somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একা....

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত বেশ কয়েকটা দিন ধরেই মাথা ব্যথা খুব । ঘুমুতে পারিনি তেমন । তাই গতকাল রাতে একটা ডিসপ্রিন আর দুইটা ইজিয়াম খেয়ে ঘুমুতে গিয়েছিলাম । শীত টাও বেশ ভালোই পড়ছিল কাল রাতে । খুব সকালে ঘুম ভেঙ্গে গেল, কিন্তু বিছানা ছেড়ে উঠতে ইচ্ছা করছিল না । বুয়াকে চা দিতে বললাম । কাপা কাপা হাতে বুয়ার হাত থেকে চা নেয়ার সময় কাপ পড়ে গেল । অযথাই বুয়াকে বকলাম । অথচ সম্পূর্ন দোষ টা কিন্তু আমার । ঘুমের ওষুধের ভাব তখনো যায় নি । মাথা টা ঘুরছিল , শরীর টা কেমন যেন ছেড়ে দিচ্ছে মনে হচ্ছে ।মেজাজ টা তিরিক্ষি হয়ে আছে ।

চা টা শেষ করার আগেই ফোন বেজে ওঠে । কিন্তু আকষ্মিকতার ধাক্কা সামলে উঠার আগেই কাপের কিছু চা ছলকে নিচে পড়ে গেল ।মেজাজ টা খারাপ হয়ে গেল যে ফোন করছে তার উপর । ইদানিং আমার মন মেজাজ কারনে অকারনে খারাপ হয়ে যায় । আমি এটার ও কোন কারন খুজে পাই না । মেজাজ খারাপ নিয়েই ফোনটা হাতে নেই । দেখি সামান্তার ফোন । কি ব্যপার? ওর তো এখন ফোন করার কথা না ! ওর তো পরীক্ষার হলে থাকার কথা । সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে ফোন টা ধরি ।
তার আগে,
সামান্তার পরিচয় টা দেই । সামান্তার সাথে আমার পরিচয় আজ থেকে প্রায় ৫ বছর আগে । প্রথম দেখাতেই যে ভালো লাগার ব্যাপার টা আছে.সে রকম ছিল না আমাদের পরিচয় টা । বরংচ প্রথম দেখাতে আমি ওকে একটু অপছন্দ করেছিলাম । তারপর আমাদের বন্ধুত্ব হল। আমাদের মাঝে দেখা হত, মোবাইলে কথা হত । আমরা একজন আরকেজনকে জানতে লাগলাম । জানতে জানতে আমাদের মাঝে আমরা আবিষ্কার করলাম _ আমরা একজন আরকেজনকে ভালবেসে ফেলেছি । পৃথিবীটা আমাদের কাছে স্বর্গ মনে হচ্ছিল । এভাবে কেটে যায় বছর খানেক ।

আজ থেকে প্রায় একবছর আগে তুমি আমাকে বলেছিলে " চল আমরা বিয়ে করি । আমার আর থাকতে ভাল লাগে না এ জাহান্নামে " । এখানে তুমি জাহান্নাম বলতে তোমার ফ্যামিলি বুঝাইছ । তোমার ফ্যামিলিতে সমস্যা ছিল আমাদের সম্পর্ক নিয়ে । তারা তোমাকে নানা কটু কথা শোনাত আমাকে নিয়ে , তোমাকে আমার সাথে দেখা করতে দিত না । তারপর ও তুমি চুরি করে আমার সাথে দেখা করতে । তোমার জোরাজুরিতে আমি তোমাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেই । তুমি তোমার বাসায় তোমার সিদ্ধান্ত ,আমি আমার বাসায় আমার সিদ্ধান্ত জানাই...। অনেক ঝড় ঝাপ্টা পার করে আমরা বিয়ে করি । কিন্তু তোমার বাসা থেকে একটা শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছিল যে, আমার পড়ালেখা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমি তোমাকে আমার বাসায় তুলতে পারব না । আমি এবং তুমি আমরা দুজন ই রাজি ছিলাম । কারন আমার শেষ হতে আর মাত্র ৬ মাস বাকি ছিল ।

আমি তখন দিন গুনছিলাম আমার ৬ মাসের । আর তুমি তোমার বাসায় দিন গুনতে । কিন্তু কপালে সুখ বেশী দিন সয় না , তোমার বাবা মা বিয়ে টা সামাজিক ভাবে মেনে নিলে ও মন থেকে মেনে নেয় নি । তোমাকে সারাদিন কথা শোনাত, মানসিক ভাবে অত্যাচার করত । তুমি আমার কাছে কান্না করতে আর বলতে প্লিজ আমাকে তাড়াতাড়ি নিয়ে যাও এখান থেকে , আর আমি বলতাম এই তো আর মাত্র কয়েকটাদিন, তার পরই তোমাকে নিয়ে আসব । আর তুমি শুধু চুপ করে থাকতে ।

এতসব টেনশন নিতে নিতে আমি অসুস্থ হয়ে যাই। মাথাটা ঘুরতে থাকে । মাথায় শুধু তোমার চিন্তা ।
এই হচ্ছ তুমি আমার সামান্তা ।

আজ তোমার ষষ্ঠ সেমিষ্টার ফাইনাল পরীক্ষা, গত রাতে বলেছিলে পরীক্ষা দিয়ে আসার পর ফোন দিবে ।তাই সকাল সাড়ে ৯ টায় তোমার ফোন পেয়ে আমি একটু অবাক হই ।
ফোনটা ধরলাম। ওপাশ থেকে তোমার বাবার কন্ঠ শোনলাম....আমি তার সাথে কথা বলতেছি, কিন্তু উনি কথা বলতেছেননা । আমি তোমাকে ফোন দিতে বললাম, প্রত্যুত্তরে আমি যা শুনলাম আমি স্বপ্নে ও সেটা ভাবি নাই ।

তুমি একাজ টা কিভাবে করলে???? আমাকে ছেড়ে চলে যেতে পারলে কিভাবে???
আত্নহত্যা করার আগে আমার কথা একটিবার ও চিন্তা করলে না?? আমি কিভাবে বাচব?? কাকে নিয়ে বাচব??পরষুদিন আমাকে যে শার্ট টা কিনে দিয়েছিলে ওটা পরে আমি কাকে দেখাব??
আমার চিন্তা করার শক্তি আমি হারিয়ে ফেলেছি ।মাথাটা কেমন যানি করছে ?আমি senseless হয়ে গেলাম । আমি প্রায় ৩ দিন নাকি হাসপাতালে ছিলাম । পরে শুনেছি আমার নাকি হার্ট এটাক হয়েছিল । আমি শেষ বারের মত তোমার মুখ টা ও দেখতে পারলাম না । হায় আমি খুব একা হয়ে গেলাম এ জগতসংসারে ...খুব একা...
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×