somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রান্নাবান্না

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৫:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমি যখন ছোট মাকে দেখতাম প্রায়ই অসুস্থ থাকতো।
মা ছাড়া তো বাসায় রান্না করার কেউ নাই। সকালে হোটেলের নাস্তা খাই। দুপুর এবং রাতে বাসায় খেতে হবেই। মা কোনো রকমে রান্না করতো। আমি থাকতাম মার পাশে পাশে। এমনকি মা ওয়াশরুমে গেলেও শাড়ির আচলটা বের করে রাখিতো। আমি মায়ের শাড়ির আচল ধরে বসে থাকতাম। যাইহোক, মা রান্না করতো। মাঝে মাঝে আমাকে বলিতো, তরকারিটা দশ মিনিট পর চুলা থেকে নামিয়ে দিছ। এরকম টুকটাক কাজ প্রায়ই করতাম। আগ্রহ নিয়েই করতাম। প্রতিটা মানুষেরই রান্না শিখে রাখা দরকার।

মাকে বলতাম পিঠা খাবো। মা বলতো চাল গুড়ো কে করবে?
আমি করবো মা। মা চাল ভিজিয়ে রাখিতো। আমি রাতে খাওয়া দাওয়া শেষ করে চাল গুড়ো করতে বসতাম। তখন অল্প বয়স। ফাকিবাজি কি বুঝতাম না। যে কাজই করতাম মন দিয়ে করতাম। সেই সময় আমাদের এলাকায় অনেক বাড়িতে চাপকল ছিলো। আমি বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাপকল টিপে লোকজনের বোল বালটি ড্রাম ভরে দিতাম। চাপকল চাপতে আমার বড় ভালো লাগতো। মার হাতের রান্না ভালো ছিলো। মজা করে খেতাম। মার রান্না এখন আমি মিস করি। এখনকার বউ ঝিরা কি রান্না করে বুঝি না। স্বাদ পাই না। এখন মা রান্না করে না। বলে, রান্না করা ভুলে গেছি। আর রান্না করতে গেলেও আগের মতো স্বাদ হয় না। যে দিন যাউ, সেটা আর ফিরে আসে না। এজন্যই গান আছে, আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম।

মাঝে মাঝে রাতে ভাত খেতে ইচ্ছা করতো না।
তখন নুডলস রান্না করে খেতাম। ম্যাগি নুডলস। রান্না করতে সময় লাগতো না। কয়েকদিন আগে নুডলস রান্না করতে গেলাম। বাসার সবাই খাবে। রান্না করতে গিয়ে দেখি, সব ভুলে গেছি। এক কড়াই নুডলস আলু ভর্তার মতো হয়ে গেলো। আমার মনটা খারাপ হয়ে গেলো। কিন্তু আমার বাসায় সবাই সেই ভর্তা নুডলস আগ্রহ নিয়ে হাসি মুখে খেলো। আমি বুঝতে পেরেছি, তারা আমাকে খুশি করার জন্যে অতি অখাদ্য নুডলস হাসিমুখে খেয়েছে। আমার ইচ্ছে ওদের আরেকদিন নুডলস রান্না করে খাওয়াবো। তারা বুঝুক অন্তত আমি নুডলস টা খারাপ রান্না করি না। আজ যদি বাসায় তাড়াতাড়ি ফিরতে পারি তাহলে আজই নুডলস রান্না করিব। ইনশাআল্লাহ।

সুরভি প্রেগন্যান্ট।
আমি স্পষ্ট বলে দিয়েছি, তোমার রান্নাবান্না করার দরকার নেই। তুমি বিশ্রামে থাকো। হোটেল থেকে খাবার এনে খাবো। সুরভি বলল, একবেলা দুইবেলা হলে সমস্যা ছিলো না। টানা নয় দশ মাস হোটেলের খাবার খাওয়া অসম্ভব। আমি নিজেই রান্না করতে পারবো। সে কষ্ট করে রান্না করতো। একদিন সুরভির শরীর খুব খারাপ করলো। বললাম, আজ আমি রান্না করবো। কিভাবে রান্না করতে হয় আমায় বলে দাও। সুরভি বিছানায় শুয়ে শুয়ে আমাকে বলে দিলো। জীবনের প্রথম আনুষ্ঠানিক ভাবে নিজের হাতে রান্না করতে শুরু করলাম। রান্না করা বিরাট দিকদারি। অনেক সহ্য আর ধৈর্যের ব্যাপার। সুস্থ ভাবে বেচে থাকার জন্য পুষ্টিকর খাবার খাওয়া প্রয়োজন। শুধু মাত্র ভুলভাল খাবার খাই বলেই আমাদের ডাক্তারের কাছে ছুটতে হয়।

যাইহোক, সেদিন গরুর মাংস রান্না করলাম।
করলা ভাজি করলাম। ডাল করলাম। গরুর মাংস জাস্ট ভূনা করেছি। খেতে মন্দ হয় নাই। আলু দিয়ে করলা ভাজি। আর ডাল। রান্নাবান্না করা অনেক জটিল বিষয়। সুরভি রান্নাবান্না ভালো করে। ভবিষ্যতে তার একটা রেস্টুরেন্ট দেওয়ার ইচ্ছে আছে। আমার কন্যা ফারাজা। তার মাত্র চার বছর বয়স। দেখলাম রান্নাবান্ন নিয়ে তার দারুণ আগ্রহ। সুরভি রান্না করতে গেলে, ফারাজা পিড়ি নিয়ে তার মায়ের পাশে বসে থাকে। মাঝে মাঝে বলে, তরকারি টা আমি নাড়া দেই, চুলাটা কমিয়ে দেই। পাকনা মেয়ে আমার। রাতে ঘুমোবার সময় বলে বাবা আমার হাত আর পায়ের আঙুল গুলো ফুটিয়ে দাও। চুল গুলো টেনে দাও। আমি মনে মনে বলি, লাইফ ইজ বিউটিফুল।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৫:৪৪
১০টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আওয়ামী লীগ বর্তমানে বিজেপির বাংলাদেশি শাখা.....

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:২৭


হিসাবে দায়িত্ব পালন করছে এমন মন্তব্য করেছেন কলকাতার সাংবাদিক ও লন্ডন ভিত্তিক একটিভিস্ট অর্ক ভাদুড়ী। ফাইনালি কলিকাতার একজন দাদা বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। যে হারে কলিকাতার ফাটাকেস্ট শুভেন্দু ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটা জনমত জরিপ....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৯:৩১

একটা জনমত জরিপ....

নিজ উদ্যোগে একটা জরিপ কাজে গত কয়েক দিন বিভিন্ন শ্রেনি পেশার মানুষদের সাথে কথা বলেছি। নিজের রাজনৈতিক অবস্থান থাকলেও নিরপেক্ষ মতামত জানতে, বুঝতে নিজেকে শতভাগ নিরপেক্ষ রেখেছিলাম। কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভাষা (বাংলা) তুমি কার? (বাঙ্গালী কে তবে আর কাহার বা বাংলা ভাষা ??)

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭


'পতিত ও পতিতা' নিয়ে ব্লগার 'ভুয়া মফিজ' বেশ ক্যাচালে জড়িয়ে পড়েছিলেন। খানদানী ভাষাবিদেরা তাকে ভাষা নিয়ে অনেক পাঠ দিয়েছিলেন। একথা মানতে দ্বিধা নেই যে, খানদানী ভাষাবিদেরা মনে করে শুদ্ধভাষা... ...বাকিটুকু পড়ুন

উপন্যাস 'কৃষ্ণকান্তের উইল' পড়েছেন?

লিখেছেন রাজীব নুর, ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৬



রবীন্দ্রনাথ যখন বাচ্চা পোলাপান-
তখন বঙ্কিমচন্দ্র পুরোদমে লেখালেখি করে যাচ্ছিলেন। সেই সাথে করতেন চাকরি। রবীন্দ্রনাথ বঙ্কিমচন্দ্রের বই আগ্রহ নিয়ে পড়তেন এবং হয়তোবা মনে মনে ভাবতেন, আরে এরকম গল্প... ...বাকিটুকু পড়ুন

বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আপনি আমন্ত্রিত....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৯

প্রিয় সুহৃদ,

আচ্ছালামুয়ালাইকুম।
আমার গুম জীবন এবং গুম পরবর্তী সত্য ঘটনাবলী নিয়ে লেখা 'গুম এবং অতঃপর' এবং 'দ্যা আনটোল্ড স্টোরি' (২০২০-২০২১ সালে সিএনএন, আল-জাজিরা এবং বিবিসি চ্যানেলে আমার নাম/পরিচয় গোপন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×