'কাফের ভাসানী কোথায়?'
পাক সেনারা মওলানা ভাসানী'র ঘরবাড়িতে আগুন দেওয়ার সময় ঠিক এ কথাই বলেছিলো। কি কারণে একজন মুসলমান কাফের হয়ে যেতে পারে... এ প্রশ্নটা তাই করতেই হচ্ছে।
.
মানুষকে 'কাফের' বা 'ধর্মদ্রোহী' ট্যাগ দিয়ে দেওয়ার কালচার অনেক আগে থেকেই। 'দল কানা'-রা এমনটা অনেক আগে থেকেই করে আসছেন।
.
মাজারে গিয়ে দোয়া করবেন? দল কানারা সমস্বরে বলে উঠবেন- 'ও, তুমি মাজার-পূজারী?' ব্যস! আপনি ভয়ে একদম চুপ!
.
'আহলে বাইয়াত', অর্থাৎ, রাসূল (সাঃ)-এর বংশধরদের প্রশংসা করবেন? সাথে সাথে আপনাকে 'শিয়া' বলে ট্যাগ করা হবে। আপনার জীবন শেষ!
.
পশ্চিমাদের ভালো কাজে সহযোগিতা করবেন? আপনাকে নিশ্চিৎ 'ব্রিটিশদের দালাল' বলে গালি দেওয়া হবে।
নিজ ধর্ম অস্বীকার করলে ইসলামে শাস্তির বিধান আছে। সেই সাথে আছে ধর্মে ফিরে আসার সুযোগ। তাই বলে, শাসকগোষ্ঠীর অনাচার, অবিচারের প্রতিবাদ করলে কেউ কাফের হয়ে যায় এমনটাতো শুনিনি!
.
তবে কি 'হুকুমতে রব্বানী' প্রতিষ্ঠার জন্যে সারা-জীবনভর পরিশ্রম করা এক ব্যাক্তিকে শুধুমাত্র শাসক গোষ্ঠীকে 'আসসালামু আলাইকুম' বলে বিদায় জানানোর জন্যেই এই 'কাফের' পদ দিয়ে দেওয়া হয়েছিলো!
.
সেই মওলানা ভাসানী সাহেবই তো ব্রিটিশ ভারতের এক অত্যাচারী হিন্দু জমিদারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে তাকে পরাভূত করেছিলেন যে কিনা তার বাড়ির পাশ দিয়ে ছাতা মাথায়, পায়ে সেন্ডেল দিয়ে প্রজার হেঁটে যাওয়াকে নিষিদ্ধ ঘোষনা করেছিলো।
.
পাকিস্তানের তৎকালীন জান্তা মনে হয় নিজেদের মওলানা ভাসানী'র চেয়ে বেশি বড় মুসলমান প্রমাণ করার জন্যেই পূর্ব পাকিস্তানের রাজস্ব খাতে ব্যয় করতো ১৫০০ কোটি টাকা, যেখানে পশ্চিম পাকিস্তানে ব্যয় হতো ৫০০০ কোটি টাকা। সেই 'বড়' মুসলমানত্বের বলেই কি তারা পূর্ব পাকিস্তানের উন্নয়ন খাতে ব্যয় করতো মাত্র ৩০০০ কোটি টাকা আর পশ্চিম পাকিস্তানে ৬০০০ কোটি।
.
সরকার অন্য দেশের ব্যাপারে আমাদের নাক গলানো বন্ধ করতে বলেছেন। কিন্তু, পাকিস্তানের সাথে আমাদের কোন দিনই বন্ধুত্ব হবে না। এই ব্যাপারে আমি 'জিরো টলারেন্সে' বিশ্বাসী।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৪৪