somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Her- অদ্ভুত প্রেমের অদ্ভুত এক সিনেমা :)

১৮ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ১১:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





সিনেমার নামঃ Her
বাংলা নামঃ হার (পরাজয় না কিন্তু ) :P

মানুষের সাথে মানুষের প্রেম কাহিনী শুনেছেন? বলেন কি ভাই, এটা তো শুনছি আর দেখছিও। ৯৫% সিনেমা তো নায়ক নাইকার পিরীতি নিয়েই- এটা তো ছোটবেলা থেকেই দেখছি, ঘুরে ফিরে সেই একই কাহিনী।
মানুষের সাথে পশুপাখির প্রেম কাহিনী? হ্যাঁ, দেখেছি কিছু , যেমন Hachicko , war horse
মানুষের সাথে ভ্যাম্পায়ারের প্রেম কাহিনী? হম, সেই "এপিক" টোয়াইলাইট ! জীবন ফালাফালা করে দিসে এই কাহিনী! :P

কিন্তু মানুষের সাথে কম্পিউটারের একটি কণ্ঠের প্রেম কাহিনী? মোটা দাগে বললে মানুষের সাথে একটা যন্ত্রের প্রেম কাহিনী? মনে হয়না শুনেছেন...

হার সিনেমাতে সেই কাহিনীই বলা হয়েছে।

নিকট ভবিষ্যতের আমাদের পৃথিবী , যেখানে মানুষ বর্তমান যুগের মানুষের চেয়ে আরেকটু বেশি ব্যস্ত, নিজের প্রিয়জনের খোঁজ খবর নেয়ার খুব একটা সময় নেই। সেই যুগের একজন মানুষ- থিওডোর টওম্বলি যার কাজ হচ্ছে অন্যদের হয়ে প্রেমের চিঠি লিখে দেয়া। নিজের কাজে সে খুবই ভালো, তার চিঠি নিয়ে সবাই খুব সন্তুষ্ট। কিন্তু যেই মানুষটা মানুষের চিঠি এত সুন্দর করে লিখে, তার নিজের সংসারের অবস্থা বড়ই করুণ। বৌ ক্যাথেরিন-এর সাথে ওর ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে প্রায় বছরখানেক আগে, কিন্তু সে এখনও ক্যাথেরিনকে ভুলতে পারছে না। হাতেগোনা বন্ধু বান্ধবীরা বলে দুঃখ ঝেড়ে ফেলতে , কিন্তু থিওডরের কিছুই ভাল্লাগে না। নিজেকে অনেক একা আর নিঃসঙ্গ মনে হয়।

একদিন অফিস থেকে ফেরার সময় তার চোখে পড়ে ওএস-ওয়ান এর বিজ্ঞাপন।কী এই ওএস-ওয়ান? এটা হচ্ছে একধরনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। মোবাইলে ওএস-ওয়ান ডাউনলোড করে নিলে সেটা একজন সত্যিকারের মানুষের মতোই কথা বলে, নতুন নতুন জিনিস শিখতে থাকে এবং আস্তে আস্তে একজন মানুষের মতই আচরণ করে মানুষকে সঙ্গ দেয়। থিওডোরের কাছে ব্যাপারটা বেশ মজা লাগে। সে কিনে ফেলে একটা ওএস-ওয়ান। থিওডোরের মোবাইলে ডাউনলোড হবার পর সেই কোকিলকণ্ঠী ওএস-ওয়ান নিজের নাম রাখে সাম্যান্থা। দিন যত যায়,
থিওডোর আর সাম্যান্থা একে অপরের তত কাছাকাছি আসতে থাকে। বন্ধুত্ব নাম দিয়ে শুরু হওয়া সম্পর্কটা আস্তে আস্তে অন্যদিকে মোড় নেয়। এক পর্যায়ে তারা একজন আরেকজনের প্রেমে পড়ে যায়।

হার আপনাকে বেশ কিছু প্রশ্নের সামনে দাঁড় করিয়ে দিবে। মানুষ কি শুধু মানুষেরই প্রেমে পড়ে? কেউ কী একসাথে সমানভাবে দু’জন মানুষকে ভালোবাসতে পারে? প্রেমে পড়লে শারীরিক সম্পর্ক কতটা জরুরী বা আদৌ জরুরী কিনা ? হলে কতটুকু জরুরী? কাউকে ভালোবাসলে কী তাকে আঁকড়ে ধরে রাখা উচিত? ধরে রাখতে হলে কতক্ষণ? নিজের সুবিধামত? যার সাথে প্রেম করছি তার দৈহিক অবস্থান কি খুবই জরুরী? তার দেহ কি অনুভব করতেই হবে? কিন্তু একটি আদর্শ চলচ্চিত্রের মত হার এর পরিচালক কোন প্রশ্নের উত্তর দর্শকের উপর চাপিয়ে দেননি, বরং তিনি নিজে উৎসাহিত করেছেন যাতে দর্শক নিজের মনে উদয় হওয়া প্রশ্নের উত্তর নিজেই খুঁজে নিক। এটাই একজন আদর্শ পরিচালকের কাজ :)

মূল চরিত্রে Joaquin Phoniex দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন। প্রথমে চিনতে পারিনি, কিন্তু চেনা চেনা লাগছিল। পড়ে বুঝলাম, তিনি গ্ল্যাডিয়েটর সিনেমার ভিলেন! এই না হলে অভিনেতা- যখন যেরকম দরকার :) সামান্থা চরিত্রে স্কারলেট জোহানসন এর কণ্ঠই যথেষ্ট :) আর সিনেমার এন্ডিং অনেকের হজম করতে সমস্যা হবে- যদিও এটাই পারফেক্ট এন্ডিং মনে হয়েছে নিজের কাছে। ২০১৩ এর সেরা মৌলিক চিত্রনাট্য হিসেবে অস্কার জিতে নিয়েছে ‘হার।’

মন্তব্য এক- it's a very interesting movie, to me it's not just দারুণ, it's দাহরুন! :D

মন্তব্য দুই- বাপের জন্মের এমন সিনেমা দেখি নাই! মানুষের মাথায় এগুলা আসে ক্যামনে? এই ধরনের চিন্তা আসা যতটা কঠিন , তার চেয়ে বেশি কঠিন এই ধরনের চিন্তাকে পর্দায় এত দুর্দান্তরূপে তুলে ধরা। এবং এই কঠিন কাজটি পরিচালক অত্যন্ত দারুণভাবে করেছেন। মাস্ট সি মুভি, একটু হালকা স্লো, তবে ভালো লাগবে বলে আশা রাখি :) হ্যাপি ওয়াচিং :)
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×