
একজন নাস্তিক ব্রিটিশ নারী জীনের ভয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছেন কয়েক বছর আগে। এই পোস্টে সেই বর্ণনা করবো পরবর্তী অংশে। তার আগে জীন সম্পর্কে কিছু বলে নেই। ইহুদি, খৃস্টান এবং ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা জীন বিশ্বাস করে। হজরত সোলাইমান (আ) জীনদেরকে দিয়ে অনেক কঠিন কাজ করাতেন যা কোন মানুষের পক্ষে করা সম্ভব না। পবিত্র কোরআনে ‘আল জীন’ নামে একটা পৃথক সুরা আছে। একাধিকবার জীনেরা আমাদের রসুলের (সা) সাথে দেখা করেছে, কোরআন শুনেছে এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে।
কোন মুসলমান যদি জীনের অস্তিত্বে বিশ্বাস না করে তাহলে সে মুসলমান বলে নিজেকে দাবি করতে পারে না। কারণ সেই ক্ষেত্রে সে আমাদের রসূলকে (সা) মিথ্যা সাব্যস্ত করছে। কোরআনে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ থাকার পরেও কেউ যদি জীনের অস্তিত্বে বিশ্বাস না করে তাহলে সে আল্লাহর কথাকে এবং রসূলের (সা) কথাকে অবিশ্বাস করছে। এই কারণে সে নিজেকে আর মুসলিম দাবি করতে পারে না।
পৃথিবীর সর্বত্রই কম বেশী জীন আছে। তবে পাহাড়, জঙ্গল, নোংরা জায়গায় এবং নির্জন জায়গায় এরা বেশী থাকে। আমাদের প্রত্যেকের সাথে একটা জীন শয়তান আছে যে আমাদেরকে খারাপ কাজে প্ররোচিত করার চেষ্টা করে। ইবলিস শয়তান জীন জাতির সদস্য ছিল। তার পরহেজগারির কারণে সে ফেরেশতাদের সর্দার হয়ে যায়। কিন্তু পরে সে তার অবাধ্যতার কারণে অভিশপ্ত শয়তানে পরিনত হয়। শয়তান আল্লাহকে বিশ্বাস করে, আল্লাহকে সর্বশক্তিমান হিসাবে মানে, আল্লাহর সাথে শিরক করে না। কিন্তু আল্লাহর আদেশের অবাধ্যতার কারণে সে জাহান্নামী হবে।
পৃথিবীতে বহু মানুষ জীন দেখেছে বা জীনের কথা শুনেছে। অনেক পরহেজগার ব্যক্তি জীনের আছরের চিকিৎসা করে থাকেন। আমার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের উপরে ভালো জীনের আছর আছে বা ছিল। তার জীবনে অনেক অস্বাভাবিক ঘটনা আছে যেটা ব্যাখ্যা করা যায় না। আমার বহু বছরের পরিচিত একজন পরহেজগার ব্যক্তি জীনের আছরের চিকিৎসা করেন। ওনার কাছে ওনার জীনের অভিজ্ঞতার কথা শুনেছি।
একজন ব্রিটিশ নাস্তিক নারী নিজের জীবনে জীনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন জীনের ভয়ে তিনি আল্লাহকে জানতে পারেন এবং অবশেষে ইসলাম গ্রহণ করেছেন। ছোটবেলায় এই মেয়েটার ভাইয়ের বন্ধু ব্ল্যাক ম্যাজিক চর্চা করতো। ১৪ বছর বয়সে একবার সে যখন ব্ল্যাক ম্যাজিক দেখছিল তখন তার বুকের মধ্যে এক ধরণের ভয়ের অনুভূতি কাজ করে। তার ভাইয়ের বন্ধু তাকে বলে যে তোমাকে পছন্দ করছে না তাই তুমি এখান থেকে চলে যাও। এভাবে জীবনে প্রথম সে জীন সম্পর্কে জানতে পারে।
পরবর্তীতে তার বয়স যখন ২১ বছর তখন সে মালয়েশিয়াতে বাস করতো। একটা বড় বাড়িতে সে থাকতো। একবার সেই বাড়িতে বন্ধুদের সাথে মজা করছিল সে। উপরের তলার রুমগুলি সে বন্ধুদের দেখাচ্ছিল। একটা রুম থেকে বের হওয়ার সময় সে একটা প্রচণ্ড আওয়াজ শুনলো এবং নীচতলা থেকে কুকুরের ঘেউ ঘেউ আওয়াজ শুনতে পেল। নীচে গিয়ে দেখে তার বেস্ট ফ্রেন্ড কোন একটা কারণে ভয়ে ফ্যাকাসে হয়ে গেছে। তার বন্ধু তাকে বলল যে তার কুকুরটা বাসার সামনের দিকের স্লাইড ডোরের দিকে যাচ্ছিল হঠাৎ দরজাটা নিজে থেকে বন্ধ হয়ে যায়। তখন তারা ভয় পেলেও পরে তারা এই ঘটনার কথা কয়েকদিনের জন্য ভুলে যায়।
কিছু দিন পরে তার বন্ধু তার দেশে ফিরে যায় কারণ সে মুলত মেয়েটিকে সাহায্য করার জন্য এসেছিল। এই মেয়েটা তারপর একা থাকতো ঐ বাসায়। কিছু অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটে চলছিল কিন্তু সে এগুলির ব্যাখ্যা খোঁজার চেষ্টা করতো নিজেকে সান্ত্বনা দেয়ার জন্য। ঘরে ফিরে একটা জিনিস এক জায়গায় রাখার পরে দেখা যেত কিছুক্ষণ পরে সেটা আরেক জায়গায় পাওয়া যাচ্ছে। সে ভাবতো সে হয়তো ভুল করছে। আবার অনেক সময় রুমের মেঝেতে কিছু পড়ার আওয়াজ শুনতো সে।
এক রাতে বাসায় আসার পরে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পাসের হল রুমের বাতি নিভাতে গেল সে। হঠাৎ তার মনের মধ্যে সেই ছোটবেলার ভয়ের অনুভূতি জেগে উঠলো। তারপরও সে বিছানায় যাওয়ার পরে হঠাৎ তার রুমের স্লাইড ডোরের উপর মনে হোল কেউ জোড়ে আঘাত করলো। পুরো দরজাটা কেপে উঠলো। সে প্রচণ্ড ভয় পেল। এই মেয়েটা নাস্তিক ছিল। কোন ভীতিকর পরিস্থিতেও সে কখনও জীবনে গডকে স্মরণ করেনি। কিন্তু ঐ রাতে ঐ সময় সে মনে মনে আল্লাহকে স্মরণ করে এই বিপদ থেকে তাকে বাঁচানোর জন্য। কিছুক্ষণ ল্যাপটপে সময় কাটিয়ে সে বিছানায় শুয়ে পরে এবং অল্প সময়ের মধ্যেই ঘুমিয়ে যায়। ভোরবেলা ঘুম ভাঙলে সে সবার আগে আল্লাহকে ধন্যবাদ জানায়। সে আল্লাহকে আরও বলে যে আল্লাহ তুমি যদি আমাকে ইসলামের পথে চাও তাহলে আমাকে পথ দেখিয়ে দাও। কারণ এখন পর্যন্ত কেউ আমাকে বুঝাতে পারেনি।
তারপর থেকে সে ইসলাম সম্পর্কে জানতে শুরু করে। সে মদ খাওয়া ছেড়ে দেয়। রমজান মাস আসলে সে রোজা রাখা শুরু করে। প্রতিদিন সে কোরআন পড়তে থাকে। হিজাব পরা শুরু করে। নামাজ পড়া শেখে এবং রমজান মাসের মাঝামাঝি সময়ে নিজে নিজে কালেমা শাহাদাত পাঠ করে মুসলিম হয়ে যায়। পুরো ঘটনাটা ইউটিউবে এই মেয়েটি বর্ণনা করেছে। নীচে ভিডিও লিঙ্ক দিলাম।
https://www.youtube.com/watch?v=8jNuBgSqYks
এই ঘটনা জানার পরে আমার কাছে মনে হচ্ছে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরের ক্ষেত্রে জীন ভালো ভুমিকা পালন করতে পারে। কিছু পরহেজগার এবং ভালো জীনকে যদি এভাবে মাঠে নামিয়ে দেয়া যায় তাহলে অনেক নাস্তিক বা বিধর্মী জীনের ধাওয়া খেয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করবে বলে আমার বিশ্বাস।
সূত্র - ইউটিউব
ছবি - আই স্টক
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০২৩ রাত ১০:৩৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




