somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

এই সমাজ- ৬৯

২৯ শে অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ধর্ম আমার ভাবীকে কেড়ে নিলো!
বলছি, আমাদের এলাকার এক ভাবীর কথা। এই ভাবীর কথা আমি আগেও ব্লগে লিখেছিলাম। ভাবী ছিলেন আমাদের লিডার। যে কোনো অনুষ্ঠানে উনি সবার আগে থাকতেন। এলাকার কোনো জন্মদিন বা বিয়ের অনুষ্ঠানে খুব আমোদ ফুর্তি করতেন। নাচ গান করতেন। কারো জন্মদিনে নিজে পছন্দ করে কেক আনতেন। নিজের হাতে রান্না করতেন। সবাই মিলে আমরা আনন্দ উৎসব করতাম। আয়োজক ছিলেন- ভাবী। আমাদের ভাবী। উনি স্কুলে ভরতি হয়ে কেক বানানো শিখলেন। এরপর যে কারো জন্মদিনে নিজ হাতে কেক তৈরি করতেন। আমাদের বাসায় সদস্য বেশি। দেখা যায় প্রতিমাসে কারো জন্মদিন। ভাবী নিজ হাতে কেক বানাতেন। রান্না করতেন। এখন ভাবী কেক বানান না, কোনো জন্মদিনের উৎসব পালন করেন না।

ভাবী স্পষ্ট ঘোষনা দিলেন-
আমি আর কোনোদিন কেক বানাবো না। কোনো জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যাবো না। কেক কাটাকাটির মধ্যে আমি নাই। এসব গুনাহ। এতদিন আমি এসব জানতাম না। আল্লাহ আমাকে এখন হেদায়েত দিয়েছেন। আমি আর ভুলের মধ্যে থাকবো না। আল্লাহ মাফ করুক। ভাবী এখন বোরকা ছাড়া ঘরের বাইরে যান না। কঠিন বোরকা। চোখও দেখা যায় না। ছবি তোলেন না। অথচ ভাবী একসময় ছবি তোলার জন্য আমাকে ডেকে নিতেন। বলতেন, ভাই নতুন একটা শাড়ি পড়েছি, ছবি তুলে দিবি না? সেই ভাবি আজ বদলে গেলো, ধর্ম ভাবীকে বদলে দিলো। আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিলো! এ কেমন ধর্ম! সেদিন এক বিয়ের অনুষ্ঠানে ভাবীর সাথে দেখা। ভাবীকে চিনতে কষ্ট হলো। পুরো কালো বোরকায় মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢাকা। চোখও দেখা যায় না। মুখের উপর কালো কাপড় দিয়ে ঢাকা।

বিয়ের অনুষ্ঠানে ভাবী খেতে বসেছেন।
তার কোলে এগারো মাসের বাচ্চা। এক হাত দিয়ে বাচ্চা ধরে রেখেছেন। আরেক হাত দিয়ে আরামে খেতে পারছেন না। কারণ তার মুখ কালো কাপড়ে দিয়ে ঢাকা। কোনো রকমে কাপড় সরিয়ে, খাচ্ছেন। খেতে তার কষ্ট হচ্ছে। বেগ পেতে হচ্ছে। আমি ভাবীকে বললাম, বাচ্চাকে আমার কোলের দিন। আপনি আরাম করে খান। আর মুখের উপর কাপড় ঝুলিয়ে রেখে খাবেন কি করে? অন্তত খাওয়ার সময়টুকু পর্যন্ত মুখের উপর থাকা কাপড়টা সরিয়ে নিন। আপনি আরাম করে খান। আমরা আপনাকে দেখলে আপনার গুনাহ হবে? আমি আপনার ছোট ভাই। তাছাড়া আপনার বিয়ে হয়েছে, তিনটা বাচ্চা আছে। ভাবী আমার কথা শুনলেন না। মুখ ঢাকা রেখেই কষ্ট করে খাচ্ছেন। ধর্ম কি ভাবীকে আরাম করে খেতেও দিবে না? একজন হাসিখুশি মানুষ কিভাবে ধর্মের বেড়াজালে আটকে গেলেন! নিজেকে সংকুচিত করে নিলেন সব কিছু থেকে।

এই ভাবীর বাতাস লেগেছে, সুরভির গায়ে।
সুরভি এখন বোরকা পড়ে। বোরকা হিজাব তার প্রথম পছন্দ। ছবি তোলে না। নতুন জামা কিনে না। কিনে শুধু বোরকা আর হিজাব। নাকি ভাবী আর সুরভি বুঝে গেছে- সামনে ক্ষমতায় আসছে জামাত। জামাত এসে দেখে যদি নারীরা হিজাব বোরকা পড়ছে না। তখন জামাত তাদের দোররা মারবে। অথবা ১০০ বেত্রাঘাত। চোখের সামনে ধর্ম ভাবীকে বদলে দিলো। সুরভিকে বদলে দিলো। ভাবী এখন বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে খাবারটা পর্যন্ত আরামে করে খেতে পারেন না। ধর্ম কি তাকে খেতেও দিবে না? কেক কাটতে দিবে না? আনন্দ করতে দেবে না? পরকালের ভয়ে ইহকাল ধ্বংস? আগে ভাবী কত আনন্দ করতেন। কত উদার ছিলেন। যেই আল্লাহপাক তাকে হেদায়েত দিলেন, তারপর ভাবী বদলে গেলেন। আমার জন্মদিনে ভাবী নিজ হাতে কেক বানাতেন। আর এখন আমাকে জন্মদিনে শুভেচ্ছাও জানান না। তার ছোট বাচ্চাকেও জন্মদিনের কেক কাটতে দেখান না।

সম্প্রতি ভাবী তার স্বামীর সাথে মালদ্বীপ গিয়েছেন।
বোরকা হিজাব পড়ে ভাবী মালদ্বীপ ভ্রমন করেছেন। এর আগে মালোশিয়া আর থাইল্যান্ড গেলেন, বোরকা আর হিজাব পড়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন। একটা ছবিও তুলেন নাই। এদিকে সুরভি নতুন করে পাসপোর্ট করলো। কারণ তার আগের পাসপোর্টে ছবিতে হিজাব পরা নেই। এখন সুরভির পাসপোর্টে হিজাব পড়া ছবি। মূলত একটা দল নারীদের ধরে ধরে ধার্মিক বানাচ্ছে। প্রথমে তারা বলেন, আরবী উচ্চারণ শিখাবো। এই বলে তারা- ব্রেনওয়াশ করে দেয়। তাদের বলা হয়- ইহকাল কিছুই না। পরকালই আসল। অনন্ত। পরকালে জান্নাত পাওয়ার জন্য হিজাব পড়তে হবে, পর্দা ছাড়া কারো সামনে যাওয়া যাবে না। ইহুদি নাসারাদের মতো কেক কাটা যাবে না। নাচ গান করা যাবে না। এসব বাদ দিলেই বেহেশত পেয়ে যাবেন। বাবা মায়ের সেবা করুন। স্বামীকে সালাম দিন।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৮
১৩টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×