আমার এই লেখাটি কখনো লিখতাম না। যদি বুঝতে পারতাম এই দেশে আমার আদৌ কোন অধিকার আছে কিনা? অথবা আমি জন্ম নিয়েছি কি অন্য কারও দেশে। জন্মেছি কি অভিবাসী হয়ে। দেশে আপনি এবং খালেদা জিয়ার দুই পরিবারের সঙ্গে আমার কি সমান অধিকার রয়েছে ? যখন পত্রিকায় পড়ি মালের (মালদ্বীপের রাজধানী) কাজের জন্য বাংলাদেশীদের অপো। তবুও আপনারা বলেন, বিদেশে বাংলাদেশে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। তবে কামলার ভাবমূর্তি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের কোন নাগরিক আপনার সমান ভাবে না। লীগের লোকেদের আপনার দাস হতে আপত্তি নেই। আপনার বিরুদ্ধে কোন শব্দ শুনতে অভ্যস্ত নয়। গণতন্ত্রের মূল্যবোধ কি জিনিশ একজন লীগ বা বিএনপির কর্মীর সামান্যতম ধারণা নেই। প্রতিনিয়ত আমরা ধসে পড়ছি। আপনি কি শোনেন সেই ধসে পড়ার শব্দ।
প্রধানমন্ত্রী দেশের সকল অভিযোগ আপনার কাছেই আসবে। লিমনকে আপনি গুলি দিতে বলেন নি। এটা সবাই বোঝে। কিন্তু আপনার সরকার তাকে সন্ত্রাসী বানাতে কত নাটক সাজানো চেষ্টা করেছে। লিমনের দীর্ঘশ্বাস আপনার কানে কখনো বেজেছে? কয়েকজন র্যাব সদস্যকে বাচানোর কি প্রয়োজন ছিল। পাকিস্তানের রেঞ্জার বাহিনীর হাতে লিমনের মত এক যুবক নিহত হয়েছিলেন। দুই মাসের মধ্যে দায়ীদের বিচার হয়েছে। চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়েছে। আমার সোনার বাংলায় খুনীরাই সোনার ছেলে। আমরা কৃমিকীট।
অসংখ্য গুমের নাটকের কোন প্রয়োজন কি ছিল। আপনি কি শুনতে পাচ্ছেন, যারা গুম হয়েছে তাদের স্বজনদের আর্তনাদ। আমার এক পরিচিত বড় ভাই গুম হয়েছেন প্রায় আট মাস। খুলনার বাবু ভাই। তিনি পল্টন থেকে গুম হন। ইলিয়াস আলী গুম হলেন কোন শব্দই কি আপনার কানে বাজে না। আমাদের কানেও কোন শব্দ বাজে না। আমরা ধীরে ধীরে বধির হয়ে যাচ্ছি। বিএনপি ইলিয়াস আলী গুমে লভ্যাংশ তুলে নিচ্ছে। মতা কখনোই স্থায়ী হতে পারে না। ২০০১ সালে এমনই আত্মবিশ্বাস ছিল আপনাদের। নির্বাচন নির্দলীয়দের অধীনে হয়েছিল। পারেন নি মতায় আসতে। হয়ত আবার বিএনপি আসবে। আমাদের শুনতে হবে বাংলা ভাই নামে কেউ নেই। শুনতে হবে নিজামীরা মৌলিক পদার্থের মত খাটি মানুষ। জজ মিয়া নাটকের পুরানো অধ্যায়।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি জানেন স্বজন হারানোর বেদনা। অপরাধীকে বাচানোর কোন প্রয়োজন নেই। ডাকাতি করলেও নরসিংদীর এসএসসি দেওয়া ছেলেটির মায়ের কান্না কি কখনো আপনার চোখে ভেসে উঠেছে। র্যাবের এমনতর কাজ কি কোন ভাবেই আটকানো যায়না। কোন উপায় নেই।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার কি মনে পড়ে, আহসান উল্লাহ মাস্টার, শাহ এমএএস কিবরিয়া, মমতাজ উদ্দিন। ২১ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের কথা। সেই সব হত্যাকারীর জন্য আমাদের বধির, মুক করবেন না। সেই ঘটনার প্রতিশোধে নিশ্চয়ই ইলিয়াস আলীরা গুম হচ্ছে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং ছাত্রলীগ একাকার। ভিসিরা ভিপির মত আচরণ করছেন। পদে থাকতে কত সব রকমের বেহায়াপনা চালাচ্ছে। এরা বৃহত্ বুদ্ধিজীবী, আর আমরা চামচিকায় পরিনত হচ্ছি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তারা যতই সমালোচনা করুক ব্যাক্তিক ভাবে যদি বিবেচনা করি আপনার মন্ত্রি সভার প্রত্যেক সদস্যই বিএনপির মন্ত্রীদের চেয়ে ভালো। সবচেয়ে বেশী যাদের বিরুদ্ধে সমালোচনা তারা হচ্ছেন, সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী আবুল হোসেন, সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী ফারুক খান, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, নৌ মন্ত্রী সাজাহান খান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী সাহারা খাতুন, প্রতিমন্ত্রী টুকু, আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, পররাষ্ট্র মন্ত্রী দিপু মণি। এই নামের বিপরীতে নাজমুল হুদা, কর্ণেল আকবর হোসেন, বাবর, আলতাফ হোসেন, মীর নাসির, সাইফুর রহমান। নামগুলো কেউ ভুলে যায়নি। (বাবরের মত লোকেরা স্বরাষ্ট্র চালিয়েছে। আর সোহেল তাজের চলে যেতে হয়েছে)। এক কথায় আপনি উত্তর দিতে পারতেন। আপনি তা না করে আবুল হোসেন কে বাচানোর সব আয়োজন করলেন। আবুল হোসেন ভোট এনে দিবে না। ভোট দেবে আপনার অশিতি কৃষক, শ্রমিক। যারা প্রতিনিয়ত চাল ডাল তেলের মূল্য পরিশোধে হাপিয়ে ওঠে। যারা শোনে আপনার মন্ত্রী আবুল হোসেনের কারণে বিশ্বব্যাংক লোন দেয় না। কি লজ্জা! মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের কি কোন লজ্জাবোধ থাকতে নেই???

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



