somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কেন কিছু মানুষ ভূমিকম্প টের পান না?

০৫ ই মার্চ, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :







"কখন ভূমিকম্প হইছে তার কিছুই জানি না আমি", "ভূমিকম্পের দেড় ঘণ্টা আগে আমি ঘুম থেকে উঠে পড়েছি আজ, কিন্তু তারপরও কিছুই অনুভব করিনি", "ঘুম থেকে উঠে ফেসবুকে এসে দেখছি দেশে ভূমিকম্প হয়ে গেছে"–– মঙ্গলবার সকালে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এরকম প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

এদিন সকাল সাতটা পাঁচ মিনিটে যখন ভূমিকম্প অনুভূত হয়, তখন অনেকেই ঘুমে ছিলেন।

উৎপত্তিস্থল তিব্বতে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে সাত দশমিক এক।

এবারের ভূমিকম্প বাংলাদেশে তেমন তীব্র ছিল না তবে আগেও বিভিন্ন সময় দেখা গেছে যে যখনই কোনো ভূমিকম্প হয়, তখনই কেউ না কেউ এই ধরনের কথাবার্তা লিখে ফেসবুকে পোস্ট করেন বা আলাপ-আলোচনা করেন।

একই সময়ে একই স্থানে থাকার পরও কেন সবাই ভূমিকম্প অনুভব করে না?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর মূল কারণ সংবেদনশীলতা ও ব্যক্তির অবস্থান। "আপনি কত তলায় আছেন, তার ওপর এটি নির্ভর করছে। আপনি যত উপরের দিকে থাকবেন, আপনার ঝাঁকুনিটা অনুভব করার সম্ভাবনা তত বেশি। যত নিচে থাকবেন, এটি অনুভব করার সম্ভাবনা তত কম," বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স ডিপার্টমেন্টের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শাখাওয়াত হোসেন।

তবে এখানে আরেকটি বিষয় হলো–– "কিছু কিছু মানুষ গতি খুব ভালো অনুভব করতে পারে।"

তার মতে, যারা ভূমিকম্প টের পায় না তাদের সেনসিটিভিটি বা সংবেদনশীলতা কম।

"অনেকে আছেন, যারা উচ্চতা নিতে পারেন না। ছাদ থেকে নিচে তাকাতে পারেন না। কারণ তারা উচ্চতার বিষয়ে খুবই সংবেদনশীল। মোশন বা গতির ক্ষেত্রেও তাই," বলছিলেন তিনি।

এক্ষেত্রে কেউ কেউ সংবেদনশীল হবেন, সেটি স্বাভাবিক হলেও "ভূমিকম্পের সময় ব্যক্তি কোন অবস্থায় ছিল, তার ওপরেও তার টের পাওয়া না পাওয়া নির্ভর করে," বলে জানান মি. হোসেন।

উদাহরণস্বরূপ তিনি মঙ্গলবার সকালের ভূমিকম্পের কথা উল্লেখ করেন।

"আজ যিনি বিশ্রাম নিচ্ছিলেন তার ভূমিকম্প টের পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কেউ যদি চলাচলের মাঝে থাকে, তার টের পাওয়ার সম্ভাবনা কম। যিনি রান্না করছেন বা দৌঁড়াচ্ছেন তিনি টের না পেলেও যিনি চুপচাপ টেবিলে বসে কাজ করছেন, তার টের পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি," বলছিলেন মি. হোসেন।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের সহকারী আবহাওয়াবিদ ফারজানা সুলতানাও একই কথা জানান বিবিসি বাংলাকে।

তিনি জানাচ্ছিলেন যে সাধারণত খুব কম মাত্রার ভূমিকম্প হলেও তিনি তা অনুভব করেন। কিন্তু তার বাসা নয় তলায় হওয়া সত্ত্বেও আজকের ভূমিকম্প তিনি অনুভব করেননি।

"এর কারণ, তখন বাচ্চাকে স্কুলে পাঠানোর জন্য আমি নিজেই দৌঁড়াদৌড়ি করছি। আমি স্থির থাকলে আমি অবশ্যই অনুভব করতাম," বলেন এই আবহাওয়াবিদ।

"আজ নিচ তলায় দাঁড়িয়ে থেকেও কেউ কেউ ভূমিকম্প অনুভব করেছে। আট-নয় তলার অনেক বাসিন্দাও কিন্তু আবার ভালোই ঝাঁকুনি অনুভব করেছেন। মূলত, টিভি দেখছেন, তিনি হয়তো অনুভব করছেন। কিন্তু যিনি রান্না করছেন তিনি হয়তো ফিল করছেন না।"

তিনি আরও বলেন, যে এলাকায় ভূমিকম্প হয়েছে, সেখানবার সবাই-ই স্বাভাবিকভাবে এটি অনুভব করে। কিন্তু দূরের ক্ষেত্রে এটা হয়– কেউ টের পায়, কেউ পায় না। মোমেন্ট ম্যাগনিটিউড স্কেল নামেও ভূমিকম্প পরিমাপ করার একটি স্কেল আছে। এটি অনেক ক্ষেত্রে ভূমিকম্প মাপার যন্ত্র হিসেবে পরিচিত রিখটার স্কেলকে প্রতিস্থাপন করেছে।

ভূমিকম্পের মাত্রা বোঝাতে যে সংখ্যাটি দেয়া হয়, তা দিয়ে ফল্ট লাইন কতটুকু সরেছে এবং যে গতি এই সরানোর পেছনে কাজ করেছে সেটি নির্দেশ করে।

দুই দশমিক পাঁচ বা তার কম কম্পন সাধারণত অনুভূত হয় না, তবে যন্ত্রে ধরা পড়ে। পাঁচ মাত্রার কম্পন অনুভূত হয় এতে সামান্য ক্ষতি হতে পারে। সাত দশমিক আট মাত্রার ভূমিকম্প বেশ শক্তিশালী বলে ধরা হয় এবং এতে মারাত্মক ধরনের ক্ষতি সাধিত হয়।

আট মাত্রার বেশি কোনও ভূমিকম্প যে কোনো কিছুর ভয়াবহ ক্ষতি করতে পারে এবং এর কেন্দ্রে থাকা অবকাঠামোকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করতে পারে।

দুটি টেকটোনিক প্লেট বা সাবপ্লেট পরস্পরের দিকে অগ্রসর হলে একটি আরেকটির নিচে প্রবেশ করে। সাধারণত ভারি পাতটি হালকা পাতের নিচে প্রবেশ করে এবং যে সীমানা বরাবর প্রবেশ করে তাকে সাবডাকশন জোন বলে

বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণায় দেখেছেন, সাবডাকশন জোনে বড় আকারের দু'টো ভূমিকম্পের মাঝখানে সময়ের ব্যবধান হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ বছর।



বি বি সি
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মার্চ, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৩৭
৮টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মানুষের টাকা দিয়ে ইসলামি ব্যাংকগুলো কি জুয়া খেলে?

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:০৫



ইসলামি শরিয়া ভিত্তিক দেশের পাঁচ পাঁচটি ইসলামি ব্যাংকের আজ বেহাল দশা, তারা গ্রাহকের টাকা ফেরৎ দিতে পারছে না। সবগুলো ব্যাংকই এখন দেউলিয়ার পথে, বাধ্য হয়ে সরকার এই পাঁচ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বি ডি আর বিদ্রোহ ও পিলখান হত্যাকান্ডের কিছু অপ্রাকাশিত সত্যঃ (পর্ব ০২)

লিখেছেন মেহেদী আনোয়ার, ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৪৭

বিডিআর এর ডিজি নিহত হয় সকাল সাড়ে দশটায়। ভারতীয় টিভি চ্যানেল 'চব্বিশ ঘন্টা' বিস্ময়করভাবে অতি অল্পসময়ের মধ্যে বিডিআর ডিজি ও তার স্ত্রী নিহত হবার সংবাদপ্রচার করে সকাল এগারটায়। ভারতের আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

=মানুষ মানুষকে কীভাবে এত অপদস্ত করে এই ব্লগে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৪

আমি তো কারও সাতেও নাই পাঁচেও নাই। এত সময়ও নাই মানুষকে ঘাঁটার। ব্লগের ব্লগারদের সম্পর্কেও তেমন কিছু জানি না। তবে পোস্ট পড়ে কিছুটা আন্দাজ করা যায় -কে কী রকম। আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগ কি শিখিয়েছে?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:০৬






অপমান, অপদস্থ থেকে বাঁচার উপায় শিখাইনি? ওস্তাদ মগা শ্যামী পাহাড়ে বসেও এসবের সমাধান করতে পারে, আপনি সামান্য অসুস্থতার জন্যও ব্লগে মিলাদ দেননি, দোয়া করেছেন কার জন্য? খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ওরা দেশের শত্রু; শত্রু দেশের মানুষেরও...

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৮

ওরা দেশের শত্রু; শত্রু দেশের মানুষেরও...

অন্তর্জাল থেকে নেওয়া সূর্যোদয়ের ছবিটি এআই দ্বারা উন্নত করা হয়েছে।

ইসলামের পবিত্র আলো ওদের চোখে যেন চিরন্তন গাত্রদাহের কারণ। এই মাটি আর মানুষের উন্নয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×