বর্তমান চীন হয়তো প্রিন্স সু ফেই-এড়কে ভুলে গিয়েছে। এটাও হয়তো একুশ শতকের চীনবাসীদের মনে নেই যে, মুসলমানরা যদি যাযাবরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে চীনের পক্ষ না নিতো, তাহলে হয়তো বর্তমান চীনের ইতিহাস অন্য ভাবে লিখতে হতো।
১০৭০ সাল। চীন তখন যাযাবর জাতি খিতানদের আক্রমনে বিপর্যস্ত। খিতান রাজবংশ লিয়াও চীনের উত্তরাংশ দখল করে অনেক দিন ধরেই নিজের করতলগত করে রেখেছে। এই খিতানদের অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে তৎকালীন কোরিয়ান সম্রাট গোরিও ১০৩৩-১০৩৪ সালে একটি বড় সীমানা প্রাচীর তৈরী করতে বাধ্য হয়েছিলেন। এ থেকে বুঝা যায়, লিয়াও-রা কতটা ভয়ংকর ছিলো।
সেই সময়ে, অর্থাৎ ১০৭০ সালের দিকে, বুখারা'র আমির ছিলেন সু ফেই-এড়। এই চৈনিক নামেই আজ ইতিহাস চিনে তাঁকে। তাঁর আসল নাম সুফেয়ার বলে অনেকেই মত প্রকাশ করে থাকেন। যাহোক, চীনের সং রাজবংশের সম্রাট শেনজং সাহায্যের আবেদন জানিয়ে বিশেষ দূতের মাধ্যমে তাঁকে আমন্ত্রন জানালেন চীনে।
সৈয়দ সু ফেই-এড় সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে চীনের হয়ে যুদ্ধ করতে ৫,৩০০ মুসলমান সৈন্যকে সেই দেশে প্রেরণ করেন। পরবর্তীতে, এই সেনারা স্থায়ী ভাবে চীনে থেকে যান। মুসলমানদের এই সাহায্যে চীনের তৎকালীন সম্রাট শেনজং যাযাবর জাতি লিয়াওদের সাথে যুদ্ধ করে বাধ্য করেন একটি শান্তি চুক্তি করতে।
পরবর্তীতে, বুখারা থেকে আরো ১০,০০০ মানুষকে চীনের ঐ অঞ্চলে থাকার আমন্ত্রন জানান সম্রাট শেনজং। সেই সাথে, সৈয়দ সু ফেই-এড়কে চীনের একজন 'রাজপুত্র' ঘোষণা করে চীনের মাটিতে এসে থাকার বিশেষ আমন্ত্রন জানান। সেই আমন্ত্রন গ্রহণ করেন সৈয়দ সু ফেই-এড়। থেকে যান চীনের মাটিতে।
সৈয়দ আজ্জল শামস-আল দীন ওমর ছিলেন তাঁরই স্বনামধন্য বংশধর।
সূত্রঃ
Raphael Israeli (2002) - Islam in China: Religion, Ethnicity, Culture, and Politics, Lexington Books. p. 284. ISBN 0-7391-0375-X
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ সকাল ১১:৪১