শ্রমিকদের ছুটির সময়টা জানিয়ে দিল ফ্যাক্টরির সাইরেন। নেমেছে সন্ধ্যা_ ঘরে ফেরার। যখন লম্বাটে লোকটার সঙ্গে থাকতাম, যাকে আমি ভালোবাসিনি_ প্রবাসের স্বপ্নে এলোমেলো হেঁটেছি পথ; সুদীর্ঘ দুর্গম পথের ভাবনায় এভিনিউর কয়েকটা অংশ কেবল ঘুরেছি দুজন। সে শিখিয়েছিল তাদের বাঁধানো পথের রঙ দেখতে_ যারা সারের মতো ছিটিয়ে দিচ্ছে চুন, বালি ও পানির গোলা।
মনে পড়ে কোনো এক বুধবার রাতের চমৎকার ঘ্রাণ_ যে রাতটি নিলাম হবার আগে রাখাল-প্রিয় গরুদের আর্তনাদ আমাকে উৎসাহিত করেছিল শহর ছেড়ে পালানোর।
...নিস্তব্দ লেক। আমার মিথ্যেগুলো বিধ্বস্ত এখন। কখনো কি আমি আর সত্য বলবো?
: ওহ্ সাইরেন! আমার ভালোবাসা আমার ঘরে থাকে। রাতে আমরা একসঙ্গে ঘুমোই, দিনে আলাদা
ক বি তা - 2 : সু উ চ্চ ভা স্ক র্যের চূ ড়া য় এ ক টি ক চ্ছ প
বর্ষণের খবর শোনা সেই প্রত্যাখ্যাত শীতে আমি ছিলাম কান্ত। তুমি আর তোমার ভিজে যাওয়া শার্ট-বিস্তৃত হয়ে পশ্চিমাকাশকে ফুলিয়ে তুলছিল। সঙ্গে ছিল আদুরে মেঘ আর ক'পা দূরে গাড়ীর গতিশব্দ :
কেন তারা আরেকটু আস্তে চলে না?
সেই সন্ধ্যায় উদ্ভাসিত চাঁদের আলোয় পিছলে পড়া আমি বুঝাতে চেয়েছিলাম কিছু একটা। চাঁদটা আড়ালে যেতো! তুমি এক ধাক্কায় ফেলে দিলে নিরীহ কচ্ছপটাকে। বেচারীর ডিমগুলো আছড়ে পড়ে নোংরা করলো প্রধান সড়ক
কেবল অকারণেই বাসি ভালো তোমাকে : ফ্লোরিডার বৃষ্টিতে বিশ্রী লাগছে, তবু। ফ্লোরিডা একটা জাহান্নাম; ফলে চাঁদের যন্ত্রণা আছড়ে পড়ছে অগি্নবর্ষণে
ক বি তা - 3 : শূ ন্যে র উ প কূ ল
খসখসে লোমাবৃত বড় কুকুরটি গড়াগড়ি খেলছে। শরতের সবুজ হিম, বাঁধাকপির টগবগে পাতা বিচারপ্রার্থির ঢঙে ছুঁয়ে যাচ্ছে আমার পা। বিরক্তিকর। দৌড়ে পালালাম
রাত। হলুদ আলোয় ঢেকে আছে উপত্যকা। কী পেয়েছে_ কে জানে; তবু স্কার্টের আলিঙ্গনে ভদ্রমহিলাগণ উষ্ণতা দিচ্ছেন ভদ্র পুরুষদের! তারা কি তাদের এই সাপ্তাহিক ছুটি উপভোগ করে?
আমাকে পেলো না কেউ! কেমন করে তারা এখানে, যেখানে বনানী নিবন্ধিত আর ছোট্ট রাস্তাটা লালে লাল?
রাত। অজস্র ছিদ্রের কালো কাঁথা মুড়ি দিয়েছে আকাশ। উষ্ণ বালুতে ডিম পারছে কচ্ছপ। খুব দেরি হয়েছে কি আসতে...?
সব উত্তর মেলে যাবে একদিন। সবকিছুই বলে দেওয়ার জন্য
লবণাক্ত বাতাস, আমার প্রেমিকের দেহ, হয়তো একটু দেরিই হলো। সারা বীচে আমি দৌড়াতে চাই এখন। বিশ্রী কুকুরগুলো বিমান-ডানার মতো হাত মেলে ছুটছে, খেলছে তরঙ্গলীলা, ডুবে যাচ্ছে আর উঠছে আবার ফুস্ করে। ছোট্টমেয়ে ওদের সঙ্গী
নিরপত্তার দোহাইয়ে পিছু ফেরার ভয় এখানে মৃত
ক বি তা - 4 : এ কা
বেড়ার ওপারে মৃতু্য তার যাত্রা থামায়নি। এখন নয়টা। আজ প্রথমবারের মতো তুমি একা। ঘুমুচ্ছে বাচ্চারা। স্বামী বাইরে। হাতে বিয়ারের বোতলটা ঘামছে। ফ্যাকাসে উদ্ভিদের গন্ধ সামুদ্রিক প্রাণ খুলে নাচছে হাওয়ায়
একবার ভাবো নিজেকে। অন্যদের সঙ্গে কাটিয়ে এসে কিছুদিন, যেন কিছুই করার নেই এখন_ এ আলস্যে পড়ে আছে তোমার হাত। গত সপ্তার মাখন-মসৃণ স্মৃতিতে ভাসছো তুমি; ভাবছো_
অদ্ভুত জীবন-গাড়ি অংশিক গ্যাসে কতো ছুটতে পারে
ক বি তা - 5 : সু প্র ভা ত
[আমরা তা-ই_ যা আমরা বারবার করি : এরিস্টটল]
তুমি জানো, সন্দেহাতীত ঘুমের উড়াল থেকে কেমন করে জাগ্রত এটা, এবং সেই একজন_ দীর্ঘ পর-বোধ দিয়েছে যে। আকুল কামনা করছো ধুলো উড়িয়ে চলার সংক্ষিপ্ত সময়; করছো অনুভব কিছুই না কিংবা ভালোবাসার কাউকে দেখতে চাইছো আর ভাবতে চাইছো যে কোন কিছু নিয়ে একটানা। হয়তো কোন সকালে চুল আঁচড়াতে আঁচড়াতে অদ্ভুতভাবে মনে পড়ে গেছে_ জীবনের কতোটা সময় করেছো ব্যয় কেবল ভাবনায় কিংবা দস্তখত করে নিজ নাম অথবা কুয়াশার কাছাকাছি অন্ধকার দেখে চাকরিতে যেতে যেতে
অন্যের প্রয়োজনে দিনটা শুরু হয়ে তোমার নিজস্ব ভাবনাগুলো নিঃশ্বাসের মতো ছত্রভঙ্গ হয়ে ছড়িয়ে যায়; আর মাঝখানটায় ক্রমাগত দিনের পর দিন নিসঙ্গতার অনন্তযাত্রা...
ক বি তা - 6 : দ্য লে ক
ওহ্ বাগান, অর্ধেক বাগান, তোর পাশে শুয়ে আছে অর্ধেক মৃত নীল-লেক। এই লেক এখনই হয়তো বলবে তোকে 'চলে যা এখান থেকে, যেখানে জীবন সবুজ'
তিনটা বাজে। গাছের মরা পাতাগুলো ভাঙ্গা-খাটের মতো মড়মড় করছে। পায়ে পায়ে হুইস্কিরঙা ঘাসের মৃতু্যতে গাছেরা বুঝতে পারছে তাদের নগ্নতা। 'কতোক্ষণ থাকবে এখানে?' _এই লেক জানতে চাইছে তোমার কাছে
সব ঠিকঠাক। কেটেছে মাস। এখনো দালানগুলো মুক্তাকাশ কালো করে দাঁড়িয়ে আছে। বৃষ্টি শীস দিয়ে পাশ থেকে আঁকড়ে ধরছে তোমার মুহূর্তগুলো :
ওহ্! এ সাজতে থাকা এভিনিউদের একদিন না জানি কী বীভৎস দেখাবে!
'আমি জানি তুমি মিস করছো কী!' _ লেকটি গেয়ে ওঠে। গাড়ির অশল্লীল গোঙানিতে কাটছে রাশভারি সময় ও কফির চমৎকার স্বাদ। প্রেমিকের উষ্ণতায় হাতুড়িতে যেনো চূর্ণ-বিচূর্ণ করছে হাওয়া। ক্রিকেটের হামিং-সঙ এ পথের প্রিয় গান হয়ে উঠছে
[কবি ডেবোরাহ অ্যাগার : জন্ম- 1971, যুক্তরাষ্ট্র । অনুবাদ: রুদ্র আরিফ, খিলক্ষেত, ঢাকা; 2006]
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



