গত মাসে হঠাৎ করেই অসুস্থ পরায় আমি ব্লগে আসতে পারিনি। সময়টা বেশ দীর্ঘই বলা চলে। আমি এখন ফেসবুক ব্যবহার করাও ছেড়ে দিয়েছি। তবে কথা বলার জন্য মেসেঞ্জারটি চালু আছে। সেখানে ঢাকার নগর বাউল ব্লগার জনাব রাজিব নূর খান সাহেব জানালেন আমাকে নিয়ে প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা ব্লগার জনাব চাঁদগাজী মহোদয় আমাকে নিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন।
তখন আমি ব্লগে প্রবেশ করার চেষ্টা করলাম। কিন্তু কোন অজ্ঞাত কারণে লগ ইন করতে ব্যর্থ হলাম।
সে যাই হোক অন্য এক জন ব্লগারের নিকে উনাকে মন্তব্য করতে সক্ষম হলাম।
শ্রদ্ধাভাজন মুক্তিযোদ্ধা ব্লগার চাঁদগাজী মহোদয় ( উনার আসল নাম জানতে ইচ্ছে করলেও জানা সম্ভব নয়) আমাকে নিয়ে পোস্ট দিয়েছেন দেখে আমি আবেগআপ্লুত।
উনি উদার মানুষ। তাই আমাকে উনি ওই ভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। আমি অতটা গুণী বা তেমন কেউ নই।তারপরও উনার দেয়া বক্তব্য পড়ে আমি বাকরুদ্ধ।
আমি বিগত নভেম্বর মাসের ২০ তারিখে প্রবল জ্বরে আক্রান্ত হই। সেই দিন বিকেল বেলা আমি প্রচন্ড শীত অনুভব করতে শুরু করি। প্রচন্ড শীত আর সেই সাথে কাপুনী দিয়ে জ্বর। আমি প্রচন্ড রকম ভয় পেয়ে গেলাম। এক দিন পর দেখলাম আমার মাঝে কভিড এর বেশ কিছু সিম্পটম মিলে যাচ্ছে।
মালয়েশিয়া গরমের দেশ। এখন বর্ষাকাল । বন্যা হচ্ছে অনেক প্রদেশে। তারপরও কুয়ালালামপুরে গরমের কমতি নেই।
এপ্রিলের প্রথম দিকে নিউইয়র্কে আমার সহপাঠী শাহানা আহমেদ তালুকদার কভিডে- ১৯এর শিকার হন। তিনি বেঁচে থাকতে পারেননি। তার সাথে আমার খুব ভালো যোগাযোগ ছিল। তাকে নিয়ে প্রথম আলোতে ফিচার প্রকাশিত হয়েছিল।
আমার খুব ভয় লাগছিল আমি মারা গেলে আমার সন্তানদের কি হবে? নিজেকে নিয়ে, মৃত্যুকে নিয়ে ভাবার এটাই কারণ।
বাংলাদেশে আমার পরিচিত ডাক্তার আছেন। তাদের কাছ থেকে ওষুধের নাম নিয়ে এখানকার কোতারায় অবস্থিত বাংলা দোকান থেকে সেগুলো এক জনকে দিয়ে কিনানোর ব্যবস্থা করলাম। সেই গুলো সেবন করলাম।এখানে কভিড টেস্ট বিদেশীদের জন্য অনেক ব্যয়বহুল। এছাড়া আমি মোটেই ঘরের বাইরে যেতে চাচ্ছিলাম না।
সেই যাই হোক। জ্বর সেরে গেলেও আরো কিছু লক্ষণ বহাল থাকলো। ওষুধ সেবন চালিয়ে গেলাম।
১৪ দিনের শেষে একটি ক্লিনিকে গিয়ে টেস্ট করালাম। এখানে প্রবাসীদে কভিড টেস্ট খুব খরচ সাপেক্ষ। আমার বাংলাদেশী টাকায় ১০ হাজার এর মতো খরচ হয়েছে।
রিপোর্ট পেলাম নেগেটিভ। ১৬ দিন পরে কাজে যোগদান করি। কাজের প্রচুর চাপ। আমার কাজ তো আর অন্য কেউ করে দিবে না। সেই কাজের চাপ সামলে উঠার চেষ্টা করছি। শরীরটা আগের মতো আর সাপোর্ট দিচ্ছে না। খুব আতংক অনুভব করি।
এখনো আমি পুরোপুরি সুস্থ নই। শরীর খুবই দুর্বল।
মালয়েশিয়ার কভিড ১৯ পরিস্থিতি এখন খুবই খারাপ। মার্চের চেয়ে এখন রোগী হয় ৫/৬ গুণ। গতকাল ও নতুন রোগী সনাক্ত হয়েছে ১৯২৫ জন। এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৪৫৭ জন মানুষ। সামনে যে কি হবে বলা মুশকিল।
লক ডাউন এখন আর আগের মতো নেই। তবে দোকানপাট, অফিস আদালত, কলকারখান সবই এখন খোলা । সবাই ঘরের বাইরে অবাধে চলছে। আগের মতো পুলিশ এর তৎপরতাও নেই। মানুষ জন এই কারণে সংক্রমণও বাড়ছে।
যারা আমাকে নিয়ে জনাব চাদগাজীর পোস্টে মন্তব্য করেছেন তাদের প্রতি আমার সীমাহীন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
১। রানার ব্লগ
২। কাজী ফাতেমা ছবি
৩।মোঃ মাইদুল সরকার
৪।ফটিকলাল
৫।মেহেদি_হাসান.
৬।আমি সাজিদ
৭।রাজীব নুর
৮।নজসু
৯।মিরোরডডল
১০।সামছুল মালয়েশিয়া প্রবাসী
১১।নুরুলইসলা০৬০৪
১২।সোহানী
১৩।স্বামী বিশুদ্ধানন্দ
১৪।নতুন নকিব
১৫।তারেক ফাহিম
আগের মতো ভালো অনুভব করি না। পুরোপুরি সুস্থ হলে আবার পোস্ট দিব। সামহোয়্যার ইনকে খুব মিস করি। আমি লেখক হিসাবে ভালো নই। তবে আমি পড়তে পছন্দ করি। পাঠক হিসেবে আমি মন্দ না।
সবাই ভালো থাকবেন। সবাই সুস্থ থাকবেন। শুভ ব্লগিং।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:১৬