somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পরস্পর | দ্বিতীয় পর্ব - অবস্থান

২৮ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৮:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





বেশ চিন্তামগ্ন হয়ে বসে আছেন বারী। কনকনে ঠাণ্ডার রাত তবুও বারান্দায় রয়েছেন তিনি৷ পাঁচ মাসে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন তিনি। চেয়ারে থাকা অবস্থায় যারা তার সাথে ছিল, তাদের বেশিরভাগ ব্যক্তি সাপোর্ট ছেড়ে দিয়েছে। ঘড়িতে সময় রাত ৩টা। বারী খাতা কলম নিয়ে বসলো। ভোর ৫টা পর্যন্ত বিভিন্ন প্ল্যান লিখলো। সবকিছু গুছিয়ে সেগুলো নিজের লকারে রেখে দিল৷ বারী আয়নার সামনে এসে বিড়বিড় করে বলল, "এবার হবে সামনাসামনি লড়াই।"

বিকেলে মাইশার সাথে দেখা করার জন্য বাসা থেকে বের হল তানজিল। রিকশা খুঁজতে খুঁজতে তার সামনে কাজল আবারও এসে পরলো! কিছু বলবে কিনা সেটাও ভাবছে কাজল। শেষে কাজল বলল, "আ.. সরি আমি তোমাকে খেয়াল করি নি।" তানজিল জিজ্ঞেস করলো, "আপনি ভাল হয়ে গেছেন নাকি ভাল হয়ে যাওয়ার ঢং করছেন?"
কাজল গম্ভীর মেজাজে বলল, "আমি আগের মতই আছি, শুধুমাত্র তোমার জন্য কিছু অভ্যেস বাদ দিয়েছি, সেগুলা ছাড়া বাকি সবই আছে।"
কাজল কথা না বারিয়ে চলে গেল। তানজিল এর কিছুক্ষণ পরই দুরত্ব রেখে পিছু নিল। যতদুর দেখলো তাতে সন্দেহজনক কিছু দেখতে পেল না। আরও কিছুদুর যেতেই দেখলো এক ভিখারিকে টাকা দিচ্ছে! বেশ ভাল লাগলো দেখে যার জন্য তানজিল আর আগালো না। মনে মনে বলল, "তাহলে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে!"

সকাল সাতটা,
বারী তার বিশ্বস্তদের মাঝে একজনকে ডেকে নিল, আসল নাম টিটু তবে সবাই তাকে গিরিজ(গ্রিজ) নামেই চেনে। "দাদা, নিশ্চয়ই কোনো খাস দরকার যার জন্য এতদিন পর আপনে ডাকলেন?"
বারী জানালেন, "সবার দ্বারা সব কাজ হয়? হয় না, তাই না? ধর এটা, এখানে তোর জন্য একটা কাজ আছে। কিন্তু মনে রাখবি, পুলিশ থেকে দূরে এবং ওরা যেন টের না পায়। কিভাবে করবি আমি জানি না।"
টিটু কাগজটা খুলে দেখলো৷ পুরোটা পড়ে বলল, "এতে এলাকায় দরদাম বেড়ে যাবে!" "আর চাপে থাকবে কারা?"
"কাজ হয় যাবে।"

এর দুইঘন্টা পর,
"তালুকদার আর হাওলাদার, এরা আর এদের গ্যাঙ যতদিন আছে ততদিন আমরা ডুবতে থাকবো। তাই আমাদের কি তাদের মেরে ফেলা উচিৎ? একদমই না৷ ওদের ব্যবসায় আমাদের লোক ঢুকাতে হবে। প্রতিটা শাখা-প্রশাখায় আমাদের একজন লোক থাকতেই হবে তাই এই কাজটা তোরে দিলাম রিয়াজ। যা নিজের মত করে সেটাপ কর। সবাই নিজের পরিচয় গোপন রাখবি।"
রিয়াজ, বারীর ব্যবসার নেটওয়ার্ক কন্ট্রোলার। অত্যন্ত চালাক এবং এখন পর্যন্ত এলাকার থানার কেউ তার চেহারা দেখে নি৷

রাত ১২টা,
শাল মুড়িয়ে বারীর ঘরে প্রবেশ করলো রাসেল। বারী তাকে দেখে আনন্দে জড়িয়ে ধরলো। বললেন, "কিরে এমন পাগল পাগল লাগছে কেন তোকে?"
"দাদা, তোমায় দেখে।" "হুম, কোনো খবর আছে আমার জন্য?"
রাসেল জানালো তার কাছে দুইটা খবর আছে। রাসেল বলল, "ভোট কেন্দ্রে তালুকদারের লোক আর মিডিয়া মিলে আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।"
"আর দুই?"
"তোমার ছেলে এক মেয়ের প্রেমে পড়ছে!"
বারী বললেন, "কবে থেকে?"
"বছরের বেশি কিন্তু ছেলেকে সামলাও। আর মেয়ের পরিবার তোমার আত্মীয় হবার যোগ্য একদমই নয়।"
বারী বেশ চিন্তায় পরে গেলেন৷ দুই তিন ঢোক পানিতে গলা ভিজিয়ে বলল, "রাসেল, দুইটা কাজ করবি।
এক, কাজলকে নজরে রাখবি আর দুই, তালুকদারের গাড়ির ব্যবসায় আমার কয়েক গাড়ি অন্যের নামে চালাবি৷" রাসেল উত্তরে বলল, "দাদা আমি তোমার একনিষ্ঠ ভক্ত এবং তোমার কথা আমি অমান্য করি নি। তবে আজ তোমার প্রতি অনুরোধ, তুমি কাজলকে দেখে রেখ। তুমি ওকে জানতে শুরু কর, ওর যেসব বন্ধু তারা সব দুধের মাছি! তোমার আজকের গাফলতি তোমাকে কাল নিঃস্ব করে দেবে৷ কাজল পুলিশের কাছে তিনবার মার খেয়েছে!"
রাসেলের কথা বারীর বিশ্বাস হচ্ছে না। তিনি বললেন, "আর তিনবার কনস্টেবল রাজীন মেরেছে। এই সেই যে আমার ছেলেপেলেকে পিটাইছে! কিন্তু কাজল আমাকে সত্যটা কখনও জানায় নাই!"
বারী রক্তগরম চোখ নিয়ে রাসেলকে বললেন, "রাসেল, কাজলকে আমি দেখছি, তুই রাজীনের ব্যবস্থা কর। আমার ডুবে যাওয়া শুধু তালুকদার আর হাওলাদার নয়, রাজীনও জড়িত! কাজলকে ওই মেয়ে থেকে দূরে আমি রাখবো কিন্তু রাজীনকে ছারবি না। হাড় ভাঙবি, হাড় জোড়া লাগবে তারপর আবার ভাঙবি! এই সিলসীলা চালু রাখবি কিন্তু মরতে দিবি না।"

কাজলের ব্যাপারে নেতিবাচক ধারণা আস্তে আস্তে ইতিবাচকে পরিণত হচ্ছে তানজিল মনে। মাসের পর মাস কাজলের আচার আচরণ খেয়াল করেছে সে। অনেকাংশে নিজেকে বদলেছে কাজল৷ দেখতে দেখতেই বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর ভর্তি পরীক্ষা ঘনিয়ে এসেছে৷ এরমধ্যেই শেষ যে বার কাজল তানজিলের সামনে পরেছিল সেদিন তানজিল নিজেই এগিয়ে বলেছিল, "আপনার ভিতরের পরিবর্তন আমি লক্ষ্য করছি! বেশ নিজেকে শুধরে নিয়েছেন!"
কাজল বলেছিল, "তুমি যা দেখছো সেটা তোমার জন্যেই করা। তুমি ভাল করেই জানো আমি তোমাকে অনেক পছন্দ করি। হ্যাঁ এটা ঠিক আমি আমার চালচলন মার্জিত করার চেষ্টায় আছি৷ আমি তোমাকে পছন্দ করি, ভাল লাগে তোমার অপেক্ষায় থাকতে। এক নজর দেখলেই শান্তি লাগে। এখনের চেষ্টা এতটুকুই যে আমার কারণে যেন তুমি বিন্দুমাত্র ক্ষতিগ্রস্ত না হও, আসি।" এই বলেই রিক্সা ডেকে চলে গেল কাজল। তানজিল কিছুক্ষণ ঠায় দারিয়ে ছিল সেখানে। হাসবে না কাঁদবে বুঝে উঠে পারছে না। বাসার দিকে হেটে যাওয়ার সময়ও সে বারবার কাজলের কথাগুলো মনে করছিল। গান যেমন কানে ভেসে বেড়ায় ঠিক তেমন!

তিন সপ্তাহ পর,
ভর্তি পরীক্ষার জন্য রওনা দিয়েছে তানজিল এবং তার বাবা। বিজ্ঞান এবং আইবিএর পরীক্ষার্থী তানজিল। এমন বাজে তারিখে পরীক্ষা পরেছে যার জন্য অতিরিক্ত চারদিন তাদের থাকতে হবে এবং খরচটাও মুখ্য বিষয়। ঢাকা এমন একটা শহর যেখানে যেকারও আত্মীয় এমনিই পাওয়া যায়! তেমনই এক আত্মীয়ের বাসায় উঠতে যাচ্ছে তারা। কোনো এক ধরণের ভাই হয় তানজিলের বাবার অর্থাৎ তানজিলের দুঃসম্পর্কের চাচা। কিন্তু যেই বাসে যাত্রা করছে সেটা যাত্রীসেবার সর্বনিম্ন সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে৷ বাস একটু পরপর বন্ধ হয়ে যায়, ভিতরে ফ্যান চলে না, সিটে একটু হেলান দিলে পিছনের যাত্রীর পায়ে পরে যায়! পিছনের বাসগুলো ওভারটেক করে সামনে তো গিয়েছেই সেই সাথে ট্রাকও ওভারটেক করে যাচ্ছে! সবকিছু মিলিয়ে এক বিভৎস অবস্থা! সবমিলিয়ে ৫ ঘন্টার বাস জার্নি হল৷ চাচার বাসায় পৌছানোর পর সবার সাথে পরিচিত হল তারা৷ খাওয়ার টেবিলে তানজিল খেয়াল করল তার চাচার ছেলে তাকিয়ে আছে! সে যতবারই এরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ছেলেটা সেভাবেই তাকিয়ে থাকে৷ তানজিল ভাবতে থাকলো এই ছেলের স্থান কততম তার ভাই বোনদের মধ্যে! শেষে মনে পরলো ইনি ছোট ছেলে আর আরও বড় দুই ভাই আছেন যারা ঢাকার বাইরে থাকেন আর ছোট বোন আছে যে মাত্র পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। ছেলেটার তাকিয়ে থাকাটা বিরক্তিকর পর্যায়ে যাচ্ছে! তাই দ্রুত খেয়ে টেবিল থেকে উঠে গেল সে।

"নাম কি তোমার?"
তানজিল উঠে বসে বলল, "এদিকে বসো।"
তারপর তানজিল আবারও জিজ্ঞেস করলো, "তোমার নাম কি?" উত্তরে বলল, "ফারহানা তাবাসসুম পুষ্প।"
তানজিল তার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল, "কোন ক্লাসে পড় তুমি?" "ক্লাস ফাইভে।"
ফারহানা জিজ্ঞেস করলো, "তুমি কি কাল চলে যাচ্ছো?" তানজিল হ্যাঁ বলল।
"এখন তো বিকেল, আমি বিকেলে ছাঁদে যাই, তুমি যাবে আমার সাথে?" তানজিল বলল, "এত করে যখন বলছো তবে চল!"
ছাদে যেতেই দেখা হয়ে যায় সেই ছেলেটার সাথে! তানজিল সন্দেহ করে নিল এই ছ্যাঁচোড়ই বোধয় এই পিচ্চিকে পাঠিয়েছে তাকে ছাঁদে আনতে!
সে ফারহানাকে জিজ্ঞেস করলো, "পুষ্প, তুমি এখানে কি কর?"
ফারহানা ঠোট বাকিয়ে বললো, "তপু ভাইয়া, তুমিই তো বললে যে আমি যেন এই আপুকে ছাঁদে নিয়ে আসি!"
তপু কাশি দিয়ে উঠলো! তানজিলের সন্দেহ সত্য হল! তপু বলল, "ঠিক আছে, এখন যা, তোর না কাল পরীক্ষা!" "আর আমার আইসক্রিম?"
তপু দশটাকা দিয়ে বলল, "এটা রাখ, আমি এসে কিনে দিবো।"
তপু বলল, "আসলে তোমার সাথে পরিচয় পর্বটা কিভাবে শুরু করবো তার এটা একটা বাহানা ছিল!"
তানজিল রেগে আছে চরম! তারপরও ঠাণ্ডা মেজাজে বলল, "আমি আপনার পূর্বপরিচিত নই, তাই কনভারসেশনের শুরুটা আপনি শব্দ দিয়ে শুরু করাটা একটা চারিত্রিক ভদ্রতা!"
"সরি, আসলে একটু সুযোগ খুজছিলাম আপনার সাথে একটু কথা বলার জন্য।"
"জ্বি আমি আপনার সামনেই আছি।"
"না মানে আসলে আমি কখনও কোনো মেয়েদের সাথে কথাবার্তা বলি না তাই..." তপুকে থামিয়ে দিয়ে তানজিল বলল, "এসব ফ্লার্ট করার পুরানা ডায়ালগ। আপনি যা করছেন তাতে আমি মোটামুটি শিওর আপনি এসব করে অভ্যস্ত! তাই যা বলার সরাসরি বলে দিন।"
তপু মাথা চুলকাতে আরম্ভ করল, তারপর বলল, "আমি আপনাকে দেখছি তিনদিন এবং আস্তে আস্তে ভাল লাগা শুরু হয়েছে। আপনার সৌন্দর্য্য আমাকে আপনার প্রতি আকৃষ্ট করছে! পছন্দ করতে শুরু করেছি!"
তানজিল বলল, "আর কিছু বলার আছে?"
"হ্যাঁ... না মানে এতটুকুই!"
"I am not interested. এসব ছ্যাঁচড়ামোর কোনো ভ্যালু আমার কাছে নেই। আমার চলার পথে অনেক ছেলেদের আমি দেখি না, আপনি তারমধ্যে একজন হয়ে গেলেন!"
তপু বলল, "আপনার বয়ফ্রেন্ড আছে তাহলে, আপনি সিঙ্গেল না?"
"আমি সিঙ্গেল কিনা এটা আপনার জানার বিষয় না, বিষয় হল আপনি আমাকে জানেন না কিন্তু আপনার সাথে পাঁচ মিনিটের কথা বার্তায় আপনার সম্পর্কে ধারণা হয়েছে আমার।"
তপু রেলিং এ হাত রেখে বলল, "কৌতূহল জেগেছে আমার মনে যে কে সেই ছেলে যার কারণে আপনার কনফিডেন্স এতটাই মজবুত?"
তানজিল জানালো, "ঠিক আছে এতই যখন আপনার কৌতূহল তবে সেটা থামিয়ে দেয়াই ভাল, ছেলেটার নাম কাজল!" এটা বলেই এক হাটা দিয়ে রুমে চলে এল৷

ব্যাগ গোছগাছ করার সময় মনে পরলো সে খুবই ভুল কাজ করে ফেলেছে! মনে মনে বলল, "হায় আল্লাহ! এ কার নাম বললাম আমি!" হাতের কাছের বালিশটাকে মুষ্টিবদ্ধ করে এবং দাত কটমট করে বলল, "আহ্রহ্রহহহহহহহ...... আর কারও নাম মনে পরলো না আমার! এই ছেলে দেখি কাজলের চেয়েও বড় বিরক্তিকর!"

বাড়ি ফিরে দুইটা কথা তানজিলের মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। এক, কাজল নাম ওখানে বলা। দুই, মাইশার সাথে এটা শেয়ার করা ঠিক হবে কিনা। নিজ রুমে কখনও চেয়ার বসে কিংবা বিছানায় শুয়ে বা দরজায় দারিয়ে সময় কাটছে তার। তানজিল স্বীদ্ধান্ত নিল সে মাইশাকে এসব কিছুই জানাবে না। বিকালে মাইশার বাসার উদ্দেশ্য রওনা হল তানজিল। পথিমধ্যেই দেখা হয়ে গেল কাজলের সাথে! কাজল কিছু বলতে গিয়েও বলল না! রাস্তা ছেড়ে অন্য পাশ দিয়ে হেটে চলে গেল৷ এমন অভাবনীয় আচরণে তানজিল বিস্মিত! মাইশার বাসায় পৌছে মাইশা জিজ্ঞেস করল, "চা বানাচ্ছি, নিবি?"
"কখনও মানা করছি?"
মাইশা চা নিয়ে এসে বলল, "তারপর বল, কেমন গেল তোর দুঃসম্পর্কের চাচার বাসা? সুন্দরী কি সেখানেও কাউকে মুগ্ধ করেছে?"
"চাচার ছেলে! ছ্যাঁচড়া একটা৷ শুরুতেই জিজ্ঞেস করছে আমি সিঙ্গেল কিনা, বয়ফ্রেন্ড আছে কিনা! আজব ছেলে! আমিও কথা শুনিয়ে দিলাম তাকে৷ ভেবে নিছে উনি পাবলিকে পড়েন বলে উনাকে আমার গ্রহণ করতে হবে!"
মাইশা একটু হেসে দিল৷ আরেক চুমুক দিয়ে বলল, "তো তারে বলে দিতি কাজল তোর বয়ফ্রেন্ড!"
তানজিল একটু ভাব নিয়ে বলল, "মাথা ঠিক আছে তোর?" মাইশা অট্ট হেসে বলল, "আরে বাবা মজা করছিলাম আর তুই সিরিয়াস হয়ে গেলি!"

গোলাপগঞ্জ বাজারে শাকসবজির দাম আকাশচুম্বী হয়ে উঠেছে! বাজারে সিন্ডিকেট চলছে এটা ক্রেতারা বুঝতে পারছে কিন্তু প্রতিবাদ করতে পারছে না! প্রশাসন থেকে কোনো সারাশব্দ না পেয়ে রীতিমত হয়রান ক্রেতা বিক্রেতা সবাই! এমনই একদিনে মিডিয়া টিম হাজির হয় থানায়। ওসি কামাল তাদের আগমণে মোটেও খুশি ছিলেন না। সকাল থেকে এখন বিকাল, পুরো টিমকেই তিনি অপেক্ষায় রেখেছেন কিন্তু আর পারছেন না৷ শেষমেশ এলাহিকে বললেন তাদের ভিতরে ডেকে দিতে। সাংবাদিকের প্রথম প্রশ্ন ছিল এমন, "বাজারের শাক সবজির আগুন দাম, এটাতো কয়েক বছরেও এমন ছিল না যা এখন হয়েছে, আপনার কি ধারণা এতে?" কামাল উত্তরটা ভোক্তা অধিকার এবং ম্যাজিস্ট্রেটের দিকে চাপিয়ে দিয়ে বললেন, "আমি চেইন অফ কমান্ড মেনে চলি। অভিযানের চিঠি আসুক৷"
আরও কিছু প্রশ্ন করতে যাবে কিন্তু কামাল আর সুযোগ দিলেন না৷ বললেন, "সরি আজ আর নয়, আমাদের পেট্রোলে বের হতে হবে৷"

কামাল ভাল করেই বুঝতে পেরেছে কাদের জন্য এমনটা হচ্ছে! ক্যারিয়ারের শুরুতে বারীর ছায়ায় আশ্রয় নিয়ে সেটা আজ ভূতের মত ভয়ানক হয়ে উঠেছে! একদিকে বারী এবং অন্যদিকে তালুকদার ও হাওলাদার! এদের মাঝে কামাল বেশ চাপে আছে! গোলাপগঞ্জ থানায় সাংবাদিকদের আনাগোনা বেড়েই চলেছে। কামাল এলাহি কে ডেকে বলল, "কখনও কোনো অপারেশনে ছিলে?"
এলাহি বলল, "না স্যার।" কামাল চেয়ারে হেলান দিয়ে বলল, "তৈরি হয়ে যাও, যেকোনো সময় আমরা বের হব।"

"দুইটা স্পট এবং দুইটাই দুই নেতার! তো আমাদের এই অভিযানের খবর যেন কারও কানে না যায়! আমরা দুইটিমে ভাগ হয়ে যাবো।"

সকাল ৯টা,
দুইটা গাড়ি রেডি করে রেখেছে এলাহি। কামাল সবাইকে ডেকে বলল, "সবাই সবার মোবাইল ফোন এখানে রেখে দিন এবং ওয়াকিটকি নিন৷ আমরা শুধুমাত্র এটা দিয়ে যোগাযোগ করবো।"
সবাই মোবাইল জমা দিয়ে দিল। মোবাইল গুলো থানায় রেখে বেরিয়ে পরলো দুইটিম। কামাল ফিসফিসিয়ে বলল, "দেখি এবার খবর লিক করে কিভাবে!"
কিছুদূর যেতেই গাড়িগুলো রাস্তা পাল্টে অন্যদিকে রওনা হল! কামাল ওয়াকিটকিতে বলল, "সারপ্রাইজ! ইউটার্ন!"
মাদকের ছোট্ট দুইটা ফ্যাক্টরি থেকে কয়েকশো কাটন এবং নানান সামগ্রী জব্দ করেছে কামাল এবং তার দল! সেই সাথে ১২জন গ্রেফতার! সমস্ত মালামাল থানায় এনে মিডিয়ার সামনে গুড়িয়ে দিয়েছে কামাল। সেই সাথে প্রেস ব্রিফিং দিয়ে কামাল বলল, "প্ল্যান করতে মাসের পর মাস লেগে যায় কিন্তু পরিচালনা করতে লাগে সঠিক কৌশল যেটা হুটহাট করে হয় না৷ আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন আনুমানিক কয়েক কোটি টাকার মাদক ছিল! যার ছিল তিনি এই শীতকালেও ঘেমে উঠেছেন!"
কামালের হঠাৎ আগ্রাসী আচরণ বারীর সাজানো খেলাঘরের লোকসানকে জাগিয়ে তুলেছে! বারী রাসেলকে ফোন করে বিস্তারিত জানতে চাইলো৷ সমস্ত ঘটনা জেনে বারী রাগে ফোন কোনদিকে ছুড়ে মারলো নিজেই খেয়াল করে নি।

রাস্তা দিয়ে হেটে বা রিক্সায় কোথাও যাওয়ার সময় তানজিলের নজর শুধু কাজলকে এক পলক দেখার জন্য খুজতে থাকে। মনের ভিতরটা হন্যে হয়ে সে কাজলকে খুজছে কিন্তু বাহিরে স্বাভাবিক থাকার আপ্রাণ চেষ্টা চলমান তার! ফোনের ব্লকলিস্ট থেকে কাজলের নম্বর বাদ দিয়েছে মাস খানেক হল কিন্তু ভুলেও কাজলের নম্বর থেকে কোনো কল আসে না! ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে যাচ্ছে তানজিল৷ কোনো কারণ ছাড়াই মাঝে মাঝে হাটতে বের হয় সে। সেসমস্ত রাস্তায় যায় যেখানে কাজল তার পথ আটকেছিল! তানজিল মনে মনে ভাবে, "হায়রে প্রেম! শেষ পর্যন্ত এই অবস্থায় পৌছে দিলি!" বিনা কারণে তো আর হাটতে বের হওয়া যায় না।

দুপুরের দিকে চায়ের দোকানে বসে কাজল বলল, "আর ভাল লাগছে না রে রাসেল! দেশের বাইরে চলে যাবো! বাপের ব্যাবসা আছে এটাও দেখা লাগবে। পড়ালেখা আমার দ্বারা সম্ভব নয়।" কাজলের হতাশা দেখে ফরহাদ বলল, "যাবিই তো! তবে কাজল তুই যাদের সাথে চলিস তারা কেউই তোর বন্ধু না, সব সুবিধাবাদী।" কাজল বলল, "দুনিয়াই সুবিধাবাদী রে। আমিও আর তোরাও!" রাসেল বলল, "কষ্ট পাইলে কিছু করার নাই তাও বলি, তোর হাবভাব আমার ভাল ঠেকছে না, সেই ছোটকাল থেকে তোরে চিনি। তোরে এখন দেখে আমার পুরানা বন্ধু কাজল মনে হয় না, অন্য কেউ লাগে! সত্যি করে বলতো, তুই নেশায় ঢুকে গেছিস নাকি?" কাজল একরকম তেরে এসে মারামারি বাধিয়ে দিল ফরহাদ এবং রাসেলের সাথে! কাজল মারামারিতে পারবে না কিন্তু ওর বাবার প্রভাব বলেই ফরহাদ আর রাসেল মার খেতে থাকলো! কাজল শেষে বলল, "তোরা আমার বন্ধু না।"

রেগে বের হয়ে গেল সে এবং হেটে যাওয়ার পথে খেয়াল করল হাতের কনুই কেমন যেন ব্যাথা হচ্ছে! তাকিয়ে দেখে তিন চার জায়গায় কেটে ছিড়ে গেছে! পাশেই থাকা টিউবওয়েলে হাত ধুয়ে নিচ্ছে সে। আবার হাটতে শুরু করবে আর তখনই দেখে সামনে তানজিল দারিয়ে আছে! কাজল বিস্মিত হয়ে প্রথমে ডানে, বামে এবং পিছনে তাকালো। তানজিলের সাথে কেউই নেই! পাশ কাটিয়ে এগিয়ে যাবে ঠিক তখনই তানজিল বলল, "থামেন, হাতে কি হয়েছে? গুন্ডামি মারামারি এখনও কমাননি?"
কাজল কোনো কথা বলছে না। তার বিশ্বাসই হচ্ছে না তানজিল তাকে প্রশ্ন করছে! তানজিল আবারও বলল, "কি হল? উত্তর দিচ্ছেন না যে?"
"না মানে কি বলবো বুঝে উঠতে পারছি না। তোমার... না মানে আপনার আমার সাথে কথাবার্তা হচ্ছে এটা বিশ্বাস হচ্ছে না!"
তানজিল মুচকি হেসে বলল, "আমি আপনার সামনে এবং আপনার সাথেই কথা বলছি!"
ক্ষানিকটা ঠায় দারিয়ে থেকে তানজিল বলল, "আপনার এই নিজেকে শুধরানোর চেষ্টা আমার খুব ভাল লেগেছে। তো এখন থেকে তুমি করে ডাকবেন৷ হুম? আসি আজ।"
কাজলের বিশ্বাস হচ্ছে না তানজিল তাকে এসব বলছে! কাজল দেখছে তানজিল চলে যাচ্ছে। দৌড়ে তানজিলের সামনে দারিয়ে গেল এবং বলল, "জানোই তো আমি তোমার জন্য নিজেকে শুধরানো শুরু করেছি এবং এটা চলতে থাকবে। এবং এরচেয়ে ভাল সময় সুযোগ আর দ্বিতীয়বার পাবো কিনা সন্দেহ!"
তানজিল জানতে চাইলো, "কেমন সুযোগ?"
কাজল একমুহূর্ত দেরি না করে বলল, "আমি তোমাকে অসম্ভবরকম ভালবাসি!" তানজিল কয়েক সেকেন্ড চুপ করে রইল। কাজল অধীর আগ্রহে আছে কিছু একটা শুনার জন্য! লাজুক হয়ে তানজিল শুধুমাত্র বলল, "হুম.... আমিও!" এরপর সে হাটা শুরু করল। কাজল এতটাই খুশি হল যার সীমানা তার নিজেরও জানা নেই। ওদিকে তানজিল ভাবছে শেষ পর্যন্ত ধরা দিতেই হল তাকে! শুধুমাত্র ভয়ে আছে মাইশাকে নিয়ে এবং কোনোভাবেই জানানো যাবে না তাকে।

টেলিফোন বেজেই চলছে। হাতমুখ ধুয়ে এসে ফোন ধরলো এবং বেশ গম্ভীর কণ্ঠস্বরে শুনলো, "তাড়াতাড়ি চায়ের দোকানের পাশে লোডের দোকানে আসেন৷ দেরি করবেন না।"
ফোন রেখে দিয়ে কামাল ফিসফিস করে বলল, "ধন্যবাদ তোমাকে, সেদিন কলার না ধরলে আমি নিজেকে চিনতে পারতাম না৷" কামাল চলে গেলেন লোডের দোকানে৷ এক কাপ চা নিয়ে কথা শুরু করে দিলেন, "জ্বি তো বলেন কি জন্য হঠাৎ কল দেয়া?"
"অনেক সৎ হয়ে গেছেন দেখছি? শুধুমাত্র বেতন দিয়েই সংসার চালানোর ইরাদা?"
কামাল বলল, "ওই যে বলে না 'আপনে মেরে আখে খোল দি!' ঠিক তেমন!" বারী বললেন, "ভাবীরে আমার সালাম দিয়েন আর ছেলেমেয়েকে আদর!"
কামাল অল্প হেসে বলল, "বারী সাহেব, আপনার সাথে উঠাবসায় আমার নয় বছর হয়ে গেছে। আপনার প্রতিটি ইশারার সাথে আমি খুব ভালভাবে পরিচিত। বুঝি কিসের মানে কি! কিন্ত আপনি জানেন না আমার ইশারা এবং আমার মাইন্ড! রাখলাম।"

চেয়ারে বসে চোখ বন্ধ করলেন কামাল। নিজেকে চার পাঁচ বার ঘুরালেন। ঘূর্ণন থামিয়ে তিনবার বেল বাজালেন কামাল। সকল সদস্য উপস্থিত হল৷ কামাল বললেন, "আজ রাত ১০.৩০ মিনিটে, আমরা আবারও টহলে বের হবো এবং তল্লাশি চালাবো। কারও কোনো ধারণা আছে কোথায় যেতে পারি?"
কনস্টেবল কামাল বললেন, "স্যার বারীর কোনো গোডাউন?" ওসি হেসে বললেন, "বারী আধা খোড়া হয়ে গেছে, ব্যথা আগে কাটিয়ে উঠুক! আর কেউ?"
কেউ কোনো উত্তর দিচ্ছে না৷ কামাল আবারও বলল, "এবার যাবো তালুকদার এবং হাওলাদার গ্রুপে! যাও সবাই সিভিলে তৈরি হও!"

রোমান্টিকতার সীমানা ছুয়ে ছুয়ে যাচ্ছে কাজল! তানজিলের সাথে সারাদিন তো কথা হয়ই, সেই প্রতিরাতে দুই ঘন্টার নিচে কথা থামেই না! তানজিলও মাঝে মাঝে কল করে খোজ নেয় কাজলের। বেশ ভালই চলছে তাদের প্রেম৷ কাজল প্রায়ই বিভিন্ন রকমের চকলেট গিফট করে। বাসায় বেশ ভালভাবেই সেটল করে ফেলেছে তবে মাইশাকে নিয়ে চিন্তায় আছে তানজিল। অনেক দিনের প্রেম তাদের, মাইশাকে বলবে বলবে করেও বলা হয় নি। আর মাইশার সন্দেহ হচ্ছে কারণ তানজিলের অনেকটা পরিবর্তন সে উপলব্ধি করেছে! তানজিল কাজলকে বলল, "আচ্ছা শোনো, আমাদের কথাবার্তা কমিয়ে দিতে হবে।"
কাজল বলল, "তো বল কবে বিয়ে করবে? পরশু? কালই বাবাকে পাঠাই? বিয়ের পর সারাদিন কথা বলবো। ফোনের দরকারই নাই!"
আরে গাধা, আমি সেটা বুঝাইনি। আমার ফোন এবং সিম একটাই৷ তো তোমার সাথে লাগাতার কথা বলতে থাকলে যে কেউ সন্দেহ করে নিবে আমাদের! তাই কথা বলা কমাতে হবে!"
কাজল বলল, "আরে আমার পাগলি রে! ব্যস এই নিয়ে এত মাথাব্যথা? কালই বিকেলে লাইব্রেরিতে দেখা করো, আমি এই সমস্যার সমাধান নিয়ে আসছি!"

রাত ১০.৩০ মিনিট,
এলাহি গাড়ি নিয়ে থানা থেকে কিছুটা দূরে দারিয়ে আছে। বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে বাকিরা উঠে পরল। কামাল বলল, "সবাই ফোন জমা দাও! ছোট বড় যা আছে সব!" ছয়জনের কাছ থেকে দশটা ফোন হল মোট। কামাল একটা কাটোনে রেখে দিল। কিছুদুর যেতেই দেখতে পেল আরও একটা গাড়ি! দুটো গাড়িই সামনাসামনি থামলো। ঘুটঘুটে অন্ধকার এবং অন্ধকার পরিবেশে সবচেয়ে সুন্দর দেখা যায় আকাশের তারাদের! কামাল কাটোন সহ নামলো এবং ওপর গাড়ি থেকে থেকে আরেকজন কাটোন নিয়ে নামলো! কামাল বলল, "৪০-৫০, এর বেশি স্পিডে চালাবে না৷ যাও!"
কাটোন নিয়ে গাড়িতে ফেরত এল কামাল৷ সবাইকে একটা করে ওয়াকিটকি দিয়ে দিল! বলল৷ "নাও আমার তরফ থেকে সারপ্রাইজ গিফট!" সেই সাথে ফিসফিসিয়ে বলল, "আর কোনো ট্র‍্যেস হবে না। শুধু কনফার্ম হওয়ার পালা।"

রাত ১১:০৩ মিনিট,
গাড়ির সকল লাইট বন্ধ করে গাড়ির ভিতরেই আছে কামাল এবং বাকিরা! কামাল বলল, "আমরা অপেক্ষায় আছি একটা ট্রাকের৷ সোর্সের তথ্য অনুযায়ী এখানে চোরাচালানের কারবার হয়। কিন্তু কেমন কারবার হয় সেটা জানা নাই!"
এলাহি বলল, "স্যার ব্যাড নিউজ!"
"কি?" "খুব সম্ভবত ঝড় হবে, পশ্চিমাকাশে দেখেন, লাইটিং!"
তিন মিনিট পরেই একটা ট্রাক এল। কামাল বললেন, "দ্যাটস ইট! শোন সবাই, আমরা এখানে ছয়জন। আর বাহিরে দুইজন আছে, মোট আটজন৷ জোড়ায় জোড়ায় বের হবে এবং একজোড়া যাবে ফ্যাক্টরির পিছনে, একজোড়া থাকবে সামনে আর আমি এবং এলাহি ভিতরে যাবো৷ যেহেতু ফ্যাক্টরিটা বেশ ছোট তাই আশা করি কোনো সমস্যা হবে না। যেভাবেই হোক, এই ট্রাক আমাদের চাই আজ! বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলে এই রাস্তায় ট্রাক নিয়ে যাওয়া সম্ভব না। ক্লিয়ার?"
"ক্লিয়ার!"
এক এক করে বের হল সবাই৷ নির্দিষ্ট স্থানে পৌছে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলেন৷ কামাল বললেন, "প্রায় ২০-২৫ জনের মত লোকজন ভিতরে। সবাইকে ধরা দেখছি কষ্ট হয়ে যাবে! গান এইম কর কিন্তু ফায়ার করার দরকার নেই প্রাথমিকভাবে।"
"স্যার হামিদ বলছি"
"হ্যা বল!"
"স্যার পিছনে দেখেন, আরও কিছু আসছে!"

কামাল পিছনে তাকালো৷ আরও একটি ট্রাক আসছে! কামাল বললেন, "সবাই সবার জায়গায় থাকো। এলাহি, তুমি আর সোর্সরা আমার সাথে চল! আমরা ওই ট্রাককে আগে থামাবো আর এই ট্রাক গেটের সামনে থাক। প্রথমে ভিতরে থাকা কয়েকজন কে বাইরে বের করি!"
মাটির রাস্তায় ট্রাক খুব আস্তে আস্তে আসছে৷ যতটা দ্রুত সম্ভব দৌড়ে ঘুরে এসে দুইজন দুদিক থেকে উঠে ড্রাইভার এবং পাশে থাকা আরেকজনের দিকে বন্দুক তাক করলো৷
এলাহি বলল, "গাড়ি থামা, থামা না হলে ছয়টা বুলেট মাথায় চলে যাবে!" গাড়ি থেমে গেল। কামাল বললেন, "হেডলাইট বন্ধ, ইমারজেন্সি লাইন অন কর।"
কামাল আর এলাহি দ্বিতীয় ট্রাক নিজেদের নিয়ন্ত্রণে করে নিল। এদিকে মেইন গেট খুলে দিল তারা। সামনের ট্রাক গেটের সামনেই দাঁড়ানো। "এলাহি সার্চ কর! যা পাওয়া যায় সব নাও"
মোবাইল, মানিব্যাগ এবং আরও অনেক কাগজপত্র পেল তারা! ওপাশ থেকে হামিদ জানালো, "স্যার, কয়েকজন বের হয়েছে এবং আপনাদের দিকেই যাচ্ছে!" ট্রাকের হেডলাইট পুনরায় চালু করে কামাল এবং এলাহি তাদের দুইজনকে নিয়ে পাশের ক্ষেতে চলে গেল! ট্রাকের আলোয় এবং বাইনোকুলারে স্পষ্টভাবে কামাল দেখতে পাচ্ছে দুইজন গার্ড এবং দুইজন অস্ত্রধারি সামনে এগাচ্ছে! ট্রাক ড্রাইভার বলল, "স্যার আমার কোনো দোষ নাই। আমি তো শুধু ট্রাক দিতে আইছি!" "চুপ কর, আর একটা শব্দ করলে এখানেই পুতে রেখে যাবো তোকে!" কামাল বলল।

আকাশে বিদ্যুৎ চমকানো বেরে গেছে। মেঘের ঝলকানি আস্তে আস্তে তাদের গাড়িকে দৃশ্যমান করে তুলবে! ট্রাকের কাছাকাছি আসতেই গার্ড দেখলো ট্রাকে কেউ নেই! প্রবল সন্দেহে তার কাছে থাকে বাশি বাজিয়ে দিল তারা! ফ্যাক্টরির সবাই সজাগ হয়ে গেল৷ "ফায়ার!" বলেই গুলি চালানো শুরু করলো কামাল এবং বাকিরা। কামাল বললেন, "টার্গেট লেগস!"
ফায়ারিং শুরু হয়ে গেল দুই পক্ষের! ফ্যাক্টরি থেকে এলোপাথাড়ি গুলি চলতে শুরু করল! কামাল এবং বাকিরা অপেক্ষা করতে থাকলো সঠিক সময়ের। কয়েক মিনিটের মধ্যেই তাদের গুলিবর্ষণ কমে যেতে লাগলো৷ কামাল বুঝতে পারলো এদের কারও ফায়ারিং সম্পর্কে আইডিয়া নেই!
"ইটস টাইম! ফায়ার!" কামাল এবং তার দলকে বেশি বুলেট খরচ করতে হয় নি তাদের ধরাশায়ী করতে। একেরপর এক লোক ধরা পরেছে তাদের বুলেটে। কামালের নির্দেশ মাথায় রেখে যতটুকু সম্ভব ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর চেষ্টা করেছে তারা কিন্তু তারপরও একজন নিহত হয়েছে! সর্বমোট ১৫জনকে আটক, চারজন আহত! অনেকেই পালাতে সক্ষম হয়েছে। ফ্যাক্টরির সমস্ত এলাকা ঘুরে দেখল হামিদ এবং কনস্টেবল কামাল। "স্যার এরিয়া ক্লিয়ার! কিছু রাইফেল আর কিছু ফাইল আছে ফ্যাক্টরির ভিতরে!"
কামাল বললেন, "প্রথমে ট্রাক চেক করি, দেখি কি কি আছে?"
এলাহি ট্রাক চেক করে বলল, "স্যার! ভরা বস্তা রয়েছে এবং হতে পারে এর ভিতরেই ইলিগ্যাল কিছু আছে! এবং কয়েকটা ট্যাংক! ট্যাংক সিল করা! দুইটা ট্রাকেই মোটামুটি সেমভাবেই সাজানো!"
কামাল বললেন, "বৃষ্টির ফোটা পরছে! হামিদ, তুমি আর কামাল এই ট্রাক থানায় নিয়ে যাও। এলাহি, তুমি আর সাব্বির এই দুইজন ড্রাইভারসহ পরের ট্রাক থানায় নিয়ে যাও। কায়েস এবং বর্মণ আমার সাথেই থাকো।"
ট্রাক দুটোর কাছে যেতেই দেখে এলোপাথাড়ি গুলিতে প্রথম ট্রাকের চাকা বসে গেছে! এমন সময় ঝিরিঝিরি বৃষ্টি এবং বাতাস! কামালকে তারা ট্রাকের অবস্থা জানালো। এলাহি বলল, "স্যার এখানে ব্যাক আপ ফোর্স বা সাপোর্ট ছাড়া থাকা ঠিক হবে না।"
"ঠিক বলছো কিন্তু ট্রাক গুলারে কি করা যায়?" কামাল ট্রাক ড্রাইভারকে ডেকে চাকা বদলাতে বলল৷ সে জানালো, "স্যার এই কাদামাটিতে চাকা পালটানো সম্ভব না।" কামাল এলাহিকে বললেন, "পিছনের ট্রাক তো ঠিক আছে?" "জ্বি স্যার।" "ঝুম বৃষ্টি নামার আগে দ্বিতীয় ট্রাককে গেটের কাছে নিয়ে এস।"
এলাহি বলল, "স্যার আমরা এখানেই মিডিয়া কভারেজ করলে সেফ থাকবো মনে হয়। তাদের টিআরপি এর জন্য সাগর পাড়ি দিতে হলেও আসবে আর আমরা ব্যাক আপ পাবো! কি বলেন?"
কামাল হেসে বলল, "একদম!" ড্রাইভারের ফোন দিয়ে থানায় এবং হাসপাতালে খবর পাঠালেন কামাল। অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে সম্পূর্ণ ফ্যাক্টরি ক্রাইম সিন টেপ দিয়ে মুড়িয়ে দিলেন। ১৭ মিনিটের মধ্যেই চার পাঁচটা টিভি রিপোর্টার হাজির!
কামাল বললেন, "বেঁচে গেলাম! শোন সবাই, সমস্ত ঘটনা যেহেতু মিডিয়া কভার করবে তাই আমাদের কাজ খুব নিখুঁত হতে হবে৷ এরপর থেকে সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে আসতে হবে। ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেলাম এবার! দুই ট্রাকের মালামাল আলাদা কর আর আটক যাদের করলাম তাদের মিডিয়া কভারেজ দিয়ে জেলে নিয়ে যাও। এবং সোর্সেস, তোমাদের কাজ শেষ, নিঃশব্দে চলে যাও!"

একের পর এক কলে বারীর ঘুম ভেঙে গেল! চশমা পরে চলমান কল রিসিভ করেই শুনতে পেল, "দাদা! সব শেষ! টিভি চালু করেন!" কল কেটে ফোন স্ক্রিনে দেখলেন ৮টা মেসেজ এবং সবগুলাই টিভি নিউজ এর কথা বলছে!
বারী তাড়াতাড়ি নিউজ চ্যানেল চালু করলেন৷ সকল নিউজ চ্যানেলেই তার ফ্যাক্টরির খবর ব্রেকিং নিউজ হিসেবে দেখাচ্ছে! বারী কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না। কারণ এমন কোনো অর্ডার বা লেনদেন তার সাথে কারও হয় নি! নিউজ চ্যানেলে দেখানো খবরে যেসব মালামাল দেখানো হচ্ছে সেগুলো খেয়াল করে দেখলো৷ বারীর মনে পরলো এসব তো স্টোরেজে রাখা মালামাল তাও বছর দুয়েক আগের! বারীর মাথায় আকাশ বারি মারলো এমন অবস্থা তার!

"বিশ্বাস হচ্ছে না রে ভাই গতকাল এমন একটা মিশনে ছিলাম! কামাল স্যারকে যেমন দেখছিলাম শুরুতে এখন তার পুরোপুরি উল্টো!!!" অনেক খুশি হয়ে রাজীনকে বলল এলাহি। এলাহি রাজীনের খোজখবর জিজ্ঞেস করল। রাজীন বলল, "দ্বিতীয় ট্রান্সফার হয়েছে। এবার পাহাড়ে আছি! মনে হচ্ছে যেন বাড়ির চেহারা দেখি না কত যুগ হয়ে গেল!"
এলাহি কিছুটা চুপ থাকলো৷ পরে বললো, "আচ্ছা রাখলাম পেট্রোলে বের হব।"

"আহা! আজ তুমি কল করলে আমায়?" কাজল বিস্ময় নিয়ে বলল! ওপাশ থেকে তানজিল বলল, "খুব খুশি আজ আমি! দেখি ধারণা কর কোন খুশির খবরের জন্য আমি খুশি?"
"উমমমম... বাসার সবাই আমাদের ব্যাপারে জেনেছে এবং রাজিও হয়েছে?"
"ধুর!!! আরে আমি আইবিএ এর পরীক্ষায় মেরিটে এসেছি! ১৯তম!!" কাজল উঠে বসলো, "কি!!! সত্যি? তাহলে আজ কোথায় দেখা করছো? এত বড় অর্জনে কোনো সেলিব্রেশন করবে না? আজকের কোথায় কি খাওয়াবে সেটা পুরোটাই তোমার। কোনো না বলা চলবে না, রাখলাম! লাভ ইউ!!!"

বিকাল ৪.৪০মিনিট,
"আচ্ছা বল, আমার ক্লাস শুরু হলে সপ্তাহে একবার হলেও আসবে?" কাজল কোনো উত্তর দিল না!
তানজিল কাজলের মুখোমুখি দাড়ালো, হাতটা ধরে বলল, "আমার একটা অনুরোধ রাখবে? ভুল বুঝবা না তো?"
"অনুরোধ কেন? তোমার আদেশ বল! কোনো সমস্যা নাই।" তানজিল বলল, "আমি চাই তুমিও পড়ালেখা শুরু কর, মাত্র তিনটা বছরই তো গ্যাপ দিয়েছো! পুরণ হয়ে যাবে। প্লিজ!!"
কাজল বলল, "যখন বললেই আমি তো মানা করতে পারি না। তবে আমারও একটা কথা বলার আছে। অপেক্ষায় ছিলাম, শোনার পর আমাকে ভুল বুঝবে না তো?" তানজিল ঘাবড়ে বলল, "ভয় দেখাচ্ছো কেন? কি হয়েছে? কোনো সমস্যা?"
কাজল বলল, "বলবো বলবো করেও বলা হয় নি!" তানজিল কিছু একটা আন্দাজ করার চেষ্টা করলো।
"আমি বিদেশ যাবো, প্রস্তুতি নিচ্ছি আস্তে আস্তে। কারণ তোমার খুশিটাই বড় আমার কাছে। তাই অপেক্ষা করছিলাম এতদিন।" তানজিল একটু দূরে গিয়ে দারালো। কিছুই বলছে না, চুপচাপ! কাজল পাশে দারালো, জিজ্ঞেস করল, "কিছু বলছো না যে?"
তানজিল শান্ত মেজাজে বলল, "তোমার জীবনের সিদ্ধান্ত নেয়ার সম্পূর্ণ অধিকার আছে। যে সিদ্ধান্তই নাও সেটা ভালভাবে বুঝে নিও।" "আচ্ছা বাবা সরি তো, এই দেখ কান ধরছি।"
তানজিল আবারও মুখোমুখি দারিয়ে বলল, "মনে আছে না? তোমাকে আমার একদমই সহ্য হতো না?"
"আরে সেসব প্রায় ভুলতে বসেছি! ওসব কেন মনে করছো?"
"আগে তোমাকে দেখতে ইচ্ছা হতো না, বিরক্ত লাগতো কিন্তু সেই তুমি, তোমাকে এখন না দেখলে আমার ভাল লাগে না, তোমার কথা, তোমার পরিবর্তন এসবে আমি অভ্যস্ত এবং আকৃষ্ট হয়ে আছি! বিষয়টা তোমার হঠাৎ বিদেশ যাওয়া নিয়ে নয়, কি করে বুঝাই তোমায়!! আমার গলা শুকিয়ে যাচ্ছে! বুঝতে পারছো তুমি? এটাতো আর অন্য জেলা না? আলাদা একটা দেশ! আর যাওয়ার নিয়াত করলে খুব ভাল কথা কিন্তু একটাবার এমনিই এই বিষয় নিয়ে কথা তুলতে! সেটাও তো কর নি!"
কাজল পাশে দারিয়ে আছে চুপচাপ ভাবে। কি বলবে কোনো কথা খুজেঁ পাচ্ছে না! একটুপর বলল, "তানজিল, আমি খুবই দুঃখিত এবং তোমার সকল অভিযোগ সঠিক। এভাবে অভিমান করে যদি থাকো তাহলে আমি কি ঠিক থাকতে পারবো? তানজিল?"
তানজিল কিছুটা রেগে বলল, "থাকো তুমি, আমি গেলাম! তুমি আমার মুডটাই নষ্ট করে দিলে।"
তানজিল দারালো না! কাজল অনেকবার ডেকেও উত্তর পেল না! কাজল পিছু করতে থাকলো কিন্তু তানজিল তাকে সীমানা বেধে দিয়েছে! এটা সে অতিক্রম করতে পারবে না তাই সেটুক পর্যন্ত গিয়ে থেমে কাজল! তার কোনো কল কিংবা মেসেজের রিপ্লাই করছে না তানজিল!

"যখন যে যেই চেয়ারে থাকে, সেই তার ক্ষমতা দেখায়! এইতো সেদিনের কথা, বারীর দখলে ছিল পুরো এলাকা আর আজ নিজেকে দেখছে নির্যাতিত কিংবা শোষণের শিকার! নদীর প্রবাহ এত সহজে পরিবর্তন হয় না, আর একবার উল্টো ধারায় গেলে শত বর্ষের বেশি সময় লেগে যায় কিন্তু তাও পুরানো প্রবাহ ফিরে আসে না! আজ বারীর সাথে যা ঘটছে সেটার জন্য সে নিজেই দায়ী! বেশিদিন ধামাচাপা দিয়ে থাকতে পারবে না। কয়েক মাসেই তার কয়েক কোটি টাকার লোকশন হয়েছে। এত বড় লসেও তার হার্ট এটাক হয় নি এ ব্যাপারটা ভাল ঠেকছে না!" গাড়িতে বসে বসে ভাবছে এসব ভাবছে কামাল। এমন সময় এলাহি চিৎকার দিয়ে বলল, "স্যার!! গাড়িতে বোমা! তাড়াতাড়ি বের হোন!" কামাল সামনে তাকিয়ে দেখলো তিনচারটা বাইক চলে গেল! তড়িঘড়ি করে বের হতে লাগলো সবাই কিন্তু বোমা বিস্ফোরিত হল! মারাত্মক আহত হলেন এলাহি, হামিদ এবং সাঈদ!!
কামাল কিছুক্ষণের জন্য বধীর হয়ে গেল! কোনদিকে আছে বুঝতে পারছে না! কোনোভাবে উঠে দারালো সে। এলাহি এবং বাকিদের কাছে গিয়ে দেখে রক্তাক্ত হয়ে আছে! আশেপাশে থাকা লোকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে চলে এল। কামাল আর্তনাদ করে বললো, "কেউ হাসপাতাল, থানা, এম্বুলেন্স কিছু একটা খবর দেন৷ কল করেন!" বলতে বলতে কামাল জ্ঞান হারিয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পরলো!


--- ধন্যবাদ | ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন ---
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:১৩
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×