সময়টা ছিল একটা শীতকালের সন্ধ্যা। আজ থেকে বেশ কয়েক বছর আগে আমি কলকাতা থেকে ফিরছিলাম। আমার বাড়ি থেকে কলকাতার দুরত্ব প্রায় একশ কিলোমিটার। আমি তখন সবে কলেজ শেঘ করেছি। সাংবাদিকতা উপর ডিপ্লমা করছি। প্রতি রবিবার আমার ক্লাস হোত। এইরকমই এক দিন ফিরছিলাম। সেদিন সামান্য দেড়ি হয়েছিল। একটা ট্রেন মিস করে ফেলেছিলাম। ফলে দেড়ি হয়েগিয়েছিল। এটা ছিল জানুয়ারি মাসের শুরু , আকাশ বেশ কাল অন্ধকার। আমার আবার রেলওয়ে স্টেশন থেকে বাড়ি কুড়ি মিনিটেব বাস পথ। একটু টেনশেনে পরে গেলাম। বাসটা আর পাওয়া য়াবে না বোধায়।যাই হোক, ট্রেনে চাপলাম। আধা ঘন্টার মধ্যে ট্রেন ছাড়ল। কলেজ জীবনে ট্রেনের টিকিট কাটিনি বললেই চলে। বাস্তবে খুব কম ছাত্রই টিকিট কাটে। তখন মনে হোত টিকিট না কাটাটা পৌরুষের। একটা এডভেন্চার। সেদিনও টিকিট কাটিনি। আপান মনে বসে আছি। বেশ শীত ট্রেনের জানালা বন্ধ, একটার পর একটা স্টেশন পার হোচ্ছে। আমি টুকটাক খেয়েচলেছি। এক সময় প্রচণ্ড হইচই। কানে এলো গাড়িতে মোবাইল চেকিং চলছে। বুঝলাম নিঘাঃত ফাইন দিতে হবে। কারন কিছুদিন আগে বর্ধমান যাওয়ার সময় এরকম মোবাইল চেকিংএর পাল্লাই পড়েছিলাম। কিচ্ছু শুনতে চাইনি ফাইন দিতে বাধ্য করেয়েছিল একদম পৈঁষট্টি টাকা। খুব গায়ে লেগেছিল। সবচেয়ে বড় কথা খুব বাজে ব্যবহার করেছিল। যখন হইচই শুলাম আমি আর কিছু না ভেবে ট্রেন থেকে নেমেপড়লাম। যে স্টেশনে নামলাম তার নাম ত্যালাণ্ডু। স্টেশনটা এমনিতেই খুব ফাঁকা থাকে। সেদিন শীত যাঁকিয়ে পড়েছিল। কোন লোক ছিলনা বললেই চলে। ভাবলাম চার টাকা দিয়ে একটা কেটেই নিই। করলামও তাই। স্টেশনে বাতিগুলোর আলো খুবই কম, প্রায় অন্ধকার। স্টেশনের শুরুতে চার জন লোক তাস খেলছিল। একটি লম্প জ্বলছিল কেবলমাত্র। ওদের মুখগুলো কেমন যেন থমথমে । একটি বাচ্চা ছেলে বাইনা করছে খিদে পেয়েছ বলে, কেউ ওর কথায় কান দিচ্ছে না। এতে আমার রাগও হোল। মনে মনে লোকগুলোকে খুব গালি দিলাম । বাচ্চাটাকে দেখে মায়া লাগল । কিণ্তু আমার কিছু করার ছিলনা ।আমার ওদের দেখে কেমন যেন লেগেছিল,একটু অস্বাভিক। আমি অত গুরুত্ব দিলামনা। তার পরে দেখলাম একটিমাত্র লোক বেন্চে বসে বিড়ি খাচ্ছিল। আমি তার কাছে গিয়ে বসলাম। স্সেশনে বেস কিছু কুকুর দেখে একটু ভয় ভয় লাগল। তারপর লোকটিকে আস্তে আস্তে জীগাস্যা করলাম "কি ব্যপার বলুন তো স্টেশনটা এত নিড়িবিলি কেন?" লোকটি উত্তর দিল আজ এখানে একটা মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। আমি কৌতুহল বসত জীগাস্যা করলাম কি হয়েছে? সে উত্তর দিল "আজ এই স্টেশনে চার জন লোক এবং একটা শিশু ট্রেনে কাটা পড়েছে, তাই লোকজন কম"। আমার তো শুনে অসস্তি ও ভয় শুরুহোয়ে গেল। পকেটে একটা সিগারেট ছিল ধরিয়ে ফেললাম। গলা শুকাতে শুরু করেদিল। খানিক পরে এই লোকটি উঠে চলে গেল। পিছন ফিরে দেখলাম যারা তাস খেলছিল তারা আর সেখানে নেই। আমার বুঝতে আর বাকি রইলনা। ভয়ে ভাবনা-চিণ্তা সব শেষ।মাথা ঘুরতে লাগল, মনেহচ্ছিল কেন ট্রেন থেকে নামতে ঘেলাম। আর বসে থাকতে পারা গেল না। মনে সাহস আনার চেস্টা করলাম।শুনেছি ভয়ের সময় সাহস রাখতে হয়।কিণ্তু এসব তত্ব কথা সংখটে কাজ করে না করে বোঝর সময় রইল না । সবে একটা ট্রেন গেছে এখন ট্রেন আসতে অনেক দেড়ি। কিছুতেই স্বাভাবিক হতে পারা গেলনা। গলা শুকিয়ে চৌচির ।সব জলের কল অকেজ রাগ আর ভয় দুটোই সামান সামান। কোনক্রমে স্টেশন থেকে নেমে পাশে রেল কোয়ারটার গুলোর কাছে গিয়ে জল চাইলাম, জল দেওয়া তো দুরের কথা কেউ দরজা পর্য্ন্ত খুললনা । ভয় যেন আরো চেপে ধরল। ওখান থেকে জি,টি, রোড অনেক দুর আর কিছু না ভেবে পরিমরি করে কাঁপতে কাঁপতে ছুটতে লাগলাম , ভাবলাম কোন ক্রমে জি,টি রোড যেটে পারলে লরি ধরে চলে যেতে পারব। অন্তত ভুতুরে পরিবেশ থেকে প্রানটা বাঁচবে। জোর ছুটতে লাগলাম। খাল বিল্ মানামানি নেই। একটা জায়গায় একটা আলে পা পড়তে আছড়ে পড়ে গেলাম। আচমকা চিৎকার করে ঘুমটা ভেঙে গেল।দেখি বিছানায় শুয়ে আছি।
আলোচিত ব্লগ
এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন
মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)
ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)
০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন
টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন
আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন
ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।
ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।