বিবিধ ভাবনা-২
………………
শেখর সিরাজ
ধর্মের প্রতি আমার কোনও কালেই বিদ্ধেষ ছিল না এমন কি প্রীতিও ছিল না।ধর্ম আমার ব্যাক্তির যাপিত জীবনের লেজর বৃত্তির ভগ্ন অংশ মাত্র।তা আমি কি ভাবে উদযাপন করবো সেটা নির্ভর করে ব্যাক্তি সাতন্ত্র বোধের উপর তার জন্য আমি বা ব্যাক্তি কাউর কাছে জবাবদিহিতা করার জন্য বাধ্য নয়।সেটা ব্যাক্তির ইচ্ছার অধীন।ধর্ম নিজের কিন্তু রাষ্ট সবার।কে কি ভাবে ধর্ম উদযাপন করবে কিংবা কোন ধর্ম দ্বারা প্রভাবিত হবে গনতন্ত্র রাষ্টীয় ব্যাবস্হাপনায় তার জন্য রাষ্ট কাউকে বাধ্য করতে পারে না।প্রচলীত গনতন্ত্র রাষ্টীয় ব্যাবস্হাপনায় ইসলামকে রাষ্ট ধর্ম স্বীকৃতি দিয়ে রাষ্ট তার হঠকারিতার পরিচয় দিয়েছে,এবং ভিন্ন ধর্ম অবলম্বকারীদের সংখ্যালুঘু হিসাবে গৌন্য করছে। সংসদ ভবনে বিসমিল্লাহ না পড়লে সংসদ ভবনের পাক পবিত্রতায় কোনও বরকত আসে না।একজন বাঙ্গালী মুশলমান সাংসদের জন্য জাতীয় সংসদ ভবনে প্রবেশ কালে বিসমিল্লাহ পড়ার নিয়ম রেখেছেন।তবে কেন একজন হিন্দু সাংসদের জন্য রামরাম পড়ার নিয়ম রাখেন নাই।নাকি তিনি জাতীয় সংসদ ভবনে প্রবেশ দ্বারে বিসমিল্লাহ পড়ার পরিবর্তে মনে মনে রামরাম রুদ্রাক্ষরের মালা জপ করে নেন।খনিকের জন্যও কি তিনি অস্বস্তি বোধ করেন না।যদি অস্বস্তি বোধ করেই থাকেন,তবে তিনি কেন তা নিয়ে প্রশ্ন উপস্হাপন করছেন না।নাকি চোরে চোরে মাসতুতো ভাই।
মৌলিক গনতন্ত্রে ধর্মের চেয়ে বড় রাষ্টীয় সংবিধান।অথচয় সেই রাষ্টীয় মৌলিক সংবিধানকে বুড়ো আঙ্গুলের কাঁচ কলা দেখিয়ে ব্যাক্তি রাষ্ট প্রশাসন দুধের ধোঁয়া তুলসী পাতার মতন পাক পবিত্র সত্বি সাবিত্রী হয়ে এই বঙ্গ রাঢ় দেশের বাঙ্গালীরা এখন নাকি দেশি খাঁটি গাইয়ের ঘি এর মতন বিশুদ্ধ জীবন যাপন করছে।শুনলেও আশ্চর্য্য হতে হয়,মৌলিক সংবিধানের পরিবর্তে ধর্মের আফিম দিয়ে বঙ্গ রাঢ় দেশের বাঙ্গালী কুমারীত্বের শিল ভাঙ্গতে হয়,সত্বিচ্ছেদের খতনা করতে হয়। ধর্মের বিধি নিষেধের বাইরে বাঙ্গালীর কুমারীত্ব কিংবা পৌরষত্বের বিসর্জন হয় না।তারপরেও কিন্তু বাঙ্গালী বরবরেই নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করে,চুরি করে ধর্ষন করে সুযোগ পেলেই অন্যের পিঠ চাপর মারার পরিবর্তে দু হাত বসিয়ে দেয়।ধর্মের গঙ্গা জলে স্নান করেও পাক পবিত্র হয়েও শুধরে উঠতে পারে না,তার শিষ্ঠাচারের মুল্যবোধে তাকে ধার্মিক করতে পারে না।করেছে ধর্ম ভীরু।সেখানে ব্যাক্তি ধর্ম উদযাপন করার পরিবর্তে ধর্মের অপব্যাহার করেছে বেশি,অনুতপ্ত হয়ে পায়চিত্ত করার জন্য আবার সে ধর্মের আশ্রয় নিয়েছে,তার রক্ষা কবজে ইস্তেহারের ঢাল হিসাবে।আমরা প্রায় প্রত্যেকেই অবগত আছি বাস্তবে অপরাধীকে অপরাধী বলে প্রমান করার জন্য সাক্ষ্য প্রমান লাগে,তা মিথ্যা হউক অথবা সত্য হউক এজলাসের মধ্যে তা মুখ্য হয়ে উঠে না।মুখ্য হয়ে উঠে সাক্ষ্য প্রমান।কিন্তু ধর্মের বেলায় কোনও প্রকারের যুক্তি খাটে না,ইহলৌকিক কোনও সাক্ষ্য প্রমানের প্রয়োজন পড়ে না,ব্যাক্তির পাপ পুর্ন্যের নির্ধারন জন্য কিতাব সর্বস্ব বর্ননাই যদেষ্ট নয়।এই করলে পুর্ন্য হবে,এই করলে পাপ হবে।শুধু পাপ পুর্ন্যের অচ্ছ ধারনা নিয়ে ধর্ম ত্বত্তকে টিকিয়ে রাখা যায় না।ধর্ম ত্বত্তকে টিকিয়ে রাখার জন্য সাধারন মানুষের অন্ধ বিশ্বাসেই যদেষ্ট।আর এই অন্ধ বিশ্বাস পুজি লগ্ন করেই ধর্ম রাজনীতি, ব্যবসা, অপপ্রচার, ফতোয়া।
প্রতিটি বস্তুর একটি মৌলিক একক ধর্ম আছে।যতখন না বস্তুটিকে ভেঙ্গে অন্য কোন বস্তুর সাথে মিশ্রন ঘটানো হয়,ততখন পর্যন্ত বস্তুটির মাল্টিপল চরিত্র পরিলক্ষিত হয় না।কিন্তু বরাবরেই আমরা ধর্মের মাল্টিপল চরিত্র দেখতে পাই,এক দিকে তিনি পুন্য কর্মের জন্য শান্তির বিধান রেখেছেন।অন্য দিকে রেখেছেন পাপ কর্মের জন্য শাস্তির বিধান।এক দিকে ভয়,অন্য দিকে লোভ।অনেকটা চোরকে বলেন-চুরি করতে গেরস্তেরে বলেন সজাগ থাকতে,তিনি যদি উদার ক্ষমাশীল হয়ে থাকেন তবে তিনি শাস্তির বিধান রাখলেন কেন?মানুষ পাপ করছে আবার নিষ্পাপ হওয়ার জন্য ধর্মে কাছে ফিরে যাচ্ছে,কারন তিনি কঠোর,কিন্তু তার সাথে সাথে তিনি আবার উদার ক্ষমাশীল,তওবা করলেই অতি সহজেই তিনি পাপ মোচন করতে পারছেন।ধর্মের এখানেই বড় একটা ফাঁক থেকে যাচ্ছে।কিন্তু মানুষ বলে কথা কাঁচা লোভ সংবরন করা কঠিন।ধর্মের এই দুর্বলতার ফাঁকেই সাধারনত মানুষকে পুর্নরায় পাপ করার জন্য প্রবৃদ্ধি করে।আমি একজন ইথোপিয়ান ষাঁট উঁর্ধো বৃদ্ধকে জানতাম তিনি ধর্ম কর্ম করেও যিনি ঐ বয়সে এসেও ব্যাক্তিগত জীবনে ছিলেন একজন সমকামী।ধর্মের পাপ পুর্ন্যের প্রভাব তার এই ব্যাক্তি সাতন্ত্র অভিরুচি বোধকে দমাতে পারেনী।ব্যাক্তি সাতন্ত্রবাদ কখনো ধর্ম বা নিদিষ্ট গোষ্টি দ্বারা প্রভাবিত হয় না।এটা আমার নিজস্ব মত,নিজের সাথে নিজের তাতে কোনও দ্বিমত নেই,মত প্রার্থক্য নেই।আমি নিজস্ব ব্যাক্তি সাতন্ত্রবাদে বিশ্বাসী।
তার মানে এই নয়,আমি পশ্চিমা,তাদের সঙ্গে নিজেদের মা বোনদের তুলনা করাটা আমার কাছে যুক্তি সঙ্গত মনে হয় না।,পশ্চিমা সংস্কৃতি বাদ দিয়ে এবং মুসলমানিত্ব এবং হিন্দুত্ব বাদ দিয়ে বাঙ্গালির জাতিসত্তায় নিজস্ব সর্বজনীন একটা সংস্কতি আছে,যেটা বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির যুগে পশ্চিমা অপসংস্কৃতির প্রভাবে বাঙ্গালী তার নিজস্ব সংস্কতি ঐতিহ্য বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে ব্যার্থ হচ্ছে,তার দায় আপনার আমার সবার।তার মানে এই নয়-আমাদের মা বোন দের ক্ষুদ্র বস্ত্র পরিধান করতে হবে।কিংবা প্রকাশ্যে জন সম্মখে রতিক্রীয়ার যৌন সঙ্গমে মেতে উঠতে হবে।বাঙ্গালির নিজস্ব সংস্কৃতির মুল্যবোধ আমাদের সন্তাদের এই নৈতিক শিক্ষা বোধ দেয় না।কিন্তু পশ্চিমা অপ সংস্কৃতির প্রভাবে বর্তমানে প্রেম ভালবাসার নামে যা হয়,চৌদ্দ বছর বয়সী কিশোরী মেয়েটিও তার প্রথম যৌবনে নাসিং হোম থেকে বাড়ির কাউকে না জানিয়ে একা একা তার গর্ভের অনাকাঙ্খিত সন্তানটিকে গর্ভপাত করিয়ে বাড়ি ফিরছে।একদল চাচ্ছে অপ সংস্কৃতির জোয়ারে নগ্ন যৌনতা,অন্য দল যাচ্ছে ধর্মের ঢাক ঢোল পিটিয়ে নগ্ন যৌনতাকে সিন্ধুকের মধ্যে লুকিয়ে রাখা সম্পত্তির মত ভোগ করতে।যা মোটেই কাম্য নয়,নারী এবং যৌনতা তাকে জীব বৈচিত্রের স্বাভাবিক নিয়মেই রাখা উচিত।সংস্কৃতির আদান প্রদানে জাতি সত্তা উন্নত হয়,ব্যাক্তির জীবন মান থেকে জাতীয় জীবনে উন্নতি হয়।কিন্তু অপ সংস্কৃতিতে ব্যাক্তির উন্নতির পরিবর্তন না হয়ে,হয় জাতীয় জীবন মানের অবনতি।প্রজ্ম্ম তন্ত্রে যেটাকে আমরা বলি অবক্ষয়।জীব বৈচিত্রে যখন মহামারি লাগে,সেই মহামারি রোধ প্রতিরোধ করার পরিবর্তে আমরা চুপ করে বসে থাকবো এবং সেটাকে অবক্ষয় না বলে বলব-পরির্বতন।এ যুক্তিবোধ আমি অন্তত মেনে নিতে রাজি নই।হতে পারে আমার জ্ঞানের দৌড় সীমিত।এটাও হয়তো হতে পারে খুব সহজ জিনিসটাকেও খুব কঠিন করে নেওয়ার প্রবনতা।আমরা যখন শিক্ষিত হই,তার থেকে বেশি হই পরগাছা অপ সংস্কতির শিক্ষায় শিক্ষিত।আমি জেগে থাকতে থকতে অন্ধ হতে রাজি নই।এই স্টার প্লাসের যুগে আমি বলি না মেয়েরা শরীর ঢেকে রাখুক কিংবা শরীর খুলে রাখুক।আমি বলতে চাই বাঙ্গালী তার নিজস্ব সংস্কৃতির পরিমন্ডলে উদ্ভাসিত হয়ে উঠুক বিশ্ব দরবারে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



