
(কিছুদিন আগে বিপ্র কুমার নামের একজন আত্মহত্যার আগে নোট লিখে যায়, যেন তার মৃতদেহ পোস্টমর্টেম করা না হ্য়
সেই বিপ্র কুমারের উদ্দ্যেশ্যে লেখা)
বিপ্র কুমার বিপ্রতীপ আয়নায়
আত্মশক্তির সন্ধান পায়না বলে-
শ্বাপদ অরণ্যে ঘুরে মরছিল ভীত সন্ত্রস্ত ।
সেখানে কোন ময়ুর নৃত্য তার চোখে পড়েনি,
গড়িয়ে চলা ভয়াল অজগরের শরীরে নিপুন নক্সা
তার চোখে পড়েনি, অন্ধকার জঙ্গলে সবাইকে ছাড়িয়ে
আলোর তৃষ্ণায় ক্রমশ: বর্ধিত বৃক্ষের অক্লান্ত যুদ্ধ
কখনও তাকে আপ্লুত করেনি।
মাংশাসি ব্যাঘ্রের প্রতিবেশি
কোমল বিচিত্রা হরিণ শিশুর মায়াময় চোখ
তাকে পথ বাতলায়নি কোন,
আবার নিজের পথ আবিস্কারের কৌশলও
তাকে কেউ শিখিয়ে দেয়নি ,
কিংবা দিয়েছিল - সেসব কিছুটা ঝঞ্ঝাটময়
এবং কষ্টসাধ্য বলে সে বরং
আকুল অপেক্ষা করেছে -
সহসা হাত ধরে কেউ বলুক,
“পথিক তুমি পথ হারাইয়াছ?”
অসংগত হলেও যে অপেক্ষার শেষটা
বাড়াবাড়ি রকমের সৌভাগ্যবান ছাড়া
সাধারন কেউ দেখতে পায়নি কখনও,
পায়না কোনকালে।
বিপ্র কুমার অবহেলার লু ঝড়ের প্রতিরোধক
শক্ত দেয়াল গড়তে পারেনি -
ফলে,অভিমানের চোরা স্রোতে ভেসে গেছে উত্তাল-
অথচ তার জানা ছিল না, বিরুদ্ধ বাতাসেও
উড়িয়ে দেওয়া যায় ঘুড়ি।
আত্ম শব্দের পিঠে সম্মানের পাখা
গেঁথে নেবার সূত্রটাও
আবিষ্কার করে নিতে হয় নিজেকেই।
ফলে, বিপ্র কুমার ভয়াল আত্মহন্তারক হবার
সিদ্ধান্ত নেবার পরেও-
মানুষের কাছে আগুনের ছেঁকা কিংবা
কাটা ছেঁড়ার কষ্টহীন
সৎকার প্রার্থনা রেখে যায়।
বড় বেশী পরমুখাপেক্ষি তার আকাঙ্খাসমূহ!
বিপ্র কুমার আসলে নিজের পায়ে
কখনও দাঁড়াতেই শেখেনি,
জাগতিক অমোঘ সত্যকে জানেনি,
কোথাও কারো কিচ্ছুটি এসে যাবে না-
বিশ্বজগতের কোথাও তার প্রস্থানে শোক জানিয়ে
মুহূর্তিক নীরবতা পালন হবে না,
এমনকি জন্মদাত্রীর শূন্য জঠরেও
শরীরবৃত্ত খেলা করবে জাগতিক নিয়মেই।
অভিমান শব্দটির বাস্তবিক কোন অর্থ নেই,
থুতনির ভাঁজে জমে ওঠা অভিমানি রেখা
সনাক্ত করার যন্ত্রের প্রয়োজনীয়তা মনুষ্য সমাজ
কখনও অনুভব করেনি।
হায় করুণ বিপ্র কুমার!
কত অজস্র ভয়াল লড়াই শেষে
মানুষ দাঁড়িয়েছে মানুষ পরিচয়ে
অমিত শক্তির প্রতিমূর্তি হয়ে।
জীবন অলৌকিক আলোকময় এক উপহার
যাকে হাতে পেয়ে কতজন
অমর হবার সাধনা করেছে-
কীভাবে তাকে ছুঁড়ে ফেল হঠকারী অবহেলায়
দ্বিতীয়বার ফিরে পাবার আর কোন সুযোগ নেই জেনেও?
——-।।।——-

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


