১০ জানুয়ারি সদ্য স্বাধীন দেশে পা দিয়েই যুদ্ধাপরাধী ও একাত্তরের ঘাতক-দালালদের বিচারের ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় সবধরনের মানবতাবিরোধী জঘন্য অপরাধের বিচারে ওই বছরের ২৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ দালাল আইন (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আদেশ ১৯৭২ জারি করেন।
এরপর ওই আইনে ১৯৭৩ সালের নভেম্বর পর্যন্ত সারা দেশ থেকে রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও 'শান্তি কমিটি'র সদস্যসহ মোট ৩৭ হাজার ৪৭১ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও প্রমাণের ভিত্তিতে দালাল আইনে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয় ৭৫২ জন যুদ্ধাপরাধীর।
তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার বিচারকাজ সম্পন্ন করতে ৭৩টি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। ১৯৭৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ট্রাইব্যুনালে নিষ্পত্তি হয় দুই হাজার ৮৮৪টি মামলা। বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর প্রায় ২৫ হাজার ৭১৯ জন আসামি ছাড়া পায়। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে আটক থাকা প্রায় ১১ হাজার আসামির বিচার চলছিল। এ ছাড়া ৭৫২ জনের সাজাও হয়। তাদের মধ্যে ১৫ এবং মতান্তরে ১৯ জনের মৃত্যুদ হয়েছিল। বাকিদের যাবজ্জীবন কারাদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ড হয়।
দালাল আইনে প্রথম মৃত্যুদ ের রায় হয় রাজাকার চিকন আলীর।
কুষ্টিয়ার মিরপুর গ্রামের চিকন আলীর বিরুদ্ধে একাত্তরের ১৯ অক্টোবর একই গ্রামের ইয়াজউদ্দিনকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ ছিল।
জানা যায়, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকা ের পর তিন মাসের মাথায় জেনারেল জিয়াউর রহমান ক্ষমতাসীন হওয়ার পরপরই দালাল আইন বাতিল করেন এবং অভিযুক্ত, এমনকি দ িত ৭৫২ জনকে জেল থেকে মুক্তি দেন। সেই সুযোগে চিকন আলী মুক্ত হন।
পঁচাত্তরের ৩১ ডিসেম্বর জিয়া দালাল আইন বাতিল করলেও আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল), ১৯৭৩ আইনটি বাতিল করতে পারেননি। এর মূল কারণ ছিল, এটি সংবিধানের সঙ্গে যুক্ত। ওই আইন ছিল বলেই স্বাধীনতার ৪২ বছরে এসে জাতি যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে এই প্রথম কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে সক্ষম হয়েছে।
*সমকাল পত্রিকা হতে সংগৃহীত।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৪০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



