somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হুমায়ূন আহমেদের অটোগ্রাফ

১৩ ই নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সপ্তম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় পাঠ্য বইয়ের বিভিন্ন গল্প-কবিতা পড়েই মূলত বই পড়ার প্রতি আমার আগ্রহ জন্মে । আমাদের এলাকার বিভিন্ন মেলায় রাস্তায় বিছিয়ে বই বিক্রি করা হতো । আমি সেখান থেকেই ‘বোরকা পড়া সেই মেয়েটি’ টাইপের বই কিনে পড়তে লাগলাম । কিন্তু বই পড়ে তৃপ্তি পাই না । মনে হয় এর চেয়ে আমিই ভালো লিখতে পারি । একদিন আমার এক সহপাঠি বন্ধু আমার এসব বই পড়ার কথা শুনে আমাকে একটি বইয়ের নাম বললো, সেটি পড়লে নাকি আমার অনেক ভালো লাগবে । পরে তার কাছ থেকে শুনে আমাদের স্কুল পাঠাগার থেকে বইটি নিয়ে পড়তে শুরু করলাম । বইটি ছিল হুমায়ূন আহমেদের ‘বহুব্রীহি’ । সেই থেকে আমার হুমায়ূণ আহমেদ পড়া শুরু এবং বই পড়ার প্রতি নেশাও সেই থেকেই । তারপর একে একে হিমু, মিসির আলি, শুভ্রদের সাথে পরিচয় । গ্রামে থাকার সময় আমার একটি স্বপ্ন ছিল যদি কোনোদিন ঢাকা আসি তাহলে বড় লেখক, তারকাদের অটোগ্রাফ সংগ্রহ করবো । ঢাকা আসার পর বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর বহু লেখক, তারকার সাথে দেখা হয়েছে কিন্তু কেন জানি কারো কাছে হাত পেতে অটোগ্রাফ নেয়ার সেই ইচ্ছেটা মরে গেছে । তবে এই জীবনে একজনেরই অটোগ্রাফ নিয়েছি, তাও আবার র‌্যাব পুলিশের তাড়া খেয়ে ক্লান্তিকর দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে । তিনি আমার প্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ । ২০০৮ সালের বইমেলাতে সেদিন তিনি দীর্ঘ লাইন দেখে কারো দিকে না তাকিয়ে একমনে অটোগ্রাফ দিয়ে যাচ্ছিলেন । আমি যখন সামনে গিয়ে তার লেখা ‘মানবী’ বইটিতে অটোগ্রাফের জন্য বাড়িয়ে দিলাম, তিনি আমার দিকে না তাকিয়েই আমার নাম জিজ্ঞেস করলেন । বললাম, ‘শাহিন’ । তিনি তখন আমার দিকে তাকিয়ে আবার নাম জানতে চাইলে দ্বিতীয়বার নাম বলার পর আমি কী করি কোথায় থাকি জানতে চাইলেন । আমার ছেলেবেলার স্বপ্নের নায়ক, প্রিয় লেখক হুমায়ূণ আহমেদ আমার নাম ঠিকানা জানতে চাচ্ছেন! কিযে এক আনন্দানুভূতি হয়েছিল তখন বলে বোঝাতে পারবো না । অনেক পরে বুঝেছি তাঁর ছোট ভাইয়ের ডাকনাম শাহিন হওয়াতেই হয়তো সেদিন তিনি ভীড়ের মধ্যেও আমাকে একটু বেশি সময় নিয়ে অটোগ্রাফ দিয়েছিলেন । তাঁর দেয়া সেই অটোগ্রাফটি আজ আমার কাছে এক অমূল্য সম্পদ, এতে হাত বুলিয়ে যেন আমি প্রিয় মানুষটির স্পর্শ পাই । সেই বহুব্রীহি থেকে আজ পর্যন্ত হুমায়ূন আহমেদের যেখানে যে বই পেয়েছি সেটিই এক বসায় পড়ে শেষ করেছি । সর্বশেষ ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে ‘বৃষ্টি বিলাস’ বইটি পড়া অবস্থায় হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর খবর পেয়ে মনে হচ্ছিল আমার পরিবারের অতি আপনজন কেউ মারা গেছেন । তিনি আমাদের আপনজনই ছিলেন । আমার জীবনের অনেক দুঃখের মুহুর্তগুলো আনন্দে ভরিয়ে দিয়েছেন, প্রেরণা দিয়েছেন । তাঁর বই পরেই বই পড়ার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়েছে । হুমায়ূন আহমেদের খোঁজ না পেলে হয়তো রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, শরৎচন্দ্র থেকে শুরু করে সুনীল, আনিসুল হক আমার অজানাই থেকে যেত ।

প্রিয় হুমায়ূন আহমেদ, ‘তোমার মৃত্যু নেই, তুমি বেঁচে থাকবে অনন্তকাল হাজারও ভক্ত-পাঠকের হৃদয়ে । তোমাকে জন্মদিনের অনেক শুভেচ্ছা । শুভ জন্মদিন ।’
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:২৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×