এক.
'পুঁজিবাদী সমাজের সবচেয়ে বড় ও জনপ্রিয় কুসংস্কারের নাম প্রেম।' না, প্রিয় পাঠক; চোখ কটমট করে তাকানোর কোন কারণ নেই। এত বড় কথা বলার মতো জ্ঞান-গরিমা অথবা কুসাহস কোনোটাই আমার নেই। কথাটা প্রয়াত ড. হুমায়ুন আজাদের। আমি কথাটা বিশ্বাস করি। আমি জানি, কেউ কারো জন্য খারাপ থাকে না। কিন্তু হঠাৎ কাউকে 'আই লাভ ইউ' বলার অপরাধে যেমন চটাস করে চড় খেতে হয় তেমনি প্রেম-ভালোবাসা বিষয়ক এরকম কিছু সত্য বলার অপরাধে গণধোলাই খাওয়ার সম্ভাবনা ও প্রচুর। আর নানা ধরনের অপবাদ তো আছেই। শালায় ছ্যাঁকা খাইছে, জীবনে ভালোবাসা পায় নাই পিরিতের কাঙাল, বউ ভালো না-এরকম হাজার অপবাদ শুনতে শুনতে নিজেকে কূলহারা কলঙ্কবাজ মনে হবে। তবু প্রশ্ন থেকে যায়, ভালোবাসার নামে এখন যা হচ্ছে তা আসলে কী? এক মেয়ে কাস্টমার দোকান থেকে-কেনা পোশাক ফেরত নিয়ে এসেছে। তার অভিযোগ, সবাই ছিঃ ছিঃ করছে, বলছে তাকে নাকি ভীষণ বাজে দেখাচ্ছে। তখন দোকানি হেসে বলল-ম্যাডাম আপনিতো লেটেস্ট ফ্যাশনের ড্রেস চেয়েছিলেন। ভুলে যাচ্ছেন কেন, বাজে দেখানোটাই এখনকার বাজার চলতি লেটেস্ট ফ্যাশন! স্বভাতই প্রশ্ন জাগে, ভালোবাসার নামে ভালোবাসা না থাকাটাই কি এখনকার বাজার চলতি লেটেস্ট ফ্যাশন?
দুই.
প্রয়াত করি ত্রিদিব দস্তিদারের কবিতার বইয়ের নাম ছিল 'ভালোবাসতে ভালোবাসতে ফতুর করে দেব'। কবি কাউকে ফতুর করতে পেরেছিলেন কিনা তা আমাদের হার্ডডিস্কে নেই। তবে প্রাইমারি স্কুল-হাইস্কুল-কলেজ কিংবা ভার্সিটি লাইফে যত প্রেমের ডাউনলোড আমার চোখে পড়েছে, সব ক্ষেত্রেই দেখেছি-কেবল ছেলেরাই ভালোবাসতে বাসতে ফতুর হয়ে গেছে, মেয়েরা নয়! তাই কবিতার বইয়ের নাম হওয়ার দরকার ছিল 'ভালোবাসতে ভালোবাসতে ফতুর হয়ে গেলাম'। যেমন ফিট সেই বিখ্যাত কথা-'ভালোবাসা মোরে ভিখারি করেছে তোমারে করেছে রানী...।' ফতুর আর ভিখারী না হয়ে কোনো উপায় আছে? ভালোবাসার সুগভীর মাইনকা চিপায় কতকিছু যে আটে তার লিস্টি কয়জন জানে? প্রেমিকার আলতা স্নো-পাউডার-লিপস্টিক-নেইল পলিশ-ড্রেস আইব্রু-সবই ভালোবাসাকে জোগাড় করতে হয়। মোবাইলে টাকা হেঁচকি লোড করতে হয়। নিয়মিত গিফটের নামে বাবার পকেট কাটতে হয়। লাল গোলাপ দিতে হয় আর ডেটিংয়ে পকেট কাটার ব্যাপারটা তো আছেই। সম্পূর্ণ নিজ দায়িত্ব চায়নিজে নিয়ে যেতে হয় আবার দাবি-দাওয়া মতো প্রেমিকাকে নানান জিনিসপত্র খরিদও করে দিতে হয়। সবকিছুই করতে হয় প্রাণের ভালোবাসার মানুষ মানে প্রেমিক সাহেবকে। ভাবখানা এই যে, প্রেমিকা কেবল চাইবে আর প্রেমিক কেবলই দেবে। কিন্তু কীভাবে কোথা থেকে দেবে তা ভাবার মানুষ নেই। সবকিছুর চাপে স্বয়ং প্রেমিক মশাইর ভালোবাসাই উচ্ছেদ হওয়ার জোগাড়। প্রেমিকাদের চাহিদার বুলডোজারের চাপে প্রেমিকদের সবার প্রাণ যায় যায় অবস্থ। মর্ত্যরে মদনদের ওপর মর্ত্যে বসবাসরত স্বর্গের অন্সরীরা অবিরাম চালাচ্ছে বুলডোজার। তাদের বুলডোজার কবলিত হয়ে ভালোবাসা এখন হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন। দিন কাটছে, অনেক কিছুই বদলে যাচ্ছে। আর ভালোবাসা আস্তে আস্তে পরিণত হচ্ছে উত্তরাধুনিক কুসংস্কারে...!
তিন.
এক পরীক্ষার ইন্টারভিউতে প্রার্থীকে প্রশ্ন করা হলো-দেখুন আমরা অফিসের পরিচ্ছন্নতার দিকে খুব নজর রাখি। আচ্ছা রুমে ঢোকার আগে আপনি ঘরের পাপোশে আপনার পা মুছে এসেছেন তো? তখন প্রার্থী জবাব দিল-জ্বি স্যার, অবশ্যই! তখন ইন্টারভিউ বোর্ডের সদস্য বলল-খুব ভালো কথা; কিন্তু লক্ষ্য করে দেখুন আমাদের রুমে অথবা রুমের বাইরে কোথাও কোনো পাপোশই নেই। ভালোবাসার ব্যাপারটিও এমন অদৃশ্য ধোঁয়াটে জটিল ও যাতনাময়। যত বিচার-বিশ্লেষনই করা হোক না কেন ফলাফল ওই একই-ভিখারি ফতুর নয়তো ওই প্রার্থীর মতো ফেল মারা। আর সবকিছুর পরও একবার যদি ভালোবাসা নামক কিছু একটার কবলে পড়ে যায়, তাহলে কিছুকাল পরেই বোঝা যাবে ভালোবাসা আসলে প্রত্যাশা আর অপ্রাপ্তির বুলডোজার ছাড়া কিছুই নয়।
আলোচিত ব্লগ
মা
মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।
অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন
কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।
একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প
তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন
ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে
ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন
জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।
সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন