ইসলাম ধর্মে দাস প্রথাকে সীমিত করা হয়েছে কিন্তু নিষিদ্ধ করা হয়নি। ইসলামের বিধান আসার আগে স্বাধীন মানুষকে জোর পূর্বক দাস বানিয়ে বেচা কেনা করার প্রথা ছিল। ইসলাম এই পদ্ধতি নিষেধ করে দিয়েছে। ইসলাম ধর্মে শুধুমাত্র যুদ্ধাপরাধীকে দাস বানানো যায় আর দাসের সন্তান দাস হয়। এছাড়া দাস বানানোর কোন উপায় নেই। যুদ্ধাপরাধীদের জেলে রেখে দেয়া যেত বা হত্যা করা যেত। কিন্তু সেটা না করে তাদেরকে দাস বানালে সেটা দেশের অর্থনীতির জন্য ভালো। একটা দেশের কয়েদিরা দেশের অর্থনীতিতে কোন ভুমিকা রাখে না বললেই চলে। খুব সামান্য ক্ষেত্রে এদেরকে দিয়ে কিছু কাজ করানো হয় যার পরিমান অতি নগণ্য।
ইসলামের দাস প্রথা মানবিক। দাস মুক্তির কথা এত জায়গায় আছে যে এই প্রক্রিয়ায় দাসেরা ধীরে ধীরে সমাজে মিশে যেতে পারে। ফলে সমাজে দাস এক সময় আর থাকে না অথবা একদম কমে যায়। যারা থাকে এরাও মুলত যুদ্ধাপরাধী। এটাকে একধরনের পুনর্বাসন বলা যেতে পারে। এই যুদ্ধাপরাধীদেরকে ধীরে ধীরে কাজে নিয়োজিত করে সমাজের সাথে মিশে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হয়। ইসলামের সবচেয়ে বড় সমালোচনা হোল অধিকার ভুক্ত দাসীর সাথে সেক্স। এটার কারণ হোল এই নারীরা যুদ্ধাপরাধী। যুদ্ধের ময়দানে পুরুষদের সাথে থেকে যুদ্ধে সাহায্য করেছে এরা। এদেরকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে। পুরুষ যুদ্ধাপরাধীদের ইসলামের রাষ্ট্রপ্রধান চাইলে অনেক ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড দিতে পারে, দাস বানাতে পারে, মুক্তিপণ ছাড়া মুক্তি দিতে পারে, মুক্তিপণ নিয়ে মুক্তি দিতে পারে। কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্রে যে নারী থাকে তাদেরকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার উপর নিষেধ আছে। তাদেরকে দাসী বানানো হয় শাস্তি হিসাবে। ইসলামের রাষ্ট্রপ্রধান চাইলে এদেরকে মুক্তিপণ নিয়ে বা না নিয়ে মুক্তি দিতে পারে অথবা দাসী বানাতে পারে। চাইলে এদের মনিব এদের সাথে সেক্স করতে পারে। আবার চাইলে তাকে অন্য কোথাও বিয়ে দিয়ে দিতে পারে বা বিক্রি করে দিতে পারে।
জেলে নারী বা পুরুষের সেক্সের কোন ব্যবস্থা থাকে না। ইদানিং শুনলাম একটা উন্নত দেশে জেল কর্তৃপক্ষ মাসে কয়েকদিন স্বামী/ স্ত্রী/ পার্টনারের সাথে একান্তে সময় কাটানোর সুযোগ দিচ্ছে বা দিবে। সেক্সের ব্যবস্থা না থাকার কারণে জেলে অনেক যৌন নিপীড়ন হয়। যৌনতা মানুষের স্বাভাবিক চাহিদা। এই কারণে দাসীদের সাথে সেক্সের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। দাসদের ক্ষেত্রে তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়।
দাস প্রথার ক্ষেত্রে শুধু ইসলাম ধর্মকে দোষারোপ করা হয়। কিন্তু খৃস্ট এবং ইহুদি ধর্মে দাস প্রথা আছে। ইসলাম ধর্মে দাসের সাথে মানবিক আচরণের নির্দেশ আছে। মনিব যা খাবে তাকে তাই খাওয়াতে হবে। মনিব যে পোশাক পড়বে তাকেও তাইই পড়াতে হবে। কারণ আমাদের রসূল (সা) বলেছেন যে দাসরা তোমাদের ভাই। দাসের উপরে অতিরিক্ত কাজের বোঝা দেয়া যাবে না। যদি অতিরিক্ত বোঝা দেয়া হয় সেই ক্ষেত্রে মনিবকে সাহায্য করতে হবে। দাসকে পরিবারের সদস্যের মত মনে করা হয় ইসলামে। অন্যায়ভাবে দাসকে প্রহার করলে তার শাস্তি হোল দাসকে মুক্ত করে দেয়া।
যে কোন যুদ্ধকেই জিহাদ বলা যাবে না। জিহাদ করতে হলে স্বীকৃত ইসলামি রাষ্ট্র থাকতে হবে। সেই স্বীকৃত রাষ্ট্র যদি কোন কারণে কাফেরদের সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে যায় কেবল সেটাকেই জিহাদ বলা যাবে। এখন আইসিস, আনসার উল্লাহ টিম যা করছে এগুলি কোন জিহাদ না। পৃথিবীর কোন ইসলামিক স্কলার এদের কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করে না। বর্তমান যুগে ইসলামিক রাষ্ট্রগুলি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছে। ফলে যুদ্ধের ক্ষেত্রে এই চুক্তি মানতে হবে। যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট বন্দিদের ব্যাপারে চুক্তিতে কিছু লেখা থাকলে সেটা মানতে হবে। তাই বর্তমান পৃথিবীর প্রেক্ষাপটে দাস বানানোর সুযোগ নাই বললেই চলে।
ইসলামে অনেকভাবে দাস মুক্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বা উৎসাহিত করা হয়েছে। ফলে দাসেরা সহজেই এক সময় সমাজের মূল স্রোতে মিশে যেতে পারে। তাই ইসলামের দাস প্রথা নিয়ে সমালোচনার কিছু নেই। ইসলামের দেয়া সমাধান সমাজের জন্য কল্যাণকর।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মে, ২০২৩ রাত ১২:৩০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




