মেয়েরা কিভাবে অনলাইনে অত্যাচারিত হচ্ছে সেটা নিয়ে লিখলে কমেন্ট সেকশনে পুরুষেরা লিখবে যে ছেলেদের পক্ষেও কিছু বলেন। আবার শুধু ছেলেদের নিয়ে লিখলেও একই ব্যাপার হবে। তাই নারী পুরুষ দুজনকে নিয়েই লিখব তবে শুরুটা পুরুষকে দিয়ে করছি। স্বজাতিকে নিয়ে আগে লিখলে পক্ষপাতিত্বের প্রশ্ন উঠত।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
পূর্বের রোস্ট পোস্ট!
রোস্ট পোস্ট (১) - "আপনি কি কালো, বেঁটে, মোটা? তাহলে আপনার বেঁচে থাকা অর্থহীন!" ওহ মিডিয়া প্লিজ শ্যাট আপ!
রোস্ট পোস্ট (২) - বাংলাদেশী বিয়ে - দুটি মনের মিলন নাকি অপসংস্কৃতি, অসহায়ত্ব, অশ্লীলতা প্রকাশের মাধ্যম? শেম শেম!
রোস্ট পোস্ট (৩) - বিবাহ বানিজ্য, পাত্র পাত্রীর নির্বাক অসহায়ত্ব, অশ্লীলতা - ঝলমলে লাইটিং এর পেছনের অন্ধকারের গল্প!
রোস্ট পোস্ট (৪) - সোশ্যাল মিডিয়া- আমাদের মন মানসিকতা কি বিকৃত হয়ে যাচ্ছে? সুস্থ হবার উপায় কি?
রোস্ট পোস্ট (৫): বাংলাদেশী ধারাবাহিক ভার্সেস ইন্ডিয়ান সিরিয়াল! আমরা কেন জনপ্রিয়তায় এত পিছিয়ে? সাংস্কৃতিক আগ্রাসন থেকে বাঁচার উপায় কি?
রোস্ট পোস্ট (৬): কোভিড ১৯ এর রিক্যাপ - কমাসে বেড়িয়ে আসা জাতীয় চরিত্রগুলো! আমরা এতো খারাপ?
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
দুটি মন ও কিছু প্রেম!
রফিক এক ২৫ বছরের টগবগে যুবক। স্বপ্নপূরণে দেশ ছেড়েছে বেশ কয়েক বছর হলো। দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করে পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করে। ভোরে উঠে রেডি হয়ে কাজে যায়, হাড়ভাঙ্গা খাটুনি শেষে ছোট্ট কুটিরে ফেরে। এভাবেই বিরস দিনগুলো কেটে যাচ্ছিল।
এক রাতে ফেসবুকে এক অজানা মেয়ে তাকে নক করল, "আপনার প্রোফাইল টা তো খুব সুন্দর! স্বচ্ছ নীল আকাশ। আপনার হৃদয়ও কি এমনই?"
রফিক এমন রুচিশীল ম্যাসেজ পেয়ে প্রোফাইল চেক করতে গেল। দেখল গোলগাল মুখের মিষ্টি চেহারা একটা মেয়ের ছবি। পৃথিবীর সকল সরলতা আর মায়া যেন তার চেহারায় ভর করেছে! মনের অজান্তেই রফিক যেন প্রথম দর্শনে প্রেমে পড়ে গেল।
সাথে সাথে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট এক্সেপ্ট করে রিপ্লাই দিল - হৃদয় আকাশের মতো কিনা জানিনা, কিন্তু আকাশ আমার খুব ভালো লাগে। আচ্ছা এত লোক থাকতে আমাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠালেন যে?
মেয়ে - বলব তবে ফোনে, আপনার ইমো নাম্বার দেন।
রফিক - সাথে সাথে নাম্বার দিল।
মেয়ে - আপনার মতো আকাশ আমারো প্রিয় তাই নক দিয়েছি।
কথায় কথায় সেদিন সারারাত পার হয়ে গেল। রফিক আজকাল অনেক হাসিখুশি থাকে। সারাদিন কাজের ফাঁকে ভাবে কখন সন্ধ্যা হবে, বাড়ি যাবে আর পিংকির সাথে কথা হবে! মাত্র এক সপ্তাহের পরিচয়ে ওরা অনেক কাছাকাছি এসে গিয়েছে। পিংকি হুটহাট নিজের গোপন ছবি ওকে পাঠায়। রফিকের বিশ্বাস আরো বেড়ে যায়, ভাবে একটা মেয়ে এতটা বিশ্বাস শুধু ভালোবাসার মানুষকেই করতে পারে। মনে মনে রফিক পিংকিকে নিজের বউ ভাবতে শুরু করে দেয়।
পিংকিও অনলাইনে বউয়ের দায়িত্ব পালন করে যায়। রফিক কি খাবে, কি পড়বে সবকিছু ঠিক করে দেয়। সোনালী সংসারের স্বপ্ন বোনে দুজনে মিলে। মেয়েটি নিজের বড় দুই বোনের সাথেও কথা বলিয়ে দিয়েছে রফিককে। রফিকের মনে আর কোন সন্দেহ থাকেনা পিংকিকে নিয়ে। শুধু একটা বিষয়, যখনই রফিক ভিডিও কল করতে চায় পিংকি বাঁধা দেয়। বলে সামনাসামনি দেখার উত্তেজনা এভাবে কমে যাবে, পুরোন দিনের মতো প্রেম করবে ওরা। রফিক অবাক হয়, আজকালকার যুগেও এমন সুন্দর করে কোন মেয়ে ভাবে?
পরিচয়ের একমাস পেরিয়ে গেছে। একদিন পিংকি বলল, আগামি মাসে তার জন্মদিন, সে কি কোন উপহার পাবেনা? রফিক জানতে চায় কি উপহার লাগবে? পিংকি বলে দেয় একটা ল্যাপটপ, ফোনে চ্যাট করতে করতে চোখ আর আঙ্গুলের খারাপ অবস্থা। প্রথমবার পিংকি কিছু চাওয়ায় রফিক মানা করতে পারেনা। সাথে সাথে পাঠিয়ে দেয়।
এরপরে ভালোই চলছিল সবকিছু। একদিন পিংকি জানায়, ওর বোনের বড় অসুখ ধরা পড়েছে। চিকিৎসার জন্যে প্রচুর টাকা দরকার। তার বাবা ও ভাই মিলে অর্ধেক জোগাড় করেছে। পিংকির এক কাজিন আছে। সে প্রস্তাব দিয়েছে, দেনমোহর হিসেবে এই টাকা দিয়ে দেবে পিংকির সাথে বিয়ে দেওয়া হলে। বোনের জন্যে পিংকি নিজের ভালোবাসা কোরবান করতে প্রস্তুত।
এটা শুনে রফিকের পাগলপ্রায় অবস্থা। ও পিংকিকে ছাড়া বাঁচবে না। ও সাথে সাথে বলল, "যা টাকা লাগে আমি দেব, তুমি আমার বউ, আমার দায়িত্ব!"
রফিক নিজের বোনের বিয়ের জন্যে টাকা জমাচ্ছিল, সেই পুরো টাকাটা পিংকিকে পাঠানোর ব্যবস্থা করল। মনকে স্বান্তনা দিল এই বলে যে; বোনের পড়াশোনা শেষ হতে কিছু বছর বাকি, তার মধ্যে আবারো টাকা জমিয়ে ফেলবে। পরিবারের সুখের জন্যে প্রবাসে আসতে গিয়ে সে তার প্রথম প্রেমকে হারিয়েছে, আবারো হৃদয় ভাঙ্গলে সে বাঁচতে পারবেনা। জীবনে প্রথমবারের মতো স্বার্থপর হলো রফিক, নিজের পিংকির জন্যে।
পিংকির বড়বোন রফিককে অনেক দোয়া করলেন, ফোনে কথা বলতে গিয়ে কেঁদেই ফেললেন! পিংকির বাবাও কথা দিলেন, দেশে ফিরলেই ওদের বিয়ের সানাই বাজবে। দেনমোহরের টাকা মাফ করে দেওয়া হবে।
রফিক স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলল। এখন আর রফিক পিংকিকে আটকায় কে? ওরা আরো বেশি কাছাকাছি এসে গেল। প্রতিরাতে তাদের কথোপকথন গভীর থেকে গভীরতম হতে থাকল।
কয়েক সপ্তাহ পরে পিংকি বলল, আপুর অপারেশন সাকসেসফুল হয়নি, ভারতে নিয়ে যেতে হবে। তার জন্যে টাকা লাগবে। রফিকের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল, ওর কাছে যা ছিল সব তো দিয়ে দিয়েছে। আর কিছুই যে নেই। তবুও সে ওখানকার বন্ধুদের কাছে ধারদেনা করে সেবারের মতো পিংকির চাওয়ার অর্ধেক টাকা পাঠাল। রফিককে অনেক ছোট হতে হয়েছে এই টাকা জোগাড় করতে, অনেকের হাতেপায়ে ধরে তারপরে ম্যানেজ করেছে। সে ভেবেছিল পিংকি অনেক খুশি হবে।
কিন্তু এতদিন মিষ্টি কথা বলা পিংকি হুট করে কর্কশ গলায় বলল, "এত কম টাকায় কিভাবে হবে? এটুকু করতে পারলেনা আমার জন্যে?"
রফিক হতবাক হয়ে গেল, যার জন্যে সে এতকিছু করে এসেছে সে আজ এমন ব্যবহার করল তার সাথে? বুকভরা অভিমান চেপে রেখে পিংকিকে মানানোর চেষ্টা করল। অনেকভাবে বোঝাল যে তার কাছে আর কিছুই নেই কিন্তু পিংকি কিছু বুঝতে নারাজ।
রফিক ভাবল কদিন পরে সব ঠিক হয়ে যাবে, বড়বোনের চিন্তায় তার পিংকি খিটখিটে হয়ে গিয়েছে।
কিন্তু তা আর হলোনা। পিংকি আজকাল যোগাযোগ করতেই চায়না। করলেও শুধু বাকি টাকাটুকু পাঠানোর কথা বলে। রফিক বোঝাতে শুরু করলে অফলাইনে চলে যায়। একসময়ে ওরা দৈনিক ৭-৯ ঘন্টা কথা বলত, এখন সপ্তাহে ৭ মিনিটও কথা হয়না। একদিন হাল ছেড়ে রফিক জানতে চাইল, "তুমি কি আর সম্পর্ক রাখতে চাওনা!?"
পিংকি - এটুকু বুঝতে তোমার এতদিন লাগল? কোন ফকিরের সাথে আমি রিলেশন রাখতে পারবনা, কোথায় আমার কাজিন আর কোথায় তুমি?
রফিকের মনে হলো কেউ ওর বুকে হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছে। দপদপ করে জ্বলতে লাগল ওর মাথা, বুকে ব্যাথা শুরু হয়ে গেল। চিৎকার দিয়ে কাঁদতে থাকল। অনেকক্ষন নিস্তব্ধ বসে থাকার পরে ও কিছু একটা লিখতে যাচ্ছিল পিংকিকে কিন্তু ততক্ষনে রফিককে সবখানে ব্লক করে দেওয়া হয়েছে।
রফিকের শরীর দিনদিন খারাপ হতে থাকে। সারাক্ষন ওর বুকে যেন পাথর চেপে বসে থাকে। ও কোন হিসেব মেলাতে পারেনা। ও একবারের জন্যেও পিংকিকে খারাপ ভাবতে পারেনা। এত ভালোবাসা, এত আদর মিথ্যে হতে পারেনা। ভালোবাসা না থাকলে কোন মেয়ে এতটা ঘনিষ্ঠ হতে পারেনা, ওমন ছবি পাঠাতে পারেনা। কাজে মন না বসায় বারবার মালিকের কাছে অপমানিত হয়। অর্থ, মন, স্বাস্থ্য সবকিছু হারিয়ে ফেলে সতেজ, সবল এক যুবক।
রফিক তবুও অপেক্ষায় থাকে, ওর মনে হয়, কোন একদিন সকালে উঠে ম্যাসেজ পাবে, "সরি বাবু, আমাকে মাফ করে দাও। আপুর শরীর খারাপ বলে আমি তোমার সাথে এমন অন্যায় করে ফেলেছি। আমি আগের মতোই ভালোবাসি তোমাকে!"
কিন্তু রফিকের এই অপেক্ষা আর ফুরোয় না...........
অনেকটা ধোঁকা!
অবশ্য ফুরোবে কি করে? যাকে ও ১৯ বছরের যুবতী মেয়ে ভাবছিল সে তো ৩৭ বছর বয়সী লুৎফুর নাহার; দুই বাচ্চার মা। ফেসবুকে যেসব ছবি দিয়ে রেখেছে সেসব ওর নিজের না, অন্য কোন প্রোফাইল থেকে জোগাড় করেছে। নিজের স্বামীর সাথে মিলেই এই ব্যাবসায় নেমেছে। বোনের গলাটাও ওর নিজেরই ছিল। নানা গলায় কথা বলার অনন্য গুন ও রপ্ত করেছে এই রাস্তায় নেমে। আর পিংকির বাবার গলা দিয়েছে ওরই স্বামী। "প্রজেক্ট রফিক" সাকসেসফুল।
পিংকির স্বামী - আমার বউয়ের মধুর প্রেমের জাল ছিড়ে কে বেড়োতে পারে! ঐ বেটা রফিক তো আধমরা হয়ে গেছে বউ! হাহাহা!
স্বামীর কথায় হাসিতে ফেটে পড়ে পিংকি। হাসতে হাসতে দ্রুত হাত চালায়, টাইপ করে - "আপনি ভাইবোনদের অনেক ভালোবাসেন না? আমিও পরিবারকে অনেক ভালোবাসি!"
মহসিন এক মেয়ের ম্যাসেজ পেল ফেসবুকে। তার প্রোফাইল পিকটা পরিবারের মানুষের সাথে, মেয়েটি সেটাই হয়ত নোটিশ করেছে। ইন্টারেস্টিং তো। সে দ্রুতই রিপ্লাই দেয়! অজান্তে পা বাড়াতে থাকে মরণফাঁদের দিকে.........
সচেতনতা!
ওপরের গল্পটি নিছক গল্প হলে আমার ভালো লাগত কিন্তু এমন ঘটনা চারিপাশে ঘটছে। পেপার বা টিভি নিউজ খুললেই দেখা যায়। হয়ত আপনার কোন পরিচিতর সাথেও এসব হয়েছে! শুধু স্থান, কাল, পাত্র পাল্টেছে কিন্তু প্রেম ও প্রতারণার গল্পটি একই!
এই গল্পে পিংকি ও তার স্বামীর মতো অমানুষগুলোর কথা বাদই দিলাম কিন্তু রফিকের কি কোন ভুল ছিলনা? ওরও কিছু ভুল ছিল।
কি করে বাঁচা যায় রফিকের মতো পরিণতি থেকে সেসব দেখে নেই।
প্রথমত অনলাইনে ডেটিং অনেক বিপদজনক। কিন্তু আমার এই কথায় প্রযুক্তির যুগে তো আর আপনারা সব বন্ধ করে দেবেন না, তাই অনলাইনে কিভাবে নিরাপদে মানুষের সাথে মেশা যায় সেটা জেনে নিন।
১) নিজের ব্রেইন ব্যবহার শুরু করুন। কনসিসটেন্সি খুঁজুন মানুষটির মধ্যে। অর্থ্যাৎ, একটা মানুষ এক দিন/সপ্তাহ/মাস নকল ভালোমানুষী দেখাতে পারে। কিন্তু তার বেশি নাটক করা কঠিন, সে কোন না কোন ভুল করবেই। তাই একটু সময় নিয়ে তাকে জানার চেষ্টা করুন। বুদ্ধি ও বিবেচনাবোধকে দূর্বল হতে দেবেন না আবেগের সামনে।
২) সাধারণত স্ক্যামাররা খুব জলদি ঘনিষ্ঠ হতে চায়। পরিচয়ের প্রথম দিনে প্রেম, দ্বিতীয় দিনে বিয়ে, তৃতীয় দিনে বাচ্চার মা/বাবা ডেকে ফেলবে। বেকুব ছেলেটি ভাবে সে স্বামী হয়েই গেছে! ধুর! উপদেশ দিতে এসেও মেজাজ গরম হয়ে যাচ্ছে! কুল সামুপাগলা কুল!
যদি কাউকে এত জলদি কাউকে ক্লোজ হতে দেখেন বুঝে নেবেন মেয়েটি সুবিধার না। যে সিরিয়াসলি বিয়ের কথা ভাবছে সে দুইদিনের মধ্যে প্রপোজ করবেনা। মানসিকভাবে দূর্বল করে দেবার জন্যে এটা জাস্ট একটা ট্র্যাপ।
৩) রফিক নিজেও মেয়েটির সাথে অশালীন কথাবার্তা বলেছে, তার অশালীন ছবি দেখেছে। অনেকে বলবেন, "মেয়েটি আহবান জানালে ছেলেটি আর কি করবে?" আরেহ! আপনাদের ভালো মন্দ মেয়েদের ওপরে নির্ভর করবে? কোন ধর্মে বলা আছে যে একটা ছেলের ওপরে পবিত্রতা শুধু ততক্ষন পর্যন্ত ফরজ যতক্ষন মেয়েটি বাজে ইঙ্গিত না দেয়!? আপনার চারিপাশের মেয়েরা ভালো হোক/খারাপ হোক, আপনার ভদ্রতা, মূল্যবোধ আপনার হাতে। আপনি যদি একটা মেয়ের খারাপ স্বভাব দেখেও মিশে যান, প্রশয় দেবার দোষ আপনারো।
একটা মেয়ে কদিনের পরিচয়ে না চাইতেই গোপন ছবি দেওয়া শুরু করার মানে সে ভীষন অভিজ্ঞ। এসবই তার পেশা। সত্যিকারের প্রেমিকা এমন করবে নাকি?
৪) মেয়েটির শহরে নিজের পরিচিত কাউকে পাঠিয়ে, সে যেসব তথ্য দিয়েছে সব ঠিক কিনা যাচাই করে নিন। সম্পর্ক অনেকদূর যাবার পরে নয়, যখন মনে হবে মেয়েটিকে প্রপোজ করা যায় তখনই এই কাজটি করে ফেলুন। পরে পস্তানোর চেয়ে আগে খোঁজ নেওয়া উচিৎ।
৫) অনলাইনের পরিচয়ে কাউকে কোনভাবেই উপহার, টাকা দেবেন না! নেভার এভার। যদি অপর পাশের মানুষ অভিমান দেখায়, চলে যাবার হুমকি দেয় তবুও না। মনে রাখবেন, যে আপনাকে ভালোবাসে সে একটা উপহার না পাবার জন্যে চলে যাবেনা। তার বোনের অসুখ করুক, বাপের ব্যাবসার ভাটা পড়ুক, দুলাভাইয়ের বোনের মেয়ের কিডনিতে সমস্যা হোক - ডোন্ট সেন্ড মানি! বিয়ের আগ পর্যন্ত এসব দেখা আপনার দায়িত্ব না। ভালো কথা আমার নেক্সট পয়েন্ট বিয়ে নিয়েই।
৬) বিয়ে না করে একটা মেয়েকে বউ মানা বন্ধ করুন। বাংলা সিনেমায় আকাশ বাতাস সাক্ষী রেখে বিয়ে হলেও ধর্ম ও সমাজ এমন বিয়ে মানেনা। দুই পরিবারের উপস্থিতিতে তিনবার কবুল বলে দেনমোহর দানে, অথবা সাতপাঁকে বাঁধা পড়ে বা চার্চে গিয়ে আই ডু বলে যাহা হয় তাহাকে বিবাহ বলে। অনলাইনে বউ বউ/ঝন্টু মন্টুর মা ডাকা অপ্রয়োজনীয় নেকামি। এতে করে শুধু আপনার মন অজান্তেই আরো দূর্বল হবে। আপনি ভাবতে থাকবেন স্বামীর মতো অর্থনৈতিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
সর্বোপরি, সবার আগে নিজেকে ভালোবাসুন। নিজের ক্ষতি করে অন্যের উপকার করাটা ভালোমানুষী না বোকামি। কেননা আপনার আপনজনেরা শুধু আপনার খুশি চাইবে। তাদের কথা ভেবে হলেও সাবধান থাকুন। সকল প্রকার সমস্যা এড়িয়ে চলুন। সুস্থ ও সুন্দরভাবে জীবনযাপন করুন।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
শেষ কথা: আপনারা ভাবতে পারেন যে আমি কেন যারা ধোঁকাবাজ তাদেরকে কিছু না বলে ভিক্টিমদেরকে বকলাম? কেননা যারা এতটা জঘন্য তাদের বিবেকে পাথর বসে গিয়েছে, ওদেরকে আর কিছু বলে কোন লাভ নেই। একটি ব্লগ পোস্ট দিয়ে কিছু সরল মানুষকে সচেতন করা যায়, কিন্তু অমানুষকে মানুষ করা যায়না। মুভিতে যতোই শেখাক যে ভালোবাসা শুধু মন দিয়ে হয়, ব্রেইন দিয়ে না, এসব ফাউল কথা। প্রেমের আগে চিন্তাভাবনা করে আপনার মন আর ব্রেইন দুটোই যাকে ভালো মনে করবে সেই শুধু ভালো। আপনারা যদি এসব স্ক্যামারদের থেকে বাঁচার আরো আইডিয়া দিতে পারেন তবে কমেন্ট সেকশনে এড করুন। ধন্যবাদ।
আমার স্বজাতিদের বুদ্ধি বিবেক দেখে তো আরোই মেজাজ বিলা হয়। সেসব নিয়ে আসছি পরের পর্বে........
ছবিসূত্র: অন্তর্জাল!
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৩০