এর ঠিক সপ্তাহখানেকের মাথায় একদিন শুটিংয়ের ফাঁকে ঠিক ঠিক পুরো গানের সবগুলো লাইন তুলে দিলেন গায়ক টি ডব্লিউ সৈনিকের হাতে। জোয়ারের পানিতে দ্বিগুণ উদ্যোগে তেড়ে উঠলো শত আশা-আকাংখার তরী, এরপর সময় যতোই গেছে নৌকার গায়ে লেগেছে নতুন নতুন রঙ-বেরঙের পাল।
ক্যামেরার পেছনের মানুষ
পেশা হিসেবে নিজেকে বেছে নিয়েছেন ক্যামেরার পেছনের মানুষ হিসেবেই। সেই ১৯৯৩ সাল থেকে ছোট পর্দার ক্যামেরা ঘুরিয়ে আসছেন আজ অবধি। ছোট পর্দার একক নাটক, ধারাবাহিক নাটক, মেগা সেরিয়াল, ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে অনেক জনপ্রিয় বিজ্ঞাপনের কারিগর গায়ক টি ডব্লিউ সৈনিক। পেশার সুবাধে ঘুরে বেড়িয়েছেন বঙ্গোপসাগর থেকে আটলান্টিকের পাড়। এ পর্যন্ত প্রায় ১৭টি দেশের সিল লেগেছে পাসপোর্টে। তবে সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টি তাকে টানে তা হলো মানুষের ভালোবাসার মূলমন্ত্র। অসম্ভব রকম ভালো এ মানুষটি মিডিয়ার প্রিয় সব অভিনেতা-অভিনেত্রীর প্রিয় এক নাম। গায়কের আগেই নায়ক হয়ে উঠেছেন জনপ্রিয় সব বিজ্ঞাপনের ভিডিও ধারণ করে। তার চিত্রগ্রহণে বর্তমানে দুটি মোবাইল কোম্পানির বিজ্ঞাপন প্রচার হচ্ছে। একটি সিটিসেলের অপরটি ওয়ারিদের। বিজ্ঞাপনে যারা কাজ করে তারা নাকি বেশ বড়লোক হয়, এমন প্রশ্ন করতেই হাসিমাখা মুখখানি জ্বলজ্বল করে উঠলো। নিজেও স্বীকার করলেন। আসলেই টি ডবিøউ সৈনিক বেশ বড়লোক, তবে বড়লোক হলেই যে তা স্বীকার করতে হবে সেটি অনেকেই পছন্দ করেন না। কিন্তু প্রিয় এ গায়ক আগাগোড়া ট্যাক্স পে করে চলেন। তাই তার গলাটাও বেশ বড়। এতোসব বড়কিছুর কাতারে হাজির হয়েছে তার মন। মনের দিক থেকে আমি অনেক বড়। নিজেকে ঠিক এভাবেই পরিচয় দিলেন। কিছুক্ষণ আড্ডা দেয়ার পর অবশ্য তাকে নিজ মুখে আর বেশি কিছু বলতে হয়নি। কারণ যায়যায়দিন অফিস থেকে তাকে প্রথম ফোন করা থেকে আগাগোড়া সত্যিকারের একজন সঙ্গীতপ্রেমী ও প্রচন্ড অমায়িক বলেই মনে হয়েছে। ছোট পর্দায় কাজ করলেও ঘটিয়েছেন বেশ বড় বড় কান্ড কারখানা। বিবিসির জন্য টমি মিয়ার যে ডকুমেন্টারি তৈরি করা হয়েছে তার বাংলাদেশের পুরো পার্টটুকু ক্যামেরায় বন্দি করেছে গায়ক টি ডব্লিউ সৈনিক। ওয়ার্ল্ড টেলের হয়ে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে ও বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচের দৃশ্য ধারণ করেছেন। আর সম্প্রতি স্টার স্পোর্টসে কাজ করার জন্য সিডি জমা দিয়েছেন। এখন শুধু স্টার স্পোর্টস কর্তৃপক্ষের প্রসেসিং করতে যতোটুকু সময়।
চেনা মুখ অজানা কথা
১৯৯৩ সাল থেকেই বেনসন অ্যান্ড হেজেস স্টার সার্চ প্রোগ্রামের ভিডিও ধারণ করছে টি ডব্লিউ সৈনিক। কনটেস্টে বিভিন্ন পারফরমারের গান শুনে বেশ ক’বারই মনে জেগেছে হয়তোবা কনটেস্ট করলে আমিও কম যাবো না। সে ভাবনা থেকেই পরপর চারবছর প্রোগ্রামের ভিডিও ধারণের পর ১৯৯৭ সালে গায়ক হিসেবে হাজির হলেন স্টেজে, সঙ্গী হলো সোহেল আরমানের লেখা ‘তুমি আমার ঘুম তবু তোমায় নিয়ে স্বপ্ন দেখি না’ গানটি। প্রথম কন্টেস্টেই বেস্ট লিরিক অ্যাওয়ার্ড জিতে নেয় গানটি। সেখান থেকেই প্রেরণা। তবে মিউজিকপ্রেমী পারিবারিক জীবনই তার সবচেয়ে বড় পাথেয়। বাবা আব্দুল ওহাবের লেখা ‘যৌবনের এই পানসি গেয়ে’ গানটি তার জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে একটি। তবে স্টেজে গান গাওয়ার আগেই ছায়ানটে লোকগীতির ওপর চার বছরের সার্টিফিকেট কোর্স করেন। (চলবে..)
(আংশিক প্রকাশ: ৯আগস্ট ২০০৮ দৈনিক যায়াযায়দিন>> Click This Link)
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে নভেম্বর, ২০০৮ রাত ৯:৪৭