
সিনেমার নামঃ Her
বাংলা নামঃ হার (পরাজয় না কিন্তু )
মানুষের সাথে মানুষের প্রেম কাহিনী শুনেছেন? বলেন কি ভাই, এটা তো শুনছি আর দেখছিও। ৯৫% সিনেমা তো নায়ক নাইকার পিরীতি নিয়েই- এটা তো ছোটবেলা থেকেই দেখছি, ঘুরে ফিরে সেই একই কাহিনী।
মানুষের সাথে পশুপাখির প্রেম কাহিনী? হ্যাঁ, দেখেছি কিছু , যেমন Hachicko , war horse
মানুষের সাথে ভ্যাম্পায়ারের প্রেম কাহিনী? হম, সেই "এপিক" টোয়াইলাইট ! জীবন ফালাফালা করে দিসে এই কাহিনী!
কিন্তু মানুষের সাথে কম্পিউটারের একটি কণ্ঠের প্রেম কাহিনী? মোটা দাগে বললে মানুষের সাথে একটা যন্ত্রের প্রেম কাহিনী? মনে হয়না শুনেছেন...
হার সিনেমাতে সেই কাহিনীই বলা হয়েছে।
নিকট ভবিষ্যতের আমাদের পৃথিবী , যেখানে মানুষ বর্তমান যুগের মানুষের চেয়ে আরেকটু বেশি ব্যস্ত, নিজের প্রিয়জনের খোঁজ খবর নেয়ার খুব একটা সময় নেই। সেই যুগের একজন মানুষ- থিওডোর টওম্বলি যার কাজ হচ্ছে অন্যদের হয়ে প্রেমের চিঠি লিখে দেয়া। নিজের কাজে সে খুবই ভালো, তার চিঠি নিয়ে সবাই খুব সন্তুষ্ট। কিন্তু যেই মানুষটা মানুষের চিঠি এত সুন্দর করে লিখে, তার নিজের সংসারের অবস্থা বড়ই করুণ। বৌ ক্যাথেরিন-এর সাথে ওর ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে প্রায় বছরখানেক আগে, কিন্তু সে এখনও ক্যাথেরিনকে ভুলতে পারছে না। হাতেগোনা বন্ধু বান্ধবীরা বলে দুঃখ ঝেড়ে ফেলতে , কিন্তু থিওডরের কিছুই ভাল্লাগে না। নিজেকে অনেক একা আর নিঃসঙ্গ মনে হয়।
একদিন অফিস থেকে ফেরার সময় তার চোখে পড়ে ওএস-ওয়ান এর বিজ্ঞাপন।কী এই ওএস-ওয়ান? এটা হচ্ছে একধরনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। মোবাইলে ওএস-ওয়ান ডাউনলোড করে নিলে সেটা একজন সত্যিকারের মানুষের মতোই কথা বলে, নতুন নতুন জিনিস শিখতে থাকে এবং আস্তে আস্তে একজন মানুষের মতই আচরণ করে মানুষকে সঙ্গ দেয়। থিওডোরের কাছে ব্যাপারটা বেশ মজা লাগে। সে কিনে ফেলে একটা ওএস-ওয়ান। থিওডোরের মোবাইলে ডাউনলোড হবার পর সেই কোকিলকণ্ঠী ওএস-ওয়ান নিজের নাম রাখে সাম্যান্থা। দিন যত যায়,
থিওডোর আর সাম্যান্থা একে অপরের তত কাছাকাছি আসতে থাকে। বন্ধুত্ব নাম দিয়ে শুরু হওয়া সম্পর্কটা আস্তে আস্তে অন্যদিকে মোড় নেয়। এক পর্যায়ে তারা একজন আরেকজনের প্রেমে পড়ে যায়।
হার আপনাকে বেশ কিছু প্রশ্নের সামনে দাঁড় করিয়ে দিবে। মানুষ কি শুধু মানুষেরই প্রেমে পড়ে? কেউ কী একসাথে সমানভাবে দু’জন মানুষকে ভালোবাসতে পারে? প্রেমে পড়লে শারীরিক সম্পর্ক কতটা জরুরী বা আদৌ জরুরী কিনা ? হলে কতটুকু জরুরী? কাউকে ভালোবাসলে কী তাকে আঁকড়ে ধরে রাখা উচিত? ধরে রাখতে হলে কতক্ষণ? নিজের সুবিধামত? যার সাথে প্রেম করছি তার দৈহিক অবস্থান কি খুবই জরুরী? তার দেহ কি অনুভব করতেই হবে? কিন্তু একটি আদর্শ চলচ্চিত্রের মত হার এর পরিচালক কোন প্রশ্নের উত্তর দর্শকের উপর চাপিয়ে দেননি, বরং তিনি নিজে উৎসাহিত করেছেন যাতে দর্শক নিজের মনে উদয় হওয়া প্রশ্নের উত্তর নিজেই খুঁজে নিক। এটাই একজন আদর্শ পরিচালকের কাজ
মূল চরিত্রে Joaquin Phoniex দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন। প্রথমে চিনতে পারিনি, কিন্তু চেনা চেনা লাগছিল। পড়ে বুঝলাম, তিনি গ্ল্যাডিয়েটর সিনেমার ভিলেন! এই না হলে অভিনেতা- যখন যেরকম দরকার
মন্তব্য এক- it's a very interesting movie, to me it's not just দারুণ, it's দাহরুন!
মন্তব্য দুই- বাপের জন্মের এমন সিনেমা দেখি নাই! মানুষের মাথায় এগুলা আসে ক্যামনে? এই ধরনের চিন্তা আসা যতটা কঠিন , তার চেয়ে বেশি কঠিন এই ধরনের চিন্তাকে পর্দায় এত দুর্দান্তরূপে তুলে ধরা। এবং এই কঠিন কাজটি পরিচালক অত্যন্ত দারুণভাবে করেছেন। মাস্ট সি মুভি, একটু হালকা স্লো, তবে ভালো লাগবে বলে আশা রাখি

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




