somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

~~~* হয়তো ভালবাসার গল্প *~~~

০৩ রা আগস্ট, ২০১২ রাত ৯:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঘড়িতে ঠিক রাত ৮.৩০ ।
অস্থির নন্দিনী অপেক্ষা করছে ফেইস বুক চ্যাট-এ । এখনই তো আসার কথা তার । কেন আসেনা! কি যে হয়েছে আজকাল সারাদিন শুধু অপেক্ষায় থাকে কখন রাত হবে,কখন কথা হবে ...।
আজ থেকে কয়েক মাস আগে কিছুটা জিদ এ,কিছুটা বিরক্তি তে নতুন একটা account খুলেছে নন্দিনী ।পুরনো টা deactivated.একজন মানুষ ওর জীবনটা কে অগোছালো করে দিয়েছে । যাকে ছাড়া একসময় কিছুই ভাবতে পারতো না নন্দিনী ,তাকে ভোলার জন্য , তার কাছ থেকে দূরে যাবার জন্য
এখন সবার কাছ থেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছে । সম্পূর্ণ অচেনা কিছু মানুষ কে বন্ধু বানিয়েছে । শুধু একজন বাদে । যাকে ও চিনে,কিন্তু কথা হয়নি কখনো ।কয়েক বছরের বড় ওই মানুষ টার যত সব ছেলেমানুষি কাণ্ড-বেশ ভাললাগে । অল্প সময় এর মাঝেই নন্দিনীর প্রিয় হয়ে যাওয়া একজন মানুষ সে । শুধুই প্রিয় । ভালোবাসা নামক শব্দটা ওর জন্য নন্দিনীর কল্পনা তে ও আসেনি কখনো । মানুষ টা জানেনা নন্দিনী আসলে কে । কিকরে জানবে,এটা তো নন্দিনীর fake account . জীবনে ঘটে যাওয়া কিছু ওলট-পালট করে দেয়া স্মৃতি আর পরিচিত মানুষগুলো থেকে কিছুদিন দূরে থাকার ইচ্ছে ওর ।কিন্তু কেন যেন খেয়াল এর বশে ওই মানুষটাকে,''অলক'' কে-বন্ধু বার্তা পাঠানো, তারও বন্ধুত্ব গ্রহন...হয়ত সেসব নিয়তি বলেই । এখন কথায় কথায় সন্ধ্যা পেরোয়,কখনো কখনো রাতও ।
কত যে এলোমেলো কথা বলে ওরা । দুষ্টুমি ,খেলা,নিজেদের সারাদিন এর ব্যাস্ততা কিংবা একঘেয়েমির গল্প চলে একটানা । এরই মাঝে কোন কোন দিন অলক জানতে চায় নন্দিনী'র জীবনের গল্প । কি বলবে নন্দিনি...সত্যি বলতে যে ভয় করে। অলক কে যে ভীষণ ভয় পায় ও ।কাজেই মিথ্যে বলে । শুধু পরিচয় টুকুই গোপন করে,নিজের ভাবনা - চিন্তা,অতীত এর গল্প,প্রথম ভালবাসা হারানোর কষ্ট ,অভিমান,ভাললাগাগুলোকে নয় । নিজেকেও নয় । সময় বয়ে চলে ।
আস্তে আস্তে নন্দিনী বুঝতে পারে ,অলক বদলাচ্ছে,ওর দুর্বলতা টের পায় নন্দিনী ।ভীষণ অপরাধ বোধ এ ভোগে ও । সত্যি পরিচয়টা যে জানেনা অলক ।জানলে ত...।
সরে যাবে, হ্যাঁ, সরে যাবে ও অলকের কাছ থেকে,ভাবে নন্দিনী ।deactivated করে দিবে এই acount টা ।কিন্তু ,পারেনা । এমন তো কথা ছিলনা ,এমন ত ভাবেনি কখনো ওকে নিয়ে । একই ভুল কি বারবার করে কেউ!...কেন ভাললাগে ওর অলক এর সাথে কথা বলতে,কেন ভাললাগে তার দুষ্টুমি,খেলা, ছেলেমানুষি কবিতা, জোকস ,অস্থিরতা...সব, সব কেন এতো ভাললাগে!আবারও কি ভয়ঙ্কর ভালবাসার খেলায় মেতেছে মনটা !কি এক অজানা আকর্ষণ এ আগুন জেনেও,বোকা পতঙ্গের মতো বারবার ছুটে যায় নন্দিনী,অলক এর কাছে ।
অলক দেখা করতে চায়,রাজি হয়না নন্দিনী ।
অলক বলে-'' চলো না স্টার-এ movie দেখি, নাহয় না ই চিনলাম তোমাকে ।আমি তো আর তোমার ছবি দেখিনি । কিন্তু তুমি ত চিনবে আমাকে। পাশাপাশি না হোক ,আমরা এক ছাদ এর নীচে,এক ই সময়ে থাকতে ত পারবো। তুমি নাহয় দূর থেকে আমার অস্থিরতা দেখে মজা নিও।''
নন্দিনী হাসে ।পাগলটা জানেনা,প্রায় প্রতিদিন ই এক ই ছাদ এর নীচে,এক ই সময়ে ওরা একসাথে থাকে অনেকটা সময় ।নন্দিনী ঠিকই মজা নেয় ওর পাগলামির, মুগ্ধ হয় ওর জ্ঞানে , অস্থির চলাফেরা অথবা হড়বড় করে কথা ঝড় তোলে নন্দিনীর চারপাশে । কিন্তু অলক ওকে দেখেই না, পাত্তাই দেয় না। বরং অপমান করে । অযথা এমন অপমান করে যে কি মজা পায় কে জানে!
যাই হোক,এমন করেই চলছিলো ।অলক সরাসরি ,পরোক্ষ সব ভাবে ই বলে নন্দিনীর জন্য ওর ভাললাগার কথা ,স্বপ্ন বোনার কথা ,ভালোবাসার কথাও ...আর নন্দিনী ওকে বলে- '' আমাকে দেখলে তুমি এ সঅব কিছু ভুলে যাবে। তখন আর আমাকে ভালবাসতে পারবে না । ভালবাসা মিথ্যে । ''
অলক তখন খুব করে জোর দিয়ে বলে -'' কখনও না । আমি তো তোমাকে না দেখেই ভালবেসেছি । আমি তোমার সৌন্দর্য কে ভালবাসি না । আমি তোমার সত্ত্বা কে ভালবাসি। তোমার চিন্তাধারা ,বুদ্ধি মত্তা ,তোমার রহস্য ... আমি ত এসব কিছুকেই ভালবাসি । ''
অনেকবার অলক অনেক চেয়েও নন্দিনীর মোবাইল নম্বর টা পায়নি । এতো কথা হতো শুধু চ্যাটেই ।নন্দিনীর ভয় ছিল ,অলক এর যা বুদ্ধি আর স্মৃতি শক্তি...কণ্ঠ শুনলে ও ঠিক বুঝে ফেলবে নন্দিনী কে !
তবু একদিন কি যেন হল ,অনেক রাত এ নন্দিনীর পাগলের মত অলক এর কণ্ঠ শুনতে ইচ্ছে হল । থাকতে না পেরে ,অনেক ভেবে ,অনেক ভয় এ কল করল অলক এর নম্বরএ ।
ওপাশ থেকে অলক এর কণ্ঠ -''hello, Dr. অলক বলছি ।''
নন্দিনী চুপ ।
অলক- '' হ্যালো , কে ? কথা বলছেন না কেন ?
নন্দিনি- ......
অলক-''আরে ,কি যন্ত্রণা ! আমি কিন্তু ফোন রেখে দিবো ।''
তবুও চুপ নন্দিনী ।
এবার চুপ করে যায় অলক ও । বেশ কিছুটা সময় কোন শব্দ বয়ে যায়না মুঠোফোন এর এপ্রান্ত থেকে অপ্রান্তে । হঠাৎ বলে ওঠে অলক - '' নন্দিনী !!! ''
বুক এর ভেতর হাজার প্রজাপতি যেন ডানা ঝাঁপটায় নন্দিনীর । ইচ্ছে করে সেকেন্ডে লক্ষ কোটি শব্দ উচ্চারন করে ফেলতে ...
কিন্তু,নন্দিনী শুধু বলে- ''হুম''
এরপর ওপাশ থেকে উচ্ছ্বাস , হাসি ,এলোমেলো কত যে কথা! নন্দিনী শুধু আটকে থাকে একটা শব্দেই । এই এক ''হুম'' দিয়েই যে কত ভাব প্রকাশ করা যায়, কে জানত !
কখনও সেটা--হুম ,কখন-- হুউম ,কখনো-- হুউউউউউমমম...কিংবা উম...হুমম...।
অলক ও মজা পেয়ে যায় । নন্দিনী কে বলে ,''তুমি এভাবেই কথা বল তো । দারুন লাগে তোমার হুম শুনতে ...।''
এরপর প্রায়ই কথা হতো। দিনে নয় কখনই ,রাত -এ ...দিন এ নন্দিনীর ওই নম্বর টা থাকতো switched off । অলক এটা নিয়ে অভিমান করতো , অভিযোগ ও ।আবার কিছুখন পর সব অভিমান-অভিযোগ ভেসে যেত । অলক গান শোনাত ভুলভাল কথায়-হেঁড়ে গলায় ।কখনও শোনাত স্বরচিত ''পাগলা'' কবিতা । হাসতে হাসতেই মারা যেত নন্দিনী । অলক হয়ত ইচ্ছে করেই হাসাত ওকে । কারন,শুধু যে ওই হাসি টুকুই একদম সত্যিকারের নন্দিনীর কণ্ঠ ।
এর মাঝে শুরু হয় নন্দিনীর প্রফ পরীক্ষা । মেডিক্যাল লাইফ - এর এক বছর পেরোতে যাচ্ছে ও । তবুও অনেক পড়াশোনার মাঝেও ঠিক ই কথা বলে অলক এর সাথে । নাহলে যে অলক সন্দেহ করবে ! ওর সাথে কথা শেষে আর ঘুমাতে যায়না নন্দিনী । নির্ঘুম রাত এর পর রাত কাটায় পরীক্ষার প্রস্তুতিতে। এত কষ্ট করতে একটুও খারাপ লাগে না নন্দিনীর । অলক এর সাথে কথা হয় যে !
শেষ লিখিত পরীক্ষার আগের রাতে অলক ফোন করে নন্দিনীকে ।রাত তখন ১০.০০ টা । ততদিনে নন্দিনীর ''হুম'' ''হুউম '' কথা পরিনত হয়েছে ফিসফিস শব্দে ।অলক এর এটাও পছন্দ । কারণ , নন্দিনীর কথা গুলো স্পষ্ট শুনতে মন-প্রান সব যে নন্দিনীতেই সপে দিতে হয় । দুষ্টুমি করে অলক বলে - ''পারলে মোবাইল ফোন টার ভিতরেই ঢুকে যেতাম । জীবনে কখনও কারও সাথে এভাবে কথা বলিনি ,আর কারও কথা শোনার জন্য এত কষ্ট ও করিনি ।''
নন্দিনী - '' তাই বুঝি! ভালই তো ...! ''
অলক-'' নন্দিনী ,তুমি কি কখনও আমাকে তোমার সত্যি পরিচয়টা দিবেনা ? আমি কি কখনও দেখতে পাবোনা তোমাকে ?''
নন্দিনী - '' হয়ত পাবে , হয়ত পাবেনা ...কিন্তু ,কেন অলক ?কেন দেখতে চাও আমাকে? তুমি না বল - আমাকে তুমি এভাবেই কাছে পেতে চাও । আমার রহস্য নিয়ে সারাজীবন আমাকে ভাবতে চাও । দেখা না হোক , কথা না হোক , তবু ত তুমি আমার মনটাকে চিনে নিয়েছ । আমাকে ভালবেসেছ ।আর আমিও তোমাকে ভালবাসি । ''
অলক- ''সবই ঠিক । তবুও আমি তোমাকে সামনে চাই । জানো , আমার বন্ধুরা কত ঠাট্টা করে তোমাকে-আমাকে নিয়ে? আমাকে বোকা বলে ।বলে আমি ভুল করছি । তুমিও যে আমাকে ভালোবাসো ,আমার মত করেই আমার জন্য অস্থির হও , কিকরে ওদের বোঝাই ! আমার খুব কষ্ট হয় ওদের ঠাট্টার পাত্র হতে । ''
নন্দিনীরও ভীষণ কষ্ট হয় । ও চায়না অলক ওর জন্য অপমানিত হোক , কষ্ট পাক । ওর-ও যে ইচ্ছে করে,অলক এর সামনে দাঁড়াতে । চোখ - এ চোখ রেখে কথা বলতে । প্রতিদিন এর মত আবারও ভাবে , আজ অলক কে সব বলে দিবে । বলে দিবে,ও আসলে কে । তারপর অলক যা খুশি করুক , ও আর care করবে না।তবুও বারবার সত্যি টা বলতে যেয়েও বলা হয়না , কত যে ভয় !!!
কথায় কথায় রাত শেষ হয়ে আসে । ভোর ৫ টার দিকে অলক হঠাৎ বলে -
'' নন্দিনী , তুমি তো কখনও কক্সবাজার যাওনি ।শুধু মাত্র তোমার ভালবাসার মানুষটির হাত ধরেই সেখানে যাবার ইচ্ছে তোমার । ধর , আমি দাড়িয়ে আছি সমুদ্রে পা ভিজিয়ে । তুমি অনেক দুউউউউর থেকে দৌড়ে এলে , তোমার সবটুকু ভালবাসা বুকে নিয়ে । পিছন থেকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলে আমাকে ... । তারপর কি হবে , বলতো ? ''
নন্দিনী--'' কি আর হবে! আমি চাই ,তুমি পিছন ফিরেই থাকবে । ফিরে তাকিয়ে দেখবে না আমাকে । যদি দেখ, তাহলে হয় তুমি আমাকে সমুদ্রে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিবে , নয়ত আমাকে কাঁচা চিবিয়ে খেয়ে ফেলবে ''--বলে নন্দিনী ।
(কিন্তু মনে মনে ভাবে - ''ইসস! তুমিও যদি ফিরে তাকিয়ে আমাকে দেখতে ! যদি আমাকেও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আমার সব ভয়কে অমূলক করে দিতে !যদি আমাকে সত্যিই ভালবাসতে! ''
মেয়েদের মন বিধাতার কাছেও গোপন থাকে । মেয়েরাই যে পারে ভালবাসা গোপন করেও , ভালবাসতে । অনুভূতি গোপন করেও অনুভব করতে ।)
যাইহোক,
অলক- ''কি!!!! কেন এমন করে বল নন্দিনী ! কিসের এত ভয় তোমার ? কে তুমি ? আমার খুব পরিচিত কেউ? আমার শত্রু ? যেই হউ তুমি একবার আমার সামনে আসো । আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি । তুমি বল, তুমি সুন্দর না... যত কুৎসিত ই হউ না কেন ,যত ভয়ংকর ই হউ না কেন, আমি তোমাকেই ভালবাসবো । কতবার তো বলেছি তোমাকে এই কথাগুলো । বিশ্বাস কর আমাকে ।''
নন্দিনী ঠিক করে ফেলে আজ সব বলে দিবে । এক্ষণই বলে দিবে ...যে কোন শাস্তির মেনে নেয়ার জন্য ও আজ প্রস্তুত ...।
নন্দিনী বলে - '' আমি তোমার বেশ পরিচিত একজন মানুষ । প্রতিদিন আমি তোমাকে দেখি । তুমি যখন ক্লাসে থাকো , আমার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় পর্যন্ত তোমার কাছেই থাকে । এভাবে এর আগে কখনও কেউ আমাকে আকর্ষণ করতে পারেনি । ক্লাস শেষে রোজ আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করি গেইট এর বাইরে । তুমি কি জানো ,কালো রং এর শার্ট এ তোমাকে কি দারুন লাগে! একদম , boss ! গত মাসে নতুন কেনা চশমার ফ্রেমটাতে তোমাকে ভালো মানিয়েছে । আগের টা পচা ছিল । আমি তোমাকে দূর থেকে দেখি ,আর এসব হিজিবিজি কথা ভাবি, বন্ধুদের সাথে গল্প করতে করতে, কিংবা একা একা । তুমি আমার সামনে দিয়েই তোমার বিশ্ববিখ্যাত জেট প্লেন এর মত গতি নিয়ে হেঁটে চলে যাও । আমাকে দেখনা । কিকরে বুঝলাম জানো ? কারণ তুমি নন্দিনীকে তোমার সারাদিন এর গল্প যখন বল ,তখন আর সবার কথাই বল...শুধু ''নন্দিনীর'' কথা ছাড়া । আমি যে তোমার প্রিয় মানুষ গুলোর মাঝে নেই অলক। ''
অলক অবাক হয় । শুরু হয় তার ছটফট করে কথা বলা -- '' কে তুমি নন্দিনী ? আমাকে কেউ এমন করে দেখে ! আর আমি বুঝতেই পারিনা? কে তুমি ? ''
নন্দিনী চুপ । বুকের ভেতর কালবোশেখি , বৃষ্টি নামার অপেক্ষা করে শুধু ।
অলক কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে । নন্দিনীর কালবোশেখি ' র ঝড়ো বাতাস কি ও বুঝতে পারে!
হঠাৎ বলে উঠে অলক - '' মনে হয় আমি বুঝতে পেরেছি তুমি কে । এখন তুমি ঘুমাতে যাও । সকাল ১০.০০ টায় তোমার পরীক্ষা । আর দেরি করোনা । ''
চমকে ওঠে নন্দিনী । ফিসফিস করে বলে -- '' বলতো , আমি কে? ''
অলক -'' তোমার নাম এর প্রথম অক্ষর টা বলি শুধু । '' স ''
ঝড় থেমে যায় নন্দিনীর । সাইবেরিয়ার বরফ তখন নন্দিনী র মন ।সত্যি কথাটা এতদিনে বলা হোল । অলক ওকে চিনে ফেলেছে ।
নন্দিনী শান্ত ভাবে ,স্পষ্ট শব্দে , নিজের সত্যিকার কণ্ঠে বলে উঠে --''এখন তুমি আমাকে কি করবে অলক?বকবে? মারবে? সবার সামনে অপমান করবে? যা খুশি কর। আমি আর ভয় পাই না। আমার ভীষণ শান্তি লাগছে । আমি সত্যি বলতে পেরেছি । ''
অলক-'' আরে ! বোকা মেয়ে ,কিচ্ছু করবোনা আমি তোমাকে । আমাকে তুমি এত্ত ভয় পাও! অরিয়েন্টেশন এর দিন থেকেই তোমাকে আমার ভাল লেগেছে । হলুদ রং-এর জামা আমি তোমাকে ওই একবারই পরতে দেখেছি ।তোমার পড়াশোনা সম্পর্কে আমি সবসময় খোঁজ নিয়েছি । যখন ক্লাসএ থাকতাম , আমি তোমার দিকে একবারও তাকাতাম না । কিন্তু আমি যখন ক্লাস শেষে প্রশ্ন করতাম , মন থেকে চাইতাম উত্তর টা আসুক বাঁ সাইডের সেকেন্ড বেঞ্চটা থেকেই । কারণ , একমাত্র তুমিই আমার লেকচার এর প্রতিটা শব্দ শুনতে ।''
এবার অবাক হবার পালা নন্দিনীর । কি বলছে এসব অলক ! সত্যিই কি ও এমন করত! তবে কি...!!!
নন্দিনীর মন এর কথা বুঝেই যেন, বলে অলক -- '' সুধা, আমি তোমাকে ভালোবাসি । ভালোবাসি , ভালোবাসি ,ভালোবাসিইইইইইই...। ''
চীৎকার করে ওঠে নন্দিনী --'' omg! omg!! omg !!! আমি বিশ্বাস করতে পারছিনা অলক ! যে আমার সবচাইতে প্রিয় স্যার ...i mean,আমি যাকে দূর থেকে এত্ত ভালবেসে ফেলেছি । যার ভালোবাসা পাবো ,কল্পনাও করিনি কখন...সে আমাকে ভালোবাসে ! অলক তুমি সুধা কে ভালোবাসো ! সত্যিই ভালোবাসো !!!''
হাসে অলক--''পাগল মেয়ে ,এখন ঘুমাতে যাও । একটু পর কি পরীক্ষা দিবে!কাল তো আমার ডিউটি নেই । তবুও কি আমি যাবো, তোমার হল এ?''
''না । এসো না ,প্লীজ । আমি কিছু লিখতে পারবোনা তোমাকে দেখলে । এখন আমি ঘুমাতে যাচ্ছি । তুমিও যাও । কাল কথা হবে । ''

ফোন রেখে বিছানায় শুয়ে পরে নন্দিনী , না, সে এখন আর নন্দিনী নয়,সে সুধা ।

****************************************************
আমি গুছিয়ে কিছু বলতে পারিনা । এলোমেলো এই লেখাটা কষ্ট করে পড়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ ।
গল্প টা এখানেই শেষ হলে সুধার সত্যিকারের ভালবাসাটা পূর্ণতা পেত ।কিন্তু, শেষ টা এখানেই নয় । বাকি গল্পগুলো নাহয় অন্য কোন একদিন হবে ।
শুধু এতটুকু বলতে পারি, ওপরের এই পুরপুরি সত্যি ঘটনাটা শেষ হয়েছিলো যেভাবে ,তাতে কারও কোন ক্ষতি হয়নি । পৃথিবীর কোন নিয়ম বদলে যায়নি । শুধু সুধা নামের ছটফটে , চঞ্চল মেয়েটা ভালবাসতে ভুলে গিয়েছিলো । বিশ্বাস করতে ভুলে গিয়েছিলো । ভুলে গিয়েছিলো কাঁদতেও । তবুও আশেপাশের মানুষ গুলোর কাছে সুধা ঠিকই সদা হাস্যময় এক পাগল মেয়ে হয়েই ছিল ।

অলকের নাম ও কখনো কাউকে বলেনি ,খুব কাছের দু' এক জন বন্ধু ছাড়া । তাতে অলকের সম্মানহানি (!) হতো । গভীর রাতে কখনো কখনো একা বিছানায় বসে অথবা জানালায় দাঁড়িয়ে একা একা নিঝুম অন্ধকার দেখত সুধা । আর কেউ তখন দেখতে পেতনা বেখেয়ালে খুলে যাওয়া হাসির মুখোশটার আড়ালে থাকা সুধার কষ্ট মাখা মুখটা ।
১১টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×