আমার এই লিখা টা আমার খুব কাছের কিছু বন্ধুদের নিয়ে লিখা। যার কারনেই ”তোরা” শব্দটা ব্যাবহার করলাম। অনেকদিন ধরেই লিখবো লিখবো করে ও হয়ে উঠছিলো না। কিন্তু এখন যা মনে হইলো, লিখার যথার্থ সময় হয়তো এখনি, এখনি সময় তাদেরকে সজাগ করার। কারন একটু আগেই বললাম তারা আমার কাছের বন্ধু।
এখানে বলে রাখা ভালো আমার যতগুলা কাছের বন্ধু আছে, স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিংবা ফেসবুকের তাদের মধ্যে বেশির ভাগই বিএনপি পন্থী। অনেকে সরাসরি ছাত্রদল ও করতো। তারা আজ অনেকেই বাংলাদেশে অনেক ভালো ভালো চাকুরি করতেছে, কেউ কেউ বিভিন্ন দেশের ভালো ভালো বিশ্ব-বিদ্যালয়ে উচ্চতর ডিগ্রী নিচ্ছে অথবা বিভন্ন দেশে চাকুরিরত অবস্থায় আছে। আমার এই বন্ধুরা আবার খুব ভালো রাজনীতি বুঝেন, তাদের সাথে এই বিষয়টা নিয়ে কথা বললে বেশির ভাগ সময়ই আমি চুপ থাকতাম, কারন রাজনীতি শব্দটা তেই আমার কেমন জানি একটা এলার্জি আছে। আর ছাত্র রাজনীতি, এই বেপারটার সমন্ধে আমার খুব বাঝে ধারনা আছে। যা বিশ্লেষন করতে গেলেই বাজে কিছু শব্দ চলে আসে। কিন্তু আমার লিখার বিষয় এইটা না তাই বাদ দিয়ে গেলাম।
আমার এই অল্প বয়সে ২বার জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেবার সুযোগ হয়েছিলো কিন্তু প্রথম বার গিয়ে দেখি ”না” ভোট এর কনসেপ্ট নাই, তাই আমার ভোট টা যাতে কেঊ তাদের পছন্দের কাউকে দিতে না পারে তাই নিজেই গেলাম এবং ব্যালট পেপারে ৩/৪ টা ছবিতে সিল মেরে পেপার টা কে নস্ট করে ফেলে চলে আসলাম। পরের বার ইচ্ছা করেই যাই নি। আমার এলাকা তে কেঊ ভোট দিলে ও না দিলে ও অই একই লোক পাশ করে, যার কারনে ভোট দিতে যাইবার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছি।
আমি যেই পরিস্থিতে তে অনেকবার পরেছি, সেই বেপারটা না বললেই না। গত বিএনপির আমলে আমি বিএনপি এর সমালোচনা করে অনেক কিছু বলেছি। আমার বন্ধুদের সাথে বিএনপির মিটিং কিংবা সভা তে কখনো যাইনি যার কারনে তারা আমাকে বলতো আমি আওয়ামিলিগ করি। এইবার ঘটলো আবার ভিন্ন, আমি আওয়ামিলিগ নেতাদের দুর্নিতি কিংবা দেশের অবস্থা নিয়ে কিছু লিখলে কিংবা শেয়ার করলেই আমার ওই বন্ধুরা ভাবে আমি আওয়ামিলিগ করি না। আওয়ামিলিগ করি না তার মানে আমি বিএনপি করি। যাক তারা অন্তত বলে নাই আমি জামায়াত-শিবির করি।
অনেক আগে থেকেই আমার ওই বন্ধুদের বাসায় দেখতাম শহীদ রাস্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ছবি, তারেক রহমানের ছবি কিংবা খালেদা জিয়ার ছবি। এই ছবিগুলো তাদের বাসায় নিজের রুমে ও আটকাইয়া রাখতে দেখেছি অনেক সময়। নিজেদের অনেক বড় বড় বাণী ও শুনেছি শহীদ রাস্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নিয়ে কিংবা তারেক রহমান কে নিয়ে। দেশের প্রতি তাদের ভালোবাসা নিয়ে। পররর্তিতে তে সেইটা চলে আসলো ফেসবুকে। ফেসবুকের ওয়ালে রাস্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের /সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার/তারেক রহমান এর ছবি। তাদের কে নিয়ে ব্লগে হজারো লিখা। তত্ববদায়ক সরকার ফখরুদ্দিন এর পরে তারেক রহমানের উপরে নির্যাতনের পরে আমার ওই বন্ধুদের পাচ উয়াক্ত নামাজ পরে তারেক রহমানের জন্যে দোয়া করতে ও দেখেছি এবং শুনেছি।
আমার লিখাটার মুল বিষয়টা এইখানেই, আমি আমার সেই বন্ধুদের গত অনেকদিন ধরে দেখতেছি তারা তাদের ফেসবুক ওয়ালে রাজাকার সাঈদী, রাজাকার গোলাম আজম, রাজাকার মুজাহিদ, রাজাকার সাকা চৌধুরী দিয়ে রাখছে। যেই সময়টা তে বাংলাদেশের সব মানুষ দেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য অপেক্ষা করছে, তখনি তারা হয়ে গেলো ওই রাজাকার দের পক্ষের। এখন আর তারা জিয়া-খালেদা-তারেকের ছবি রাখে না। এখন ব্লগে লিখে ওই রাজাকার দের মুক্তিপন নিয়ে, আন্দোলন করে ওই রাজাকারদের মুক্তিপন নিয়ে, হরতাল দেয় ওই রাজাকারদের মুক্তিপনের দাবি নিয়ে। এখন পাচওয়াক্ত নামাজ পরে দোয়া করে ওই রাজাকারদের মুক্তিপন নিয়ে তাদের শারিরিক সুস্থ কামনা নিয়ে।
আমি এমনও শুনেছি, যারা অনেকেই আছে বিএনপি করে কিন্তু তাদের সাথে এই জামায়াত-রাজাকারদের জোট করা টা কেউই মেনে নিতে পারে নাই। যার কারনে তারা ওই অবস্থা থেকেই রাজনীতি ছেড়ে দিয়েছে কিংবা চুপ করে মুখ বুঝে সহ্য করে যাচ্ছে। কিছুই বলতে অথবা করতে পারতেছে না উপরের নেতাদের জামায়াত-রাজাকারদের সাথে সংশ্লিষ্টতার কারনে।
আমি আমার এই বন্ধুদের কে অনেক ভালোবাসি, আর এই কারনেই তোদের বলছি তোরা যদি আমাদের ১৯৭১ এ এই দেশে যে ভয়ংকর হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, মা-বোনদের উপরে যেই নির্যাতন চালিয়েছে, বুদ্ধিজিবীদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে। সেই ইতিহাস টা একটু জেনে নে, জেনে নে ওই ভয়ংকর হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে কারা চালিয়েছে, এবং এই হত্যাযজ্ঞ চালানোর জন্যে কারা সহায়তা করেছে। তোরা বিএনপি কিংবা ছাত্রদল করতি তখনো মনে হইতো তোরা আর যাই করছিস দেশের সাথে, কিংবা মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে বেইমানি করছিস না। শহীদ দের সাথে বেইমানি করছিস না।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



