somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জেন জি - ভাবনা, চিন্তা, দর্শন, শিক্ষা এবং আমরা

১৩ ই জুন, ২০২০ দুপুর ২:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কিছুদিন আগে একটা ট্রেইনিং হচ্ছিলো। বর্তমানের একটু পাঁজি, একটু নিয়ম না মানা কিন্তু লিটল জিনিয়াস বাচ্চাদেরকে নিয়ে। বকে ঝকে বা ধমকে তো তাদের আর আজকাল ক্লাসে আটকে রাখাই দায়। আবার যে কোনো কিছুর এক্সপ্লানেশনে যেন তারা এক কাঁঠি এগিয়ে। মাঝে মাঝে টিচারেরাই তাক লেগে যায়। হা করে তাকিয়ে থাকতে হয়। নিজেরাই ভাবনায় পড়ে যাই, আরে এমন করে আমরা ভাবিনিতো। কারো কারো কাছে এসব চরম দুঃসাহস বা বেয়াদপীর পর্যায়েও পড়ে কিন্তু মাথায় কত প্রশ্ন আসে দিচ্ছে না কেউ জবাব তারের দিনগুলি কি আর আছে? সেই আগে দিনে আজগুবি সব প্রশ্নগুলো শুনে সবাই মিথ্যে বাজে বকছিস বলে তাড়িয়ে দিলে আর যেন কোনো সমাধান বা উত্তরই পাওয়া দায় ছিলো। কিন্তু এখনকার বাচ্চাদের কি আর তা লাগে? তাদের তো বড়দেরকে জিগাসা করারও প্রয়োজন পড়ে না। তাদের মাথায় প্রশ্ন আসা মাত্র। দরকার শুধু একটা ক্লিক। ব্যাস এক ক্লিকেই মিঃ গুগল বা ইউটিউব সদা ও সর্বদা প্রস্তুত আছেন তাদের জন্য অক্লান্ত অপরিশ্রমে সকল উত্তর নিয়ে। বর্তমানের স্কুলের এই বাচ্চাদের বড় অংশ এই Generation Z ....

আমরা অনেকেই হয়ত Baby boomers, Generation X, Generation Y এসব শুনেছি। যেমন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৪০ থেকে ১৯৫৯ এর মধ্যে যাদের জন্ম তাদের বলা হয় বেবি বুমার্স। এ এরপরে ১৯৬০ থেকে ১৯৭৯ সালের মধ্যে যাদের জন্ম তাঁরা জেনারেশন এক্স, ১৯৮০ থেকে ১৯৯৪ সালের মধ্যে যারা জন্ম নিয়েছে তারা জেনারেশন ওয়াই বা মিলেনিয়াল এবং ১৯৯৫ থেকে ২০১০ এর মধ্যে যাদের জন্ম তারা জেনারেশন জেড


এই জেনারেশ জেড নিয়েই আমার আজকের লেখা। ৭ থেকে ২২ বছর বয়সী বাচ্চারা জেনারেশন জেড। এরা যে সময়টাতে জন্মগ্রহণ করেছে সে সময়টাতে বিশ্বজুড়ে শুরু হয়ে গেছে ইন্টারনেট ব্যবহার। ছোট দু বছরের বাচ্চারাই এখন পড়া লেখা শেখার আগেই আইফোন ব্যবহার শিখছে। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে করছে। জেনারেশ জেডের মন-মানসিকতা উদার, বিভিন্ন ধর্ম বা সামাজিক বিষয় নিয়ে তারা বেশি মাথা ঘামায় না, তারা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশ্বের সাথে যুক্ত, তারা পরিবেশ সচেতন। জেনারেশন জেড ফেসবুক এবং ই-মেইল বেশি ব্যবহার করে না। তারা ইন্সটাগ্রাম এবং ইউটিউব ব্যবহারে অভ্যস্ত। তারা টিভিতে পণ্য ও সেবার বিজ্ঞাপন দেখে অভ্যস্ত না। জেনারেশন জেড প্রজন্মের ক্রেতারা অনলাইনে কেনাকাটা করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।যাইহোক এই দলটিকে অনেক সময় ইন্টারনেট প্রজন্ম বলা হয়, কারণ এটি ইন্টারনেটের জনপ্রিয়তার পরে প্রথম প্রজন্মের জন্ম হয়েছিল।

অত্যন্ত আশাবাদী এই ছেলেমেয়েরা তাদের আগের প্রজন্মের থেকে নিজেদের অনেক এগিয়ে কল্পনা করতে ভালোবাসে। তারা ক্রিয়েশনকে বেশি প্রাধান্য দেয়। নতুন ও পুরাতনের সমন্বয়ে ছিলো ‘এক্স’ কিংবা ‘ওয়াই’রা। বুদ্ধদেব বসু, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, অমিয় চক্রবর্তী, জীবনানন্দ দাশসহ কল্লোল আন্দোলনের সাহিত্যিকেরা যেমন চেয়েছিলেন রবীন্দ্রবলয় ভেঙে নতুন ধারার সাহিত্যচর্চা করতে, তেমনি এখনকার যুগের ছেলেমেয়েদের ভেতরেও রয়েছে সম্পূর্ণ নতুন কিছু সৃষ্টির চিন্তা। অবশ্য এ ক্ষেত্রে রয়েছে ইতিবাচকতা বা নেতিবাচকতার প্রশ্ন। তাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় রুচিবোধ ও অভ্যাসেরও পরিবর্তন এসেছে।


এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের একটা বড় অংশই রেস্টুরেন্টপ্রেমী। আগে বাইরের খাবার বলতে ছিল ট্র্যাডিশনাল খাবারসহ বেশির ভাগই দেশি খাবার। সর্বোচ্চ গেলে চায়নিজ কিংবা থাই মেনু। এর বাইরে অন্য কিছু থাকলেও তা খুব বেশি উল্লেখ করার মতোিলো না। অন্যদিকে বর্তমান সময়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছে ইন্ডিয়ান, জাপানিজ, ফ্রেঞ্চ, ইতালিয়ান, রাশান কিংবা আমেরিকান রেসিপি। বর্তমানের প্রতিটি রেস্টুরেন্টে ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন ইজ এক্সসেলেট! ফলে পরিবেশগত কারণ বা নতুন খাবার টেস্ট অথবা সময় কাটানোর একটা জায়গা; যেকোনো শর্তেই ‘রেস্টুরেন্ট’ অন্য সব অপশন থেকে এগিয়ে। এই প্রজন্মের হাত ধরেই ‘ফাস্ট ফুড’ কালচারের ঢালাও প্রচলন হয়। রেস্টুরেন্টের পাশাপাশি ফুডকোর্ট কিংবা মিনি ফুডকোর্টের সংখ্যা এখন অনেক।

আর্ট অ্যান্ড কালচারেও একটা বড় পরিবর্তন এসেছে। একটা সময় ছিল, যখন নিজেদেরকে নিজেদের প্রেক্ষাপটেই তৈরি করে নিতে হতো। নিজস্ব সীমানার বাইরে চিন্তা করাটা অসম্ভব না হলেও বেশ কষ্টকর ছিল। তখন এক ক্লিকেই বিশ্ব ঘুরে আসাটাও প্রায় অসম্ভব ছিলো। ওয়ার্ল্ড মিউজিক, থিয়েটার, মুভি ইত্যাদির সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করা সম্ভব হয়নি; কারণ, সুযোগ ছিল না তেমন। ‘ওয়াই’ দের পক্ষে এই সুযোগটা কিছুটা থাকলেও ‘জেড’ প্রজন্ম পাচ্ছে প্রায় সবই। ফলে, বাংলাদেশি মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি এখন অন্যদের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার মত পর্যায়েই উঠে এসেছে প্রায়।

সিনেমা দেখার রুচিবোধ পাল্টেছে। শুধুমাত্র হলিউড কিংবা বলিউডই নয়; পাশাপাশি কোরিয়ান, জাপানিজ, চায়নিজ, নেপালি, মালয়ালামসহ আরও অন্যান্য ধারার সিনেমার দর্শক তৈরি হয়েছে তরুণদের মধ্যে। এ ছাড়া বর্তমান সময়ের বাংলা সিনেমা কিংবা আর্টফিল্মও তাদের কাছে বেশ জনপ্রিয়।


টেকনোলজি ফ্রিক এই প্রজন্মের প্রতিদিনের অভ্যাসের তালিকায় স্থান পেয়েছে স্মার্ট গ্যাজেটস। কথা বলার জন্য মোবাইল ফোন এখন শুধু যোগাযোগের মাধ্যমই নেই, বরং স্মার্টফোনের স্মার্ট ব্যবহারেও তারা অভ্যস্ত। ফোন ক্যামেরায় শর্টফিল্ম তৈরির ট্রেন্ডও এসেছে। এ ছাড়া গুগল ম্যাপ, ডেইলি নোটপ্যাড, নেভিগেশন কিংবা লাইভ টিভির মতো নিত্যনৈমিত্তিক ব্যবহার এখন খুব সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংবাদপত্র, টিভি, খেলা দেখা, গান শোনাসহ প্রায় সবকিছুই অনলাইনে সেরে ফেলাতে তারা বেশি আগ্রহী। একটি অদ্ভুত ব্যাপার হলো, এদের অনেকেই ফটোশপের বিরুদ্ধে। এই বিরুদ্ধাচরণ মূলত খুঁত ঢাকার ব্যাপারে। তারা নিজেদের প্রকাশ করতে চায় নিজেদের মতো করেই।

জেনারেশ জি এর এই পরিবর্তনগুলোর যেমনই রয়েছে নতুন সম্ভাবনার দিক তেমনই কিছু ক্ষতিকর দিক এড়িয়ে যাবার উপায় নেই। প্রথমত, কালচার পরিবর্তনে তাড়াহুড়াজনিত কারণে অনেক ক্ষেত্রেই পাকিয়ে যাচ্ছে জগাখিচুড়ি। আমাদের সংস্কৃতি ঐতিহ্যগত চর্চা বেশ বাধার সম্মুখীন। এখনকার ছেলেমেয়েরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভ্যস্ত হলেও আদতে তাদেরকে বিচ্ছিন্নই বলা যেতে পারে। এখন আড্ডা, হইহুল্লোড় কিংবা মাঠে খেলাধুলাবিমুখ ছেলেমেয়ের সংখ্যা নেহাতই কম নয়। তারা ভার্চ্যুয়াল জগতে অনেক বেশি সম্পৃক্ত। একই সঙ্গে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়াটাও একটা বড় সমস্যা হয়ে উঠেছে। ভার্চ্যুয়ালি তারা অনেক এগিয়ে গেলেও বাস্তবতায় পিছিয়ে পড়ার কারণে হতাশার শিকার হচ্ছে। মানবিক সম্পর্কের অবনতির পেছনেও এর দায় রয়েছে। প্রয়োজন না থাকলেও প্রায় সারা দিন তারা অনলাইনে ‘অ্যাকটিভ’। যুক্তরাষ্ট্রে ৫৯ শতাংশ কিশোর-কিশোরী অনলাইনে হয়রানির শিকার। এর ভেতরে রয়েছে অপমানজনক কথাবার্তা, গালিগালাজ, গুজব ছড়ানো, শারীরিক হুমকি প্রদান এবং অপ্রত্যাশিত ও ব্যক্তিগত ছবি প্রকাশ। নেতিবাচক দিকগুলো বাদ দিলে এই প্রজন্মের অর্জনটাও কম নয়। সুতরাং, ‘জেড’ জেনারেশনের গতিশক্তির সঠিক প্রয়োগটা জরুরি।

এখন তাই এই জেড জেনারেশনের সাথে সাথে ওয়াই জেনারেশন বা এক্স জেনারেশনের অভিভাবক বা শিক্ষকদেরকেও আপডেট হতে হবে। এসেছে নতুন শিশু তাই বলে স্থান ছেড়ে দিলেই শুধু চলিবেক না। সেই স্থানে বসাবার জন্য যোগ্য করে গড়ে তোলার দায়িত্বটাও কিন্তু আমাদের। বাবা, মা অভিভাবকদের। এখানে কিছু টিপস দেওয়া হলো-

5 Tips for Teaching Generation Z - জেন জি এর জন্য পাঁচটি টিপস-


আমাদের এই সন্তানদের জন্য এখন সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিই তাদেরকে বুঝতে চেষ্টা করা। এটা টিচার বা অভিভাবকদের জন্য কষ্টকর তখনই যখন তারা এই জেনারেশনের সাথে ঠিকঠাক যোগাযোগ করতে পারেননা। তারা যেভাবে ক্লাসরুমের বাইরের গোটা পৃথিবীর সাথে কমুনিকেট করে ঠিক সেভাবে ক্লাসরুমে তাদেরকে ম্যানেজ করাটা কঠিন হয়ে পড়েছে। আর তাতেই এই বিপত্তি। এই সমস্যার সমাধান সম্ভব যদি না আমরা ক্লাসের বাইরের এবং ভিতরের জগৎটাকে এক না করে ফেলি। টেকনোলজী এটার কারণ তা বলার উপায় নেই, হয়ত যদিওবা টেকনোলজীর কারণই এসব সমস্যার কারণ। হয়ত টেকনোলজীই তাদের চিন্তাভাবনা ও কাজের ধারা বদলে দিয়েছে। প্রজন্ম এক্স বা ওয়াই এর তুলনায় আজকালকার বাচ্চারা ইন্টারেক্টিভ তথ্য, ভিডিও, পাঠ্যকরণ ইত্যাদি ব্যবহার করে। যেহেতু জেনারেশন জেড এর ইনফরমেশন সেন্ডিং এবং রিসিভিং এর পদ্ধতিগুলো ভিন্ন তাই তাদের যোগাযোগের পদ্ধতিগুলি আমাদের বুঝতে হবে। তাদের যোগাযোগ পদ্ধতিগুলি কিভাবে কাজ করে আমাদেরকে জানতে হবে।

1. Short Phrases
আজকালকার বাচ্চাদের কাছে যখন কোনো মেইল বা টেক্সট আসে। তার উত্তরের উপর তাদের নিয়ন্ত্রন থাকে। সুবিধামত সময়ে উত্তর দেবার ও প্রতিক্রিয়া জানাবার সুযোগ থাকে। এটি তাদের উপর কম চাপ ফেলে ও তাদের চিন্তা করতে সহায়তা করে। যেমন
একটি ইউটিউব ভিডিওতেও পজ বাটন আছে যা তাদের সময় ও সুযোগকে নিয়ন্ত্রণ করতে দেয়। তবে ক্লাসরুমে এটা কিভাবে করা সম্ভব? সেটি নিয়েই ভাবতে হবে।

2. Use Visuals
জেনারেশন জেডপূর্ণ একটি ক্লাসরুমে ৪৫ সেকেন্ডেরও বেশি সময় মনোযোগ দেওয়ার জন্য জোকস বা মজাদার গল্প সবচেয়ে কার্য্যকরী। স্ক্রিনে এমন কোনো ছবি বা ভিডিও দেখানো যেতে পারে যা কমপক্ষে তিন মিনিটের জন্য থাকবে। এটি নিয়ে প্রশ্ন/উত্তর চালাতে হবে, যতক্ষণ না তাদের মনোযোগ চলে না যায়।

ইদানিংকালে আমরা যা করছি অনলাইন জ্যুম ক্লাস তাতে বড় বাচ্চাদের হয়তো ফাঁকিবাজীর সুযোগ আছে যদি না তারা মন দিতে চায় আর কি তবে আমি খেয়াল করেছি আমার আর্লী সেকশনের বাচ্চারা ঠিকই ৯৯% মনোযোগে পাওয়ার পয়েন্ট বা ভিডিওগুলি ঠিকঠাক দেখে শুনে ও বুঝে আমাকে আনসার করে। এবং তাদের চোখ মুখের ঔজ্জ্বলতা দেখে বুঝাও যায় যে তারা কত বেশি আনন্দ পাচ্ছে।

3. Make it Interactive
শুধুমাত্র পাঠ্যবই বা শিক্ষকের মুখের বাণী ছাড়াও বা পাঠ্যপুস্তকের সহায়তা ছাড়াও বাচ্চারা নিজেরাই ইন্টারনেট ব্রাউজ করে নানা রকম তথ্য উপাত্য সংগ্রহ করে তা পুরো ক্লাসে শেয়ার করতে পারে। এই ধরনের কাজ গুলো তাদেরকে কনফিডেন্ট করে তোলে। অন্যের উপর নির্ভরতা কমাতে শেখায়। যদিও সঠিক গাইডেন্স প্রয়োজন। তবুও নানা তথ্য খুঁজে বের করার চর্চা শেখায়, জ্ঞান চর্চা ও তা শেয়ার করার বিষয়টিও উৎসাহিত করে। এটি মিডল এবং সিনিয়রেও বিশেষ কার্য্যকরী হবে বলে আমি মনে করি।

গুগল ড্রাইভে ইমেজ শেয়ার অথবা Complete collaborative notes with Google apps কিংবা Google Drawing কিংবা Google Forms, Sheets, Google Map এসব ব্যবহারও এই জেনারেশনের জন্য বেশ কার্য্যকরী পদ্ধতি।

4. Be Honest
তাদের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে। তারা বর্তমান বিশ্বের তথ্য সমাগ্রীতে ভরপুর যা বেশিরভাগ প্রাপ্তবয়স্করা হয়ত জানেো না। তারা একেকজন একেক হিডেন তথ্য ভান্ডার। সেদিন আর নেই। শিক্ষরাই সব জানেন। সত্যি বলতে শিক্ষকরা স্যুপার হিউম্যান না কাজেই নিজের সাথে অনেস্ট হতে হবে। যে কোনো মূল্যে আমাদের বাচ্চাদের শিক্ষাটাকেই প্রাধন্য দিতে হবে। এটি ইগো দেখাবার জায়গা না।


5. Take Criticism Well (Give it, Too)
এটি একটু কঠিন তবুও সেই আগের জেনারেশন আর নেই। কাজেই এমন একটি ক্লাসরুম পরিবেশ তৈরী করতে হবে যেখানে বাচ্চারা নিজেদের অপিনিয়ন দিতে পারবে। টিচারকে ভুল মনে হলেও তা তারা যেন প্রকাশ করতে পারে। একে অন্যের প্রতি সন্মান বজায় রেখে আলোচনা, তর্ক বা ডিবেট চালাতে পারে। এতে একে অন্যে মাঝে বোঝাপড়া ও জ্ঞান চর্চার পথ ইন্টারেস্টিং ও সহজ হবে। তারা গঠনমূলক মতামতের সাহায্যে জ্ঞানচর্চার পথ প্রসারিত করবে। এখানে জেনারেশন ওয়াই এর একজন টিচার জোর করে তার কর্ত্বত্ববাদ যদি জেনারেশন জেড এর ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে চায় তো ভুল হবে।

প্রতিটি পরীক্ষা বা যে কোনো বিষয় পড়াবার শেষে একটি তালিকা বা রিফলেকশন ফর্ম দেওয়া যেতে পারে যেখানে ক্লোজ এন্ডেড বা ওপেন এন্ডেড প্রশ্নোত্তরের সাহায্যে শিক্ষার্থী তার বিষয়টি বুঝতে পারা, বা জানার ইচ্ছা বা অক্ষমতা বা কারণ জানাতে পারবে। এটি টিচারের পরবর্তী পদক্ষেপ, ও টিচিং স্টাইলে কি পরিবর্তন বা উন্নয়ন আনা প্রয়োজন তা বুঝতে সাহায্য করবে। একই ভাবে টিচারেরও উচিৎ দৈনন্দিন লেসন প্লানের পাশাপাশি একটি রিফলেকশন জার্নাল মেইনটেইন করা।


যাইহোক, অনেক বড় লেকচার দিলাম। মানে জেনারেশন জেডদেরকে কেমনে পড়ালেখায় বেশি বেশি মনোনিবেশ করানো যায় এই নিয়ে চিন্তা করতে গিয়ে খুঁজে পেতে পড়ে পড়ে নিজের মত দিয়ে একটু লিখলাম আর কি। কেনো লিখলাম!! কারণ এই জেনারেশন জি নিয়ে আরও আরও গবেষনার দরকার মনে হচ্ছে আমার। বিশেষ করে জেনারেশন ওয়াই কিংবা এক্স এর টিচারদেরকে মনে হয় নতুন করে জন্ম নিতে হবে এদেরকে পড়ালেখার ইন্টারেস্টিং ওয়েগুলি চিন্তা করতে। :( যাইহোক আমার কাছে এই জেনারেশন জি এক অবাক বিস্ময় এবং বড়ই ইন্টারেস্টিং সাবজেক্ট। মানে আমার কাছে তাদের কিছু এবনরমাল কিন্তু অকাট্য সব যুক্তিগুলো না মেনে পারা যায় না। তাদের কাছে পরম সত্য বলে কিছুই নেই। যদি এই সংক্রান্ত কেউ কিছু আরও জেনে থাকে বা কোনো কোনো ম্যুভি, ডকুমেন্টারী বা আর্টিকেল পড়ে থাকে তা জানালে আরও আরও খুশি হবো।

যাইহোক এখন আরেকটা কথা বলি,
১৯৪০ থেকে ১৯৫৯ এর মধ্যে যাদের জন্ম তাদের বলা হয় বেবি বুমার্স। ( কেউ কি আছে এখানে বেবি বুমার্স? কেমন ছিলো তারা?? কেমন আছেন এখন?)

এরপরে ১৯৬০ থেকে ১৯৭৯ সালের মধ্যে যাদের জন্ম তাঁরা জেনারেশন এক্স, (তারা থাকলকে ও জানালে খুশি হব....)

১৯৮০ থেকে ১৯৯৪ সালের মধ্যে যারা জন্ম নিয়েছে তারা জেনারেশন ওয়াই বা মিলেনিয়াল ( এই জেনারেশন অনেক আছে নিশ্চয়)
এবং ১৯৯৫ থেকে ২০১০ এর মধ্যে যাদের জন্ম তারা জেনারেশন জেড ( তারা কি ব্লগে আসে?????)

মানে চলমান গতিশীল এই জেনারেশনের কি সময় আছে এই ক্রম অগতিশীল হয়ে পড়া ব্লগটাতে আসার জন্য? একজনকে মনে পড়ে গেলো........... রুপন রিজওয়ান.... অভিমানী বেবি ভাইয়া..... কোথায় আছো? কেমন আছো??? দেখা দাও আবার আমাদের এই ব্লগবাড়িতে। জেনারেশন জেডের সাথে সমন্বয় ঘটুক এক্স কিংবা ওয়াই এর।


আর জেন জেড এর সাথে নামে ও কামে দুইটাতেই মিল আছে যে সে আমাদের জেন রসি ভাইয়া......একদিন সে আমাকে বলেছিলো তারা কয়েকজন নাকি তাদের সময়ের চাইতে ১০ বছর এগিয়ে ছিলো। মানে ভাবনা আর চিন্তায়। ভাইয়া ঠিকই বলে পরম সত্য বলে কিছু নেই যা আমরা ভেবে নিয়ে কাঁটিয়ে সারাটা জীবন অনেকেই........ এমনটা হয়ত ভাবে উদাসী ভাইয়াও......

আর মাহমুদ ভাইয়া!! সে মনে হয় ব্যাক টু দ্য ফিউচারের অজানা কোনো জেনারেশন! বাপরে!!! আরও জানতে হবে......


যাইহোক নতুন করে ভাবো, ভাবছো জেন জি এবং পরম সত্য ভেঙ্গে নতুন কিছু আনো......



যেসব জায়গা থেকে তথ্য পেয়েছি....
z

Zen Z

সবচেয়ে ভালো লেগেছে

Teaching Zen Z
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুন, ২০২০ দুপুর ২:২৭
৭৫টি মন্তব্য ৭৯টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×