৯/১১ পরবর্তী অধিক নমনীয় ভাবমূর্তির সময়ে মরমী মুসলিমগণ আবারো সোচ্চার হয়ে উঠছেন।
By Faiza Saleh Ambah
Special to The Washington Post
Tuesday, May 2, 2006
মূল পোস্ট টি এখানে
জেদ্দাহ. সৌদি আরাবিয়া- মেঝেতে উপবিষ্ট যুবক মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে হুজুর পাক (স.)এর শানে নাত পরিবেশন আরম্ভ করার সাথে সাথে সমবেত সকলের মাঝে নেমে আসলো গাম্ভীর্যপূর্ণ নীরবতা।কমলা-সাদা রং-এর পাগড়ী পড়িধান করে চক্ষু মুদিত অবস্থায় তিনি সুর করে একান্ত বিনয় আর নম্রতার সাথে বর্ণনা করছিলেন হুজুর পাক (স.)এর আবির্ভাবে চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-তারাসহ সমগ্র জগৎ-সংসার কেমন আলোকিত, বিমোহিত ও উচ্ছাসিত হয়ে উঠেছিল।
মিলাদ মাহফিলে (হুজুর পাক স. এর এ ধরায় আগমণ ও তার মহান জীবনচরিত স্মরণে আয়োজিত অনুষ্ঠান) সমাগত সূধীজনেরা বর্ণময় গালিচায় বসে তন্ময় ভাবে সামনে পিছে মৃদু দুলছিলেন। মহিলাদের জন্য উপরতলায় আয়োজিত পৃথক ব্যবস্থায় একটি বৃহত প্রজেকশন স্ক্রীনে প্রদর্শিত হচ্ছিল এ অনুষ্ঠান, সেখানে হৃদয়ছোয়া নাত-এ রসুল শ্রবণে আবেগপ্রবণ হয়ে ওঠা মহিলারা টিস্যু দিয়ে আবেগাশ্রু মুছছিলেন।
ঈদে মিলাদুন্নবী মাহফিল-শত-শত বর্ষ ধরে সূফী দরবেশদের নিকট একটি অতন্ত্য হৃদয়গ্রাহী ও পছন্দনীয় মাহফিল যা সৌদি আরবের উগ্র রক্ষণশীল রাষ্ট্রীয় ওহাবী ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বেদাত ও নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়ে ছিল।কিন্তু বর্তমানে সেখানে ধর্মীয় সহনশীলতার ক্রমবর্ধিষ্ঞু সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। ফলশ্রুতিতে সেখানে একদা অন্তরালে নির্বাসিত সুফীরা আবার প্রকাশ্যে মূলধারার ধর্মীয় আচরণ পালন করার সুযোগ পাচ্ছেন।
বিশ্লেষক মহল এবং সুফীদের কেউ কেউ মনে করছেন ৯/১১ এর যুক্তরাষ্ট্রে বিমান আক্রমণের ঘটনা এ আমুল পট পরিবর্তনের পেছনে বিরাট ভুমিকা রেখেছে। যখন প্রকাশ পেল হামলাকারী ১৯ জন হাইজ্যাকারের মধ্যে ১৫ জনই ছিল সৌদি, স্বাভাবিকভাবেই ভিন্ন মতাবলম্বী ও মাযহাবের কঠোরভাবে দমনকারী কট্টর ওয়াহাবী মতাবলম্বী সৌদি সরকার দেশের অভ্যন্তর ও বর্হিবিশ্ব থেকে যুগপত প্রবল চাপের সম্মুখীন হয়। এই আমুল পরিবর্তনের সম্ভবত সর্বাধিক সুফলের ভাগীদার সুফীরা যার ফলশ্রুতিতে তারা এই নবপ্রতিষ্ঠিত সহনশীল ভাবমূর্তি ভোগ করছেন
‘এটা হচ্ছে ১১ সেপ্টেম্বরের দুর্ঘটনার এক অন্যতম ফলশ্রুতি। এটা ওয়াহাবীদের নিজস্ব মতবাদ অনুসরণে অনাগ্রহীদের নির্বাসিত বা সমাজচ্যুত করার চর্চ্চা- ‘তাকফীর’ এর উপর এক বিরাট বাধা আরোপ করল’-বলেন হাবীব আদনান, ৩৩ বছর বয়স্ক এক জন সুফী শিক্ষক। ‘সরকার সম্ববত উপলদ্ধি করছে যে সকলের উপর একতরফা কোন ধর্মীয় বিশ্বাস চাপিয়ে দেয়া কোন ভালো বিষয় নয়।‘
আদনান যখন ৪ বছর আগে ইয়েমেন থেকে সৌদি আসেন, সে সময়ে সুফী-দরবেশদেরকে অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে মাহফিল অনুষ্ঠিত করতে হত কখনো কোন বাগানে কখনো বা শহরের বাইরে অথবা কোন বাড়ীর বেসমেন্টে, পাছে ওয়াহাবীদের মনোযোগ আকর্ষিত হয়-এই ভয়ে কোন মাইক্রোফোন ছাড়াই।‘আমি এগুলো কখনো পরিধান করতে পারতাম না”- নিজের পাগড়ির দিকে ইঙ্গিত করে বললেন, ‘অথবা এগুলো’-পরিহিত সুতীর জুব্বার কথা উল্লেখ করে বললেন।‘নতুবা আমাকে সুফী বলে চিহ্নিত করে ফেলা হত।, এমনকি আপনি “সুফী’ শব্দটি্ও উচ্চারন করতে পারতেন না। এটা যেন ছিল কোন আন্ডারগ্রাউন্ড-এর ভয়ঙ্কর কোন কিছু যেন ড্রাগের মত নিষিদ্ধ কোন বিষয়।‘
কেউ আরো পড়তে আগ্রহী হলে ....
দ্বিতীয় অংশ
শেষ অংশ
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১০ দুপুর ১২:৫৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




