somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নতুন সামুপাগলা০৭ এর হ য ব র ল প্রলাপ ৩য় পর্ব

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগের পর্ব-১
আগের পর্ব-2

১। ছোটবেলায় অনেক বাঁধাধরা জীবন কাটানোর ফলে একদম বন্ধুহীন কেটে যায় আমার জীবনের প্রায় ১৫টি বছর। ইন্টারমিডিয়েট পড়ার জন্য রাজশাহী সিটি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হই। সেখানে চলে আমার মুক্ত বন্ধনহীন ছুটে চলা। ফলে কুয়োর ব্যাঙ সাগরে পড়লে যা হয়, অনেকটাই তাই হলো। কিন্তু তারপরও চলত আমার পড়াশোনাটা ঠিকমতই। কলেজের ক্লাসের পর প্রতিদিন বিকেলে পদ্মার পাড়ে কোনদিন টি-বাঁধ, কোনদিন আই-বাঁধ অথবা বাসার পাশের শহর রক্ষা বাঁধে ভ্রমণে যেতাম। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে বসে সময় পার করতাম। কখনও পাশে কোনও বন্ধু থাকত কখনও একাই থাকতাম।



২। মাঝে মাঝে রাজশাহী ক্যান্টনমেন্টের এক বন্ধুর বাসায় গিয়ে তাদের সঙ্গে ব্যাডমিন্টন খেলতাম। অথবা সাহেববাজারের লাইব্রেরীতে বসে বই পড়তাম। অথবা মাঝে মাঝে বন্ধুদের সঙ্গে কোন এক নির্জন নিরালায় বসে আড্ডা দিতাম কখনও পদ্মার পাড়ে, কখন রেললাইনের ধারে। এই সময়ই একবার একটা নাটক ও কয়েকটি মডেলিং করার জন্য রাজশাহী থেকে ঢাকা এসেছিলাম, ইন্টারভিউ (মানে নতুন মুখের সন্ধানে) দিয়ে চান্সও পেয়েছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে এক সড়ক দূর্ঘটনার কবলে পড়ে আর সেখানে সময়মত যোগদান করা হয়ে উঠেনি।
৩। কলেজে পড়াকালীন সময়ে বরাবরের মতই আমার বন্ধুর চেয়ে বান্ধবীই বেশি জুটে গেল। সেই সব বান্ধবীদের নিয়ে চলত মাঝে মাঝে আমার রাজশাহী ভ্রমণ। এর মধ্যে কয়েকজনের আবার শহরেই বাড়ি ছিল। তাদের বাড়িতেও কখনও কখনও চলত আমাাদের নির্মল আড্ডা। তো এরকম এক সময় আমার খালা আমার এক মামাতো ছোট্ট পিচ্চি বোনকে নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিল আমাদের রাজশাহীর বাসায়। একদিন বিকেলে সেই ৪-৫ বছরের সুন্দরী পিচ্চিটাকে নিয়ে গেলাম এক স্থানীয় বান্ধবীর বাড়ীতে বেড়াতে। ওমা সব্বাই পিচ্চিটাকে যা আদর করল। আর আমাকে উপদেশ দিল বেশি বাছাবাছি করে লাভ নেই এটাকেই (পিচ্চি) পেলে-পুষে সারা জীবনের জন্য রেখে দাও। এমন নানান আড্ডায় সময় পার করে চলতাম ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
৪। একদিন রিকশায় করে ক্লাস শেষে বাসায় ফেরার পথে পড়েছিলাম এক স্বর্ণশীকারীর (প্রতারকের) পাল্লায়। তাদের দু'জনের অভিনয়ের ছলায় ভুলে পিতলের একটি টুকরা ৫০০/- টাকায় কিনে ফেলি। পরে অবশ্য বুঝতে পারি আমি মহা বাঁশ খেয়েছি।
৫। রাজশাহীতে থাকাকালীন সময়ে আমার সবচেয়ে বেষ্ট ফ্রেন্ডদের একজন ছিল শাহীন, ওদের বাড়ি ছিল চাঁপাই নবাবগঞ্জে। রাজশাহীতে থাকাকালীন সময়ে আমার অনেক সময়ই ওর সাথে কেটে যেত। বর্তমানে ও ডিভি লটারী পেয়ে আমেরিকার স্থায়ী বাসিন্দা, আগে ন্যুইর্ক থাকত অনেকদিন যোগাযোগ নেই তাই এখন কোথায় থাকে জানি না।


ছবি: গুগল।

৬। বান্ধবীরা প্রেম করত আর তাদের ঘটকালী করতাম আমি। আবার মাঝে মাঝেই চলত তাদের মান-অভিমান পর্ব, তাতেও মধ্যস্থতাকারী এই হতভাগা। সবচেয়ে বেষ্ট বান্ধবী ছিল নীলু, মনিকা, জ্যামিনি, শাওন। এই চারজন আর আমি কত্ত সময় পার করেছি আড্ডা দিয়ে তার ইয়ত্তা নেই। বেশ কয়েকবছর পর হঠাৎ জানতে পারি এদের মধ্যে জ্যমিনি চলে গেছে চিরতরে, আর বাকীদের মধ্যে মনিকা'র সঙ্গে হঠাৎ একদিন রাস্তায় দেখা হয়ে গিয়েছিল। ও রিকশায় যাচ্ছিল আর আমি হেঁটে রাস্তা পার হচ্ছিলাম। প্রথমে ওই আমাকে দেখে এবং রিক্সা থামিয়ে ডেকে বিভিন্ন খোঁজখবর নিতে থাকে। আমি তখন জানলাম ওর বিয়ে হয়ে গিয়েছে, ঢাকায় থাকে।
৭। তখন সম্ভবত বিএনপি'র শাসনামল ছিল, কোন একটা ইস্যু নিয়ে একটানা ২২-২৩ দিন অবরোধ চলেছিল, আমি প্রথম দিকে পড়াশোনার জন্য শহরেই ছিলাম। পরে কলেজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আর টাকা পয়সা ফুরিয়ে যাওয়ায়, নিজের বাইসাইকেলে করে একদিন ৬৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে চলে এসেছিলাম গ্রামের বাড়িতে। আর এই সময়ই আমার জীবনে নেমে আসে এক চরম নাটকীয়তা। (চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:৫০
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×