somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কলকাতার জীবনযাত্রা কেমন ছিলো?

২২ শে অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ মানবসভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ যুদ্ধ।
১৯৩৯ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল, অর্থ্যাৎ টানা ছয় বছর যুদ্ধ হয়। যুদ্ধের মূল কারণ ছিল মিত্র শক্তির এক পক্ষ চুক্তি। মিত্র শক্তির এই একপক্ষ চুক্তি জার্মানিরা মেনে নিতে পারেনি তারা ভাবে যে তাদের সাথে পক্ষপাতিত্ত করা হয়েছে। অন্য ভাবে বলা যায়- ২য় বিশ্বযুদ্ধের পেছনে প্রধান কারন ছিল, হিটলারের উচ্চাভিলাষী, আগ্রাসী স্বপ্ন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমীকরণ সহজ নয়, জটিল। অবশ্যই জটিল।ইরান সমর্থন করেছিলো- জার্মানকে! এই ভয়াবহ যুদ্ধে আনুমানিক ৬ কোটি ২০ লক্ষ মানুষ মারা যায়। যার মধ্যে প্রায় অর্ধেকই ছিল রাশিয়ার নাগরিক। হিটলারের জীবনের সবচেয়ে বড় এজেন্ডা ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নকে ধ্বংস করা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ভারতীয় সৈন্যরা আফ্রিকা, ইউরোপ এবং এশিয়ার তিনটি মহাদেশে যুদ্ধ করেছিল।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়- কলকাতা ছিল ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী।
সেই সময় কলকাতার মানুষ গুলো ছিলো সহজ সরল এবং মানবিক। তারা তখনও জটিল কুটিল হতে পারেনি। তবে ধর্মীয় কারণে হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা অব্যহত ছিলো। থেমে থেমে হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা চলছিলো। কলকাতা দাঙ্গার পর হিন্দু-মুসলমান সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে নোয়াখালী ও বিহারে। এদিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারনেই ১৯৪৩ সালে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। দুর্ভিক্ষে মৃত্যু হয়- প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ। আমরা যাকে পঞ্চাশের মন্বন্তর বলে জানি। এই দুর্ভিক্ষের মধ্যেই বিটিশ সরকার নৌকা ও গরুর গাড়ি জব্দ করা শুরু করে। মানুষ হয়ে পড়ে বেকার। এখানে-ওখানে পড়ে থাকতে দেখা যায় হাড্ডিসার লাশের সারি। নদীতে ভাসছে লাশ।

হিটলার ব্যস্ত ছিলো যুদ্ধ নিয়ে।
যুদ্ধের ধাক্কা কম বেশি সব দেশেই লেগেছে। এদিকে ঢাকা ও কলকাতার অবস্থা ভালো ছিলো না। যুদ্ধের বাতাস লেগেছে। সৈন্যদের শায়েস্তা করার জন্য- টানা পাঁচ দিন ধরে- আড়াইশো জাপানি বোমারু বিমান হানা দেয় কলকাতার উপর। তখন অনেক লোক ভয়ে কলকাতা ছেড়ে গ্রামে চলে যায়। বোম্বে শহর থেকেও লোকজন পালাতে শুরু করে। কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের রং কালো করে দেওয়া হয়। এই বোমায় মানুষ মারা যায় একশ'র উপরে। অনেক গবাদি পশু মারা যায়। রেললাইন বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলো। অনেক ঘরবাড়ি ভেঙ্গে যায়। কলকাতার ভবানীপুরের মানুষজন সাহসী ছিলো তারা বোমা দেখার জন্য আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতো। লোকজন ঢাকা থেকে কলকাতা যাওয়া আসা বন্ধ করে দেয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব ঢাকা ও কলকাতায় পড়েছে।
বিনা দ্বিধায় বলা যেতে পারে- কলকাতা শহরটি সরাসরি যুদ্ধের ঝুঁকিতে ছিল, যেখানে অনেক আমেরিকান সৈন্যের উপস্থিতি ছিল এবং আকাশ পথে আক্রমণের ভয় ছিল। এছাড়া যুদ্ধের কারণে সব কিছুর দাম বেড়ে গিয়েছিলো। নানান রকম গুজব ছড়াচ্ছিলো। হিটলার কখনও ভারতে আসেননি। হিটলারের লেখায় এবং বক্তৃতায় তার আগেও বহুবার ভারতের প্রসঙ্গ এসেছে। ২৩ লাখেরও বেশি ঔপনিবেশিক ভারতের জওয়ান অংশ নিয়েছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে। প্রাণ হারিয়েছিলেন প্রায় ৮৯ হাজার জওয়ান। প্রায় ৫০ হাজার
ভারতীয় সেনা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় লড়েছিলেন ইতালিতে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন ১৯ বছর থেকে ২২ বছর বয়সের মধ্যে।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশে যুদ্ধ হয়েছিলো।
যুদ্ধ কোনো ভালো জিনিস নয়। যুদ্ধ সব তছনছ করে দেয়। যুদ্ধে কে জিতে? আসলে হাতে ক্ষমতা না থাকলে যুদ্ধ করা বোকামি। ফিলিস্তিন টের পাচ্ছে যুদ্ধ কাকে বলে। ১৯৭১ সালে যুদ্ধের মধ্যেই ঢাকায় সিনেমা হল খোলা ছিলো। ইদের নামাজ হয়েছে। লোকজন শপিং করেছে। যুদ্ধের মধ্যেই বিয়ে হয়েছে। প্রেম ভালোবাসা হয়েছে, জন্ম, মৃত্যু এবং বিয়ে যুদ্ধের কারণে কিছুই থেমে থাকে না। যাইহোক, কলকাতা অনেক বড় শহর। অনেক মানুষের বাস। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, কলকাতায়- প্রেম ভালোবাসা হয়েছে, বিয়ে হয়েছে, মেলা হয়েছে, আড্ডা হয়েছে। লেখালেখি হয়েছে। পিঠা উৎসব হয়েছে। শুটিং হয়েছে। লোকজন দল বেঁধে সিনেমা দেখতে গিয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৫
৮টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×