somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি জীবন একাধিক ধর্ষন

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


দৃশ্যপট--১


"আহ একটু কাছে আসো না, এমন করছো কেন ?" রায়হানের আজকের রাতটুকু মাদকতার রাত, উষ্ণতা দিয়ে পরষ্পরকে ভরিয়ে তুলার রাত। শিলার তুলতুলে শরীর কে খুব নিজের করে নিজের মত করে আয়ত্ত করবার সুতীব্র বাসনা।কি জানি আজ কেন মনটা এত আবেগী হয়ে উঠল, বাইরে কাল বৈশাখীর ঝোড়ো বাতাস, নিকস কালো আঁধারের বুক চিরে হঠাৎ হঠাৎ বিদ্যুৎ এর ঝলকানি প্রিয়ার বুকে মুখ লুকাবার কথা যেন বলছে !
কবি হলে বলতে পারতো রায়হান " আজ আমি ভালোবাসতে ভালোবাসতে ফতুর হয়ে যাব " । শিলা ততধিক কঠিন শিলার মত মুখ করে নিচু স্বরে বলল নাহ আমার ইচ্ছে করছে না। কলমা পড়া বউ এর কাছ থেকে এমন সুস্পষ্ট দৃঢ় না শুনতে পৌরুষে লাগে । কতদিন রায়হান তার ৭ বছরের বিয়ে করা বউকে কাছে টানে না , আজ একটু আদর আহলাদ উপছে পড়ছিল বলেই না রোমান্টিক হতে চেয়েছিল, ভেবেছিল ঘরের বউটিকে অনেকদিন উন্মত্ত শারীরিক সুখ দেয়া হয়ে উঠেনা । বাইরের ভিন্ন ভিন্ন নারী শরীরের স্বাদ নিতে নিতে ভুলে ঘিয়েছিল ঘরেও একটা বউ নামের নিজস্ব সম্পত্তি আছে। ধূত্তরি দিল মুডটার বারোটা বাজিয়ে । রাগে অপমানে রায়হানের ফর্সা মুখ লাল হয়ে উঠল, আস্পর্দার মাত্রা এত বেড়েছে শিলার ! আশ্চর্য্য ! আহত বাঘের মত ঘরঘর করতে লাগল , পাল্টা আঘাতে চুর্ন করে দিতে চাইল দম্ভ, উদ্যত নারীর অসংযত আচরন। হেচকা টানে বিছানায় ফেলে দিল শিলাকে, হাজার বার না না করা স্বত্তেও পারলনা হিংস্র বাঘের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে, রায়হানের পাশবিকতায় যন্ত্রনায় কাতর শিলার মুখ চাপা পড়ে যায়। সারা শরীরে তীব্র ব্যাথা নিয়ে নিজেকে বলছিলো আর কতদিন এভাবে নিজ স্বামী দ্বারা ধর্ষিতা হতে হবে ? ইচ্ছার বিরুদ্ধে তথাকথিত স্বামী নামোক সাইনবোর্ডের কাছে নিজেকে বিলিয়ে দিতে হবে ? নিজের শরীরের উপর কি কোনো অধিকার নেই, কিছু রাস্ট্রীয় আর ধর্মীয় অনুশাসনের বেড়াজালে কি বন্দী শিলার জীবন ? এটাকে বউ না বলে বলা উচিত যৌন দাসী । নিজের প্রতি ধিক্কার হানছিল । এ কেমন তর জীবন ।

দৃশ্যপট--২



হেলাল হাফিজের কবিতার মতই ভালবাসে টয়া ,হাসান কে । সকাল থেকে ঘুমাতে যাবার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত টয়া হাসানের খোঁজ নেয়, খুব বেশি কথা যে বলে তা নয় কারন সে নিজেই থাকে বেশ খানিকটা সময় অফিসে, বাসায় ফিরে যে কথা হবে সেটাও বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই হয় না, বাসার লোকজন থাকে বলে। এরই মাঝে হয়তো মেঘলা ভোর, বিষন্ন দুপুর কিংবা লালচে আকাশে নেমে আসা সন্ধ্যায় মনে পড়ে যায় খুবই সাধারন ছেলেটিকে । বেশীর ভাগ সময় হাসান বিরক্ত হয়, কখনো ফোন ধরেই না,
কখনো বা ধরলেও টয়া ওর মুড বুঝে বলার সাহস পায় না যে আজ হাসান কে কাছে পেতে ইচ্ছে করছে। গত ৬ মাস ধরে ওদের সম্পর্ক নেই বল্লেই চলে কোনো ভাবেই টয়া পারছেনা এমন স্বার্থপর টাইপের ছেলের সাথে নিজেকে জরিয়ে রাখতে। যতবারি বিপদে পড়ে হাসান ততবারই টয়ার কাছে ছুটে আসে অথচ টয়ার পারিবারিক, অর্থনৈতিক বা কাজের ক্ষেত্রের কোন সমস্যা হলে হাসান জানতেও চায় না কি হয়েছে....সাহায্য সহযোগিতা করা তো দুরের কথা । কাছের মানুষের নোংরা আচরন মনকে অনেক পীড়া দেয়। সেদিন দুপুরে হুট করে হাসান ফোন দেয় টয়াকে বলে শুভর বাসায় যেতে, ঐ বাসায় এর আগেও টয়া বুহুবার গিয়েছে ওদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক ঐ বাসায় হয়েছে তাই ৬ মাস পরে হাসানের ফোন পেয়ে টয়া খুব বেশি খুশি হতে পারেনি শুভর বাসায় যেতে বলায় ।
পর পর তিন দিন এভাবেই চলল হাসান অনবরত টয়াকে নানা ভাবে বুঝাতে চাইল টয়াকে তার এখন খুবই প্রয়োজন । যথারিতী টয়া গেলো শুভর বাসায়, আগে থেকেই হাসান ওর জন্যে অপেক্ষায় ছিল । এতদিন পর দেখা হওয়ায় টয়ার মনে জমা হয়েছিলো রাজ্যের অভিমান, অনুযোগ, রাগ, ক্ষোভ । হাসান টয়া কিছু বলবার আগেই জড়িয়ে ধরে কামুক পুরুসের আদিমতায় মত্ত হয়ে উঠল, বার বার বাধা দিতে চাইলেও টয়ার
পক্ষে হাসানের বিশাল শরীরটিকে তার উপড় থেকে সরাতে পারেনি।
যতবার মুখ খুলতে চেয়েছে হাসানের ওষ্ঠ টয়ার অধরে বিলীন হয়েছে। অবশেসে ক্লান্ত , শান্ত, ধীর ,স্হির হাসান বিছানায় টয়াকে পাশ ফিরে নিরবে কাদতে দেখে বলে জানোই তো আমি আসলে এর বেশি কেয়ার করতে জানি না । টয়ার অশ্রু সজল চোখে তখন জন্মের ঘৃনা, হাসানকে বলল একটু আগে তুমি আামাকে ধর্ষন করেছ । হাসান হেসে উঠে একটা সিগারেট ধরাল আর বলল কি আবোল তাবোল বলো আমার প্রেমিকাকে আমি ধর্ষন করেছি ? টয়া নিস্ফল রাগে গজরাতে থাকল, চীৎকার করে বলল তোমার মত অমানুষ এটা বুঝবে না । কাঁদতে কাঁদতে বেড়িয়ে এল শুভর বাসা থেকে, নারী শরীর কেন মানুষের মন থেকে বড় হয়ে উঠে ?
একজন মানুষ আগে না সে নারী আগে তারপর সে মানুষ । যাকে ভালবাসে সেই তাকে অসম্মান করল তাহলে টয়া আর রাস্তার পাশে দাড়ানো দেহ পসারিনীর মাঝে কি পার্থক্য ? এ কেমন তর জীবন ।

একজন নারী বার বার নানা পটভুমিকায় নিজেকে দেখে কখনো সে মেয়ে শিশু যার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তার অভিভাবক হিমশিম খান,
কখনো বা কিশোরী যে নানা সময় ইভটিজারের শিকার, কখনো বা যুবতী টয়া হয় নিজ প্রেমিক দারা ধর্ষিতা কখনো বা সে পরিনত হয় স্বামী কর্তৃক দেহ দাসীতে ।

সর্বশেষ এডিট : ২২ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৯:৪২
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পিরিতের সংস্কৃতিওয়ালা তুমি মুলা’র দিনে আইলা না

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৬


---- আমাদের দেশে ভাষা, সংস্কৃতি এবং সামাজিক সমুন্নয়ন তলানিতে। তেমন কোন সংস্কৃতিবান নেই, শিরদাঁড়া সোজা তেমন মানুষ নেই। সংস্কৃতির বড় দান হলো ভয়শূন্য ও বিশুদ্ধ আত্মা। যিনি মানবের স্খলনে, যেকোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসরায়েল

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮

ইসরায়েল
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

এ মাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বাবাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
নিরীহ শিশুদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এই বৃ্দ্ধ-বৃদ্ধাদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ ভাইক হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বোনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
তারা মানুষ, এরাও মানুষ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গ্রামের রঙিন চাঁদ

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১২


গ্রামের ছায়া মায়া আদর সোহাগ
এক কুয়া জল বির্সজন দিয়ে আবার
ফিরলাম ইট পাথর শহরে কিন্তু দূরত্বের
চাঁদটা সঙ্গেই রইল- যত স্মৃতি অমলিন;
সোনালি সূর্যের সাথে শুধু কথাকোপন
গ্রাম আর শহরের ধূলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১৭



পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের ধ্বংসাবশেষঃ
পালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপালদেব অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করছিলেন।১৮৭৯ সালে স্যার কানিংহাম এই বিশাল কীর্তি আবিষ্কার করেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরবাসী ঈদ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৩

আমার বাচ্চারা সকাল থেকেই আনন্দে আত্মহারা। আজ "ঈদ!" ঈদের আনন্দের চাইতে বড় আনন্দ হচ্ছে ওদেরকে স্কুলে যেতে হচ্ছে না। সপ্তাহের মাঝে ঈদ হলে এই একটা সুবিধা ওরা পায়, বাড়তি ছুটি!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×