মহান ভাষা আন্দোলনে আত্ম-উৎসর্গকারী সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে
একুশের প্রভাত ফেরি লাখো কণ্ঠের মৌন মিছিলে এগিয়ে চলে! ফুলে ফুলে সুশোভিত বাঙালির চেতনার মিনার, শহীদ মিনার।
১৯৫২ থেকে ২০১২, পথ পরিক্রমায় ৬০ বছরে পদার্পণ করেছি আমরা।
এই ৬০ বছরে আমাদের অর্জন গোটা বিশ্বের দরবারে আমরা সমাসীন হয়েছি আত্ম-মর্যাদাবান এক জাতি হিসেবে।
একাত্তরের অগ্নি-ঝরা মার্চে গর্জে উঠা কণ্ঠস্বর, নির্বিচার গণহত্যা, প্রতিরোধ, গেরিলা যুদ্ধ, বিচ্ছু বাহিনীর মরন পণ লড়াই---
ম হা ন স্বা ধী ন তা। আমার মা-বোনের সম্ভ্রম হারানোর বেদনায় জাতীয় প্রাপ্তি ম্রিয়মাণ ছিল স্বাধীনতা লাভের ৪০ বছর পর্যন্ত।
১৪৮২-১৯৫২ সালে ভাষার দাবীটি জোরালো হওয়ার পিছনে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে বীর বাঙালির গর্জে উঠার পেছনের ইতিহাস আমরা সবাই জেনেছি।
সেদিন অত্যন্ত সুকৌশলে আমাদের ভিতর সাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করা হয়েছিল! পশ্চিম পাকিস্তান বাংলা ভাষাকে হিন্দুদের ভাষা এবং উর্দুই মুসলমানদের ভাষা হওয়া উচিত বলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের ধর্মীয় অনুভূতিকে পুঁজি করতে চেয়েছিল।
মহান ভাষা আন্দোলনের মূল চেতনা ছিল অধিকার আদায়ের, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে বীর বাঙালির ঝলসে উঠা।
এবারের আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস নানা কারণে অত্যন্ত মহিমান্বিত--
১৯৭১-এর রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে আমরা যে স্বাধীনতা অর্জন করেছি তা কিছুটা ম্রিয়মাণ ছিল। এই সুদীর্ঘ সময়ে আমরা ঘাতক-দালাল, ধর্ষক-খুনি,
মানবতা বিরোধী অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করতে ব্যর্থ ছিলাম।
ধর্মকে পুঁজি করে যারা সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষকে বেপথু করছে যারা ধর্মের অপ-ব্যাখ্যা দিয়ে নিজেদের গা বাচাতে এর ওর কাঁধে ভর করে নিজেদের আখের গুছিয়ে নিয়েছে,
যাদের হৃদয় সাম্প্রদায়িকতার বিষ-বাষ্পে ভরা, যারা নিজেদের প্রয়োজনে ফতোয়া দেয়, স্মৃতিস্তম্ভ ভাঙ্গতে যায়
তাদের বিরুদ্ধে জ্বলে উঠা আজকের প্রজন্ম এসো মহান একুশের প্রারম্ভে আজকে আবার নতুন করে শপথ করি,
"আমার মা ,আমার বোন, আমার ভাইয়ের হত্যাকারী, মানবতা বিরোধী অপরাধী আমরা তোমাদের রুখে দেব।"
আমাদের বর্ণমালা, আমাদের লাল সবুজ, এই দেশ তোমার আমার সকলের।
আত্ম মর্যাদা-শীল এক জাতির সন্তান হিসাবে আমরা গর্বিত। ৭১-এর মানবতা-বিরোধী অপরাধীদের বিচারেই আমরা প্রশস্তি পাব।
মহান ভাষা আন্দোলনে সকল লড়াকু সেনানী, আত্ম-উৎসর্গকারী সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি।
ধন্যবাদ।
ছবি: ইন্টারনেট

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



