somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"তুমি আমার ঘুম, তবু তোমায় নিয়ে স্বপ্ন দোখিনা"...গায়ক টি ডব্লিউ সৈনিকের অজানা কথা (পর্ব-১)

২১ শে নভেম্বর, ২০০৮ রাত ৯:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সময়টা ২০০৪-এর কিছু সময় আগের কথা। শুটিংয়ের ফাঁকে খালি গলার চাল চুলোহীন গান শুনে অভিনেতা সোহেল আরমান বলে উঠলেন, সৈনিক তুই যদি কখনো গানের অ্যালবাম করিস ফার্স্ট গানটা আমিই তোকে দেবো। সৈনিকও এ যাত্রায় কম নন। সরাসরি উত্তর দিলেন, দাদা যদি বলেন তবে পরে না এখনই দিতে হবে। সৈনিকের এ কথা ঠিক সে সময়ে না রাখতে পারলেও এর তিন চারদিনের মাথায় রাত ১২টার দিকে ক্রিং ক্রিং শব্দে বেজে উঠলো সৈনিকের সেলফোন, সেলফোনের স্কিনে তাকাতেই দেখা গেল আরে এ যে সোহেল আরমান ভাইয়ের ফোন, কল রিসিভ করতেই ওপাশের চিৎকার, সৈনিক আমি তোর জন্য একটি গান লিখে ফেলেছি তাড়াতাড়ি কাগজ কলম নিয়ে আয়। সৈনিকও যথারীতি কাগজ কলম নিয়ে প্রস্তুত। সোহেল আরমানের গলায় ভেসে উঠলো গানের প্রথম দু'লাইন তুমি আমার ঘুম তবু তোমায় নিয়ে স্বপ্ন দেখি না। প্রথম দু'লাইন শেষ হতেই সোহেল আরমান বলে উঠলেন, আজ এ দু'লাইন-ই থাক কয়েকদিন পর পুরোটা দেবো। গীতিকার আর গায়কের নতুন আবিষ্কারের নৌকাটা ঠিক সে সময় থেকেই নদীতে ভাসতে শুরু করেছিল। তবে এ নৌকার পাশে যিনি হাওয়া দিয়েছেন তিনি সুরকার ও কম্পোজার ইবরার টিপু। প্রথম দু'লাইন পেয়েই কেমন জানি বুকের ভেতরটা ধক করে উঠলো সৈনিকের। সোহেল আরমানের ফোন রাখতেই সৈনিক ফোন ঘুরালেন ইবরার টিপুর দিকে, ওদিকে ইবরার টিপুও যেন তাক করা বন্দুকের দিকে সঁপে দিলেন নিজেকে। সে রাতেই সেরে ফেললেন প্রথম দু'লাইনের সুর ও কম্পোজিশন। এরপর শুধুই পালের তোড়ে ভেসে যাওয়া।
এর ঠিক সপ্তাহখানেকের মাথায় একদিন শুটিংয়ের ফাঁকে ঠিক ঠিক পুরো গানের সবগুলো লাইন তুলে দিলেন গায়ক টি ডব্লিউ সৈনিকের হাতে। জোয়ারের পানিতে দ্বিগুণ উদ্যোগে তেড়ে উঠলো শত আশা-আকাংখার তরী, এরপর সময় যতোই গেছে নৌকার গায়ে লেগেছে নতুন নতুন রঙ-বেরঙের পাল।

ক্যামেরার পেছনের মানুষ
পেশা হিসেবে নিজেকে বেছে নিয়েছেন ক্যামেরার পেছনের মানুষ হিসেবেই। সেই ১৯৯৩ সাল থেকে ছোট পর্দার ক্যামেরা ঘুরিয়ে আসছেন আজ অবধি। ছোট পর্দার একক নাটক, ধারাবাহিক নাটক, মেগা সেরিয়াল, ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে অনেক জনপ্রিয় বিজ্ঞাপনের কারিগর গায়ক টি ডব্লিউ সৈনিক। পেশার সুবাধে ঘুরে বেড়িয়েছেন বঙ্গোপসাগর থেকে আটলান্টিকের পাড়। এ পর্যন্ত প্রায় ১৭টি দেশের সিল লেগেছে পাসপোর্টে। তবে সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টি তাকে টানে তা হলো মানুষের ভালোবাসার মূলমন্ত্র। অসম্ভব রকম ভালো এ মানুষটি মিডিয়ার প্রিয় সব অভিনেতা-অভিনেত্রীর প্রিয় এক নাম। গায়কের আগেই নায়ক হয়ে উঠেছেন জনপ্রিয় সব বিজ্ঞাপনের ভিডিও ধারণ করে। তার চিত্রগ্রহণে বর্তমানে দুটি মোবাইল কোম্পানির বিজ্ঞাপন প্রচার হচ্ছে। একটি সিটিসেলের অপরটি ওয়ারিদের। বিজ্ঞাপনে যারা কাজ করে তারা নাকি বেশ বড়লোক হয়, এমন প্রশ্ন করতেই হাসিমাখা মুখখানি জ্বলজ্বল করে উঠলো। নিজেও স্বীকার করলেন। আসলেই টি ডবিøউ সৈনিক বেশ বড়লোক, তবে বড়লোক হলেই যে তা স্বীকার করতে হবে সেটি অনেকেই পছন্দ করেন না। কিন্তু প্রিয় এ গায়ক আগাগোড়া ট্যাক্স পে করে চলেন। তাই তার গলাটাও বেশ বড়। এতোসব বড়কিছুর কাতারে হাজির হয়েছে তার মন। মনের দিক থেকে আমি অনেক বড়। নিজেকে ঠিক এভাবেই পরিচয় দিলেন। কিছুক্ষণ আড্ডা দেয়ার পর অবশ্য তাকে নিজ মুখে আর বেশি কিছু বলতে হয়নি। কারণ যায়যায়দিন অফিস থেকে তাকে প্রথম ফোন করা থেকে আগাগোড়া সত্যিকারের একজন সঙ্গীতপ্রেমী ও প্রচন্ড অমায়িক বলেই মনে হয়েছে। ছোট পর্দায় কাজ করলেও ঘটিয়েছেন বেশ বড় বড় কান্ড কারখানা। বিবিসির জন্য টমি মিয়ার যে ডকুমেন্টারি তৈরি করা হয়েছে তার বাংলাদেশের পুরো পার্টটুকু ক্যামেরায় বন্দি করেছে গায়ক টি ডব্লিউ সৈনিক। ওয়ার্ল্ড টেলের হয়ে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে ও বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচের দৃশ্য ধারণ করেছেন। আর সম্প্রতি স্টার স্পোর্টসে কাজ করার জন্য সিডি জমা দিয়েছেন। এখন শুধু স্টার স্পোর্টস কর্তৃপক্ষের প্রসেসিং করতে যতোটুকু সময়।

চেনা মুখ অজানা কথা
১৯৯৩ সাল থেকেই বেনসন অ্যান্ড হেজেস স্টার সার্চ প্রোগ্রামের ভিডিও ধারণ করছে টি ডব্লিউ সৈনিক। কনটেস্টে বিভিন্ন পারফরমারের গান শুনে বেশ ক’বারই মনে জেগেছে হয়তোবা কনটেস্ট করলে আমিও কম যাবো না। সে ভাবনা থেকেই পরপর চারবছর প্রোগ্রামের ভিডিও ধারণের পর ১৯৯৭ সালে গায়ক হিসেবে হাজির হলেন স্টেজে, সঙ্গী হলো সোহেল আরমানের লেখা ‘তুমি আমার ঘুম তবু তোমায় নিয়ে স্বপ্ন দেখি না’ গানটি। প্রথম কন্টেস্টেই বেস্ট লিরিক অ্যাওয়ার্ড জিতে নেয় গানটি। সেখান থেকেই প্রেরণা। তবে মিউজিকপ্রেমী পারিবারিক জীবনই তার সবচেয়ে বড় পাথেয়। বাবা আব্দুল ওহাবের লেখা ‘যৌবনের এই পানসি গেয়ে’ গানটি তার জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে একটি। তবে স্টেজে গান গাওয়ার আগেই ছায়ানটে লোকগীতির ওপর চার বছরের সার্টিফিকেট কোর্স করেন। (চলবে..)
(আংশিক প্রকাশ: ৯আগস্ট ২০০৮ দৈনিক যায়াযায়দিন>> Click This Link)
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে নভেম্বর, ২০০৮ রাত ৯:৪৭
১০টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×