somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিপুণের দিনরাত্রী-২

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ৯:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


নিপুণের দিনরাত্রী-১


উফফ শেষ পর্যন্ত পরীক্ষাটা শেষ হলো। হাঁফ ছেড়ে বাঁচা গেলো! রিল্যাক্স লাগছে কিন্তু সাথে প্রচন্ড রকম টায়ার্ডও নিপু । কাল সারারাত ঘুম হয়নি ঠিক মত। এখন একটা হট বাথ নিয়ে এক কাপ চা আর তারপর সোজা একটা ঘুম। কাল সকালে যখন ইচ্ছা তখন ঘুম থেকে ওঠো। কোনো বাঁধাধরা রুটিন নেই, নেই কোনো বাধ্যবাধকতা। অন্তত কালকের দিনটার জন্য একদম নিশ্চিন্ত নির্ভাবনায় থাকতে চায় নিপু। একটানা পরীক্ষায় রীতিমত হাঁপিয়ে উঠেছে সে।

গোসল সেরে নিজের জন্য এক কাপ চা আর এক কাপ বাবার জন্য বানিয়ে বাবার রুমে ঢুকলো সে। সোফায় দু'পা তুলে আরাম করে বসে চায়ে চুমুক দিতে দিতে মাকে জানিয়ে দিলো রাতে আর সে কিছুই খাবেনা। শান্তিতে একটা লম্বা ঘুম দিতে চায়। তাকে যেন না ডাকা হয় যতক্ষন পর্যন্ত সে নিজের ইচ্ছায় না উঠছে।

ব্যাস যেই ভাবা সেই কাজ। কিছুক্ষণের মধ্যেই এই ভর সন্ধ্যাবেলাতেই নিজের রুমে নীল রঙের জিরো পাওয়ারের বালবটা জ্বালিয়ে মহা আয়েশে বিছানায় গা এলিয়ে দেয় নিপু। শুয়ে শুয়েই এস এম এস দেয় রেহানকে।

এমন যদি হত
ইচ্ছে হলে আমি হতাম
প্রজাপতির মত
নানান রকম ফুলের পরে
বসে যেতাম চুপটি করে ..........

বস্তুত মনের ফুরফুরে ভাবটা প্রকাশ করতেই এস এমএস টা লিখেছিলো সে। কিন্তু রেহান তার স্বভাবসিদ্ধ চপলতায় সাথে সাথে রিপ্লাই দিলো।

আর যা ইচ্ছাই করিস এই ইচ্ছা করিসনা প্লিজ। দিন দিন যা হাতী হচ্ছিস! প্রজাপতি হইলে আর ফুলের উপর বসলে ফুলের কি দশা হইতো সেই ভাবনায় তো আমি অস্থির হয়ে গেলাম আর তুইও একটু চিন্তা করে দেখ ।


রেহানের এমন ফান করার স্বভাব জানাই আছে নিপুর কিন্তু আজ হঠাৎ রিপ্লাই পড়ে মুহুর্তের মাঝে নিপুর মুখ রাগে লাল টকটকে হয়ে উঠলো । সে রেগে মেগে সেল অফ করে চোখ বুজে শুয়ে পড়লো।

সাধারণত রাগ হলে তার ঘুম আসেনা কিন্তু আজ হয়তো পরীক্ষার ক্নান্তিতেই বা কাল রাত জাগার ফলেই খুব তাড়াতাড়িই রাজ্যের ঘুম এসে ভর করলো ওর দুচোখের পাতায়। দু মিনিটের মাঝেই গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলো নিপু। আর অধীর হয়ে বার বার করা রেহানের এসএমএসগুলো তার স্বপনলোকের স্বপ্নপূরীর সিংহ দরজায় ধাক্কা খেয়ে ফিরে ফিরে যেতে লাগলো ।


তিনদিন হয়ে গেলো। কোনোভাবেই নিপুর সাথে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। না ফোনে, না অনলাইনে না অন্য কোনোভাবে। ফ্রেন্ডদের হেল্প নেওয়ারও চেষ্টা করেছে রেহান। কিন্তু কাজ হয়নি। সোজা ওদের বাসায় চলে যাওয়া যায়। কিন্তু নিপুর মা বাবা কোনো এক অজ্ঞাত কারনে রেহানের ওপর যে সন্তুষ্ট নয় তা সে খুব ভালো ভাবেই জানে।

যাইহোক প্রচন্ড মন খারাপ নিয়ে অনলাইনে বসে বসে পোকার খেলছে রেহান। ফেসবুক খোলা পড়ে আছে। মেসেন্জারও। কিছুই ভালো লাগছেনা ওর। মেসেন্জারে এ্যাড হওয়া নতুন মেয়েটা বার বার মেসেজ দিয়েই চলেছে। ভ্রুক্ষেপ নেই ওর তাতে। কিছুই ভালো লাগছেনা।

পুরো পৃথিবীটাই অর্থহীন, এলোমেলো লাগছে। হঠাৎ নিপুর মেইল। ভুত দেখার মত চমকায় রেহান। তড়িঘড়ি ইনবক্স থেকে মেইল ওপেন করে । কোনো মেসেজ নেই, শুধুই একটা ইমো। নিপুর প্রিয় ইমো:P। চোখ জ্বলছে রেহানের। প্রচন্ড রাগ লাগছে ওর। একরাশ অভিমানে চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে।

ঝাপসা ঝাপসা চোখের মাঝেই নিপুকে অনলাইন হতে দেখেও চুপচাপ থাকে সে। কোনো মেসেজ দেয়না।


নিপু::)
নিপু: আসছি।:)
রেহান: উদ্ধার করছো।
নিপু: হি হি হি
নিপু: তুই এই সময় বাসায়? একটু আগে না ফোন দিলাম তোদের টি এন টিতে। খালাম্মা বললো তুই ভার্সিটি। এরি মাঝে চলে আসলি!! স্যুপারম্যান হয়ে গেলি নাকি!:-*উড়ে আসছিস!!! হি হি হি! বাহ বাহ দুদিন দেখা নাই এরি মাঝে স্যুপারম্যান বনে গেলি!! ভালো ভালো! খুবই ভালো! আমারে একটু উড়াই নিয়ে দেখাস পুরা শহরটা একদিন।

রেহানের মুখ ফসকে বের হতে গেছিলো প্রায়, ওমা! কি বলিস! হাতিকে নিয়ে উড়বো! কিন্তু অতি কষ্টে সামলে নিয়ে বলে।
:পারবোনা। নিজে ওড়।
: হি হি হি হি হাসতেই থাকে নিপু। বলে যত যাই বলিস একটা কথা শুনবি?
:কি?
তোর সাথে দুদিন দেখা না হলে না আমার পেটের ভাত হজম হয়না।
:হুম
:দুদিন কথা না হলে আমার দিন কাটেনা, রাত ফুরায়না।
:হুম
:মেজাজ খারাপ হতে থাকে সবার উপর ...
:হুম : কি হুম হুম শুরু করছিস?
: তো কি নাচবো?
: নাচবি কেনো? তো হুমহুম করিস কেনো?
: তো কি করবো?
:বেশী দাম বাড়ছে না?
: হ বাড়ছে। কি করবি?
: হে হে হে কত দাম?
: কেন দাম দিয়া তোর কি?
: কি আবার! জানিসনা?
: না জানিনা।
:কিনবো তোকে। হা হা হা হা
: এহ কিনবো তোকে! যা ভাগ।
: কেনো কিনতে পারিনা নাকি?
: কিপটা! বেশী কথা বলতে আসিসনা।
: কি আমি কিপটা!! তুই কিপটা, তোর বউ কিপটা, তোর শ্বসুরের চোদ্দ গুষ্ঠি কিপটা।
:তোর কি মনে হোল আমি তোরে বিয়া করব? আমি এত বড় ইডিয়ট!
নিজে তো কিপটা উল্টা আমার যা আছে সব উড়াই দিবি শপিং করে।
:আল্লাহ করে তোর যেন এমন একটা বউ হয়।
: কেমন?
: যে তোর সবকিছু লাটে উঠায়।
:মোটেও না।:আর দেখতেও যেন হয় একটা পেত্নীর মত।
: আমার বউ সুন্দরী হবে। আমি সুন্দরী মেয়ে বিয়ে করবো।
: এহ সুন্দরী বউ! বান্দরী হোক বান্দরী আর মনটাও হোক ডাইনীর মত।
: সবাইকে নিজের মত মনে করো না?
: কি!!!!!!!!
: কি বললি তুই!!!!!!! আমি ডাইনী! আমি ..... আমি ....... আমি ....???????
আমি তোর চেহারা জীবনেও দেখতে চাইনা। তোর নাম ও মনে করতে চাইনা এই জীবনে। আমি তোর ..... আমি তোর ........
:আরে কিছুক্ষন আগেই না কইলি আমারে না দেখলে তোর পেটের ভাত......
: চুপ ! একদম চুপ। যা বলছি ভুল বলছি। ভুল করে বলছিলাম। এখন আল্লাহর ওয়াস্তে মর তুই।
:হা হা হা হা । ভীষন হাসির দমকে বিষম হঠে রেহানের। আচ্ছা বাবা স্য......

স্যরি বলার আগেই ফট করে সাইন আউট হয়ে যায় নিপু।

আবারও রেহানের মনটা খারাপ হতে শুরু করে। নিজের উপর রাগ লাগছে। কেনো যে খেপিয়ে দেয় বার বার মেয়েটাকে।
কখনও বলা হয়না ।
কখনও বলা হয় না নিপুর মত করে অবলীলায় যে, নিপু তোর সাথে একদিন দেখা না হলে আমারও .....
নাহ! কিছু ভালো লাগছেনা!
লাইট অফ করে দিয়ে চুপচাপ শুয়ে থাকে সে।
সিডি প্লেয়ারে বার বারই একটা গান বেজে যায় .....

Click This Link

I am thinking of you
In my sleepless solitude tonight
If it’s wrong to love you
Then my heart just won’t let me right
Cause I’ve drowned in you
And I won’t pull through
Without you by my side
I’d give my all to have
Just one more night with you
I’d risk my life to feel
Your body next to mine
Cause I can’t go on
Living in the memory of our song
I’d give my all for your love tonight
Baby can you feel me
Imagining I’m looking in your eyes
I can see you clearly
Vividly emblazoned in my mind
And yet you’re so far
Like a distant star
I’m wishing on tonight
I’d give my all to have
Just one more night with you
I’d risk my life to feel
Your body next to mine

Cause I can’t go on
Living in the memory of our song
I’d give my all for your love tonight
I’d give my all to have
Just one more night with you
I’d risk my life to feel
Your body next to mine
Cause I can’t go on
Living in the memory of our song
I’d give my all for your love tonight
Give my all for your love
Tonight

চলবে....
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০১২ সকাল ১১:২৮
৯১টি মন্তব্য ৯৩টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×