয়ার পর, সেই টাকা অনায়াসেই তুলে নেওয়া যায়। লোকজন টাকা দিয়ে পুলিশে জয়েন করে। তারপর সেই টাকা তুলতে ঘুষ খেতে হয়। অনেক পুলিশ টাকা দিয়ে মন মতো জায়গায় নিজের পোস্টিং করে। যেন অনেক ঘুষ পাওয়া যায়। ঠিক তেমনি মন্ত্রী, এমপিরা নির্বাচনের সময় অনেক টাকা ইনভেস্ট করে। দশ টাকা ইনভেস্ট করলে এক হাজার টাকা তুলে নেয়। এটা খুব ভালো ব্যবসা। এজন্যই লোকজন মন্ত্রী এমপি হবার জন্য এত ব্যকুল। এই দেশকে ভালোবেসেছেন মাওলানা ভাসানী আর শেখ মুজিব। বাকিসব চাটার দল। নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত। যদি এমন একটা নিয়ম থাকতো যারা মন্ত্রী, এমপি কাউন্সিলর হবেন- তাদের ব্যাংক ব্যালেন্স কিছু থাকতে পারবে না। তারা শুধু দেশের জন্য কাজ করে যাবেন। তাহলে কেউ রাজনীতি করতো না। মূলত টাকা আর ক্ষমতার জন্য লোকজন মন্ত্রী, এমপি হবার জন্য হুমড়ি খেয়ে পরেছেন। দেশের প্রতি কারো টান নেই। এই জন্যই আজ খালেদা জিয়ার এই অবস্থা। তারেক জিয়ার এই অবস্থা। বিএনপির এই অবস্থা। ঠিক একই অবস্থা হবে একদিন আওয়ামীলীগের।

গ্রামের লোকজন নির্বাচন এলে খুশি হয়।
ঢাকা থেকে প্রার্থীরা গ্রামে যায়। দশ হাতে টাকা বিলায়। উড়ায়। কোটি কোটি টাকা। মাইকওলাদের ভালো ব্যবসা হয়। ছাপাখানার ভালো ব্যবসা হয়। এলাকার বেকার ছেলেপেলেদের ভালো ব্যবসা হয়। আজকাল তো সব অনূষ্ঠান শেষে গান বাজনার ব্যবস্থা রাখতেই হয়। নইলে মিটিং মিছিলে গ্রাম্বাসী আগ্রহ পায় না। অনেকে ঢাকা থেকে শিল্পী ভাড়া করে নিয়ে যায়। জমজমাট আয়োজন। এই সময় স্থানীয় সাংবাদিকরা বেশ ভালো ইনকাম করতে পারে। মসজিদ মাদ্রাসায় ভালো টাকা আয় করে। স্থানীয় বার্বুচিরও ইনকাম ভালো হয়। ডেকোরেটর ব্যবসা তো দারুন হয়। চেয়ার টেবিল, সামিয়ানা, সাউন্ড বক্স আগে না গেলে ভাড়ায় পাওয়া যায় না। অনেক ব্যবসায়ী প্রার্থীদের টাকা দেয় নির্বাচন সঠিক ভাবে সম্পন্ন করার জন্য। এমপি হওয়ার জন্য ১০/১৫ কোটি টাকা খরচ করতেও সমস্যা নেই প্রার্থীদের। যার টাকার জোর বেশি সে তত এগিয়ে। নির্বাচন কি হবে? কেমন হবে দেশবাসী জানে? এবার নির্বাচনে ৩৫% মানুষ ভোট দিতে যাবে কিনা সন্দেহ। এটা আওয়ামীলীগ ভালো করেই জানে। ভোটের প্রতি মানুষ আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। এটা শেখ হাসিনার অবদান। রাজনীতিকে মানুষ ঘৃণার চোখে দেখে এটাও শেখ হাসিনার অবদান।

আমাদের পার্লামেন্ট হয়ে গেছে রঙ্গমঞ্চ।
কেউ কবিতা বলছে, কেউ গান গাইছে। কেউ অভিনয় করছে। কেউ তালি বাজাচ্ছে। কেউ মুচকি মুচকি হাসছে। একজন জোকারকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে ইউক্রেন বাসীর শিক্ষা হয়েছে। কিন্তু আমরা তাদের কাছ থেকে শিক্ষা নেইনি। আমাদের পার্লামেন্টে অসহায় ও দরিদ্রদের কথা কেউ বলে না। বেকারদের কথা কেউ বলে না। দূর্নীতিবাজদের কথা কেউ বলে না। শিক্ষার মান নিচে নেমে গেছে সেই কথা কেউ বলে না। সরকারী হাসপাতালে দালাল, সেই কথা কেউ বলে না। জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে কয়েক গুন, সেই কথা কেউ বলে না। ছাত্রলীগের মাস্তানীর কথা কেউ বলে না। গার্মেন্সের মেয়েদের দুঃখের কথা বলে না। মধ্যপাচ্যের প্রবাসীদের দুঃখকষ্টের কথা কেউ বলে না। ফুটপাত দিয়ে হাটা যায় না। দুই মেয়র আজও ফুটপাত দখল মুক্ত করতে পারে নাই, সে কথা কেউ বলে না। সিনএনজি ওলারা মিটারে যায় না, সেই কথা কেউ বলে না। সবাই শুধু শেখ মুজিব আর শেখ হাসিনার গুনগান নিয়ে ব্যস্ত। আমার ওস্তাদ চাঁদগাজী ঠিকই বলেছেন, পার্লামেন্টে জোকার দিয়ে ভরে গেছে।

আওয়ামীলীগ অনেক করেছে।
আওয়ামী মেট্রোরেল করেছে, পদ্মাসেতু করেছে, উড়াল সড়ক করেছে, এলিভেটেট এক্সপ্রেসওয়ে করেছে, টার্নেল করেছে, শত শত রাস্তা করেছে, এয়ারপোর্ট বড় করেছে। বহু কিছু করেছে- কথা সত্য। সেই সাথে আওয়ামীলীগের কল্যাণে নব্যধনীদের সংখ্যা বেড়েছে। ফ্লাট, গাড়ী, জমি, গাড়ী, বাইক বিক্রি অনেক বেড়েছে। রাজনীতিবিদ এবং তাদের ছত্রছায়ায় থাকা লোকজন ছুটি কাটাতে যাচ্ছে ইউরোপ নয়তো আমেরিকা, কানাডা। এদিকে দেশে ভিক্ষুক, অসহায় ও দরিদ্র লোকের সংখ্যা কয়েক গুন বেড়ে গেছে। চোর, ছিনতাইকারী বেড়েছে সীমাহীন। আমার ওস্তাদ বলেছেন, দেশের উন্নয়ন মাপতে রাস্তা, ব্রীজ, সেতু, সড়ক ইত্যাদির কথা বলাটা বোকামী। এবং ছেলেমানুষী। একটি দেশের উন্নয়ন মাপতে হয়- বেকারত্বের হার, মানুষের শিক্ষা ও দক্ষতা, চাকুরী সৃষ্টির হার, মানুষের মাথাপিছু আয় ও ক্রয় ক্ষমতা, জীবন যাত্রার মান ইত্যাদির ভিত্তিতে। আমি চাই দেশের মানুষ ভালো থাকুক। সুস্থ থাকুক। তিনবেলা খেয়েপরে বেচে থাকুক। রাস্তায় বের হলেই যেন ভিক্ষুক চোখে না পড়ে। বেকার চোখে না পড়ে। অসহায় ও দরিদ্র মানুষ চোখে না পড়ে। উন্নয়নের মহাসড়কে ভিক্ষুক, বেকার, দরিদ্র মানুষদের মানায় না।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:১৭
১৭টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ক্ষমতার আসনে বেশী দিন থাকা শাসকদের মাঝে খালেদা জিয়া সর্বসেরা

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:০৩



আমার এক ছাত্র চাকুরীর পরীক্ষায় ৫২ নম্বর পেয়ে ৩ জনের মধ্যে প্রথম হয়েছিল। দ্বিতীয় জন পেয়েছিল ৪৯ নম্বর এবং তৃতীয় জন পেয়েছিল ৪৭ নম্বর। সে হিসাবে খালেদা জিয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেগম খালেদা জিয়াঃ এক দৃঢ়চেতা, সাহসী অধ্যায়ের সমাপ্তি

লিখেছেন সামহোয়্যারইন ব্লগ টিম, ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৩৭



প্রিয় ব্লগার,
আমরা অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন এবং বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বেগম খালেদা জিয়া আর আমাদের মাঝে নেই, ইন্না লিল্লাহি ওয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপসহীনতার নাম খালেদা জিয়া: যন্ত্রণার বিনিময়ে গণতন্ত্রের প্রাচীর

লিখেছেন জুয়েল তাজিম, ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:০৭



ছোট দুই সন্তানকে নিয়ে একাত্তরের বিভীষিকায় বন্দিত্ব, অল্প বয়সেই বিধবা হওয়া—বেগম খালেদা জিয়ার জীবনের শুরুটাই ছিল যন্ত্রণার অধ্যায়। এরপর ইতিহাস যেন তাঁকে একের পর এক কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি দাঁড়... ...বাকিটুকু পড়ুন

খালেদা জিয়ার মৃত্যু রাজনীতির মাঠে বিরাট শূন্যতা

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১৯

 
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বেগম খালেদা জিয়া এক উল্লেখযোগ্য চরিত্র। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর বিএনপির টালমাটাল পরিস্থিতিতে তিনি দলটির হাল ধরেন। সেনানিবাসে গড়ে উঠা দলটাকে রাজপথে বেড়ে উঠতে গৃহবধূ থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খালেদা জিয়া মরিয়া প্রমাণ করিলেন , তিনি মরেন নাই ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৩৮


বেগম খালেদা জিয়া মারা গেছেন। এই খবরে জাতি শোকাহত। কিন্তু একদল মানুষ আছে যারা উনার মৃত্যুর পরেও নিজেদের রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক স্বার্থে তার মৃত্যু নিয়ে ঘৃণ্য মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। বদনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×