আজ দুপুরে কলকাতার কেউ শাহাদতের চমৎকার রঙ্গিন ছবি দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছে । খুলে দেখিনি কি আছে ওতে , হয়ত কোন অনলাইন অনুষ্ঠানের খবর । কিছুক্ষন আগে টুইটারে ওর করোনায় মৃত্যু সংবাদে চুপ করে বসে ছিলাম । নিজেকে খুব সংকটাপন্ন মনে হল । আমাদের দেখা নেই অনেক বছর , অনেকের সাথে , অনেক দিন । সময়ের সাথে সাথে , পেশা, স্থান বদল , নতুন সঙ্গী সব মিলিয়ে অনেকেই হারিয়ে যায় , অনেকেই স্মৃতিতে জেগে থাকে । চারুকলায় পড়ার সময় শাহাদাতের সাথে সখ্যতা । আমরা ওকে দিয়ে সরোদ বাদন অনুষ্ঠান করেছি চারুকলায় । ওস্তাদ আবেদ হোসেন খান এর পুত্র , ওস্তাদ আয়েত আলী খানের পৌত্র এবং ওস্তাদ আল্লাউদ্দিন খানের রক্ত ধারার বিশাল পরিবার সারা ভারত এবং বাংলাদেশে ছড়িয়ে আছে । ঢাকাতে ওই সময়ে বিদেশী কূটনীতিকদের বাসায় যত অনুষ্ঠান হত আমি খবর পেতাম , শাহাদাতই চারুকলায় থেমে দিয়ে যেত । চমৎকার আবহে অনুষ্ঠান চলত । শাহাদাত খুব খেয়াল করত আমায় জিন অ্যান্ড টনিক সারভ করেছে কিনা । কি এক জীবন ছিল আশিতে । এখন তাকিয়ে দেখি খুব বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছি সবার থেকে , অসামাজিক হয়ে গেছি । ৯২ তে পিকিং গেল শিল্পকলা একাডেমীর আয়োজনে । সরকারি অনুষ্ঠান । দুতাবাসে একান্ত পরিবেশে দাওয়াত পেলাম ওদের ছোট আয়োজনে । দলনেতা ওর চাচা ওস্তাদ মোবারক হোসেন খান । বেশ রাত পর্যন্ত ওদের সংগ দিলাম । পরদিন শপিঙে সময় দিলাম ।
খুব সিরিয়াস ছিল নিজের কাজে । আজ ওর বাদন শুনছি , বেশ পরিপক্ক হয়ে উঠেছিল । ৯৩ ৯৪ তে বিমান অফিসে মুখো মুখি শেষ দেখা , সম্ভবত । মনে পড়ছে না ছায়ানট , শিল্পকলা বা বেঙ্গলে দেখা হয়েছে কিনা । ৯২ তে পিকিং অনুষ্ঠানের শেষে স্টেজে আমার পিচ্চি মেয়ে ছুটা ছুটি করছে দেখে বলল আমার টুইনদের কথা খুব মনে পড়ছে । আমার কন্যাকে জড়িয়ে ধরে আদর করে টুইনদের স্বাদ নিল । আমি খুব মর্মাহত । শাহাদাত সেলিব্রিটি বলে খবর পেলাম । অনেকের খবর হয়ত জানিনা । কি এক দুঃসময়ের কবলে । শাহাদাতের জন্য দোয়া ।
তোর জন্য দুফোটা চোখের জল , খুব মনে পড়ছে রে ।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪০