বুঝদার হওয়ার পর প্রতি বছরের এই দিনে আমি সকালে আব্বা-আম্মার কাছে যেতাম দোয়ার জন্য, তারপর আমি স্কুল/কলেজ যাওয়ার টাইম হলে আম্মা আমার হাতে কিছু টাকা দিতেন একটু স্ফুর্তির জন্য, কিন্তু তখন আমি আম্মাকে বলতাম, "আম্মা এইটা তুমি দিলা, আব্বারটা কই???", আম্মা বলতেন, "তোমার বাফোর টাইন তুমি খুঁজো, আমারে কিতার লাগি খউ???" (তোমার বাবার কাছে তুমি খুঁজো, আমাকে কেন বল???), আমি ঐটাইম আব্বার কাছে যেতাম আর আব্বার কাছে বায়না করতাম, আব্বা বলতেন, "ওত টেখা কিতার লাগি??? নষ্ট অইযাইবায়" (এত টাকা কেন লাগবে??? পরে নষ্ট হয়ে যাবে), আমি চুপচাপ চলে আসতাম, ঠিক যাওয়ার আগ মুহুর্তে আম্মা এসে কিছু টাকা দিতেন আর বলতেন, "তোমার আব্বায় দিসইন, খইসইন হিসাব নিবা বাদে" (তোমার আব্বা দিসেন, বলসেন পরে হিসাব নিবেন), আমি ঐটাইমে খুশিতে চলে যেতাম, এবং আব্বা কোনদিনো ঐটাকার হিসাব চাইতেন না,
আজ ২১ বছর বয়সে প্রথম আমার আব্বাকে ছাড়া জন্মদিন পালন, আজকে সকালে আমি আব্বা-আম্মার রুমে ঢুকতে যেয়ে বুকে প্রচন্ড ধাক্কা খেলাম, গত বছর এই দিনে আমি সুইডেন ছিলাম, আর আমার আব্বা আমাকে ফোন করে Wish করেছিলেন, আর আগের প্রতি বছর আব্বাকে পেতাম রুমে মাথার উপর হাত রেখে শুয়ে আছেন, আর আজকে অই জায়গাটা খালি, আমার আব্বার মৃত্যু না যতটুকু কষ্ট দিয়েছে, এই দৃশ্য আমাকে প্রচন্ড কষ্ট দিয়েছে, আমার আব্বা নেই, আমার নাথায় হাত দেয়ার কেউই নেই........... আমি আমার এই কষ্ট কই রাখি???
সকালে পরে যেয়ে দেখি আম্মা কাঁদছেন, উনারো এইসব কথা মনে পড়েছিল, আসলেই ঘর এখন খালি খালি লাগে, এই মানুষটা সারা ঘর মাতিয়ে রাখতেন, আর আজ উনি শুধুই একটা স্মৃতি, ইয়া আল্লাহ আমার আব্বাকে তুমি যেখানেই রাখনা কেন, সুখে রাখ শান্তিতে রাখ, উনাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান কর, আর আমাকেও প্রতিষ্ঠিত কর উনার মত, আমার আব্বাকে যেমন সকল মানুষ একনামে চিনে, ভালো মানুষ হিসেবে জানে, আমাকেও সেরকম করিও, আমীন
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৪:২০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




