ফাহরিয়ার: অনেক বছর আগের কথা। তখন আমি মাত্র নতুন পঞ্চম (৫ম) শ্রেণিতে ওঠেছি। এসময় রাহুল নামে একজন নতুন ছাত্র স্কুলে ভর্তি হল। বয়সের তুলনায় সে অনেক লম্বায় ছিল। প্রথম কথা বলে তার সাথে বন্ধুত্ব করলাম। তার মা একজন চাকরিজীবী । সে তার মায়ের সাথে থাকেন এবং আমাদের পাশের বাড়িতে তারা ভাড়া নিলেন। এতে আমার স্কুলে যাওয়ার একটি সাথি পেলাম। তারপর থেকে তার সাথে স্কুলে যেতে শুরু করলাম। সে থেকে আমাকে খুব পছন্দ করত। আমি ও তাকে পছন্দ করতাম। তারপর থেকে সে আমাকে সব সময় তার সাথে রাখত। আমার অসুখ হলে সে খুব কষ্ট পেত। আমি তার সুখ-দুঃখে পাশে থাকতাম। আমরা দুজনে অনেক মজা করতাম। কারো বাগানের আম , কারো বাগানের পেয়ারা লুকিয়ে লুকিয়ে খেতাম।

অনেক সময় বাগানরে মালিক দেখে ফেলত এবং বকা বাজি করত। কখনো বা দৌড়ে তাড়া করত। একদিন আমার বন্ধুকে বাগান মালিক ধরে ফেলেছে। তাকে গাছের সাথে বেধে রাখে। তা দেকে আমার খুব মন খারাপ হল। তাকে ছাড়াতে আমার মন যেন উতলা হয়ে পড়েছে। পরে রাহুলকে ছাড়াতে কয়েকজন বন্ধু মিলে গেলাম বাগানের মালিকের কাছে। তারপর অনেক কষ্টে বুঝিয়ে ছেড়ে নিয়ে আসলাম তাকে। এরপর থেকে তার আর আমার মাঝে বন্ধ্যত্ব আরও গভীর হলো । সে আমাকে নিয়ে গেল ছবি তোলার দোকানে। তারপর আমার বন্ধু আর আমি দুজনে মিলে কয়েকটি ছবি তোললাম। সেটাই ছিল আমার জীবনের বড় স্মৃতি। এভাবে কয়েক বছর চলে গেল। কিন্তু হঠাৎ করে কিজে হয়ে গেল। বাবা শহরে থাকতেন। এক সময় বাবার সাথে আমাকে শহরে চলে যেতে হলো। আমি আমার বন্ধুকে ছেড়ে যেতে চাইনি। তারপরও বাবা সাথে আমার চলে আসতে হলো শহরে। এরপর আমি ও বন্ধুকে ছেরে একা একা থাকতে শুরু করলাম। এখনো তার কথা আমার মনে পরে। সে যেখানে থাকুক না কেনো ভাল থাকুক।সেই দিনগুলো আমি এখনো অনেক মিস্‌ করছি। এই ছিল আমাদের দুই বন্ধুর গল্প।(বন্ধু মানে আপনজন। তবে যে বন্ধু আপনার বিপদে এগিয়ে আসে সেই প্রকৃত বন্ধু।)