বাংলাদেশ ঐতিহাসিকভাবে কৃষিপ্রধান দেশ। কিন্তু কৃষিক্ষেত্র ১৯৮০ সালে ৩০% থেকে ২০% এ নেমে আসে। অন্যদিকে শিল্পক্ষেত্র ২০% থেকে ৩০% হয়। জাতীয় গ্যাস উৎসের সংরক্ষন থেকে ৫৫% যায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে, ২৭% যায় ফ্যাক্টরি ও শিল্পে, ১০% গৃহস্থালি ও ৫% অটোমোটিভ সেক্টরে যায়। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রকল্পে ‘ভীষণ-২১’ এর অংশ হিসেবে সরকার ২০১০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করেছে ২০০০০ মেগাওয়াট। এরই অংশ হিসেবে ৯০০০ মেগাওয়াট সক্ষমতাসম্পন্ন রূপপুর পারমাণবিক শক্তি প্ল্যান্ট প্রকল্প গ্রহন করা হয়।
বর্তমানে ৮৮% শক্তি সরবরাহ হয় গ্যাস উৎস থেকে, ৪% কয়লা হতে, ৬% তেল হতে এবং ২% চট্টগ্রামের হাইড্রো-শক্তি কেন্দ্র থেকে।
বাংলাদেশে পারমানবিক শক্তিঃ
বাংলাদেশে প্রথম পারমাণবিক শক্তিকেন্দ্র নির্মানের উদ্যোগ নেওয়া হয় ১৯৬১ সালে। বাংলাদেশ আনবিক শক্তি কমিশন প্রতিষ্ঠা করা হয় ১৯৭৩ সালে। দেশে বর্তমানে TRIGA গবেষণা প্রকল্প আনবিক শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠা করা হয় সাভারে।
২০১০ সালে বাংলাদেশ রাশিয়ার সাথে সিভিল পারমাণবিক চুক্তি করে যার আওতায় ইউএস, ফ্রান্স এবং চায়নাও রয়েছে।
২৯ মে ২০১৩ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণাঞ্চলে দেশের দ্বিতীয় পারমাণবিক শক্তিকেন্দ্র নির্মানের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন।
জ্বালানি চক্রঃ
রূপপুর প্রকল্পের জন্য জ্বালানি সরবরাহ করছে রাশিয়ান প্রতিষ্ঠান রোসাটম। ২০১৭ সালের মার্চে জ্বালানি রাশিয়ায় পাঠানোর জন্য খসড়া চুক্তি সাক্ষরিত হয়। প্রত্যেক চুল্লী থেকে এর পরিমান প্রায় ২২.৫ ট্রিলিয়ন।
রেডিওএকটিভ ফলাফলঃ
১০০০ মেগাওয়াট কয়লা প্ল্যান্ট প্রায় ৩০০,০০০ টন ভস্ম, ৪৪০০০ টন সালফার ডাইওক্সাইড এবং ৬ মিলিয়ন টন কার্বন উৎপন্ন করে।
জলবায়ু ও দুর্যোগঃ
৪র্থ IPCC অনুযায়ী জলবায়ু পরিবর্তন ঘটার পাশাপাশি নদী-ভাঙ্গন, অবক্ষেপন ও বন্যা উদ্বেগের কারন হয়ে উঠতে পারে।
ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনাঃ
ভোপাল বিপর্যয়কে ভোপাল গ্যাস ট্র্যাজেডি নামে উল্লেখ করা হয়। ১৯৮৪ সালের ২-৩ ডিসেম্বর ভারতের মধ্য প্রদেশে ইউনিয়ন কার্বাইড ইন্ডিয়া লিমিটেডের পেস্টিসাইড কারখানায় সংঘটিত দুর্যোগকে বিশ্বের অন্যতম আলোচিত শিল্প দুর্যোগ বলে মনে করা হয়। প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ মিথাইল আইসো-সায়ানাইট গ্যাসের সম্মুখীন হয়। অফিসিয়ালি প্রায় ২২৫৯ মানুষকে মৃত ঘোষণা করা হয়। মধ্য প্রদেশের সরকার ৩৭৮৭ জনের মৃত্যুর কথা বলেছে। পাশাপাশি ৫৫৮১২৫ মানুষ আহত ও প্রায় ৮০০০ মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।
রূপপুর প্রকল্পে ভারতের সম্পৃক্ততাঃ
বাংলাদেশে পারমাণবিক শক্তিপ্লান্টে কাজ করার জন্য হিন্দুস্তান কন্সট্রাকশন কোম্পানি (HCC) ও মাক্স গ্রুপ রাশিয়ার নিকট হতে প্রায় ৭৩৭ কোটি রুপির কন্ট্রাক্ট পেয়েছে।
রাশিয়ান রাষ্ট্রীয় আনবিক শক্তি সংস্থা রোসাটম মুম্বাইয়ে আঞ্চলিক কেন্দ্র খুলেছে যার কাজ হবে বাংলাদেশ ও ভারতে এর প্রজেক্টগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করা।
বর্তমানে ভারতে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মানে রাশিয়া হচ্ছে একমাত্র দেশ। গত মার্চে বাংলাদেশ, রাশিয়া এবং ভারতের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির আওতায় ভারতীয় কোম্পানি নির্মান ও সংস্থাপন এবং প্রজেক্টের বস্তু ও যন্ত্রপাতি সরবরাহে অংশ নেবে।
Courtesy:
***Secondary Sources Data
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ২:১৭