বাংলা সিনেমা অতীত গৌরবময়। অতীত নিয়ে লম্ফঝম্ফ করে দিন কাটিয়ে এখন তাকে ধ্বংশ করতে মেতে উঠেছি। যারা বাংলা সিনেমা শিল্পকে বাঁচানোর কথা বলে দেশপ্রেমিকের দায়িত্ব পালন করছে তাদের ভুমিকায় কি এ শিল্প বেচে উঠবে। নাকি চুড়ান্ত ভাবে ধ্বংশ হয়ে যাবে?
নানা ধরণের যুক্তি দিয়ে সিনেমা আমদানির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছেন এরা। এটা কি কোন গবেষণা করে নাকি আবেক বশবর্তী হয়ে। আমার মনে হয় এখানে আবেগের যুক্তিটাই বেশী প্রাধান্য পেয়েছে। হতে পারে হিন্দি সিনেমা আমাদানি করলে মারাত্মক ঝুকির মধ্যে পড়বে। কি সেই ঝুকি? আমাদের সিনেমা প্রতিযোগীতায় টিকতে পারবে না।
এর বিরুদ্ধে যুক্তি হচ্ছে ভালো সিনেমা অবশ্যই মানুষ দেখবে। ঘেটুপুত্র কমলা, গেরিলা, আগুনের পরশমনি, মাটির ময়না মানুষ দেখেছে। এই সব সিনেমার দর্শক কারা প্রত্যেকেই জানেন। এরা পৃথিবীর সব ভালো সিনেমাই দেখেন। বাকি থাকল খাইছি তোরে টাইপের সিনেমা যদি ফ্রিতেও দেখানো হয় ওইসব দর্শকেরা দেখবে না। এই প্রকৃতির সিনেমা দর্শক যারা এরা এগুলোই দেখবে মাটির ময়না, ঘেটুপুত্র কমলা দেখবে না। এখন যেসব সিনেমা হলে দর্শক যায় সেখানে খাইছি তোরে দেখতে যারা যায় সব সময়ই যাবে। এর প্রমান হিন্দি সিনেমা ইন্ডিয়ান চ্যানেলের ছবি নিম্নবর্গীয় (শব্দটা বিতর্কিত হতে পারে) দর্শক মোবাইলে, বাসায় বাংলা সিনেমা বেশী দেখেন। এরাই সিনেমা হলের মুল দর্শক। ভালো মানের বা হিন্দি সিনেমার দর্শক সিনেমা হলে যায়না। ফল কি হচ্ছে সবার জানা। আগামি ১০ বছরের মধ্যে ঢাকার সবগুলো হল বন্ধ হয়ে যাবে। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান সবাইকে দেখার অনুরোধ করছি। ঢাকার শ্যামলি, আনন্দ গুলিস্তান বন্ধ হয়েছে। অভিসার, পুনম, বাড্ডার দুইটি সিনেমা হল বন্ধ হওয়ার প্রক্রিয়ায়। ওয়েব পোর্টাল বাংলানিউজ বাংলাদেশের সিনেমা হল নিয়ে একটি ধারাবাহিক প্রতিবেদন দিয়েছিল। সেখানে প্রায় ৭০ শতাংশ সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গিয়েছে এমন তথ্য উঠে এসেছে। যদি হিন্দি সিনেমা নিয়ন্ত্রিত ভাবে আমদানি করতে দেওয়া হয়। সেন্সর বোর্ডের মাধ্যমে বছরে ১০টি বা তার কম বেশী তাহলে এইসব সিনেমা হল বন্ধ হবে না। এটা আমার মত। অন্তত একটি টেস্ট করা যেতে পারে। সিনেমা হল যদি বন্ধ হয়ে যায় এসব দেশ প্রেমিকরা সিনেমা কোথায় চালাবেন। ভালো সিনেমা তৈরী হলে শুধু আমাদের দেশ নয় পৃথিবীর সব দর্শকেরা দেখবে।
আরেকটি যুক্তি দেন বিরুদ্ধবাদীরা। সিনেমা তৈরীতে আমাদের প্রযুক্তি, সুযোগ সুবিধা খুবই কম। তাই তাদের মত সিনেমা তৈরী করতে পারব না। পরাজিত মার্কা যুক্তি। ঘেটুপুত্র কমলা, রানওয়েতে কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে?
এখনকার দর্শক দুই ধরণের সিনেমা দেখেন। এক প্রযুক্তি নির্ভর, দুই কাহিনি নির্ভর। অ্যাভাটার তৈরী করতে কেউ বলেনি। তাই বলে খাইছি তোরে টাইপ সিনেমা তৈরী করতে হবে? নামেই বোঝা যায় কতখানি মেধা দারিদ্রে ভুগছে এই প্রযোজকরা।
যাদের জন্য সিনামা তৈরী করছেন তারা ছাড়া আরও কেউ আপনাদের সিনেমা দেখবে না। পাইরেসি করে বাসায় বসে দেখবে। সিনেমা বানিজ্য কোথায় গিয়ে ঠেকবে কেউ কি একবার ভেবেছেন। বিশ্বায়ন চাই। ইউরোপের, ভারতে বেহায়াপনা, তাদের ফালতু মার্কা বাংলা সিনেমা দেখব বাসায় বসে। আর বলব আমদানি নয়। তাহলে রিক্সাওয়ালাদের সিনেমা তৈরী কে করবে?

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



