somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তারেক মাসুদের সঙ্গে...

২৪ শে নভেম্বর, ২০০৬ ভোর ৬:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

[তারেক মাসুদ। আমাদের চলচ্চিত্রের উজ্জ্বল এক পরিচালক। মুক্তির গান, মুক্তির কথা, আদম সুরত, মাটির ময়না, অন্তর্যাত্রা-এর নির্মাতা। এর মধ্যে মাটির ময়না'র খ্যাতির কথা আমরা সবাই জানি। চলচ্চিত্রকার হওয়ার স্বপ্নেবিভোর একজন তরুণ নিজেকে কিভাবে তৈরি করবে সেসব জানতেই তার মুখোমুখি হয়েছিলাম]

একজন তরুণ কিভাবে নির্মাতা হয়ে উঠতে পারে?
তারেক মাসুদ : প্রথম কথা হচ্ছে, কোনো অগ্রজের পরামর্শ না নেওয়া। অগ্রজরা যা বলেন তা করলে, নির্মাতা হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা হয়ে উঠতে পারে। কারণ অগ্রজরা সাধারণত বলে থাকেন, এই রকম হতে হবে, অনেক সাধনা করতে হবে, অনেক প্রস্তুতি নিতে, অনেক পরিশ্রম করতে হবে, অনেক একাগ্র হতে হবে। এগুলো তো খুব জানা কথা যে, তরুণ নির্মাতাদের জন্য অগ্রজ নির্মাতারা কি করবেন। তার সঙ্গে এটাও সত্য যে, অগ্রজ নির্মাতাদের কাছ থেকে শেখা যায় একাধিক ভাবে_ শুধু তাদের কাজ দেখে, তাদের কথা, পরামর্শ থেকে যেমন শেখা যায়, তাদের ভুল থেকেও শেখা যায়। আমি মনে করি, অগ্রজদের যে ত্রুটি বা যে পদ্ধতিতে তারা কাজ করছেন, যে প্রক্রিয়ায়, সেই প্রক্রিয়ার সীমাবদ্ধতা কোথায়? তারা কোথায় আটকে আছেন বা আটকে ছিলেন, তার থেকে একটু ব্রেকথ্রু কিভাবে করতে হবে, সেটা বের করতে হবে।
আমি মনে করি, যেহেতু কোনো আনুষ্ঠানিক, প্রাতিষ্ঠানিক অথবা শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ শিখিনি, দেখে এবং ঠেকে শিখেছি, ভুল করে শিখেছি_ ফলে সেই হয়তো ভালো বলতে পারে, যে একটা আদর্শ পরিবেশে কাজ করেনি, যে নির্মাতা, প্রতিকূল পরিবেশে কাজ করেছেন, ভুল করে কাজ শিখেছেন, সে কিন্তু বলতে পারেন। 'হঁ্যা এটা করো না আমি করে দেখেছি'। সেই জায়গা থেকে আমি বলতে পারি যে, 'কি করিতে হইবে না।'
কতকগুলো টিপস আমি বলব। তার মধ্যে একটি হচ্ছে এই যে, চলচ্চিত্র নির্মাণ বা নির্মাণ-বিনির্মাণের কথা বলছি আমরা সেখানে, যে মাধ্যমটা, যে কারিগরি এবং টেকনিক্যাল এই ব্যাপারটা সবচেয়ে আগে বুঝতে হবে এবং একজন নির্মাতাকে শুধু নির্মাতা হবো বলে নির্মাতা হওয়ার চেষ্টা না করে একজন কারিগর হিসেবে নিজেকে দেখতে হবে। টেকনিক আর মোস্ট ইম্পর্টেন্ট।
টেকনিশিয়ান লেভেলে ছবির যে বিভিন্ন কারিগরি দিক রয়েছে, সেটার কস্টিউম থেকে শুরু করে মেকাপ, ক্যামেরা, লাইট, আর্ট ডিরেকশন, এডিটর, সাউন্ড_ সবগুলোই যে মোটামুটি জানে, তখনই কিন্তু সে নির্মাণাধীন নির্মাতা হতে পারে। একারণে 'ফিল্ম স্কুল'-এ কিন্তু প্রথম বছরে কখনোই পরিচালনা শেখানো হয় না। অনেকগুলো স্কুলে প্রথমে বিভিন্ন কারিগরি দিকগুলো শেখানো হয়। যেগুলো অনেকটা বলা যায় শরিয়ত বনাম মারফত। অর্থাৎ শরিয়ত মানে প্রথম কাজগুলো, ফরজ কাজগুলো হচ্ছে এটাই, সেগুলো হচ্ছে সব মাধ্যমে কারিগরি প্রযুক্তিগত দিকটা জানা। মাধ্যমটাকে জানা। সেই মেধাটা, অভিজ্ঞতাটা, সংবেদনশীলতা, শৈল্পিক মতা_ সেটা কিন্তু সবই যে ঈশ্বর প্রদত্ত, তা নয়। অনেকটাই দতা-অভিজ্ঞতা কিছুটা সময়ের মধ্য দিয়ে পরীক্ষিত হয়। বিভিন্ন ধরনের মাধ্যমে নিজস্ব ভাষা আছে, তার একটা লয়, ছন্দ, গতি আছে। একটা বাক্য বিন্যাস যদি ধরি সাহিত্যে, তাহলে বাক্য বিন্যাস আছে, যতি আছে, এগুলো যেমন সাহিত্যের জন্য প্রাথমিক, তেমনি এগুলো আয়ত্ত হয়ে গেলে পরবতর্ীতে নির্মাতা হিসেবে অনায়াসে নির্মাতার দিকে যাওয়া যায়।
আমরা শুরু করি আসলে যে আমরা নির্মাতা হবো। আমি মনে করি, তরুণরা যাতে আমাদের মতো না হয়। আমাদের প্রজন্ম কিংবা আমাদের আগের প্রজন্ম, এরা লেন্থ/লেন্স না বুঝে, তাল না বুঝে ইমারশন না বুঝে, অনেক কারিগরি দিক না বুঝে কাজ শুরু করেছে। তারা এই জিনিসগুলোকে জানার প্রয়োজন মনে করেনি। আমাদের প্রজন্মের অনেকেই আমরা তা মনে করি, যে ওটাতো ক্যামেরাম্যান দেখবে, ওটাতো আর্ট ডিরেক্টরের কাজ...। আজকের যে টোটাল সিনেমা করতে গেলে, ভালো চলচ্চিত্র নির্মাতা করতে গেলে, এমনকি ভালো বিনির্মাতা হতে গেলে নির্মাণের প্রতিটি দিক সম্পর্কে জানতে হবে। এটিই হচ্ছে গ্রাজুয়েট বা পর্যায়ক্রমিক শিক্ষা।

ফিল্মের ওপর অ্যাকাডেমিক পড়াশোনা কতটা জরুরি?
তারেক মাসুদ: সবসময় আমার মনে হয় সাহায্যকারী। অ্যাকাডেমিকভিত্তিক চলচ্চিত্রের ইতিহাস জানা সেটা এক জিনিস, কিন্তু চলচ্চিত্র সম্পর্কে তাত্তি্বক জ্ঞানের মধ্য দিয়ে যতটা না জানা যায় তার চেয়ে বেশি প্রয়োজন চলচ্চিত্র দেখা_ জানার ধরনকে তাচ্ছিল্য না করে সবধরনের চলচ্চিত্র ওপেন মাইন্ড নিয়ে।
আমি বলি না যে, অগ্রজদের কথা না শোনা। তার এটা দৃষ্টান্ত হচ্ছে অগ্রজদের কথা শুনলে বলবে, তারকোভস্কির ছবি দেখতে হবে অথবা জ্ঞানী ছবি...। তারা একটা জায়গায় আবদ্ধ করে দেয় তরুণ নির্মাতাদের। চলচ্চিত্রে আসলে যত বৈচিত্র্য তত বৈভব এবং এটা কখনোই একটা স্কুলিং হয়ে গেলে ওই একটা জায়গায় ছকের মতো আটকে যায়। ইরানি সিনেমা দেখতে যত ভালোই হোক, ইরানি সিনেমাই যদি আমার একমাত্র উৎস হয় উত্তেজনার, তাহলে কিন্তু আমি ওই খপপরে পড়ে যাব, ছকের মধ্যে পড়ে যাব। তারকোভস্কি বলাম বা গোদার বা ফুকো_ এরা যাদের নাম চলচ্চিত্রে উললেখ করা হয়েছে, তারা কিন্তু চলচ্চিত্রের সর্বভূক ছিলেন। তারা সব ধরনের চলচ্চিত্র দেখতেন। আমার পছন্দ হতে পারে, ব্রেসো ফরাসি নির্মাতা, জাপানি নির্মাতা আমার পছন্দ হতে পারে কিরোস্তামি কিন্তু আমি যখন চলচ্চিত্র দেখছি তখন কোনো প্রি-জাজমেন্ট থাকা উচিত নয়। চলচ্চিত্র একটা নৃতাত্তি্বক নৈর্ব্যক্তিক গতায়াতিক ধারা।
আমাদের প্রজন্মে আমরা আর্টের নামে আর্টিফিশিয়ালিটি তৈরি করেছি। বাণিজ্যিক ছবির যেমন এক ধরনের ছক রয়েছে, আর্টিস্টিক ছবিরও কিন্তু একটা ছক তৈরি করে ফেলেছি আমরা। আর্ট ছবি মানে এ রকম স্লোমোশন হবে, আস্তে আস্তে কথা বলবে, ক্যামেরা আস্তে আস্তে ঘুরবে_ এটা নট নেসেসারি, এটা হচ্ছে আমাদের নিজেদের একটা ছোট গন্ডির ভেতরে আটকে ফেলা। আর্টের ছবির ছকে আটকে যাওয়া একই রকম বিপজ্জনক। আমি মনে করি, বাণিজ্যিক ছবি থেকেও অনেক কিছু শেখা যায়।
ছবির তাত্তি্বক দিক নিয়ে পড়াশোনার চেয়ে ছবি দেখাটা জরুরি, আমরা যারা চলচ্চিত্রের স্কুলে পড়িনি, আমাদের স্কুল ছিল চলচ্চিত্র সংসদ। এর মাধ্যমে 35 মি. মি. অথবা 16 মি. মি. ওয়ার্ল্ড পুরনো এবং সমসাময়িক ক্ল্যাসিক ছবিগুলো দেখতে পেরেছি। আজকের তরুণরা কিন্তু সেটা পাচ্ছে না। তরুণ যারা নির্মাতা হতে যাচ্ছে তাদের জন্য যতই না একটা স্কুল দরকার, তার চেয়ে একটা ভালো অবকাঠামো, প্রাতিষ্ঠানিক পরিবেশ দরকার, যার মাধ্যমে আমাদের তরুণরা 35 মিলিমিটারে দেশী-বিদেশী-ধ্রুপদ সিনেমা প্রপার সাউন্ড, প্রপার পিকচারে দেখতে পারে।
চলচ্চিত্র মাধ্যমে নির্মাতা হওয়াই তো একমাত্র কাজ নয়। চলচ্চিত্র লেখক, চলচ্চিত্র সমালোচনা_ এসবও সৃজনশীল কাজ। এগুলোর জন্যও বাংলাদেশে ফিল্মস্টাডিজ খুব দরকার। চলচ্চিত্র এমনি বেড়ে উঠবে না। চলচ্চিত্রের খোঁজখবরওয়ালা চলচ্চিত্রের জ্ঞানসম্পন্ন মানুষ, চলচ্চিত্র পাঠ করতে পারে, চলচ্চিত্র দেখা না চলচ্চিত্র রিডিং, অ্যাকাডেমিক প্রজন্ম সমান্তরালভাবে গড়ে উঠতে হবে। অনেকেই চলচ্চিত্র নির্মাণে এসেছেন চলচ্চিত্র তাত্তি্বক চর্চা থেকে। ফরাসি যে নব তরঙ্গ_ এরা কিন্তু চলচ্চিত্র নিয়ে লেখালেখি করতেন, তারা ঝাঁপ দিয়ে পড়েছেন নির্মাণে। সেটা হতেই পারে। একি সঙ্গে আমি মনে করি, বাংলাদেশে চলচ্চিত্র দেখা এবং সেটা দুধের সাধ ঘোলে নয়, 35 মিলিমিটারে ভালো ছবি দেখার সুযোগ প্রয়োজন।
স্কুলিংয়ের যদি প্রয়োজন হয় তবে তরুণদের বলব বাইরে যেতে। এখানে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠছে ফিল্ম কোর্স। এগুলো আসলে যারা করছেন তারা একটা দোকান খুলে বসেছেন, সার্টিফিকেটের দোকান। এ দিয়ে তেমন শিক্ষদীক্ষা হচ্ছে বলে আমি মনে করি না।

সৃষ্টিশীলতা সম্পর্কে...
তারেক মাসুদ : দুই হচ্ছে, যারা এটা নিচ্ছেন তারা আসলে টেলিভিশনে চাকরি করার জন্য, নাটক করার জন্য, পাদানি হিসেবে ব্যবহার করছেন। এগুলো কোনো কাজের কথা নয়। প্রোপার ফিল্ম-স্কুল হবে এদেশে অথবা তরুণদের বাইরে থেকে চলচ্চিত্রের ওপর পড়ে আসতে হবে। যেমন ভারতে আছে। ইংরেজি ভাষাভাষী দেশে অনেক কম্পিটেশন; কিন্তু ফরাসি বা জার্মান ভাষা শিখলে অনায়াসে সব দেশে গিয়ে ফিল্মের ওপর পড়ার সুযোগ রয়েছে। দে সু্যড বি স্মার্ট এবং বিদেশে গিয়ে, আসলে কারিগরি কিছু শিখে আসতে হবে। পরিচালনা মানে পরিচর্যা। যারা অভিনয় করছে তাদের নির্দেশনা দেওয়া নয়, একটা 'টোটাল আন্ডারস্ট্যান্ডিং, টোটাল কন্ট্রোলিং' হলো পরিচালনা।
আমরা যারা নির্মাতা আছি তারা অনেক সময়, কোর্স-টোর্স করাচ্ছি। আমি মনে করি, এটি ভুল প্রবণতা। কারণ পেশাদার নির্মাতা যদি আমি হই নিয়মিত, আমি কিন্তু কোর্স পরিচালনার জন্য বা ফিল্ম-স্ক্রীন করার জন্য চলচ্চিত্রের শিক্ষাদান করতে গিয়ে যে ধরনের মনোযোগ, যে ধরনের হোমওয়ার্ক আমাকে করতে হবে সেই সুবিচার করতে গেলে যে ধরনের প্রস্তুতি দরকার সে ধরনের পেশাদারি নির্মাতা হিসেবে সম্ভব নয়। কিন্তু অনেক সময় চলচ্চিত্রে শিক্ষাদানের নামে, কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা ফিল্ম-স্টাডিজ ডিপার্টমেন্টে বা কোনো কোর্সে, প্রাইভেট কোনো কোর্সে বা সরকারি কোনো কোর্সে, ওখানে গিয়ে একটা লেকচার দিয়ে আসি আমরা। আসলে গালগল্প করে আসি কিছুটা। বক্তৃতা আর কাস নেওয়া এক জিনিস নয়। এখানে আমি মনে করি, চলচ্চিত্রের শিক্ষা যারা দেবেন তারা চলচ্চিত্রের শিক্ষক। তাদের আলাদা প্রশিক্ষিত একটি মাধ্যম আছে। প্রতিবেশী দেশের, পশ্চিমবাংলার যারা চলচ্চিত্র সম্পর্কে শিক্ষাদান করছেন তারা চলচ্চিত্র নির্মাতা না হলেও, আমি অনেক ভালো চলচ্চিত্র নির্মাতা হতে পারি। তার মানে এই নয় যে, আমি চলচ্চিত্রের শিক্ষক হতে পারব। আবার ব্যতিক্রম যে হবে না তাও নয়; কিন্তু মৃণাল সেন, সত্যজিত রায়, ঋত্দি্বক ঘটক এরা সবাই চলচ্চিত্রের শিক্ষক হয়েছিলেন। অনেকে মনে করে, আমরা চলচ্চিত্রের একজন ভালো নির্মাতা, এ জন্য একজন ভালো শিক্ষকও। এটা ভালো শিক্ষক হলেও সম্ভব নয়। আমার যদি সে যোগ্যতাও থাকে, নিয়মিত নির্মাতা হই, আমি যদি সক্রিয় নির্মাতা হই, আমার পক্ষে দুটোর প্রতি সুবিচার করা সম্ভব হবে না।
আমাদের অনেক কিছু করার আছে আর চলচ্চিত্র দেখার বিষয়ে আমরা বলব, নির্মাতা হিসেবে বলব না। আমি মনে করি, আমরা যারা চলচ্চিত্র সংসদের মধ্যে এসেছি। চলচ্চিত্র দেখানোর ক্ষেত্রে আমার মনে হয় এখানে চলচ্চিত্র উৎসব যারা করছেন তাদের একটা ভূমিকা হচ্ছে সংসদের। চলচ্চিত্র সংসদ যতটা না এ ছবি প্রদর্শন করছে তার চেয়ে বেশি আগ্রহী চলচ্চিত্র উৎসব এ ভূমিকাটা পালন করতে পারে।
পুরনো ও সমসাময়িক ক্ল্যাসিক ছবিগুলো দেখাবে সেটা অবশ্য 35 মিলিমিটারে, সেটা খুব প্রয়োজনীয়। আর ডিভিডির কল্যাণে আজকে আসলে সহজ হয়ে গেছে, একজন নির্মাতার অ্যাকিউরেসি অনেক বেশি। কোথায় কি ছবি হচ্ছে খুব সহজেই দেখতে পারেন। আমি মনে করি, বিরাট একটা সুবিধা রয়েছে টেলিভিশনে, অনেকে ছোট পর্দাকে ছোট করে দেখেন_ এটা নাকি চটুল বা হালকা, চলচ্চিত্র নির্মাণে তরুণরা আসছে না কারণ টেলিভিশন তরুণদের গ্রাস করেছে। আমি এটাকে নেতিবাচকভাবে দেখি না। আসলে অডিও-ভিজুয়াল যে অভিজ্ঞতা, আমরা যা 10 বছরে শিখেছি, আজকের তরুণরা কিন্তু 10 দিনে শিখতে না পারলেও 10 মাসে শিখতে পারছে। এটাকে আমি স্বাগত জানাই। এটি চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রেও একটি কার্যকর প্রক্রিয়া। টেলিভিশন নাটকে কাজ করা, এমনকি বিজ্ঞাপনের ছবি করা এটাও আমি মনে করি কেউ যদি বিজ্ঞাপন আটকে না যায়, বিজ্ঞাপন নির্মাণের মধ্য দিয়ে একটা প্রস্তুতি গ্রহণ করা সম্ভব। সত্যজিৎ রায়ও বিজ্ঞাপনের ছবি করতেন, বিজ্ঞাপন ফার্মে কাজ করতেন, গ্রাফিক ডিজাইনিং করতেন। সুতরাং এগুলোর কোনোকিছুই আমি ছোট করে দেখার মনে করি না। যে কোনো ধরনের প্রস্তুতি সেটা যতই হবে তত ভালো। আবার যারা শুধু টেলিভিশনেই নাটক করতে চান তারা করতে পারেন। আমি বলছি না, টেলিভিশন, সিনেমার পাদানি, টেলিভিশনের আলাদা ফরমেট রয়েছে।
আজকের ক্ষেত্রে একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা আর ভিডিও নির্মাতার মধ্যে সে রকম পার্থক্য নেই। আমি মনে করি, এটা টেষ্ট এবং ওয়ানডে ম্যাচের সঙ্গে তুলনা। টেলিভিশন নাটক কথাটাতে আমার আপত্তি আছে। আমি বলব_ টেলিভিশন প্রোডাকশন। ফিল্ম প্রোডাকশন বনাম টেলিভিশন প্রোডাকশন। আমি মনে করি, টেলিভিশন প্রোডাকশনেও অনেক ভালো কাজ হচ্ছে, তরুণরা এগিয়ে আসছে, তারা নতুন প্রযুক্তি ডিজিটাল প্রযুক্তির সঙ্গে অনেক অগ্রসর হচ্ছে। সচেতন হচ্ছে, অভিজ্ঞ হচ্ছে। এই অভিজ্ঞতাটা চলচ্চিত্র নির্মাণে কাজে লাগালে চলচ্চিত্রেরও দিন বদলে যেতে পারে।

চলচ্চিত্র সংসদের মাধ্যমে আমরা চলচ্চিত্র নির্মাতা পেয়েছি। আমাদের দেশে চলচ্চিত্র শিক্ষকের অভাব। এরকম একটা শ্রেণী কেন এদেশে গড়ে উঠছে না?
তারেক মাসুদ : ওই যে বললাম, চলচ্চিত্র সংসদের একমাত্র কাজ বড় বড় চলচ্চিত্রের নির্মাতা তৈরি করা না। বড় বড় চলচ্চিত্র জ্ঞানসম্পন্ন লোক যারা চলচ্চিত্র শেখাতে পারবে। তাদের হওয়ার কথা ছিল। এই যে কলকাতায় জেএম দাশগুপ্ত, সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়, পিএন দাশ শর্মা, সত্যজিৎ রায় ইনস্টিটিউটের শিক্ষকরা আছেন অথবা মৈনাক বিশ্বাস, এরা যারা চলচ্চিত্র সংসদ থেকে এসেছেন, কিন্তু তারা সবাই নির্মাতা হননি। আমাদের হয়েছে কি, চলচ্চিত্র সংসদ থেকে আমরা নির্মাতা ছাড়া আর কিছুই হব না। এটা প্রেস্টিজিয়াস। চলচ্চিত্রের শিক্ষক হওয়া চলচ্চিত্র জ্ঞানসম্পন্ন মানুষ হওয়া। জেএম দাশগুপ্ত চলচ্চিত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি অপর্ণা সেনের বাবা। এই যে একটা কৌলিণ্য আছে। চলচ্চিত্র বোদ্ধা হিসেবে, চলচ্চিত্র লেখক হিসেবে তিনি অত্যন্ত পূজনীয় ব্যক্তি। কোন চলচ্চিত্র বিষয়ে, তার পরামর্শ, তার মন্তব্য নেওয়া হবে টেলিভিশনে। আজকে টেলিভিশনে চলচ্চিত্র নির্মাণের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করতে গেলে নির্মাতাদের ডাকা হয়, আমাদের ডাকা হয়। আজকে আমাকে 50 বছরের বাংলা চলচ্চিত্রের সম্পর্কে কিছু বলতে বললে, আমি হয়তো নিজের কথাই বলব। কিন্তু এটা তো নৈব্যক্তিক হলো না। নির্মাতারা যদি চলচ্চিত্রের ইতিহাস ইত্যাদি নিয়ে কথা বলেন সেটা কিন্তু একপেশে হতে বাধ্য। এখানে আমার নিজস্ব ঈর্ষা-দ্্বেষ কাজ করবে, অগ্রজদের অস্বীকার করার চেষ্টা করব। চলচ্চিত্রের নির্মাতাদের চলচ্চিত্রের শিক্ষা দেওয়া বন্দ করা উচিত। এটা আমার সবিনয় অনুরোধ। আমি চেষ্টা করি এ থেকে যতদূর সম্ভব নিজেকে মুক্ত রাখতে।

আপনি নিজে কিভাবে চলচ্চিত্রে এলেন?
তারেক মাসুদ : আমি আসলে সচেতনভাবে নির্মাতা হইনি। আমি যখন ছবি বানাচ্ছি তখনও বুঝতে পারিনি নির্মাতা হচ্ছি। কারণ আমি যে পরিবেশে বড় হয়েছি সে পরিবেশে চলচ্চিত্র নির্মাণ তো দূরের কথা, চলচ্চিত্র দেখাও প্রায় নিষিদ্ধ ছিল। সেখানে কখনো ভাবিনি আমি নির্মাতা হব। অনেকের ইচ্ছা থাকে না_ আমি ডাক্তার হব, ইঞ্জিনিয়ার হব; কিন্তু আমি সে ভাবনাটা ভাবতে পারিনি। এখনকার ছেলেমেয়েরা কিন্তু ভাবতে পারে বড় হয়ে আমি চলচ্চিত্র নির্মাতা হব। আমার বন্ধু-বান্ধবের ছেলেমেয়েকে এরকম বলতে শুনি। এটা আসলে এখন প্রেস্টিজিয়াস ব্যাপার।

ওই মুহূর্তে আমাদের দেশে তো একজন তারেক মাসুদ ছিল না...
তারেক মাসুদ : এখন কিন্তু আমরা যৎ সামান্যই সাফল্য পেয়েছি, তা দেখে তরুণরা উদ্ভুদ্ধ হচ্ছে, তারা ভাবছে ছবি বানিয়েও তো সেলিব্রেট হওয়া যায়। আমাদের সময় কিন্তু এ ব্যাপারটা ছিল না। তখন সিনেমায় যাওয়া মানে 'নামা'। সিনেমায় ওঠা না তখন। মধ্যবিত্ত শিক্ষিত অংশের কাছে এটা আসলে প্রেস্টিজিয়াস নয়। এটা একটা স্মার্ট এবং অর্থনৈতিকভাবে লোভনীয় এবং সামাজিকভাবে প্রশংসিত ব্যাপার। এটি কিন্তু আমাদের সময় ছিল না এবং আমরা যারা চলচ্চিত্রে এসেছি, হয় আমরা পাগলামি করে এসেছি আসলে আমাদের প্রজন্ম এবং আমাদের আগের প্রজন্ম অন্য জায়গায় কিছু করতে না পেরে এবং নাটকেও কিছু না করতে পেরে পাড়ার নাটকেও ঠাঁই পাচ্ছি না, তখন স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বানাতে এসেছি। আমি সুলতান (শিল্পী এসএম সুলতান) ভাইয়ের ওপরে ছবি করতে চেয়েছি, আমি আর আমার বন্ধু মিশুক মুনীর। ওই ছবি করতে গিয়ে সুলতান ভাইয়ের সঙ্গে সাতটা বছর যে সারা বাংলাদেশ চষে বেড়ালাম এবং এর মধ্য দিয়ে শুধু চলচ্চিত্র নির্মাণ নয়, জীবন সম্পর্কে শিক্ষা পেয়েছি। যেমন গ্রাম বাংলাকে নতুন করে শিখেছি, দেশকে চিনেছি, পেইন্টিং মাধ্যমটাকে বুঝেছি। একজন শিল্পী এত আলোকিত একজন মানুষের সংস্পর্শে এসে আলোকিত হয়েছি। এটাতেই বিরাট মাদকতা ছিল। ছবির বিষয়টা অনেকটা বাই প্রোডাক্ট ছিল। ছবি নিয়ে বিশেষ ব্যস্ত ছিলাম না। তাহলে আমি সাত বছর লাগাতাম না। সাত মাসে ছবি শেষ করে, পরিচালক হিসেবে নিজেকে জাহির করার চেষ্টা করতাম। সেই বিরাশি সালে ছবি শুরু করে শেষ করেছি ঊননব্বই সালে। তার পরের 4-5 বছর ছবির সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক ছিল না। এরপর বিদেশে চলে গেলাম এবং ওখানে কাকতালীয়ভাবে প্রায় বিশ ঘণ্টার মুক্তিযুদ্ধের ওপর ফুটেজ পেয়ে গেলাম, লেভিনের তোলা। ওটা না পেলে হয়তো নির্মাতা হিসেবে নিজের জীবনকে অব্যাহত করতাম না। আমি একটা বইয়ের দোকানে চাকরি করতাম। চলচ্চিত্র আবার আমাকে কাকতালীয়ভাবে পেয়ে বসল। তার থেকে 'মুক্তির গান' করলাম। চার বছর দেখতে দেখতে চলে গেল। তারপর দেশে ফিরে এলাম, '95 সালে ছবি মুক্তি দেব বলে। তারপর তো দেখলাম ঝড়ো একটা পরিবেশ। ছবি নিয়ে সারাদেশে তোলপাড়। একটা ছবিকে মানুষ যে এমন করে গ্রহণ করতে পারে, আমি ভাবতে পারিনি। সকাল 7টা থেকে রাত 12টা পর্যন্ত 8টা শো করতাম। মাইলের মতো লম্বা লাইন দিয়ে লোকজন ছবি দেখছে। এ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আমি লক্ষ্য করলাম, চলচ্চিত্র আমার শুধু নেশা নয়, পেশাও হয়ে গেছে। সুতরাং দেখে-ঠেকে আর নির্মাণ করতে করতেই নির্মাতা হয়ে যাওয়া অর্থাৎ কচুগাছ কাটতে কাটতে ডাকাত হয়ে যাওয়া। আমি দেশে এবং বিদেশে চলচ্চিত্রের ওপর বিভিন্ন কোর্সে অংশগ্রহণ করেছি। এগুলো কোনো বৃহত্তর পরিকল্পনা থেকে করিনি।

কাহিনী চিত্র নির্মাণ করলেন কখন?
তারেক মাসুদ : আমি প্রথমে প্রামাণ্য চিত্র নির্মাণ করেছি। যখন নিউইয়র্কে, ক্যাথরিনকে আমার ছেলেবেলার কাহিনী মাদ্রাসার কথা বললাম; সে বলল এটি একটি অসাধারণ ছবি হতে পারে। আমি তো প্রামাণ্য চিত্র নির্মাতা, আমি শৈশব নিয়ে কিভাবে ছবি করব। ও বলল, আমরা কাহিনী চিত্র নির্মাণ করব। আমার মাথায় এলো_ হঁ্যা করা যেতে পারে তো! খুব দ্্বিধাদ্্বন্ধ নিয়ে কাজ শুরু করলাম। পেশাদার শিল্পীকে নিয়ে কিভাবে অভিনয় করতে হয় তা আমি জানি না। সেজন্য অপেশাদার শিল্পীদের বেশি নিলাম এবং অনেক স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করলাম পেশাদার শিল্পীদের নিয়ে। তারপর বুঝলাম পেশাদার শিল্পীদের থেকে অনেক সহযোগিতা পাওয়া যায়। এভাবে আমি কিন্তু কাহিনী চিত্রের নির্মাতা হয়ে গেছি। তারপর আমি আবিষ্কার করলাম আমি নির্মাতা হয়ে গেছি।

যখন আপনি আবিষ্কার করলেন নির্মাতা হয়ে গেছেন, তখন আপনার ভাবনা কি?
তারেক মাসুদ : এখন ভাবি যে, নির্মাতা হয়ে যাওয়ার পেছনে কতগুলো দায়িত্ব পড়ে যায়। আমি যে ধরনের ছবি নির্মাণ করে মানুষের স্বীকৃতি পেয়েছি, সে ধরনের জায়গায় আটকে না থাকা, দর্শককে অন্য চমক দেওয়া, অন্য ধাক্কা দেওয়া যে, আমি অ্যানিমেশন করেছি, ডকুমেন্টারি করেছি, শর্ট ফিল্ম করেছি আবার পহৃর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনী চিত্র করেছি। আমার ইচ্ছা হচ্ছে আমি যেন একই জায়গায় আটকে না থাকি। প্রতিনিয়ত নিজেকে রিনিউ করতে চাই। আমার মনে হয় কোনো প্রতিষ্ঠিত নির্মাতার জন্য এটা সবচেয়ে বড় জিনিস। আমি যেন প্রতিষ্ঠার কাছে আটকে না থাকি। আমাদের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে দেখবেন অনেক নতুন নির্মাতা বেরিয়েছেন। কিন্তু তারা তাদের এক ধরনের একঘেয়েমিতে আটকে গেছেন। তারা প্রথমদিকে নতুন মৌলিক একটা মাত্রা নিয়ে ছবি শুরু করেছিলেন। কিন্তু তারা ওই একই জায়গায় আটকে গিয়েছেন। এই ছক ভেঙে বেরিয়ে আসা একজন প্রতিষ্ঠিত নির্মাতার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। দেশের মানুষের, সমাজের যে জায়গাটায় আলো পড়েনি সে জায়গায় আমি আলো ফেলতে চেষ্টা করি। এবং সব সময় নিজের অভিজ্ঞতার বাইরে চলচ্চিত্র নির্মাণের চেষ্টা থেকে বিরত থেকেছি।
তরুণদের প্রতি আমার একটা পরামর্শ থাকবে_ চিত্রনাট্য ধারণা করে বা নিজে না তৈরি করে নিজের জীবনের দিকে তাকান, নিজের চারপাশ, নিজের শৈশবের দিকে তাকান। নিজের কাছেই অসংখ্য মণি রত্ন পড়ে আছে। এতে একটা মৌলিক কিছু হতে বাধ্য এবং সেই মৌলিক বিষয়ের সঙ্গে মৌলিক প্রকাশও হয়ে যাবে। এতে একটা শৈল্পিক নতুন ধারা বা রীতি তৈরি হয়ে যাবে। যে চলচ্চিত্র বিদ্যাগত বিষয়টাকে উপজীব্য করে নির্মাণ করা হয়, সেটা আসলে জীবনের কাছাকাছি যায় না। সেটা আর্ট হয় না। আর্টিফিসিয়াল হয়ে যায়।

আমাদের ছবি তো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক দর্শক বা আগ্রহী বোদ্ধারা আমাদের ছবি সম্পর্কে ওয়েবসাইট থেকে কোনো তথ্য পেতে পারে না। কারণ, তেমন ওয়েবসাইট নেই।
তারেক মাসুদ : আন্তর্জাতিকভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এ রকম ছবি তো দুই-একটার বেশি নয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না পেলেও আমাদের দেশে যে মানসম্পন্ন ছবি হয়নি বা হচ্ছে না তা তো নয়। এগুলো নিয়ে খুব বেশি জানারও সুযোগ নেই এবং আমরা নিজেরাও তেমন কোনো ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারিনি যার মাধ্যমে বিদেশীরা এবং আমাদের তরুণরা আমাদের চলচ্চিত্রের ইতিহাস সম্পর্কে, নির্মাতাদের সম্পর্কে জানতে পারবে। আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে এ ধরনের ওয়েবসাইট তৈরি করার চেষ্টা করছি। সেখানে শুধু আমাদের নয়, আমাদের সতীর্থ নির্মাতা, তরুণ নির্মাতা এবং অগ্রজ নির্মাতাদের সম্পর্কেও কিছু থাকবে। এটা আমার মনে হয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এবং আমি মনে করি কোনো দেশের চলচ্চিত্র একক কোনো সাফল্যের মধ্যে এগিয়ে যেতে পারে না। এর জন্য ধারাবাহিক চলচ্চিত্র চর্চার প্রয়োজন। আর এর জন্য আমাদের চলচ্চিত্র নির্মাতাদের পারস্পরিক সহযোগিতা প্রয়োজন। আমরা সবাই যদি একটা জায়গায় এসে দাঁড়াতে পারি তাহলে আমাদের চলচ্চিত্র এগিয়ে যাবে। আমরা যদি কনুই দিয়ে তরুণদের ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা করি, তবে তরুণদেরও ঠেকিয়ে রাখা যাবে না, আমরাও এগুতে পারব না। নতুনদেরকে আমাদের স্বাগতম জানাতে হবে। তারাই আসলে অগ্রবর্তী ভূমিকা নেবে।

তাহলে আমরা আশা করতে পারি আমরা একটা ওয়েবসাইট পাচ্ছি।
তারেক মাসুদ : আমি অনেকের সহযোগিতায় এটা চেষ্টা করছি। আমাদের দেশের সবার সম্পর্কে দেশী বা বিদেশী দর্শকরা জানতে পারবে।

মাটির ময়না ডট কম-এ...
: .... অনেক তথ্য পাওয়া যাবে। এখন চলচ্চিত্রের স্কুলিংয়ের বিষয়টা বলা হয়। আসলে অনলাইনে কিন্তু অনেক কিছু শেখা যায় ইন্টারনেটের মধ্য দিয়ে। সবাই সবকিছু জানতে পারবে। কোন ছবি দেশে-বিদেশে ভালো করছে, সেটা কিন্তু জানা যাবে সহজেই। তাই অগ্রজদের মোড়লিপনা করে সবকিছু আটকে রাখা সম্ভব হবে না। এই ইন্টারনেটের মাধ্যমে চলচ্চিত্রের সব বিষয়ে পড়া যাবে, জানা যাবে। ওপেন ইউনিভার্সিটির চেয়েও কার্যকর হচ্ছে ইন্টারনেট।


[ সাাৎকারক : রুদ্র আরিফ। স্থান : সিজা কোর্ট, মনিপুরি পাড়া, ঢাকা। সময় : 5 মে 2006, দুপুর 3.30-4.30 । সঙ্গে ছিলেন : বিজয় আহমেদ। অনুলিখন : আরফান আহমেদ]
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×