ব্লগে ইদানীং অনেক লেখা আসছে। মনে হচ্ছে '১৪-'১৫ সাল ফিরে এসেছে। সেই সময়টায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাহিত্য চর্চার জোয়ার বয়ে গিয়েছিল। বিভিন্ন গ্রুপে নিয়মিত সাহিত্য চর্চা হতো। কোনো কোনো সংগঠন লেখা সংগ্রহ করে বই প্রকাশ করত। আমি নিজেও কয়েকটা সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম।
মনে পড়ে ২০১৫ সালে যখন ময়মনসিংহে থাকতাম, ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে প্রতি শুক্রবার বিষয়ভিত্তিক সাহিত্য নিয়ে আড্ডা হতো। আড্ডাটার নাম ছিল বীক্ষণ। আমিও মাঝেমাঝে যেতাম।
পাদদেশ নামে একটা ষান্মাসিক পত্রিকা বেরোত। দেশের প্রথিতযশা অনেকেই লিখতেন। তরুণরাও লিখত। আমারও কয়েকটা লেখা গিয়েছিল সে পত্রিকায়।
নজরুলের জন্মজয়ন্তীতে ত্রিশালে সাময়িকী বের হতো। ১-২ বার লেখা দিয়েছিলাম। ছাপাও হয়েছিল। ছাপার অক্ষরে নিজের লেখা যখন দেখতাম, কী যে ভালো লাগত তখন!
ওই সময়টায় বিভিন্ন ওয়েবসাইটেও লেখা প্রকাশ করতাম। হাজারও জনের লেখা পড়তাম। নিজেকে ঋদ্ধ যেমন করা যেত, ভুলও সংশোধন করতে পারতাম।
তবে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগত পত্রিকায় ছাপা অক্ষরে নিজের লেখা দেখতে। জাতীয় দৈনিকে নিজের লেখা কতবার যে পড়তাম, হিসেবই থাকত না। লোকজনকে বলতামও পত্রিকা কিনে পড়তে।
অন্যপ্রকাশের উদ্যোগে অনলাইনে লেখালেখির একটা সাইট আছে। পুরস্কারও দেয়। জানা-অজানা অনেকেই লেখেন। সেখানে মাসে বিষয় নির্ধারণ করা থাকে। বিষয়ভিত্তিক লেখা চাওয়া হয়। সাহিত্য চর্চার দারুণ এক সুযোগ থাকে।
আগে বাংলা কবিতা ওয়েবসাইটটাও জমজমাট ছিল। ওরা পিডিএফ আকারে বইও প্রকাশ করেছে। সেসবও বিষয় ভিত্তিক।
ব্লগেও দেখি বিষয়ভিত্তিক লেখালেখি শুরু হয়েছে। লোকজনের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ভালো লাগছে। ব্লগ কর্তৃপক্ষ নাকি এর আগে লেখা আহবান করেছিল, ভালো লেখা আসেনি। এবার হয়তো আসবে। কতটুকু মানসম্মত হবে জানি না। কারণ, এখানে বেশিরভাগই শখের লেখক। পেশাদার হয়তো অল্প কয়েকজন।
ব্লগ বা ফেসবুকে যা খুশি লেখা যায় কিন্তু বইতে তো লেখা যায় না। কর্তৃপক্ষ হয়তো মানের ক্ষেত্রে ছাড় দিতে রাজি নয়। এটাই ঠিক। মানসম্মত লেখাগুলোই বাছাই করে নেওয়া হোক।
কর্তৃপক্ষ যদি প্রতিমাসে বা ২-৩ মাসে একবার প্রতিযোগিতার আয়োজন করে, আমার ধারণা ব্লগ প্রাণবন্ত থাকবে। প্রয়োজনে তারা ব্লগারদের কাছ থেকে অল্প করে অনুদান নিয়ে পুরস্কারও দিতে পারে। এতে লোকজন লিখতেও অনুপ্রাণিত হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মে, ২০২৩ রাত ১০:০৪